নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খোয়াই পাড়ের রাজু ।

হাসান রাজু

ডুব দিয়ে দিয়ে স্বপ্ন তুলে আনি ।

হাসান রাজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

“সুখ” এল আর বি আর আইয়ুব বাচ্চুর সাথে আমার পরিচয়।

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৪৩



সম্ভবত ক্লাস এইটে পড়ি। ১৯৯২-৯৩ মফস্বল থানা (উপজেলা) শহর । খুব চলে আদনান বাবু, খালেদ হাসান মিলু, রবি চৌধুরীর ক্যাসেট। পাওয়া যায় না ব্যান্ডের কোন এ্যালবাম। ব্যান্ডের গান সম্পর্কে পড়ি পত্রিকায়। সমালোচনা শুনি মুরব্বীদের মুখে, - এইগান ঠিকবে না। গান বলতে কিছুই না বাদ্যের তালে তালে চিল্লা ফাল্লা।

কোথাও কোথাও শুনি “মেলায় যাইরে”। ভালো লাগে। একটা আগ্রহ দানা বাঁধে। বাসায় ক্যাসেট প্লেয়ার নাই। এমন না যে বাসায় গান শুনা নিষেধ। টিভি রেডিও আছে শুধু মাঝখান থেকে ক্যাসেট প্লেয়ারটা নাই। আবদার করা যাবে না। কারন বাবার মতে, বিনোদন আর খেলাধুলার এত আয়োজন আছে যে পড়ালেখা চাঙ্গে তুলতে নতুন আরেকটার দরকার নাই।
বিদেশ থেকে খালা এলেন সাথে একটা ক্যাসেট প্লেয়ার। এটা আমারাইজ করে ফেললাম। এবার জেলা শহর হবিগঞ্জে গেলে (দুনিয়ার যে প্রান্থেই যেতে হোক না কেন জেলা শহর হয়েই যেতে হয়।) একটা অডিও ক্যাসেট আনা চাই (৬ মাসে অন্তত ১টা)। প্রথম অডিও ক্যাসেট কিনি ডিজিটাল ব্যান্ডের একটা এ্যালবাম তারপর মাইলসের প্রত্যাশা।

তখন পত্রিকা আর ম্যাগাজিনে ‘অডিও বাজার’ নামে বিশেষ প্রতিবেদন থাকত। সেখান থেকে ব্যান্ডের এ্যালবামের খবর পাওয়া যেত। হবিগঞ্জের ঝংকার ইলেক্ট্রনিক্স থেকেই ক্যাসেট কেনা হত। এমনি একবার গিয়ে জানতে চাইলাম এলআরবি’র ‘সুখ’ আর ফিলিংস এর ‘জেল থেকে বলছি’ এর মাঝে কোনটা বেশি চলছে। নতুন এ্যালবাম আসলে বিজ্ঞাপনও থাকত। দোকানের ভাই সুন্দর করে বুঝালেন এলআরবি’র ‘সুখ’ সেই রকম চলছে। আর ফিলিংসের গায়ক নেশা করে, সুর ও ভাল না। চলছে না এত। দুইটা এ্যালবামের দু’লাইন করে গান শুনিয়ে দিলেন। বুঝলাম ‘সুখে’ সুর আছে জেমসে সুর নাই। ফিলিংস/জেমস সম্পর্কে ভুল ধারনা নিয়ে সুখ হাঁতে ফিরে এলাম। ‘ চল বদলে যাই’ এ বুঁদ হয়ে রইলাম কয়দিন। রিওয়াইন্ড করে করে শুধু ‘সেই তুমি’ই শুনতাম। এরপর এক সময় ‘রুপালি গিটার’ ভাল লাগল । বিটিভিতে ঈদে ‘ব্যান্ডে শো’ নামে একটা অনুষ্ঠান হত। ১৯৯৪’র দিকে সম্ভবত সেই অনুষ্ঠান বা শুভেচ্ছা নামক ম্যাগাজিনে প্রথম দেখলাম এল আর বি’র গান। সে কি শিহরণ। আইয়ুব বাচ্চু গানের মাঝখানে মাইক্রোফোন স্ট্যান্ড সমেত ছুটলেন টুটুলের কি বোর্ড পর্যন্ত। এইটুকুতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে যাচ্ছিলাম।

