নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বোকা মানুষের কথায় কিই বা আসে যায়

বোকা মানুষ বলতে চায়

আমি একজন বোকা মানব, সবাই বলে আমার মাথায় কোন ঘিলু নাই। আমি কিছু বলতে নিলেই সবাই থামিয়ে দিয়ে বলে, এই গাধা চুপ কর! তাই আমি ব্লগের সাহায্যে কিছু বলতে চাই। সামু পরিবারে আমার রোল নাম্বারঃ ১৩৩৩৮১

বোকা মানুষ বলতে চায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

পথশিশুদের গল্প

০৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:০১





প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী (রনবী) তাদের নাম রেখেছিলেন টোকাই। তারা পথে পথে ফেলে দেয়া, পরে থাকা বিভিন্ন জিনিষ কুড়োয়। আসলে জীবন যাদের সাথে প্রতারণা করে ছুঁড়ে ফেলেছে জীবনের কণ্টকময় জটিল পথে তারাই পথশিশু। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ যাদের নাম দিয়েছিলেন পথকলি।



এই শিশুদের জীবন কতটা যাতনাময় তা আমরা কয়জনা জানি?

যারা ফুটপাথ ধরে প্রায়ই হাঁটেন তারা দেখবেন ছোট্ট শিশু ফুতপাথের মাটিতে হামাগুড়ি দিচ্ছে। আমি এমনও দেখেছি ফুতপাথের মাটিতে ভাত ফেলে সেই ভাত অবলীলায় খাচ্ছে ছোট্ট ফুটফুটে শিশুটি। হয়ত তার পাশেই পরে আছে মানব বিষ্ঠা যা হয়ত কিছুক্ষণ আগে তারই ত্যাগ করা। এই পরিবেশে বেড়ে উঠছে এই পথশিশুরা। রোদ বৃষ্টি শীত গ্রীষ্ম সব যেখানে একাকার, সেখানে এদের বসবাস।



এই শিশুরা একটু বড় হলে জীবিকার তাড়নায় ছুটে চলে পথ থেকে পথে। আমাদের দৈনিক চলার পথে আমরা দেখি এদের কখনো ফুল, কখনো চকলেট অথবা অন্য কোন পণ্য হাতে ঘুরে বেড়াতে। জীবন এদের মৌলিক সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। ন্যূনতম জৈবিক সুবিধা তারা পাচ্ছে না। এরা জড়িয়ে পরছে নেশার ভয়াল জগতে, জড়াচ্ছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দেয়া তথ্যমতে, বর্তমানের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডর মাঠপর্যায়ের ৭০-৮০ শতাংশ উঠে এসেছে পথশিশুদের থেকে। মেয়ে পথশিশুরা শৈশব থেকেই যৌন হয়রানীর শিকার হচ্ছে, পরবর্তীতে দেহব্যাবসায় জড়িয়ে যাচ্ছে।



এখন আমি আমার কথায় আসি, কেন আজকের এই লেখা। দেখুন, আমি, আপনি যে কেউই কিন্তু হতে পারতাম এই পথশিশুদের একজন। ভাগ্যের কৃপায় আমাদের সেই ভয়াবহ জীবনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় নাই। আমার দেখা অভিজ্ঞতায়, সবাই এই পথশিশুদের এড়িয়ে চলি। কিছুদিন আগে গুলশানে দেখি এক বিদেশিনীর পেছনে ২৫-৩০ জন পথশিশুর একটি দল। আগ্রহ নিয়ে আমিও তাদের পিছু নিলাম। এক সময় এক ফাস্টফুডের দোকানে তিনি থামলেন এবং ভেতরে ঢুকলেন। বাচ্চাগুলোও তার সাথে সাথে দোকানের ভেতরে ঢুকার চেষ্টা করলে গার্ড তাদের আটকে দিল। বিদেশিনী আবার দোকান থেকে বের হয়ে তাদের কি একটা বলে ভেতরে ঢুকলেন এবং কিছুক্ষণ পর দুই হাত ভরে খাবারের প্যাকেট নিয়ে বের হয়ে আসলেন। তারপর তাদের সবাইকে সেগুলো বিতরণ করে ফুটপাথ দিয়ে তাদের সাথে গল্প করতে করতে হাঁটতে লাগলেন। যেন বিদেশ ফেরত এক বন্ধু, দেশে ফিরে সব বন্ধুদের নিয়ে হাঁটতে বের হয়েছে।



