নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বোকা মানুষের কথায় কিই বা আসে যায়

বোকা মানুষ বলতে চায়

আমি একজন বোকা মানব, সবাই বলে আমার মাথায় কোন ঘিলু নাই। আমি কিছু বলতে নিলেই সবাই থামিয়ে দিয়ে বলে, এই গাধা চুপ কর! তাই আমি ব্লগের সাহায্যে কিছু বলতে চাই। সামু পরিবারে আমার রোল নাম্বারঃ ১৩৩৩৮১

বোকা মানুষ বলতে চায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

তারা কি জানেন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কি? গনহত্যা কি?

১৮ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৪৩

গত মাসখানেক সময়ে বাংলাদেশে বহুল উচ্চারিত এবং আলোচিত কয়েকটি শব্দের মধ্যে ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’ ও ‘গণহত্যা’ শব্দ দু’টি তৈরি করেছে বিতর্কের। মানুষ খুন হয়েছে, সম্পদ পুড়েছে। তা বড় না হয়ে বড় হয়ে উঠেছে সেটা ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’ ও ‘গণহত্যা’ কি না। পক্ষে-বিপক্ষে নানান আলোচনা হয়েছে। ব্লগে আমরা অনেক কিছুই লিখে থাকি, কত বিচিত্র বিষয়েই না লিখি। আজ আমি বিবেকের দায় বদ্ধতা থেকে ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’ ও ‘গণহত্যা’ বিষয়ে কিছু তাত্ত্বিক লেখা লিখতে চাচ্ছি।



প্রথমেই আসি দাঙ্গা কি? দাঙ্গা হল কতিপয় বিশৃঙ্খল নাগরিক দ্বারা হঠাৎ সৃষ্ট জনজীবনের বিশৃঙ্খল এবং হিংস্র রূপ যা সমাজের কল্যাণের বিপরীত, যার উদ্দেশ্য হয় ভীতি সৃষ্টি করা এবং যেখানে মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়। এই তাত্ত্বিক সংজ্ঞার আলোকে আমরা বলতে পারি, দাঙ্গা সাধারণতঃ দুই বা ততধিক পক্ষের অমিমাংসিত বিরোধ নিয়ে ঘটে। দাঙ্গার পিছনে ইস্যূ থাকে –কখনো তা সামাজিক, কখনো রাজনৈতিক, কখনো ধর্মীয় এবং কখনো অন্য কিছু হতে পারে। Wikipedia তে ‘দাঙ্গা’র সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, “A riot is a form of civil disorder characterized often by what is thought of as disorganized groups lashing out in a sudden and intense rash of violence against authority, property or people”।

দাঙ্গা বা রায়টস প্রায়ই একটি পুঞ্জীভূত ক্ষোভ বা অন্যায়-নিপীড়নের প্রতিক্রিয়ায় ঘটে। ঐতিহাসিকভাবে, দাঙ্গার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়ঃ দারিদ্রতা, বেকারত্ব, সরকারি জুলুম, করারোপণ প্রভৃতির প্রতিবাদের স্ফুলিঙ্গ; জাতিগত গোষ্ঠী, ধর্মের মধ্যে দ্বন্দ্ব হলে প্রভৃতি। যখন মানুষ আইনি প্রক্রিয়ায় কোন সমস্যার সমাধান খুঁজে না পেয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নেয় তখনই দাঙ্গা দেখা দেয়। বিভিন্ন রকমের দাঙ্গা হতে পারে যেমনঃ police riot, prison riot, race riot, religious riot, Student riots, Urban riots, Sports riots, Food and bread riots প্রভৃতি।



দাঙ্গার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, খ্রিস্টপূর্ব ৪৪ অব্দে জুলিয়াস সিজার(রোম, রোমান প্রজাতন্ত্র)এর হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী সময় দাঙ্গা হওয়ার একটি অসমর্থিত খবর পাওয়া যায়। ৪০ খ্রিষ্টাব্দে রোমান সম্রাজ্জে আরেকটি দাঙ্গার কথা জানা যায়। ৫৩২ খ্রিষ্টাব্দে রোমান সাম্রাজ্যে ইতিহাসের ভয়াবহ দাঙ্গা সংঘটিত হয় যা Nika riots বলে পরিচিত। এই দাঙ্গায় ৩০ হাজারের মত লোক মারা যায়। ১২২৯ সালে ইউনিভার্সিটি অব প্যারিসে ছাত্র দাঙ্গা হয় যার ফলে ২ বছর বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ ছিল। বিংশ শতাব্দীর পূর্বে সংঘটিত কয়েকটি দাঙ্গা হল ১৩৫৫ সালে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড শহরের St. Scholastica riot, ১৫১৭ সালের লন্ডনে সংঘটিত দাঙ্গা যা Evil May Day নামে পরিচিত, রাশিয়ায় মস্কো শহরে ১৬৪৮ সালে সংঘটিত Salt Riot এবং ১৬৬২ সালে সংঘটিত Copper Riot, ১৬৬৮ সালে লন্ডনের Bawdy House Riots, ১৭৪৩ সালের লন্ডন, ইংল্যান্ডে London Gin Riots, ১৮১১ সালে এডিনবার্গ, স্কটল্যান্ডে সংঘটিত – Hogmanay Riot, 1811, আমেরিকার ১৮৬২ সালের San Francisco Union and Confederate-Sympathizers Riots of 1862 San Francisco, California এবং ১৮৭৭ সালের The Dennis Kearney Agitation, Anti Chinese riots অন্যতম।