দিন যায় ভালো লাগতে থাকে হাসপাতালে, যত বেশি, কেমন আছ গান গুলো। একসময় ‘কি আশাতে’ । প্রায় ২০ বছর পর খুব ভালো লেগে গেল ‘আমি যে কার’ গানটি।

১৯৯৫ সালে ঢাকায় আসি তখন গুরু যা গায় তা ই হিট। কলেজ থেকে ফিরতে ফিরতে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে গাই, ‘আপবাদ দাও আমায় ......’ ‘যেন ধুলো মাখা টেবিলে বিষণ্ণ খেয়ালে ......’
১৯৯৬ সালে মোহাম্মদপুর তাজমহল রোডে কোন এক কনসার্টে প্রথম সামনা সামনি দেখি গুরুকে। পরে আরও কয়েকবার।
ইদানীং অনেক লাইভ টিভি প্রোগ্রামে গাইতে দেখেছি আমার কৈশোরের নায়ক কে। ‘সেই তুমি’ যেন এল আর বি’র অভিচ্ছেদ্ধ একটা গান। গুরু’র এমন অনেক টিভি শো দেখেছি আর ভেবেছি গুরুর গলাটা আর আগের মত নাই। সুখ এ্যালবামের ‘সেই তুমি’ আর আসছে নে গুরুর গলা থেকে।

যখন জেনেছি, গুরু রুপালি গিটারটা ফেলে চলে গেছেন। সত্যি আমি গোপন করে রেখেছি আমার অশ্রু।


মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: এই শিল্পীর মৃত্যুতে অসংখ্য মানুষের আহাজারি এই শিল্পীকে মহান করে তুলেছে।

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৪৯

হাসান রাজু বলেছেন: মহান ছিলেন না ? :(

২| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৪০

মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: আহা স্মৃতি ।

অনেক অনেক স্মৃতি।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:০০

হাসান রাজু বলেছেন: আসলেই অনেক অনেক স্মৃতি। ভালো থাকবেন।

৩| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:২৭

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: আমি অবশ্য অশ্রুটা গোপন রাখতে পারিনি। বাসায় ভ্যা ভ্যা করে কেদেছি। ৮০র দশকে জন্মানো আর ৯০ এ বড় হওয়ার প্রজন্মটা কখনোই আইয়ুব বাচ্চুকে ভুলবেনা, ভোলার নয়। তাকে স্মরণ করি বিনম্র শ্রদ্ধায়।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:২৭

হাসান রাজু বলেছেন: অফিসে ছিলাম অশ্রুটা গোপন রাখতে পেরেছি। এমনিতে ও অশ্রু হয়ত আসত না হয়ত চোখটা ছলছল করে উঠত। কিন্তু মনটা খুব ভারি ছিল। ২০০০ সালের পর আইয়ুব বাচ্চু'র গান নিয়ে উচ্ছ্বাসটা কমতে শুরু করে আমার। তার নতুন কোন এ্যালবাম বা গানের প্রতি আকর্ষণ বোধ করতাম না। ঘুরে ফিরে সেই ৯০ দশকের গান গুলোই শুনতাম। ভাবতাম আইয়ুব বাচ্চু আর আমার সেই প্রিয় গায়কটি নন।
তার মৃত্যুতে বুঝতে পারলাম আমাদের কৈশোর থেকে যৌবনে যাত্রার সময়ের মানুষগুলোই আমাদের খুব কাছের। খুব আপন। এরা মনের সেই কোনে ঠাই করে নিয়েছেন, যেখানে খুব যত্নে লালিত হচ্ছেন তারা আমরা তা জানিওনা।

ইফতেখার ভাই, ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

৪| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৫৯

আখেনাটেন বলেছেন: কলেজে পড়াকালীন কতদিন টেপ রেকর্ডারে 'এখনও অনেক রাত' শুনে ঘুমিয়ে পড়েছি। কি সুর? ভোলা যায়।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৪৯

