নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাধারন একজন মানুষ... লিখতে ভালো লাগে।কিন্তু আলসেমি লেখার গতি কমিয়ে দেয়.।এমন একটা যন্ত্র আবিস্কার হত।যাতে বলার সাথে সাথে প্রিন্ট হয়ে বের হয়ে যেত লেখা।সেই দিনের অপেক্ষায় আছি

পথিক শোয়েব

পথিক শোয়েব › বিস্তারিত পোস্টঃ

#গডেস_অব_আইজার(পর্ব-৭ এবং ৮ এক সাথে)

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৯



পর্ব-৭
নায়রার ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা করছি । যতটুকু রহস্যময় মনে করেছিলাম।তার চাইতে ও বেশি রহস্যময় এখন যা মনে হচ্ছে । এমন সময় নয়ন ফোন দিল।

-হ্যালো

- ইশান, গুড নিউজ আছে একটা ।

- হ্যা বল।

-তুই এখুনি আমার বাসায় চলে আয়।

-আমি এখন বাংলাদেশের একদম সীমান্তের কাছে আছি।এখুনি কিভাবে আসব বল।

-কোথায় তুই?

- টেকনাফ থেকে দশ পনের কিলো দূরে এক গ্রামে।

-আমাকে বলতি আমি ও যেতাম ।

- হুট করে চলে আসলাম, আর আমি চাইনি তুই ঝামেলায় জরাই যাস।

-হুম।শোণ সেই মচুয়া ব্যাটার পরিচয় বের করেছি ।জামশেদ নাম। ভয়ংকর লোক।মাফিয়া চক্রের গডফাদার বলা যায়। গোল্ডেন
ট্রায়াংগেল দিয়ে যত মাদক চোরাচালান হয়।সব এর হাত ধরেই হয় ।

- জামশেদ এর আইজার নিয়ে মাথা ব্যাথা কিসের ?

- গুপ্তধন আছে হয়তো, ইগনাসিওর রেখে যাওয়া কোন গুপ্তধন।

- সেটা থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু কি পরিমান গুপ্তধন হলে তার মত একজন গড ফাদার তার পিছনে লাগতে পারে ?!

- কয়েকশ কোটি টাকা তো হবেই। ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ ।আমার ভৌগলিক জ্ঞানে যতদূর মনে হয় যে সেন্টমার্টিন দ্বীপেই ইগনাসিও আস্তানা গেড়েছিল ।

-আমি ও সেটাই চিন্তা করেছি।কেননা আমার কাছে যেই ম্যাপ আছে রিজভি আহমেদের।তাতে সাগরের মধ্যে একটা বিন্দু দেয়া আছে। আর সেটা যে সেন্টমার্টিনকেই নির্দেশ করেছে আন্দাজ করেছিলাম।

- আমি শিওর এটা সেন্টমার্টিনেই । তুই সেখানে একটু খোজ খবর নে।আর সাবধানে থাকিস ।

লাইন কেটে গেল। দুই জন লোক এখন সন্দেহের তালিকায়।নায়রা আর জামশেদ।নায়রা কে সন্দেহের উর্ধে রাখা যায় না। সে হয়তো মিথ্যা বানিয়ে বলেছে। স্বপ্নের ব্যাপারটা হয়তো কাকতালীয় ভাবে মিলে গেছে। জামশেদ ব্যাটাকে এক নম্বরে রাখতে হবে।এই ব্যাটাই মনে হয় আমার বাসায় ঢুকেছিল ।ম্যাপ চুরি করার জন্য। রাজ ঠাকুরের খোজে লোক পাঠিয়ে ছিলাম।বাসা তালা মারা। কেউ নাই । আশপাশের কেউ বলতে পারে না সে কোথায় আছে ।তার মানে এখন একদম নিশ্চিত সে বিপদে পড়েছে ।অপহরন করা হয়েছে তাকে।কেন করা হল ? কেই বা করতে পারে ? নায়রা ? না সে কিভাবে করবে ।হাব ভাবে তো মনে হয় সে একাই এই দেশে এসেছে। জ্বলজ্যান্ত একজন লোককে অপহরন করা চাট্টিখানী কথা নয়। এটা জামশেদই করিয়েছে। ব্যাটার লোক সব জায়গায় থাকাই স্বাভাবিক।
পরের দিন সেন্ত মার্টিন দ্বীপে চলে এলাম একটা ট্রলারে করে। হোটেল ঘুম দিয়ে দুপুরের দিকে সাগরে গোসল করব বলে বের হলাম। সাতার কাটছি ।এমন সময় হাই ইশান শুনে তাকালাম। দেখি নায়রা। মেয়েটা আমাকে ফলোকরা ছারেনি তার মানে। রহস্যময় কারনে আঠার মত লেগে আছে । তার পরনে একটা শর্ট আর পাতলা একটা সাদা গেঞ্জি।এটা ভিজে গেলে ভিতরের সব কিছুই বোঝা যাবে। সেন্টমার্টিনে আসা বাঙ্গালী কোন মেয়ে এই টাইপ জামা পরে সাগরে নামে না ।তারা আরেকটু শালীনভাবে থাকার চেষ্টা করে।বাংগালী মেয়েদের শালিনতাবোধ একটু বেশি প্রবল। আমিই কথা বললাম আগে

