নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খোয়াই পাড়ের রাজু ।

হাসান রাজু

ডুব দিয়ে দিয়ে স্বপ্ন তুলে আনি ।

হাসান রাজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার মত ভূত দেখতে চাও ? ( ১ )

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২০



ঈদের ছুটি গ্রামের বাড়ি । বয়স ৭,৮ কিংবা ৯। যা হয় আরকি, হাঁটতে পারিনা যা ই করি দৌড়িয়ে করি। কাজিনদের সাথে সারাদিন ছুটাছুটি করি, এক যায়গায় বেশিক্ষণ দেখা যায় না, কেউ খুজে না, স্বাধীন। দিনে দু-একবার লিমিট ক্রস করি বাপ চাচাদের ঝাড়ি খাই।

এমন লাইফই চাই, স্বর্গসুখ যারে কয় আরকি। না, ঝমেলা ও ছিল। খোদাতালাহ চাননা এই দুনিয়ায় কেউ পূর্ণ স্বর্গসুখ ভোগ করুক। তাই এই স্বর্গসুখের মাত্রা যখন হাউকাউ পর্যায়ে পৌঁছাত বা হৈচৈ যখন চরম উত্তেজনায় পৌঁছাত তখন বাপ চাচারা চোখ রাঙাতেন। আর খেলাধুলা যখন আর একটু বাকি তখনি মা চাচীদের মনে পড়ে যেত আমাদের নাওয়া আর খাওয়ার কথা। "আর একটু সময়" এই আবদারে সাময়িক রেহাই পাওয়া যেত কিন্তু তেনারা একটু সময় বলতে ২/৩ মিনিটই বুঝতেন (এই জন্যই মনে হয় মা-চাচীরা বুঝে কম।) । একটু সময় বলতে বুঝায় - খেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত । এটা এই মহিলারা বুঝতই না।
আরও আজব লাগত, পেট আমার কিন্তু এখনি খেতে হবে সেটা বুঝেন তেনারা ! একদিন গোসল না করলে কি আসে যায় !!! আমার গায়ে তো গন্ধ ও নাই । কিন্তু তেনাদের চাহনি দেখলে মনে হয় আমাদের গা থেকে খুবই বিদঘুটে যে গন্ধ আসছে তাতে উনাদের বমি এসে যাবে এখনি (মিথ্যার একটা লিমিট থাকা চাই ! আজব )। এখনি গোসল করতে হবে। আর গোসলের সময় আমার মত খবিশ তিনি দেখেন নাই এই টাইপের বকর বকর করতে করতে সে কি চামরা ছিলা ঢলা X( । কে বুঝাবে, ঐ সব খবিশ/ইবলিশ কানে ঢুকছে না, মাথায় ঘুরছে গোসল সেরে গিয় খেলার শেষটুকুও পাব কি না |-) ?

যাক সবচেয়ে সুন্দর দিনগুলোতে ভূতের খপ্পরেও পরেছি। বিকেলে কাজিনদের সাথে বাজারে গেলাম । বড়দের আজাইরা টাইপের ঝাড়ি খেয়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে সিদ্ধান্ত হল, সন্ধ্যার পর একজনের বাড়ির উঠোনে আগুন জ্বেলে কিছু একটা ভেজে/পুড়ে (আলু, শিম বা মোটর বীজ কিছু একটা) খাওয়া হবে। সেইরাম ফুর্তি হবে। তখন মাগরিবের আযান হচ্ছে মাত্র। এক দৌড়ে বাড়ি গিয়ে মায়ের হাতে বাজারের ব্যাগটা ধরিয়ে দিয়েই ফিরব। এমনি কথা। কিন্তু যেতেই কড়া নির্দেশ, হাত-পা, মুখ ধুয়ে যেতে হবে !!! হয়ে গেল ৫/১০ মিনিট দেরি। দেরি পুষাতে উত্তেজনায় দিলাম দৌড় । ২ মিনিট দৌড়েই সোজা ভূতের সামনে । সে কি ভূত ! চিকচিকে কালো, বিশাল। অন্তত আমার দ্বিগুণ লম্বা, মোটা সে তো আমার মত এক ডজন খেয়ে ফেলতে পারবে।

"মাগো" চিৎকারে উল্টো দৌড়ে সোজা মায়ের সামনে। ভয়ে কাঁপছি । মা-চাচীরা বুঝতে পেরেছেন ভয় পেয়েছি। প্রথমে বুঝালেন ভয়ের কিছু নাই তারা আছেন। যেই একটু শান্ত হলাম শুরু হল - সারাদিন টইটই .... । ভাল হইছে এইবার একটু .... । আমার মাথায়, সব পোলাপান মজা করছে আর আমারে ভুতে ধরছে X(( । সারা সন্ধ্যা মা চাচীদের আঁচলের কোনায় ঝুলে ঝুলে কাটিয়ে দিলাম।

