![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটবেলা থেকেই জনগনের সাথে সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা করেছি। ভন্ডামি করে নয়, রাজনৈতিক ফায়দা লুটার জন্য নয়, সত্যিকার অর্থেই থেকেছি। তখন সম্ভবত দশম অথবা একাদশ শ্রেনীর ছাত্র। ফরিদপুর শহর থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাড়ীতে এসেছি। এসেই দেখি বড় রাস্তার উপর বৃষ্টির পানি আটকে বন্যা হয়ে গেছে। থানার সেকেন্ড অফিসার বাধ দিয়ে পানি বের হবার রাস্তা আটকে দিয়েছেন, কারন যেখান দিয়ে পানি বের হয়ে চলে যায় সেখান থেকে সামান্য দুরেই তার বাসা। তার বাসার ক্ষতি হতে পারে বিধায় তিনি একাজটা করেছেন।
জনগন লুংগি কাছা দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছে। পরিস্হিতি দেখেই মেজাজটা বিগড়ে গেল। একজনকে ডেকে বললাম বাধটা কেটে দিতে। পানি পরিস্কার হয়ে যেতে লাগলো। কিছুক্ষন পর দেখি পুলিশ অফিসার সাহেব চিৎকার করছেন, কে করেছে, কে করেছে। বললাম, আমি করেছি। জনগনের অসুবিধা হচ্ছে। বললেন রাস্তা কি তোমার বাবার নাকি? আমি বললাম, তোমার বাবারও না, তবে জনগনের। তিনি মানলেন না, কিছুক্ষণ খিস্তি খেউর করে আমাকে দেখিয়ে দিবেন বলে চলে গেলেন। কিছু সময় পরেই বাসায় পুলিশ এসে হাজির। একজন কনস্টেবল বললেন থানার বড় বাবু সালাম দিয়েছেন। থানার পাশেই আমাদের বাসা। সাধারনত নুতন কোন ওসি সাহেব এলেই তাদের পরিবার বেড়াতে আসতেন, চেনা জানা থাকতো। ইনি নুতন এসেছেন, আমিও দুরের শহরে থাকি, জানাশোনাও ছিল না। থানায় গেলাম দেখা করতে। ওসি সাহেব প্রশ্ন করলেন কি হয়েছে? উত্তর দেবার আগেই, পাশেই দাড়িয়ে থাকা সেই সেকেন্ড অফিসার বললেন এই ব্যাটা মনে হয়ে সর্বহারা টারা করে। নাইলে এত সাহস পায় কোথায়! সাথেই সাথেই আর একজন কনস্টেবল এসে ধাক্কা দিয়ে লকআপে ঢুকিয়ে দিলেন।
কিছুক্ষণের মধ্যেই সারা শহরে ছড়িয়ে পড়লো ব্যাপারটা। বিভিন্ন জায়গা থেকে দলমত নির্বিশেষে লোকজন এসে থানায় জড়ো হতে লাগলো। একের পর এক টেলিফোনে অস্হির হয়ে ওসি সাহেব আমার মিনিট দশেকের কারাবাস সমাপ্ত করলেন। লকআপ থেকে বের করে অফিসে বসিয়ে রাখলেন। জনগনের প্রচন্ড চাপে কিছু উপদেশ বাণী শুনিয়ে ছেড়ে দিলেন।
এরপর একদিন শুনি রাজবাড়ীর ডিসি সাহেব আসবেন, কৃষকদের ধানি জমিতে বাধ দেবার বিষয়ে কথা বলতে.........।
©somewhere in net ltd.