নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি পাগল।আমি ভাল হতে চাই তাদের মতো যারা সমাজে অনাচার হওয়া দেখে ও রাতে সুখের ঘুম ঘুমাতে পারে....

কবি এবং হিমু

কবি এবং হিমু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার সোনার বাংলা এবং একজন পাগল বন্ধু........

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩১

আজ আমার এক বন্ধুর কথা শুনাবো।এক পাগল বন্ধুর কথা।কলেজের প্রথম দিনই তার সাথে পরিচয়।দুজনের ডাক নামটা একই ছিল বলে হয়ত বন্ধুত্বটা সহজেই হয়েছিল।তখন কি বুঝতে পেরেছিলাম সেই হবে আমার সব থেকে ভাল বন্ধু।ছাএ হিসেবে ভালই ছিল আবার কিছুটা পাগলও।তার কিছু পাগলামি‍ আজ সবার সাথে শেয়ার করবো বলেই লিখতে বসেছি।
এক দিন কলেজে লোকাল পএিকার এক সাংবাদিক এল।আসছে মহান ভাষা দিবস নিয়ে এ প্রজন্মের কি চিন্তা ভাবনা তাই সে তুলে ধরবে তার পএিকায়।আমার বন্ধুটিকে যখন প্রশ্ন করলো আপনার কি ভাবনা।সে উওরে বলল,আমার কোন ভাবনা নেই।রাতের বেলা অন্যর বাগানের ফুল চুরি করে শহীদের সম্মান জানাতে আমি শহীদ মিনারে কখনও যায়নি।আমি ছাএ তাই ১০টাকা দিয়ে ফুল কেনার মতো সাহস ও দেখাইনি।সাংবাদিকসহ আমরা সবাই অবাক।বলে কি পাগলটা।
কলেজ বন্ধ হলে যখন সিলেট থেকে আমরা পারাবতে করে বাড়ি ফিরতাম।সেদিন সে সকালে এসে হাজির হতো টিকেট কাটার জন্য।টিকেট না কেটে সে কখন ও ট্রেনে চড়েনি।কতবার আমি তাকে না করেছি টিকেট কাটতে।ছাএ ছিলাম বলে ট্রেনে বা বাসে মাগনা বা হাফ ভাড়া দিয়েই চালিয়ে নিতাম।আমি তাকে অনেক বার প্রশ্ন করেছি কি হয় টিকেট না কাটলে?প্রতিবার উওরে সে মুঁচকি হেসেছে।
আমরা বন্ধুরা মাঝে মাঝে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়তাম।কোন কাজ নাই।সারাদিন বাইকে চড়া।বিশ্বরোডে এলেই টোল দেবার ভয়ে পাশের চিপা রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যেতাম।কেবল যে আমরা ফাকি দিতাম তা না।অনেক সিএনজি ও দেখেছি এই রাস্তায় পালিয়ে যেতে।কিন্তু আমার বন্ধুটি,টোল জমা করে তারপর আমাদের সাথে এসে মিলিত হতো।আমরা হাসতাম তার পাগলামী দেখে।
তাকে কখনও রাজনীতি নিয়ে আলাপ করতে দেখিনি কিংবা কোন দলের সাথে জড়িত হতে।সে ছিল তারমতো।কোন কাজে তাকে নিয়ম ভাঙ্গতে দেখিনি।সে ছিল আমার সব থেকে আপন,আমার পাগল বন্ধু।
একদিন স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে সে লন্ডন পাড়ি জমালো।আমি ও জীবনের সাথে তাল মিলাতে চলে আসলাম দেশের বাইরে।তারপর থেকে ফেসবুক আর স্কাইপ দিয়েই যোগাযোগ।
কিছুদিন আগে মধ্যরাতে মোবাইল ফোনটা হঠাৎ করে চিৎকার করে উঠে।মোবাইলের শব্দে বুকটা কাপতে থাকে।দেশ থেকে কোন খারাপ খবর আসলো না তো।মোবাইল স্কিনে তার নাম্বারটা ভেসে উঠল।রিসিভ করতেই বলল স্কাইপ এ আয় অনেক কথা আছে।প্রিয় বন্ধু বলে কথা।আর আমি তাকে ভাল করেই চিনি তাই কথা না বারিয়ে স্কাইপ অন করলাম।আমার আর আমার পাগল বন্ধুটির আলাপচারিতা ।
রাগ করেছিস?এতো রাতে ঘুম থেকে জাগালাম বলে।
না।কি বলবি,বল।তুই কি কাঁদছিস?
হাঁ।মনের মাঝে আজ অনেক কষ্ট।
কি হয়েছে তোর?বাড়ীর সবাই ভাল তো?
সবাই ভাল।কিছু কথা বলব।মন দিয়ে শোন।
অন্যর বাগানের ফুল চুরি করে শহীদ মিনারে কোন দিন যাইনি।কারন জানতাম সকালেই বাগানের মালিক গালাগালি দিতো শহীদ দিবস নিয়ে।তাই কোনদিন চাইনি শহীদদের গালি শোনাতে।
বিশ্বরোড পাড়ি দেবার সময় নিয়মিত টোল দিয়েছি।মনে মনে ভাবতাম এই টোলের টাকা দিয়ে সরকার আরেকটি বিশ্বরোড বানাবে।
ট্রেনের টিকেট না কেটে ট্রেনে উঠিনি কোনদিন।মনে করতাম এই টাকা দিয়েই তো আবার নতুন কোন রেললাইন তৈরি হবে।একটা দেশের যোগাযোগ যত উন্নত ততই তাড়াতাড়ি দেশটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে উঠে।
কিন্তু না।আমার সেদিনের সেই চিন্তা ভূল ছিল।আমি আসলেই পাগল ছিলাম।
যখন পএিকায় পড়ি বা খবরে শুনি একজন মানুষের কারনে পদ্মা সেতুর ঋণ বন্ধ হয়ে যায়।আবার সেই মানুষটিই পরে দেশপ্রেমিক উপাধী পায় তখন নিজেকে পাগল মনে হয়।
টাকার বস্তাসহ যখন রেল বিভাগের মানুষ ধরা খায় আবার তারাই যখন গাড়ীতে বাংলাদেশের পতাকা লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায় তখন কষ্ট লাগে।আসলেই আমি একটা পাগল ছিলাম।
দেশে নাকি আন্দোলন হচ্ছে।সরকার পতনের আন্দোলন।প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে।তুই কি বলতে পারিস যে যুবকটি আজ দেশের কথা চিন্তা করে দেশটাকে ভালবেসে প্রান দিল।তার এই প্রানের বিনিময়ে কি আমরা পারবো একটা দেশপ্রেমিক সরকার বা দেশ প্রেমিক একটি মন্ত্রীসভা বানাতে।নাকি আবার ও কোন ভন্ড দেশপ্রেমিক দায়িত্ব নিবে দেশটা চালানোর।
আজ আমার অনেক কষ্ট।নিজের দেশের মানুষকে গুলি করে মারার নাম কি দেশপ্রেম?
অন্যর জীবনের বিনিময়ে ক্ষমতায় যাবার নাম কি দেশপ্রেম?
পদ্মা সেতুর টাকা রেলের টাকা চুরি করে খাবার নাম কি দেশপ্রেম?
আজ আমার অনেক কষ্ট।কষ্টটা আরও বেড়ে যায় যখন মনে হয় আমার কাটা টিকেটের টাকাটা,টোল দেবার টাকাটা দেশের কোন কাজে লাগেনি বরং সেই টাকাটা চুরি হয়েছে।তার মানে আমি ও কি তাকে চুরিতে সাহায্য করেছি।
আমি ও আমার বন্ধুর সাথে পাল্লা দিয়ে কাঁদছি।আর প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলছি।আসলেই তো দেশপ্রেমিক কাকে বলে।সেই সব ভন্ড নেতাগুলোকে যারা চুরি করে ও দেশপ্রেমিক উপাধী পায় নাকি আমার পাগল বন্ধুটির মতো দেশের আমজনতা।যারা টিকেট কেটে ট্রেনে চলে,টোল বা কর ফাঁকি দেয় না।নিজের প্রিয় ভাইয়ের লাশে পা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায় না।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:

"যখন পএিকায় পড়ি বা খবরে শুনি একজন মানুষের কারনে পদ্মা সেতুর অনুদান বন্ধ হয়ে যায়।আবার সেই মানুষটিই পরে দেশপ্রেমিক উপাধী পায় তখন নিজেকে পাগল মনে হয়। "

পদ্মাসেতু অনুদানে হওয়ার কথা ছিল না, হওয়ার কথা ঋণে; কি লেখেন এগুলো?

২| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯

কবি এবং হিমু বলেছেন: ধন্যবাদ ভূলটা দেখিয়ে দেবার জন্য।নতুন তো তাই ভূল হতেই পারে।আর যারা বুড়া তাদের উচিত ভূলগুলো দেখিয়ে দেওয়া :P

৩| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:

এগুলো ভুল নয়, ভাবনার দীনতা।

৪| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১৬

কবি এবং হিমু বলেছেন: কি আর করার।তাও তো কিছু নিজের মতো করে লিখছি অন্যর লেখা তো আর চুরি করি নাই।এ ব্লগে তো কয়েকজনকেই দেখলাম অন্যর লেখাটা নিজের বলে চালিয়ে দিতে।আমরা টা ভাবনার দীনতা মেনে নিলাম।তাদেরটাকে কি বলবেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.