ভোর হতেই পুরো সাহস ফেরত পেলাম। কাজিনরা রাতেই জেনে গেছে। সকালের মিশন হল-মক্তবে যাব। যাওয়ার পথে কোথায় ভূত দেখেছি সেখানে সবাই যাব। আর মক্তবের হুজুর থেকে তাবিজ আনতে হবে। চাচির নির্দেশ।
যেমন কথা ছিল সেরকমই ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমি সেই রকম বিরক্ত, লজ্জিত আরো যা যা হওয়া যায় আর কি। সবাই জিজ্ঞেস করল কোথায়? নিজেকে সামলে আঙ্গুলের ইশারায় আরেকটু দূরের একটা জায়গা দেখালাম। তবুও সত্যটা বললাম না লজ্জায়। পর্যবেক্ষণ শেষে বুঝা গেল এটা ছিল বাঁশঝাড়ের ভূত । কারন চাচাতো বোন আবিস্কার করেছে পাশেই বাঁশঝাড় আছে। কিন্তু বাঁশঝাড়ের ভূত লিকলিকে চিকন হয় কিন্তু আমার বর্ণনায় মোটা ভূত। যাক বাকিটা মক্তবের হুজুর বুঝবেন।

ভূত সত্য ভূত মিথ্যাঃ ব্যাপার হল, যাকে ভূত ভেবেছি সেটা আসলে খড়ের স্তূপ । কিন্তু কথা হল আমি এর কিছুক্ষণ আগেই এই রাস্তা দিয়ে গিয়েছি কিন্তু এটা তখন ছিল না। আসল ব্যাপার হল, রাস্তার পাশের বাড়িটিতে বিকেলে ধান মাড়াই চলছিল সন্ধ্যায় মাড়াই শেষে সব খড় রাস্তার পাশে এনে গাদা করে রাখা হয়েছিল । তখন আমি হয়ত হাত মুখ ধুচ্ছি। আর আধো অন্ধকারে উত্তেজিত আমি হটাৎ তা ই দেখে ভূত মনে করেছি। বেকুব কারে কয় ।


*** সব ছবি গুগল মামা দিছে (থ্যাংক য়্যু) । শুধু নদীতে কিশোরদের জলকেলির ফঃক্রেঃ নিজে ।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সুন্দর!! নস্টালজিক ।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৭

হাসান রাজু বলেছেন: প্রথম মন্তব্য ! অবশ্যই ধন্যবাদ জানবেন । ভালো থাকবেন।

২| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪০

শিমুল_মাহমুদ বলেছেন: সুন্দর, ফিরে গেলাম শৈশবে

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬

হাসান রাজু বলেছেন: শৈশব ! যেখানে শুধু ভালো লাগা মিশে থাকে। অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য ।

৩| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৮

আতোয়ার রহমান বাংলা বলেছেন: শৈশবের কথা মনে পড়ে গেল
ধন্যবাদ

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৯

হাসান রাজু বলেছেন: আপ্লুত হলাম। অশেষ ধন্যবাদ।

৪| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


সাধারণ

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০১

হাসান রাজু বলেছেন: তখন সাধারন ভাবতাম। এখন ভাবি অসাধারন। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

৫| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সাধারণ হোক বা অসাধারণ
ঘটনাটা ছেলেবেলার !!
উ্ত্তেজনা আর অন্যরকতম
অনুভুতি থাকবেই। গান্ডুস তার
কি বুঝবে?

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০৯

হাসান রাজু বলেছেন: নূরু ভাই, খুব বুঝতে পারছি মজা পেয়ে গেছেন ছেড়ে কথা তো বলেন ই না। পারলে গায়ে পড়ে .... । আমরা এনজয় করি । চালিয়ে যান ।
মন্তব্য ভালো লাগলো । খুব ভালো থাকবেন।

৬| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৪

হাসান রাজু বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

৭| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৪৮

ফারিহা হোসেন প্রভা বলেছেন: ছবিগুলো দেখে শৈশবের কথা মনে পরে গেলো। ধন্যবাদ আপনাকে শুভকামনা।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৪

হাসান রাজু বলেছেন: আপনাকে ও শুভকামনা। ভাল থাকবেন।

৮| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:১৩

আখেনাটেন বলেছেন: হা হা হা। ছোটকালে আমিও এই সব অাজব খড়ের পালা, পাওয়ারটিলার, ঝোঁপ ইত্যাদিকে সন্ধ্যার পর ভূতের ছায়া দেখতাম মনে মনে। :P

চমৎকার লেখায় পিচ্চিকাল স্মরণ করায়ে দিলেন।

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:৩৪

হাসান রাজু বলেছেন: বাঁশঝাড়ের নিচ দিয়ে যেতে এখনো আমার মন খচখচ করে। হাঁটার গতি বেড়ে যায় কয়েক গুণ ।

৯| ২৬ শে জুন, ২০২১ দুপুর ১:১১

ফড়িং-অনু বলেছেন: একদিন বাড়ি ফিরব। বাশঁঝাড়, পুকুর পাড় হেটে বেড়াব একদিন।

২৬ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৩:৪০

হাসান রাজু বলেছেন: হা হা হা ... বিবাগীরা এটাই ভাবে সব সময়। ফিরতে চায় মায়ায়। ফিরতে পারেনা বাস্তবতায়, ব্যাস্ততায়। তবু সেই একদিনের অপেক্ষায় ফ্যান্টাসিতে ভুগতে থাকার ও একটা সুখ আছে। সেটা কম কিসের।

শুভ কামনা রইল।

১০| ২৬ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৩:৫৯

ফড়িং-অনু বলেছেন: ব্যস্ততাকে বাইন তালাক দিয়ে ফিরছ, এইবার ফিরবই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.