নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন বোকা মানব, সবাই বলে আমার মাথায় কোন ঘিলু নাই। আমি কিছু বলতে নিলেই সবাই থামিয়ে দিয়ে বলে, এই গাধা চুপ কর! তাই আমি ব্লগের সাহায্যে কিছু বলতে চাই। সামু পরিবারে আমার রোল নাম্বারঃ ১৩৩৩৮১
জমিদার বাড়ি নিয়ে ধারাবাহিক লেখা শুরু করার পর এই বিষয় নিয়ে অল্পবিস্তর ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। উন্নতবিশ্বে যে সকল স্থাপনা হেরিটেজ হিসেবে সংরক্ষিত হয়, আমাদের দেশে সেইসকল স্থাপনা পড়ে থাকে অবহেলায়, ক্ষয়ে যায় অস্থি-মজ্জা সকল, ঘুণে ধরে বিচূর্ণ হয় ইতিহাসের পাতা। অপূর্ব সকল স্থাপনা আর নির্মাণশৈলী নিয়ে আমাদের বাংলাদেশের আনাচে কানাচেতে পড়ে আছে অসংখ্য জমিদার বাড়ি, রাজবাড়ীসহ আরও কত স্থাপনা। আর এই সব স্থাপনার কিছু কথা এই বোকা মানুষটার ছেঁড়া খাতায় লিখে রাখার প্রয়াস হল এই “বাংলার জমিদার বাড়ী” সিরিজ।
"বাংলার জমিদার বাড়ী" - পর্ব ১ (বালিয়াটি জমিদার বাড়ি)
"বাংলার জমিদার বাড়ী" - পর্ব ২ (পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি)
আজ আমরা চোখ বুলাবো “মহেড়া জমিদার বাড়ী” নিয়ে।
টাংগাইল সদর থেকে প্রায় ১৮ মাইল পূর্ব-দক্ষিণে এবং মির্জাপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত মহেড়া জমিদার বাড়ি। ঢাকা হতে আপনি যেতে চাইলে আপনাকে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে টাঙ্গাইলগামী বাসে চেপে নাটিয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড নেমে পড়ুন। সেখান থেকে রিকশা বা অটোরিকশা যে কোনটায় চেপে আপনি পৌঁছে যেতে পারবেন মহেড়া জমিদার বাড়ি। বর্তমানে মহেড়া জমিদার বাড়ি পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে ব্যাবহৃত হচ্ছে বিধায় আপনাকে রিকশাচালককে বলতে হবে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কথা। আপনি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ধরে যাওয়ার সময় পথে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের দিকনির্দেশনা দেখতে পাবেন।
নয়নাভিরাম এই জমিদার বাড়ীর নিভৃত অবস্থানের কোমল শীতল নিরবতা আপনাকে মুগ্ধ করবে। তার সাথে যোগ হবে হরেকরকম দেশী-বিদেশী পুস্প সমারোহ আর সুসজ্জিত বাহারি পাতাবাহার দ্বারা পরিবেষ্টিত ফুলের বাগান। আপনার দৃষ্টি কিছু সময়ের জন্য হলেও থেমে যাবে স্পেনের করডোভা নগরীর আদলে প্রতিষ্ঠিত ভবনসমূহের সম্মুখে দাঁড়িয়ে থেকে। বাগানের চারিধারে দেখতে পাবেন সারি সারি নারিকেল আর সুপারি গাছের সারি।
এক হাজার একশত চুয়াত্তর শতাংশ জমি জুড়ে এই মহেড়া জমিদার বাড়ীর ব্যাপ্তি। সুউচ্চ প্রাচীর ঘেরা মহেড়া জমিদার বাড়ীতে আছে তিনটি বৃহদাকার ভবন আর কাছারি বাড়ী। এই স্থাপনা চারটির নাম মহারাজ লজ, আনন্দ লজ, চৌধুরী লজ এবং কালীচরন লজ। এছাড়া এখানে বিভিন্ন অথিতিশালয়, কর্মচারীদের থাকার কুটির আর প্রার্থনা মন্দির রয়েছে। মহেড়া জমিদার বাড়ীতে প্রবেশের জন্য দুটি সুরম্য গেট রয়েছে যেগুলো দিয়ে প্রবেশ করে সামনেই পড়বে এক বিশাল দীঘি, নাম – বিশাখা সাগর। দীঘির ওপাশে ভবনগুলো দাঁড়িয়ে আছে, ভবন গুলো আর বিশাখা সাগর এর মাঝখানে রাস্তার পাশে কয়েকটা উঁচু গোল কারুকার্যময় স্তম্ভ। জমিদারদের সুবিশাল কর্মকান্ডের অফিস ব্যবস্থাপনার জন্য গড়ে উঠেছিল নায়েব ভবন, কাছারি ভবন প্রভৃতি স্থাপনা। তিন কক্ষ বিশিষ্ট নায়েব ভবন চমৎকার নির্মাণ শৈলীতে গড়া। তিন কক্ষ বিশিষ্ট কাছারি ভবনের স্থাপত্য শৈলীও প্রাণ জুড়ায়। অপর গোমস্তা ভবনও সুপ্রাচীন স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত। কালীচরণ লজের সামনে বেশ বড় একটা খোলা মাঠ রয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞের মতে ভবনগুলোর নির্মাণ শৈলি রোমান, মোঘল, সিন্দু খেকুদের সাথে মিল রয়েছে। চুন-শূরকী আর ইটের সমন্বয়ে ভবনগুলোর কারুকাজ আপনার মন ছুঁয়ে যাবে নিঃসন্দেহে।