আমরা কি পারি না তাদের জন্য কিছু করতে। অনেকে পথশিশুদের জন্য স্কুল খুলে তাদের প্রাথমিক শিক্ষা দিচ্ছেন। কিন্তু বর্তমানের এই কঠিন সময়ে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটধারীরাই চাকুরীর বাজারে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে এই শিক্ষা তাদের কতটা কাজে আসবে? স্কুল শেষে সেইত তারা আগের পরিবেশে ফিরে যাচ্ছে। আমরা যারা বিভিন্ন কর্পোরেট লেভেলে আছি তারা কি পার্টটাইম জব এর ব্যাবস্থা করতে পারি না এদের জন্য। অফিসের ছোটখাটো কাজ যা এদের দিয়ে করানো যেতে পারে, তেমন কাজের ব্যাবস্থা করা এবং এদের জন্য শিক্ষার ব্যাবস্থা করা। আমাদের ক্ষুদ্র সামর্থ্য থেকে আমরা কি একজন পথশিশুর ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য উদ্যোগী হতে পারিনা?



অনেকে আমার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করবেন হয়ত, পক্ষে-বিপক্ষে নানান কথা বলবেন। কিন্তু এতে কি পথশিশুদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হবে? যদি আমরা একটু উদ্যোগী হই তবে হয়ত তাদের ভাগ্যাকাশে আশার আলো দেখা যেতে পারে। অন্যথায় তাদের আর কি হবে, যে তিমিরে আছে সেই তিমিরেই থাকবে। কেননা, “দুঃখে যাদের জীবন গড়া, তাদের আবার দুঃখ কি?”

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:০৭

টোকাই সিকদার বলেছেন: :(

২| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৪২

মুক্তকণ্ঠ বলেছেন: :(

৩| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৪৮

বটের ফল বলেছেন: ভালো বলেছেন। দরকার সদিচ্ছা। আপনাকে ধন্যবাদ।
++++

৪| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:০৬

বোকামন বলেছেন:
যদি আমরা একটু উদ্যোগী হই তবে হয়ত তাদের ভাগ্যাকাশে আশার আলো দেখা যেতে পারে।

অবশ্যই ! আন্তরিকতার সহিত উদ্যোগী হতে হবে।
ভালো থাকুন লেখক।

৫| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:০৬

গোর্কি বলেছেন: আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।
স্পশকাতর লেখায় ভাললাগা জানাই।

৬| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৩৯

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

আমরা অনেক কিছুই করতে পারি কিন্তু করা হয়না। শুধু বিভিন্ন সেমিনারে উচ্চ উচ্চ কথাই বলা হয় আর শিশু দিবস এলে উমুক করা হবে। তুমুক করা হবে এমন কত ধরনের প্রতিশ্রুতি শোনা যায়। তবে দেশের দারিদ্রতা যতদিন না কমবে, পুঁজিবাদী ধ্যান ধারনা থেকে বেড়িয়ে আসতে না পারা যাবে ততদিন এদের এমন পথ শিশুই হয়ে থাকতে হবে। কখনো মরে পরে থাকতে দেখা যাবে ডাস্টবিনে অথবা বড় হয়ে এরাই হবে বড় কোন সন্ত্রাসী । তারপর ক্রসফায়ার পরে একদিন প্রান হারালে আমরাই আবার বাহ বাহ দেব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.