নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বোকা মানুষের কথায় কিই বা আসে যায়

বোকা মানুষ বলতে চায়

আমি একজন বোকা মানব, সবাই বলে আমার মাথায় কোন ঘিলু নাই। আমি কিছু বলতে নিলেই সবাই থামিয়ে দিয়ে বলে, এই গাধা চুপ কর! তাই আমি ব্লগের সাহায্যে কিছু বলতে চাই। সামু পরিবারে আমার রোল নাম্বারঃ ১৩৩৩৮১

বোকা মানুষ বলতে চায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডারউইনের গালাপাগোস এবং আমার বিস্ময়!

২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:১৯





দক্ষিন আমেরিকার সমুদ্র উপকুল হতে আনুমানিক এক হাজার কিলোমিটার পশ্চিমে ইকুয়েডর এর নিকটবর্তী আগ্নেয়শিলা দ্বারা গঠিত ভূমিখণ্ডের দ্বীপগুচ্ছ নিয়ে রহস্যময় যে দ্বীপগুলো পৃথিবীর বুকে দাঁড়িয়ে আছে তাই “গালাপাগোস” নামে পৃথিবীজুড়ে পরিচিত। পানামার প্রথম বিশপ ‘তমাস দ্যা বারলাঙ্গা’ ১৫৩৫ সালে পানামা হতে পেরু যাওয়ার সময় অনেকটা কাকতালীয়ভাবেই সন্ধান পান রহস্যময় দ্বীপপুঞ্জ গালাপাগোসের। তিনি তার সফর শেষে স্পেনের তৎকালীন রাজা পঞ্চম চার্লসকে তার এই আবিস্কারের কথা জানান। তিনি যে রিপোর্টটি জমা দেন তাতে গালাপাগোসকে বর্ণনা করেন বিশাল আকৃতির সব গালাপাগোস কচ্ছপ (যে প্রজাতির কচ্ছপের নামে এই অঞ্চলের নামকরণ করা হয়েছে) আর বোকা পাখির দ্বীপ হিসেবে; যে বোকা পাখিগুলো ঠিকমত উড়তেও শেখেনি এবং যাদের ইচ্ছা করলে খুব সহজেই হাত দিয়ে ছোঁয়া যায়। ১৫৭০ সালের আগ পর্যন্ত পৃথিবীর মানচিত্রে গালাপাগোস এর কোন চিহ্ন ছিল না। ১৫৭০ সালের বিশ্বমানচিত্রে গালাপাগোস সম্পর্কে প্রথম অফিসিয়াল রেকর্ড পাওয়া যায়।







এইচএমএস বিগ্ল রাজকীয় নৌবাহিনীর একটি চেরোকি শ্রেণীর ১০-গানের ব্রিগ-স্লুপ জাহাজ। ১৮২০ সালের ১১ই মে এর যাত্রা শুরু হয় উলউইচ ডকইয়ার্ড থেকে। এইচএমএস বিগ্‌লের দ্বিতীয় অভিযানের সময় এইচএমএস বিগ্ল এই দ্বীপে এসেছিল ক্যাপ্টেন ফিৎজরয়ের নেতৃত্বে যে যাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন চার্লস ডারউইন। তারা দ্বীপে এসে পৌঁছেছিল ১৮৩৫ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর, মূল উদ্দেশ্য ছিল কিছু জরিপ পরিচালনা। ক্যাপ্টেন ফিৎজরয় ও তার তরুণ সঙ্গী জাহাজের প্রকৃতিবিদ চার্লস ডারউইন মূলত চারটি দ্বীপে বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও ভূতাত্ত্বিক জরিপ পরিচালনা করেছিলেন। দ্বীপ চারটি হল চ্যাথাম, চার্লস, অ্যালবেমার্ল এবং জেমস আইল্যান্ড। কাজ শেষে ২০শে অক্টোবর তারা দ্বীপপুঞ্জ ছেড়ে গিয়েছিলেন তাদের বিশ্বভ্রমণ শেষ করার জন্য। এই দ্বীপে এসেই ডারউইন লক্ষ্য করেছিলেন এখানকার মকিংবার্ডগুলো একেক দ্বীপে একেক রকম। বর্তশানে এই পাখিগুলোকে ডারউইনের ফিঞ্চ বলা হয়, যদিও সে সময় ডারউইন মনে করেছিলেন এদের সাথে কোন গভীর সম্পর্ক নেই এবং দ্বীপ অনুযায়ী তাদের আলাদা নামকরণের বিষয়টিও ভ্রমণের সময় তিনি চিন্তা করেননি।