ইতিহাস পর্যালোচনা করে জানা যায়, কালিচরণ সাহা ও আনন্দ সাহা নামের দুই সহোদর কলকাতা থেকে মহেরা গ্রামে এসে এই সুবিশাল বাড়িটি নির্মাণ করেন। তাদের আদি ব্যাবসা ছিল কলকাতায়, ডালের ব্যাবসা। তারা এখানে আবাস গড়ার পর গরীব গ্রামবাসীর কাছে টাকা দাদন খাটিয়ে বিশাল বিত্ত-বৈভবের মালিক বনে যান। অত্যাচার আর দাদনের সুযোগে তাদের জমি ও বিত্ত-বৈভব দিন দিন বাড়তে থাকে। পরবর্তিতে বৃটিশ সরকার জমিদার প্রথা চালু করলে কালীচরণ সাহা ও আনন্দ সাহার পুত্ররা করটিয়ার ২৪ পরগনার জমিদারদের নিকট থেকে একটি অংশ বিপুল অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করে নেন। শুরু হয় জমিদারী শাসন ও শোষন। কালীচরণ সাহা ও আনন্দমোহন সাহার উত্তরাধিকারী রাজেন্দ্র রায় চৌধুরী পর্যায় ক্রমে জমিদারী পরিচালনা করেন। পরবর্তীতে অবশ্য এসব শাসকগণ এলাকায় বিদ্যালয়, রাস্তা ঘাট, পানির ব্যবস্থা সহ অনেক জনকল্যানমূলক কাজ করেন।
বৃটিশ শাসনের শেষের দিকে জমিদার শাসন বাতিল হয় এবং পরবর্তিতে ১৯৪৭ সালে দেশ বিভগের পর জমিদারদের অধিকাংশই ভারতে চলে যান। অবশিষ্ট যারা ছিলেন তারাও ১৯৭১ সালে স্বধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে হানাদার বাহিনীর নির্মম শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত এই অপরুপ নির্মাণ শৈলি পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তৎকালীন রাষ্টপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মান্নান পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। বর্তমানে ভবনগুলো সংস্কার করা হয়েছে। ভবনগুলোর সৌন্দর্য রক্ষায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে এই স্থাপনাগুলোকে অতিসত্ত্বর হস্তান্তর করা জরুরী।
মনোরম পরিবেশের ঐতিহ্যবাহী এ জমিদার বাড়িকে কেন্দ্র করে পর্যটক আকৃষ্ট করতে নেই তেমন কোনো প্রচারণা। মহেড়া জমিদার বাড়ির কথা অনেকে জানেন না। অথচ ঢাকার খুব কাছে সুন্দর একটা স্থাপনা। জায়গাটা বেড়ানো কিংবা পিকনিকের জন্য একটা চমৎকার স্থান। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখানে বেড়াতে যেতে পারেন, কাটিয়ে আসতে পারেন কিছুটা সময় ইতিহাসের ভেলায়, সাথে পাশে পাবেন প্রকৃতির নির্মল ছোঁয়া।
এই জমিদার বাড়ী নিয়ে সিনিয়র ব্লগার জোবায়ের ভাইয়ের একটি লেখা দেখলাম, আপনারাও লেখাটি দেখতে পারেনঃ মহেড়া জমিদার বাড়ী
info courtesy:
দৈনিক ডেসটিনি
টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৮
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ।
সাথে থাকুন...... এই সিরিজ চলবে...... প্রথম কিস্তিতে টার্গেট ১০০টা জমিদার বাড়ী।
২| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৮
মামুন রশিদ বলেছেন: উপনিবেশিক আমলের ইউরোপীয় ঘরানার চমৎকার স্থাপত্য নিদর্শন হিসেবে বাড়িটি নিঃসন্দেহে অতুলনীয় ।
নাইস পোস্ট ।
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৯
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন ভাই পোস্টে এসে সঙ্গ দেয়ার জন্য।