- আপনি এখানে ?

- এই একটু প্রকৃতি দেখার জন্য আসলাম।বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর জায়গা এটা ।তাই ভাবলাম যাওয়ার আগে একবার দেখে যাই।আবার কবে আসা হয়।

বলে হাসলো নায়রা । আমি বুঝতে পারছি সে মিথ্যা বলছে ।আসল উদ্দেশ্য আমাকে ফলোকরা। কিন্তু তার নিষ্পাপ হাসির দিকে তাকিয়ে বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলায় পরে গেলাম।

পর্ব-৮

রাতে রুমে বসে আছি। দশটা বাজে। এখানে রাত নয়টা হলেই সব বিদ্যুৎ অফ করে দেয়া হয়। আমি ব্যাটারি চালিত একতা লাইট দিয়ে কিছু কাগজ পত্র ঘাটছি।এমন সময় দরজায় কড়া নারার শব্দ শুনলাম। খুলে দেখি নায়রা

- আসতে পারি ।
নায়রা একটা শাড়ী পরেছে । অপূর্ব লাগছে তাকে ।

- হ্যা অবশ্যই ।
নায়রা খাটের এক কোনায় গিয়ে বসলো।

- কিসের কাগজপত্র এগুলো ?

- আইজার নিয়ে একটু ঘাটছিলাম। ইগনাসিওর অবস্থান সম্পর্কে কোন তথ্য যদি পাই আর কি।

- যত তারা তারি খুজে পাবেন ,সেটাই আমাদের জন্য ভালো।
মেয়েটা এমন ভাব করছে যেন আমি আর সে একই টিমে কাজ করি। দুই জনের আসাইনমেন্ট এক। বিরক্ত হলাম কিছুটা। কিন্তু প্রকাশ করলাম না।

- তো সেদিন না স্বপ্ন নিয়ে কি যেন বলেছিলেন ।

- হ্যা

- তাহলে বলুন

- বিশ্বাস করবেন আমার কথা ?একবিংশ শতাব্দীতে বসে কেউ এটা বিশ্বাস করতে চাইবে না।

- না বলেন ,আমি করব।
নায়রা বলতে আরম্ভ করলো

- ভার্সিটিতে পড়া অবস্থায় আমি প্রাচীন সভ্যতা নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠি। আমার সাবজেক্ট ছিল জিওগ্রাফী । তাই কিছুটা এডভান্টেজ ছিল। আসলে প্রাচীন সভ্যতা না বলে সেই সময়ের যাদু বিদ্যার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠি। কালো যাদু নিয়ে অনেক পড়াশুনা শুরু করলাম। মিশরীয় সভ্যতায় যাদু বিদ্যা প্রচুর প্রচলীত ছিল ।তাই মিশরীয় সভ্যতা নিয়ে বেশি পড়লাম।
আমি চুপ করে শুনে যাচ্ছি নায়রার কথা। সে আবার শুরু করলো

