নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্যথার মৃত্যু নেই, ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে।

স্ব জীব (হাসান মেহেদী)

বেদে পাড়ার সাপ গুলো হাঁটতে জানে।ওখানে মানুষের চেয়ে সাপ বেশি।দুঃখও খুব সস্তা।পালতোলা নৌকা,নৌকা ভর্তী দুঃখ,সেই নৌকা তীর খোজে।নৌকায় চুলা সমেত ভাতের হাড়ি। মানুষগুলোর শরীরে সাপের সুগন্ধি। মানুষ না,ওরা বেদুঈন ওরা সাপ।কয়েকটা সাপ গান গায়,আমার হিংসে হয়।

স্ব জীব (হাসান মেহেদী) › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমুদ্র বাজি

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৭

শেষমেশ,
আমার বাঁচোখ বাজি রেখেছি জুয়ার আসরে।
এবং
যখন হেরে যাচ্ছিলাম,
তখন
নিরুপায় হয়ে বাঁচোখ বাঁচাতে আমি ডানচোখও বাজি রাখলাম।
যখন বুঝে ফেললাম,
জুয়ায় হেরে যাচ্ছি,
অর্থাৎ
চোখ দিয়েই দেখছি দুটি চোখের নির্মম পরিণতি,
বিষণ্ণতা চোখ গলে বেড়িয়ে পড়লো আমার।

আমি কাঁদছিলাম,
আর বলছিলাম,
মা'কে একটু দেখবো শেষবারের মত।
মা বলতে,
দৃষ্টিশক্তি মরে যাওয়া এক বৃদ্ধার কথা,
যিনি কিনা জুবুথুবু হয়ে বসে ইশ্বরের মৃত্যু কামনা করেন।

রাজি হলো না, জানেন!
মানুষ এতটা নিষ্ঠুর হয় কি করে জানা নেই।
উল্টো তাড়া দিলো,
আর নিজ কন্যার অন্ধত্বের কথা বলে চেঁচিয়ে উঠলো।

অপারেশন থিয়েটারে কনকনে ঠান্ডা,
জানলা নেই। জানলা না থাকাটাই বোধহয় নিয়ম। যদিও জানলাই একটা বদ্ধ রুমের চোখ।
আমার চোখ দুটো যে সুন্দর, চোখের ভেতরও যে সমুদ্র থাকে,
সে কথা জানতাম না আমি,
নওরীণই প্রথম বলেছিলো।
সেতো দুযুগ আগেকার কথা, কলেজের ব্যালকনিতে।

নওরীণ,
এখন কোথায় জানা নেই,
কাজল দেয় কি চোখে!
খিলখিল করে কি হেসে উঠে!
কান্না পেলে কি কামড়ে ধরে নিজের আঙ্গুল!
হায়! কিসব ভাবছি!

আমার চোখ দুটো নিয়ে যাওয়া হবে কিছুক্ষণ পর,
একটি কিশোরী সে চোখ দিয়ে সমুদ্র দেখবে, দেখবে বৃষ্টি এমনকি স্বর্গের বিভৎসতাও।
আচ্ছা, সে কি কখনো অন্ধকার আকাশে এ্যারোপ্লেনের লালনীলবেগুনী বাতির মিটমিট করা চোখ টিপুনি দেখে,
বিষণ্ণ হয়ে উঠবে!
কিংবা কখনো কি মুখোমুখি হবে নওরীণের, যে কিনা কিশোরিকে বলবে- তোমার চোখে সমুদ্রঝড়।

অপারেশন শেষে বাড়ি ফিরে মায়ের পাশে বসে চেঁচিয়ে জানতে চাইবো,
কিরে জগলু কয়টা বাজেরে!
এখন কি দুপুর! জগলু! এই জগলু! কোথায় গেলি, হারামজাদা!

মাস্ক মুখে, এ্যাপ্রোন পরিহিত চিকিৎসক,
দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে ছিলেন চোখাচোখি, কাঁপাকাঁপা আদুরে কন্ঠে জানতে চাইলেন, আমি প্রস্তুত কিনা।
মৃদু হাসলাম, মারাত্মক রসিকতা ছাড়া আর কিছুই মনে হলো না আমার।

একজন নার্স, একটি ইঞ্জেকশন পুশ করলেন।
এবং তৎখনাৎ আমি একটি ঘোরে প্রবেশ করলাম, নিউরন গুলো নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসক আমার দিকে তাকিয়ে আছে সমুদ্রসজল চোখে।

আমি আলতো স্বরে জিজ্ঞেস করলাম,
ডাঃ আপনার নাম কি?
ততক্ষণে আমার চোখের পাতা বুঝে গেলো,
ভাসাভাসা শব্দে শুনতে পেলাম, ডাঃ বলছে, আমি নওরীণ।

কি আশ্চর্য! মারাত্মক রসিকতাও ছাড়া আর কিছুই মনে হলো না আমার।

সেপ্টেম্বর, ২০১৬।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.