নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলা আমার, আমি বাংলার

মস্টার মাইন্ড

আশাবাদী মানুষ আমি, মৃত্যুর সাথে সাক্ষাত না হউয়া পর্যন্ত আশা ছাড়ব না। একটা সুন্দর, সাজানো গোছানো নিরাপদ দেশ.....

মস্টার মাইন্ড › বিস্তারিত পোস্টঃ

লজ্জা বলে একটা শব্দ অভিধানে আছে না.....

১৮ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৫৪

এ্যা ভাই ঐ শাড়িটার দাম কতো?
:- এইটার নাম কিরনমালা। সুতি, জর্জেট আর জিন্সের মিক্সারে তৈরী, জাফলংয়ের পাথরের কাজ করা। খাঁটি ইন্ডিয়ান ভাই... হুঁ
:- পাথর দিয়া কি ঘর বানামু মিয়া? দাম বলেন?
:- ৩৪৯৯০ টাকা, ফিক্সড প্রাইজ !
:- এ্যা এতো দাম কেন মিয়া হুঁ? এই দামে তো বড়সড় একটা গরু কিনা যাইবো, হুঁ...?
:- তাইলে এইখানে কি? যান গরুর হাটে যান বড় দেখে গরু কিনে ওইটার চামড়া দিয়া শাড়ি বানাইয়া বউরে পিন্দান। আসছে শাড়ি কিনতে.....


অনেক্ষন ঘুরাঘুরি করার পরেও বউয়ের জন্য শাড়ি কিনতে পারলেন না আব্দুল বাক্বী। এইদিকে মাগরিবের আজানের সময় হয়ে গিয়েছে । আব্দুল বাক্বী ভাবলেন, ইফতার করে আবার মার্কেটের ভিতরে যাবেন। রাস্তার পাশে একটা রেস্টুরেন্টে ঢোকে ওয়েটার কে বললেন....

এ্যা ভাই এই ইফতারির প্লেট কতো?
:- পানি ২৫, প্লেট ১৮০।
:- কি বলেন মিয়া? দুইটা মুড়ি, আলু আর জিলাপি দিয়া ১৮০? পানি তো ১৫ টাকা , হুঁ? এই দামে তো দেড় কেজি মুরগী কিনা যাবে হে?
:- যান মুরগী কিইন্যা, কাঁচা খাইয়া ফালান এইখানে কি? আসছে ইফতার খাইতে...

অতঃপর উনি একটা পানির বোতল কিনে টাকা দেয়ার জন্য পকেটে হাত দিয়ে হকচকিয়ে গেলেন !
:- ও ভাই পানির টাকা দেন তাত্তাড়ি?
:- ভাই আমার মানিব্যাগ তো হারাইয়া ফেলছি ভাই ! নাকি চুরি হয়ে গেল?
:- দেন বোতল দেন। ওই যে সিটি কর্পোরেশন এর মাগনা পানি ওইটা খান গিয়া মিয়া। আসছে মিনারেল খাইতে....


....আব্দুল বাক্বী হাঁটছেন..... গেল ঈদে বউকে শাড়ি কিনে দেয়া হয় নাই, নিজে হসপিটালে ভর্তি ছিলেন ২ সপ্তাহ, হসপিটালের খরচ দিয়েই ফুড়ুৎ আর ঈদ? বউ বলেছিল এইবার একটা শাড়ি দিলেই হবে..... না দিলেও হবে।

তিনি বলেছিলেন, " আরে কও কি বউ? একটা শাড়িই তো চাইছ? আর কি কি লাগবো কও?
বেতন আর বোনাস মিলে ১৪ হাজার পেয়ে, মা আর ছোট ভাই-বোনদের জন্য দিলেন ৫ হাজার টাকা। ৫ হাজার টাকা নিয়ে বের হয়েছিলেন নিজের আর বউয়ের কাপড়ের জন্য....

....উনি দেখলেন সাদা গাড়িওয়ালা লোকটা একটা ভিক্ষুককে ৫০ টাকার নোট দিলেন।
উনি এই দুই শ্রেণীর কোনটায় পড়েন না। না দিতে না চাইতে পারেন ভিক্ষা !


আব্দুল বাক্বী এখন খুব দ্রুত হাঁটছেন। উনার নিজের উপরেই নিজের খুব লজ্জা হচ্ছে। খুব কাঁদতে ইচ্ছা করছে।

না নিজের জন্য নয় বউটার জন্য। যে অপেক্ষায় আছে একটি শাড়ির..... না দিলেও হয় কিন্তু লজ্জা নামের একটা শব্দ অভিধানে যে আছে?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.