সে সময় ইকুয়েডর প্রজাতন্ত্রের গালাপাগোস প্রদেশের গভর্নর ইংরেজ অভিজাত নিকলাস লসন চার্লস আইল্যান্ডে তাদের সাথে দেখা করেন। ডারউইনের সাথে দেখা হলে তিনি জানান, কচ্ছপও একেক দ্বীপে একেক রকম। দ্বীপপুঞ্জে থাকার শেষ দিনগুলোতে ডারউইন ভাবতে শুরু করেছিলেন, একেক দ্বীপে ফিঞ্চ ও কচ্ছপের এই বৈচিত্র্য প্রজাতির পরিবর্তন সম্পর্কে নতুন ধারণার জন্ম দিতে পারে। ইংল্যান্ডে ফিরে এসে ডারউইন গালাপাগোস সহ ভ্রমণের সময় বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত নমুনাগুলো অভিজ্ঞ জীববিজ্ঞানী ও ভূতত্ত্ববিদদের দ্বারা পরীক্ষা করিয়ে দেখতে পেলেন, গালাপাগোসের ফিঞ্চগুলো বিভিন্ন প্রজাতির এবং দ্বীপ অনুযায়ী তাদের বৈশিষ্ট্য অনেক ভিন্ন। এই তথ্যগুলোই ডারউইনকে তার প্রাকৃতিক নির্বাচন এর মাধ্যমে বিবর্তন প্রমাণের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। এ ধারণা থেকেই তিনি তার সবচেয়ে বিখ্যাত বই অন দি অরিজিন অভ স্পিসিস রচনা করেন যা ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত হয়।







গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জকে নানা কারণেই বলা হয় রহস্যময় অঞ্চল। এখানকার প্রকৃতির আচরণ যেমন বিচিত্র তেমনি অদ্ভুত প্রাণিকুলের ধরন। এ অঞ্চলের প্রকৃতি সব সময় যেন বিচিত্র খেয়ালি হয়ে বিচরণ করে। আকাশ, বাতাস, সাগর, মাটি সবখানেই প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার উদাহরণ জ্যান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের আকাশে প্রায় সময়ই বয়ে চলে প্রচণ্ড হাওয়ার স্রোত। সেখানকার সাগরে এলোমেলো ঢেউ আর খরস্রোতের তাণ্ডব। আবার যখন তখন নেমে আসে চারদিক আঁধার করা কুয়াশা। প্রকৃতির এত্তসব বিপত্তি পেরিয়ে সেখানে জাহাজ চালানো খুব কঠিন ছিল। এসব প্রতিকূল পরিবেশ দেখে প্রাচীনকালের নাবিকরা এ অঞ্চলের নাম দিয়েছিল 'জাদুদ্বীপ' বা 'মায়াদ্বীপ'।







গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের অবস্থান দক্ষিণ আমেরিকার এক হাজার কিলোমিটার পশ্চিমে নিরক্ষরেখা বরাবর। ১৮৩৫ সালে বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন যখন এই রহস্যময় অঞ্চল ভ্রমণে আসেন, এই দ্বীপপুঞ্জে তার পর্যবেক্ষণের ফলে বিবর্তন প্রক্রিয়াকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি নতুন এক তত্ত্ব সংযুক্ত করেন। সেটাকে বলা হয় প্রাকৃতিক চয়নতত্ত্ব। এখানে যেসব প্রাণী বিচরণ করে তাদের দেখে আশ্চর্য হতে হয়। এখানকার উদ্ভিদও বৈচিত্র্যের দিক থেকে অনন্য। সামুদ্রিক পাখিদের বেশ কয়েকটি প্রজাতি কেবল গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জেই দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে আছে গালাপাগোস পেঙ্গুইন, উড়তে অক্ষম করমোরয়ান্ট আর ওয়েভড অ্যালবাট্রস। বিশেষ এই প্রাণীগুলোর দেখা পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যাবে না। তবে যে দুটি প্রাণীর কারণে গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ সবচেয়ে বিখ্যাত তারা হলো টোরটোয়াইজ বা দৈত্যাকার কচ্ছপ আর সামুদ্রিক ইগুয়ানা। মজার ব্যাপার হচ্ছে এখানকার বাসিন্দা প্রাণিকুল মানুষের উপস্থিতিকে মোটেই ভয় পায় না। মানুষ নামের দোপেয়ে জীবটাকে যে একটু ভয় পাওয়া দরকার সে ব্যাপারটাই বোধ হয় ওদের মাথায় ঢোকে না। শুধু জীববৈচিত্র্যই নয়, এখানে প্রাপ্ত বিভিন্ন প্রজাতির গাছের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না। এখানকার ঝঞ্ঝাপূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে গাছ আর প্রাণীগুলো বিচিত্রভাবেই বেড়ে উঠেছে।







সবমিলিয়ে উদ্ভিদ, প্রাণী, পরিবেশসহ নানা ভঙ্গিমার বিজ্ঞানী আর টেলিভিশন চ্যানেলের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থেকেছে এই অঞ্চল। বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন প্রাইভেট ট্র্যাভেল ট্যুরের আয়োজন করছে ট্রিপ টু গালাপাগোস এই রহস্যময় দ্বীপপুঞ্জ ঘুরে দেখার। দশদিনের লাক্সারি ট্রিপে একজনের জন্য খরচ হবে ছয় হাজার ডলার বা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। আমি আজ থেকে টাকা জমানো শুরু করলাম, আমাকে যেতেই হবে প্রকৃতির এই রহস্যমাখা দ্বীপপুঞ্জে। সবশেষে আসুন দেখি কিছু অসম্ভব সুন্দর ছবি এই দ্বীপের প্রাণীকুলের।









































মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২২

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: বাহ! চমৎকার। +।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০৮

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।

যাবেন নাকি "গালাপাগোস"?

২| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কি অপার বিস্ময় প্রকৃতির!!!!!!!


২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০৯

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু, আসলেই অপার বিস্ময়!

পোস্টে আসা এবং কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১১

শাহরিয়ার খান রোজেন বলেছেন: বিষ্ময়।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১৪

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: হ্যাঁ ভাই, আসলেই বিস্ময়। আমি এখন এক ঘোর লাগা জগতে আছি। ততদিন বোধহয় থাকবো যতদিন না এই জায়গায় যেতে পারবো। চর্মচক্ষুতে দেখতে চাই এই অপার বিস্ময়।

৪| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১৪

সুস্মিতা শ্যামা বলেছেন: অদ্ভূত সুন্দর।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১৮

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আসলেই অদ্ভুত! আরও অদ্ভুত এই দ্বীপপুঞ্জের সৃষ্টির ইতিহাস এবং এর অধিবাসী প্রাণীকুলের বিবর্তনের সাথে টিকে থাকার ইতিহাস।

http://www.aboutgalapagos.com/animals/

Click This Link

৫| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৩

ম্যাংগো পিপল বলেছেন: সুন্দর

২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৭

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: হ্যাঁ ভাই, জটিল সুন্দর।

৬| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৫

এম আর ইকবাল বলেছেন:
অর্পূব সুন্দর ।
লেখাও চমৎকার ।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৮

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ ইকবাল ভাই।

৭| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০২

বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা বলেছেন: খুব ভাল লাগলো পোস্টটি। আমি বিবর্তন নিয়ে একটা সিরিজ লিখছি। চাইলে দেখতে পারেন

বিবর্তন ১০১ (কিউ অ্যান্ড এ)

১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৩০

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা, ভালো থাকুন সবসময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.