নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাসান ইমতির জন্মস্থান ফরিদপুর, বর্তমান বাসস্থান উত্তরা, ঢাকা। তিনি মূলতঃ অনলাইন ভিত্তিক প্ল্যাটফর্মে লেখালেখি করে থাকেন। এ ধারায় কবিতা ভিত্তিক সাইটের ভেতর রয়েছে বাংলা কবিতা, কবিতা ক্লাব, কবিতা ইবারয়ারি, গল্প কবিতা, বাংলার কবিতা ইত্যাদি এবং ব্লগের ভেতর সাম

হাসান ইমতি

সূর্যের লাল চোখ রেখে আমি শপথ নিয়েছি আরেক সূর্য হবার

হাসান ইমতি › বিস্তারিত পোস্টঃ

জনি

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৪৩



উনি বাম পা একটু টেনে টেনে হাটেন । শরীরচর্চা শিক্ষকের জন্য এটি একটি অযোগ্যতা হিসাবে বিবেচিত হবার কথা । শফিক স্যারের ক্ষেত্রে সেটা হয় না । এই পদ আলোকিত করে স্যার আমাদের স্কুলে আছেন বহুদিন । জানা যায় একসময় উনি ভালো ফুটবলার ছিলেন, এখনো উনি ফুটবল ভালোবাসেন । পায়ের এই সমস্যাটা ফুটবলের কাছ থেকে ভালোবাসার প্রতিদান স্বরূপ পাওয়া। এ নিয়ে উনার থেকে আমরা অবশ্য কখনো কোন অভিযোগ শুনিনি । আর পায়ে সমস্যা থাকলেও উনি উনার কাজে খুব দক্ষ, কাজের বাইরে উনি কথাও বলেন খুব কম ।

আমাদের স্কুলটা ছিল কোএডুকেশন । আমি ছিলাম আমাদের ক্লাসের ফার্স্টবয়, এজন্য স্যার ও ছাত্র ছাত্রীদের আলাদা মনোযোগ ও ভালোবাসা পেয়ে আমি বরাবর অভস্ত্য ছিলাম । এই ক্ষেত্রেও শফিক স্যার এক ব্যতিক্রম, উনার চোখে আমি কখনো আমার জন্য আলাদা করে ভালোবাসার বা স্নেহের প্রকাশ দেখিনি । শুধু একদিন শরীরচর্চা ক্লাসে উনি আমাকে একান্তে ডেকে বলেছিলেন, আমি যদি তোমাকে “জনি” নামে ডাকি তাহলে কি তোমার কোন আপত্তি আছে । স্যার বরাবর খুব গম্ভীর মানুষ তাই কৌতুহল জাগলেও আমি উনার এই ইচ্ছের কারণ জিজ্ঞাসা করার সাহস পাইনি, শুধু মাথা নেড়ে নীরব সম্মতি জানিয়েছি । নতুন একটা নাম পেছে সে সময় এক ধরনের ভালোলাগাও তৈরি হয়েছিল । এরপর থেকে স্যার আমাকে “জনি” নামেই ডাকতেন । কেন উনি আমাকে জনি ডাকতে চেয়েছেন সে রহস্য আমি স্কুল জীবনে আর ভেদ করতে পারিনি । এই স্কুলে আমি তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছিলাম, পরে ভর্তির সুযোগ পেয়ে শহরের নামকরা সরকারী স্কুল ফরিদপুর জেলা স্কুলে চলে যাই । এই স্যারের প্রতি অজানা এক কারণে আলাদা একটা টান রয়ে গিয়েছিল, অনেকদিন বাদে একবার পুরনো স্মৃতির টানে ফিরে গিয়েছিলাম আমার বাল্যের সেই স্কুলে, পুরনো স্যারদের কাউকে কাউকে পেলেও শরীরচর্চার শফিক স্যারকে দেখলাম না স্কুলে । উনার কথা জানতে চাইলে পুরনো দপ্তরী জয়দেব জানালো আমি স্কুল ছেড়ে চলে যাবার কিছুদিন পরেই শফিক স্যারও নাকি স্কুল ছেড়ে চলে গিয়েছেন । চলে যাওয়ার কারণ বা কোথায় গিয়েছেন জানতে চাইলে সে জানালো, শেষের দিকে স্যারের মাথায় গণ্ডগোল দেখা দেয়াতে উনার স্ত্রী উনাকে নিয়ে গ্রামে ফিরে গিয়েছেন, মাথায় গণ্ডগোল দেখা দেবার খবরে বিস্মিত হয়ে কারণ জানতে চাইলে সে জানালো, ওমা তুমি জানো না, এটা তো তুমি স্কুলে থাকার সময়ের ঘটনা, স্যারের ছেলে জনি, যে দেখতে আর বয়সে অনেকটা তোমার মতোই ছিল, পানিতে ডুবে মারা যাবার পর থেকেই স্যারের মাথায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল, পরে সেটা বেড়ে যাওয়াতে উনাকে নিয়ে উনার স্ত্রী গ্রামের বাড়ীতে ফিরে গিয়েছেন । জনি নামের রহস্য উদঘাটন হলেও আমি আর কখনো স্যারের কোন খোঁজ পাইনি। যেখানেই উনি থাকুন না কেন ভালো থাকুন, পরিপূর্ণ থাকুন ।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৪৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৯

হাসান ইমতি বলেছেন: এটা আসলে ভালোবাসা
অনেকটা পিতা ও সন্তানের ভালোবাসার মত

২| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১০

বাকা পথ বাকা চোখ বলেছেন: বরই দুখের কাহিনি

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩০

হাসান ইমতি বলেছেন: দুঃখের ভেতরেই থাকে ভালোবাসা

৩| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:০১

সুমন কর বলেছেন: আপনার স্যারের কথা শুনে মন খারাপ হলো। যেখানেই উনি থাকুন না কেন ভালো থাকুন, পরিপূর্ণ থাকুন ।

এমন একটি লেখায় প্লাস নেই, দেখে খারাপ লাগল।

+।

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩৩

হাসান ইমতি বলেছেন: আপনার মন্তব্য ভালো লাগলো, আরেকটি বিষয় আমি সামুতে খুব একটা নিয়মিত নই, প্লাসের ব্যাপারটি ঠিক বুঝতে পারলাম না, যদি একটু বুঝিয়ে বলেন তাহলে সুখী হব ,ভালবাসা বন্ধু

৪| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৬

সুমন কর বলেছেন: দেখুন,


এখানে ১ দেখাচ্ছে। তারমানে পোস্টটি ১জন লাইক দিয়েছেন।

শুভ ব্লগিং....

৫| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১১

হাসান ইমতি বলেছেন: ও আচ্ছা, একজন লেখক আসলে বনের পাখির মত, গান গেয়ে যান মনের আনন্দে, সে গানের কোন প্রত্যাশা থাকতে নেই, গান যদি কারো ভালো লাগে তবে সেটা বাড়তি পাওয়া, আবারো ভালোবাসা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.