আগামী পর্বগুলোতেও দাওয়াত রইল।
৩| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩২
আদনান শাহ্িরয়ার বলেছেন: দারুন কাজ শুরু করেছেন । শুভেচ্ছা আর শুভকামনা থাকলো!
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২২
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ, আদনান শাহ্িরয়ার ভাই। আগামী পর্বগুলোতেও দাওয়াত রইল।
৪| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪১
সাজিদ ঢাকা বলেছেন: পোষ্টে +++
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৫
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সাজিদ আপনাকে।
আশা করি আগামী পর্বগুলোতেও সাত্থে পাব।
৫| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৮
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: চালিয়ে যান ।
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৬
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: চলবে......... ইনশাল্লাহ। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
৬| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৮
মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: জমিদারবাড়ির পোস্টে সাধুবাদ।
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২০
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: সাধুবাদে......... ধন্যবাদ।
৭| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৫:০৩
স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট++++
প্রিয়তে...
সিরিজের সাথেই আছি
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:১৬
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ, স্নিগ্ধ শোভন।
"তোমরা যে সাথে আছো তাই, আমি ব্লগে লিখে যাই........."
৮| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৯
গৃহ বন্দিনী বলেছেন: নাইস পোস্ট ।
পর্যটকদের কি ভেতরে ঢুকতে দেয় ঘুরে দেখার জন্য ?
৩০ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩৭
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: যতদুর জানি কিছু রেস্টিকটেড এরিয়া ছাড়া অবাধ বিচরণ রয়েছে।
আরেকটি মজার কথা, সদ্য গত হওয়া শুক্রবার রাতে বিটিভিতে প্রচারিত ম্যাগাজিন "ইত্যাদি" শুটিং হয়েছে এই জমিদার বাড়িতে।
৯| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫৯
গৃহ বন্দিনী বলেছেন: জি ইত্যাদিতে ফিচারটা দেখেই এখানে যাওয়ার আগ্রহ বোধ করছি ।
আমি জানতে চাচ্ছিলাম যে জমিদার বাড়ির ভেতরটা ঘুরে দেখা যায় কিনা নাকি শুধু বাইরে থেকেই দেখতে দেয়?
এখন পর্যন্ত কোন জমিদার বাড়ি সচোক্ষে দেখা হয় নি, মহেড়া জমিদার বাড়ি আউট লুক দেখে খুব যেতে ইচ্ছা করছে।
১০| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:১৪
মাদিহা মৌ বলেছেন: এটায় গিয়েছি। এখন তো সব গুলি ভবন সাদা রং করে ফেলছে …
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩৫
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, তাই একেক সময় ইচ্ছে মত একেক রঙ করে। সংরক্ষণ যে হচ্ছে এটাই তো বেশী, অরিজিন্যাল রঙ বা স্ট্রাকচার নষ্ট হলেই বা কি?
ভাল থাকুন সবসময়। শুভকামনা।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৬
নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: সুন্দর পোস্ট , ভালো থাকুন । আরও পোস্ট চাই ।