![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত বছরের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে কি হতে পারত? ‘দ্বিজাতি তত্ত্বের’ ভিত্তিতে সৃষ্ট ধর্মীয় রাষ্ট্র পাকিস্তান বরাবরই নির্বাচনের ব্যাপারে অনীহা থেকেছে। এর বিপরীতে পাকিস্তানের গর্ভ থেকে বাংলাদেশের রক্তাক্ত অভ্যুদয়ের মূলে আছে গণতান্ত্রিক নির্বাচন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৭০-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালিদের বিজয়ের পর ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ছিল মূলত গণতন্ত্রের বিজয়। বাঙালিদের এই বিজয় পাকিস্তানিদের নিকট এবং বাংলাদেশে পাকিস্তানপন্থিদের নিকট পছন্দ নয়। এ কারণে তারা ১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা তাদের জন্য সুসংবাদ বয়ে এনেছে। কৃত্রিম জন্মদিন পালন এর একটি উদাহরণ। তারা ছিল এই রক্তাক্ত, বিয়োগান্তক ও অগণতান্ত্রিক পরিবর্তনের বেনিফিশিয়ারি। পঁচাত্তরে বাঙালির জাতীয় জীবনের শোক যাদের কাছে আনন্দের বার্তা বয়ে এনেছিল, সেই শক্তিটিই মূলত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কট করে প্রতিহত করতে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সংঘটিত করছিল। এভাবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন মূলত ‘একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল রাজনৈতিক শক্তি’ এবং ‘পঁচাত্তরের বিয়োগান্তক পরিবর্তনের বেনিফিশিয়ারিদের’ মধ্যে মতাদর্শগত লড়াইয়ের একটি ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ একটি ক্ষেত্র হিসেবে দেখা দিয়েছিল। পঁচাত্তরের বিয়োগান্তক পরিবর্তনের বেনিফিশিয়ারি গোষ্ঠী মূলত তারাই, যারা একাত্তরে পাকিস্তানের পরাজয়ে ক্ষুব্ধ ছিল এবং এখনো আছে। তারা বাংলাদেশের পাকিস্তানিকরণ চায়, অর্থাৎ পাকিস্তানি স্টাইলে বাংলাদেশকে পরিচালিত করতে চায়। এজন্য তাদের আছে সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে বিভ্রান্ত করতেও তারা সদা তৎপর। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার পাশাপাশি তাই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠান ছিল বাংলাদেশকে পাকিস্তানিকরণের বিরুদ্ধে একটি সুদৃঢ় পদক্ষেপ। পাকিস্তান রাষ্ট্রটি যে ধর্মীয় জঙ্গিবাদের উর্বরভূমিতে পরিণত হয়েছে এবং কোনো ধরনের পদক্ষেপ দ্বারাই তা রোধ করা যাচ্ছে না। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বাংলাদেশের বিজয় দিবসের লগ্নে উত্তর পশ্চিম পাকিস্তানের পেশওয়ারে সামরিক বাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে হিংস্র পশুর মতো ৭ জন তালেবান জঙ্গি হামলা করে। ফলে মুহূর্তের মধ্যে ১৩২ জন শিক্ষার্থীসহ ১৪৮ জন নিহত হয়। এই হামলায় সভ্য দুনিয়া স্তম্ভিত হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ ধর্মীয় জঙ্গি সংগঠনগুলোর দ্বারা পরিচালিত ধ্বংসাত্মক তৎপরতায় জর্জরিত। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে এই সংকটাকীর্ণ পরিস্থিতি আরো চলতে থাকত। এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন যাতে হতে না হয়, তার জন্যও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল অনিবার্য।
©somewhere in net ltd.