- এক সময় জানতে পারলাম যে আমার পূর্ব পুরুষ ছিল মিশরীয়। ইগনাসিও তার নাম । মিশরে অনেক ছোট বড় প্রাচীন আইসিস দেবির মন্দির ছিল ।ইগনাসিও ছিল দস্যু । তার চোখ পড়ে এমন একটা মন্দিরে। অসম্ভব সাহসী ছিল। মানুষ ভয়ে দেবির মন্দিরের একটা কনায় হাত দেয়ার সাহস পেত না।সবাই মনে করতো দেবি আইসিসের অভিশাপ নেমে আসবে তার উপরে । ইগনাসিও এগুলো কানে তুলল না। এক রাতে চুরি করলো মন্দিরের মূল্যবান সব কিছু ।পনেরশ এক সালে সে জাহাজ নিয়ে চলে আসে সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এখানেই কোন এক জায়গায় তার সম্পদ লুকিয়ে ফেলে। জাহাজে করে আসার সময় তার প্রায় সব সাথীরা মারা যায়। কোন এক অদৃশ্য কারনে । যে কয়জন বেচে ছিল। তারা ও এই দেশে পৌছানোর পরে মারা যায়। তখন এদেশের নাম করা চিকিৎসকরা তাদের দেখে বলেছিল কোন এক বিষ ক্রিয়ায় তারা মারা গেছে লোকগুলো।কিন্তু তারা সেই বিষের নাম বলতে পারেনি। কিন্তু ইগনাসিও বিশ্বাস করা শুরু করলো যে আইসিস দেবীর অভিশাপ নেমে এসেছে তার সংগী সাথিদের উপর । তাই সে ভীত হয়ে উঠলো । সে শয়তানের কাছে দেবী আইসিসের অভিশাপ থেকে বাচার জন্য আশ্রয় নিল। শয়তানের পুজো করতো ইগনাসিও। এক সময় কালো যাদুতে ও সে সিদ্ধি লাভ করলো । মারা যাওয়ার আগে তার অর্জিত জ্ঞানগুলো লিপি বদ্ধ করে রাখলো তার একটা ডায়েরিতে।

- সেটা না হয় বুঝলাম। কিন্তু আমার স্বপ্নের ব্যাখ্যা তো পেলাম না।

- বললাম তো আমি যাদু বিদ্যায় আসক্ত হয়ে পরার পরে কিছু যাদু নিজে আয়ত্মে আসে ।

-তার মানে আপনি যাদু করে স্বপ্ন দেখিয়েছেন আমাকে ??

- হ্যা

- ওহ মাইগড। কিন্তু বিশ্বাস হচ্ছে না সেটা ।

- যাদু বিদ্যায় বিশ্বাস করেন ?

- নাহ করি না।

- তাহলে আপনার সাথে তর্ক করে লাভ নাই।

- হ্যা

- আপনি যেই স্বপ্ন দেখেছিলেন।সেটা এই সেন্টমার্টিন দ্বীপের ই দৃশ্য। পাঁচশো বছর পূর্বের । আর যেই মেয়েটিকে গোসল করতে দেখেছিলেন সেই মেয়েটা আমি ।

আমি ভালো করে নায়রার মুখের দিকে তাকালাম । সত্যিই স্বপ্নে দেখা মেয়েটার সাথে ভালই মিল আছে । নায়রার চোখ জোরা কেমন মায়াবি। সরাসরি তাকালে ঘোর লাগে । আমার চারপাশের পরিবেশ হঠাৎ পাল্টে যেতে লাগলো। এখন দ্বীপে কোন হোটেল নাই। বন জংগলে চারদিক ছেয়ে আছে। আগে স্বপ্নে দেখা দ্বীপ আর এটা একই । আমি হাটছি। দ্বিপের ভিতরের দিকে । বিশাল একটা মন্দির দেখতে পেলাম । আইসিস এর মন্দিরের আদলে তেরি। কিন্তু আইসিসের না। বেশ কিছু পুরোহিত বের হয়ে এল মন্দির থেকে।এর পর নায়রা বের হয়ে এলো।তার পিছনে দাশ দাসী ।তাদের হাতে পূজার অর্ঘ । শাড়ি পরা নায়রা। এক প্যাচ দিয়ে । অপূর্ব লাগছে তাকে। আমার দিকে তাকিয়ে সে দাসীদের কি যেন ইশারা করলো। এমন সময় ঘুম ভেংগে গেল আমার । উঠে দেখি আমার হোটেলের রুমে বসা । চারদিকে ভোরের আলো ফুটছে। তাহলে এতক্ষন যা দেখলাম স্বপ্ন ছিল ?!!! কিভাবে সম্ভব ?!! নায়রা আমার রুমে এসেছিল । তখন আমি সজাগ ছিলাম, এটা নিশ্চিত আমি। অদ্ভুত অদ্ভুত কাহীনি ঘটে যাচ্ছে একের পর এক। হোটেলের রিসিপসন এ খোজ নিলাম।নায়রার মত কেউ নাকি আসেনি। কিন্তু মন বলছে কাল রাতে নায়রা এসেছিল।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪০

তারেক ফাহিম বলেছেন: স্বপ্ন, না বাস্তব নায়রার ব্যাপারটি ক্লিয়ারতো করলেন না।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:২৬

পথিক শোয়েব বলেছেন: শেষ পর্ব দেয়া হয়েছে।পড়লে ক্লিয়ার হবে আশা করি।আর ধন্যবাদ ভাই

২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.