বিংশ শতাব্দীতে এসে দাঙ্গার ধরণ কিছুটা পাল্টায়। বিশেষ করে আমেরিকা, ইসরাইল, ভারতীয় উপমহাদেশ এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৩৪ সালে আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে U.S. Nazi Riot, তিব্বত ও চায়নায় ১৯৫৯ সালে মে মাসের ১০-১২ তারিখ, তিনদিনে সংঘটিত Tibetan riots against Chinese government, ১৯৬৪ সালের আগস্ট মাসে সংঘটিত তিনটি দাঙ্গা Jersey City 1964 race riot, (আগস্ট ২-৪, নিউজার্সি, আমেরিকা), Elizabeth 1964 race riot, (আগস্ট ১১-১৩, নিউজার্সি, আমেরিকা), Dixmoor 1964 race riot (আগস্ট ১৬-১৭, নিউজার্সি, আমেরিকা), ১৯৬৬ সালের Hong Kong 1966 riots, ১৯৬৭ সালের ২-৪ নভেম্বর আমেরিকায় সংঘটিত Winston-Salem 1967 race riot, ১৯৮২ সালে আমেরিকায় Washington Anti-Klan protest 1982, ও Miami Riot, ১৯৮৩ সালের Polish Pro-Solidarity Riots, ভার্জিনিয়া বীচ, ভার্জিনিয়ায় ১৯৮৯ সালে Greek Fest Riot, ১৯৯০ সালে ভারতে Hyderabad Riots, ১৯৯২ সালে আআমেরিকার শিকাগোতে Chicago Bulls Victory Riots এবং ভারতের Bombay Riots, ১৯৯৬ সালে সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় Yatala Prison Riot, ১৯৯৮ সালে আমেরিকায় Pullman (WSU) Riot, ২০০১ সালে আমেরিকায় Philadelphia Mardi Gras Riots, একই বছর কানাডায় Canada Day Riot, ২০০৪ সালে আমেরিকায় April 5 Haredi Riot At Brooklyn, ২০০৫ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশে Anti-Muslim Riots of Mau, ২০০৬ সালে ভেনিজুয়েলার April 2006 Venezuela prison riot প্রভৃতি ইতিহাসের জঘন্য ও রক্তাক্ত রায়ট তথা দাঙ্গাসমুহ।



আজ বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক সহিংসতা হচ্ছে তাকে কোনমতেই দাঙ্গা বলবেন ন, প্লিজ আমাদের রাজনীতিবিদরা দাঙ্গা বা রায়ট শব্দের ব্যাপকতা এবং নির্মম ভয়াবহতা উপলব্ধি করুণ। তাই দয়া করে যে কোন হামলা-সংঘর্ষকেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার রুপ দিবেন না। আমাদের এই বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। দেশভাগের সময় বা একাত্তরে যা হয়েছে তা ভৌগলিক রাজনীতির কুটিল ষড়যন্ত্র ছিল। আমরা সাধারণ বাঙালি কখনো দাঙ্গা চাইনি, চাই না আর চাইব না কখনো। আজ বিশ্বে যারা মানবতার বুলি কপচায় সেই আমেরিকা আর ইংল্যান্ডে হয়েছে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশী দাঙ্গা, মৃত্যু-যজ্ঞ। যারা এই দেশ দুটির নাম সভ্য আর মানবতার অপরনাম মনে করেন, তারা দাঙ্গার লিংকগুলো ক্লিক করে পড়ে দেখুন। এই বিষয়ে আরও পড়ুনঃ



Click This Link



Click This Link



Click This Link





এই বিষয়ে লেখা চলবে...

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৫৫

দিকভ্রান্ত*পথিক বলেছেন: চালিয়ে যান, শব্দের ব্যাবহারে আমরা ব্যাপকভাবে অসচেতন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.