হাসান রাজু বলেছেন: আইয়ুব বাচ্চুর আরেকটি অনন্য সৃষ্টি। ধন্যবাদ।

৫| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৩৭

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:


এই বছরের মাঝের দিকে কাছ থেকে তাকে দেখছি । আর কনসার্টে পাবো না ভাবতেই কেমন জানি লাগে ।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৫৪

হাসান রাজু বলেছেন: আমাদের সময়ের ক্রেজ ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু জেমসরা। কয়দিন পর আস্তে আস্তে তাকে ভুলে যাব হয়ত। অথবা খুব বেশিই মিস করব। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন।

৬| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
তার আত্মার শান্তি কামানা করছি।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:০৭

হাসান রাজু বলেছেন: আমিন ।

৭| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:২২

কালীদাস বলেছেন: এমন একটা গান ছিল এলবামটায় যেটা সম্ভবত বাংলাদেশের সব কনসার্টে কভার করা হয়েছে। এলআরবি কেন বাংলাদেশের অন্য কোন ব্যান্ডের কোন গানই ঐ লেভেলের ধারেকাছেও জনপ্রিয়তা পায়নি আজ পর্যন্ত!!
আইয়ুব বাচ্চুর জন্য শ্রদ্ধা এবং আপনাকে ধন্যবাদ পোস্টের জন্য :)

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৫৪

হাসান রাজু বলেছেন: এটা এলআরবি'র 'জাতীয় সঙ্গীত!' । ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকবেন।

৮| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪৭

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
কেন নেশা করে আর কে নেশা করে না। এর মাধ্যমে বাঙালি গায়ক নির্ধারণ করে। ফিলিংসের 'জেল থেকে বলছি' এর কথা সুর এবং গায়কী দেশের মানুষের হজম করা বেশ কঠিন ছিল অন্য সবার গানের তুলনায়। এই অ্যালবাম টি ওপর বাংলায় খুব চলে ছিল। ফসিলসের রূপম ইসলাম একবার বলেছিলো তারা নাকি রাতদিন ওই গান শুনেছে।

আমার কাছে আইয়ুব বাচ্চু বা এলআরবির সবচেয়ে প্রিয় গান 'ঘুমন্ত শহরে' দুঃখের কথা এই অসাধারণ গানটাও আন্ডাররেটেড।

জেমস আইয়ুব বাচ্চুর কাছে আমরা ঋণী। তাদের আন্ডাররেটেড গান গুলো সঠিক মূল্যায়ন পেলে ব্যান্ড মিউজিক ইন্ড্রাস্ট্রি আরো এগিয়ে যেত। যদিও আমি বাংলাদেশের ব্যান্ড গুলুর দারুন ভক্ত। ১৯৯৮ সালের পর পুরো চেহারায় পাল্টে দিয়েছে। ভালোবাসা। বাংলা ব্যান্ড বেঁচে থাকুক।

১৪ ই জুন, ২০২০ সকাল ১১:১২

হাসান রাজু বলেছেন: হাত জোড় ক্ষমা চাইছি, এতো দেরিতে সাড়া দেয়ার জন্য। আপনার মন্তব্যের সাথে পুরোপুরি একমত।
এলআরবি, ফিলীংস, সোলস, মাইলস, নোভা ব্যান্ডগুলোর আন্ডাররেটেড গানগুলোই এখন শুনি। সেই তুমি, ফিরিয়ে দাও, নিঃসঙ্গতা এগুলো এতো শুনেছি যে আগামি ২০/২২ বছর এগুল আর শুনতে চাইব না।
এখন যে গান গুলো শুনছি- যত বেশি, আমি যে কার, সম্মুখের ধ্রুবতারা (এলআরবি)। প্রেম যমুনা, খুলে দেখ মনটা, চিরহরিৎ, নৌকা ভাসাও (ফিলিংস) ঠিকানা, ঈশা খাঁ (নোভা), পাহাড়ি মেয়ে, পাতা ঝরে যায়, ভুল করে যদি (মাইলস) ইত্যাদি।

অনেক অনেক ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.