![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখা টা আমার মনের খাদ্য, আপনার নিকট আমার লেখা মানেই অখাদ্য, আমন্ত্রণ অখাদ্য ব্লগে, ধন্যবাদ অখাদ্য পড়ার জন্য
শুনশাননীরবতা, প্রীতল শশানের পাশ
দিয়ে হাটছে, আগে একটা বাশেঁর সাকু ছিলএইখানে, অবলিলায় ছোট এই খাল টা পার
হওয়া যেত, কোনো এক
কালবৈশাখী ঝড়ে সে সাকুরা ভেঙ্গে পরে,
এখন শশান এর শেষ প্রান্তে একটা নৌ ঘাট
আছে, আর সেটা দিয়ে পার
হতে হবে প্রীতল কে, আজ দুই তারিখ,
এগারো বছর আগের এই দিনটাই
প্রীতলের জীবনী বদলে দেবার
দিন, এই দিনেই ধর্ষিত আদৃতা খুন হয়েছিল ধর্ষক
দের হাতে, মহাপুরুষ দের কাজ থাকেনা,
এরা হটাৎ ব্যাস্ত হয়ে পড়ে, প্রীতল
বুঝতে পারছেনা কিছুই, কোনো পুর্ব
পরিকল্পনা ছাড়াই প্রীতল আজ শকুন্তলায়, হটাৎ কাল
রাতে প্রচন্ড জ্বর আসে প্রীতলের,
আদৃতা ও এসেছিল প্রীতলের কাছে,
সেলে তখনো প্রীতল, আদৃতা এসেই
প্রীতলের গায়ে হাত দিয়ে জ্বর মাপার
চেষ্টা করেছে, অনেকক্ষণ
পাশে বসে ছিল, আর একাই বলছিল তোমার খুব
জ্বর, আমি কিছুই করতে পারছিনা, কাল
তুমি বন্দী কারাগারে আর থাকবেনা,
দয়া করে কাল শকুন্তলায় যেও, কাল আমার
এগারো তম মৃত্যু দিবস, প্রীতল এই
এগারো টা বছর এই
দিনে এখানে এসেছে, কোথাও
কোনো শকুন শকুনিরা নেই, শুধু
একটা বাচ্চা শকুন এই
দিনে এইখানে বসে থাকে, গ্রামবাসীর
কথায় আর কখনোই কোনো শকুন
এইখানে আসেনা, সে বছর আদৃতার মরনের
পর থেইকা এই এলাকায় কোনো শকুনের
দেখা মেলেনায়, প্রীতল যেদিন
আসে শুধু সেদিন ই নাকি এই বাচ্চা শকুনটার
দেখা মেলে, আদৃতার
ইচ্ছা অনুযায়ী প্রীতল এই দিনে রাত দেড়
টা পর্যন্ত থাকে, তারপর চলে যায়, অই শকুন
টা প্রীতলের সাথে যেতে থাকে,
গভীর রাতে হেটে যায় প্রীতল
সাথে শকুনের বাচ্চা, হটাৎ কোনো এক
জায়গায় এসে হারিয়ে যায় শকুন টি, প্রীতল গত
এগারো বছরে সে জায়গার হদিস
মিলাতে পারেনি
আজকের রাতটা মেঘাচ্ছন্ন, শশানের পাশ
দিয়ে হেটে আসার সময়ে পরিচ্ছন্ন পথ ছিল,
অর্ধবৃত্তাকার চাদ ছিল, কিন্তু শকুন্তলায় আসার পর
থেকে চাদ তো নয় কোনো তারাও
নিয়ে, স্যাটেলাইটের উজ্জল
আলোকচ্ছটা ও নেই, আজ এখনো শকুন
আসেনি, কিন্তু এই দিনে তো দুপুরের পর
থেকেই শকুনের থাকার কথা, আজকের হিসাব
মিলছে না কিছুতেই, সব কিছুতেই কেমন
যেন একটা অন্যরকম কিছুর সম্পর্ক রয়েছে,
মহাপুরুষ হবার পথে অগ্রগামী প্রীতলের
সে ব্যাপারে কোনো কৌতুহল ও নেই,
যেখানে এতদিনের অদৃশ্য ফিসফিস
কন্ঠস্বরের আদৃতা কাল
রাতে এবারো থেবড়ো দেহ আর ভরাট
মেয়েলি কন্ঠ নিয়ে আসার পরেও সে ছিল
নির্বিকার।
এই মুহুর্তে বাবার একটা কথা মনে পড়ে যায়,
বাবা বলতেন কখনোই
কোনো কিছুতে বিচলিত হওয়া ঠিক না,
সেটা সাধারণ পুরুষের সাজায়েছে মহাপুরুষের
না, যদি ও আমরা কেউ সত্যিকারের মহাপুরুষ নই,
তথাপি কোনো কারনে বিচলিত হইলেও
কাউকে বুঝতে দিওনা, এটা মহাপুরুষ হবার
পথে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ অভিমত ছিল বাবার,
প্রীতলের কাছে কোনো ঘড়ি নেই,
আর থাকলেও লাভ নেই, এক সেন্টিমিটার
দুরত্বের সব কিছু আধার, প্রযুক্তির মোবাইল
ফোন হাতে থাকলে কাজে লাগত
প্রীতলের, কিন্তু মোবাইল
ফোন,মানেই নিজেকে বেধেঁ ফেলা,
কারো গন্ডির ভিতর সিমাবদ্ধ হওয়া
মহাপুরুষ দের সেসব করা মানায় না
মহাপুরুষ হতে হলে সমাজের সকল মানুষের
নিকট হতে ঠিক ততটাই দুরত্ব অবলম্বন
করতে হবে, ঠিক যতটা তার কাছের
বাবার এই মতামত টি একমাত্র গ্রহণযোগ্য
প্রীতলের নিকট, আর প্রায় সব
গুলো তেই কিঞ্চিত পরিমাণ মতভেদ
রয়েছে তার
এইত শকুনের দেখা মিলল, কি মহারাজা কই
ছিলেন?
আদৃতার সাথে, শকুনের এমন কথায় বিস্মিত হয়
প্রীতল, শকুন কথা বলতে জানে? বাবার
কথা অনুযায়ী বিচলিত প্রীতল
ভাবলেশহীন হয়ে বলে তা আদৃতা কই
এখন? ঠিক এমন
ভাবে জিজ্ঞাসা করে যা শুনলে মনে হয় এই
শকুন আর প্রীতল এক ছাদের নিচে বাস
করছে বহুদিন, শকুন্তলার শকুনের কথায়
কোনো অবাস্তব কিছু নেই, এলোকেশ
আদৃতা আসছে,
সময় কত প্রীতল ? আদৃতার এই প্রশ্নের
কোনো উত্তর করেনা প্রীতল,
অহেতুক কথা বলার প্রয়োজন হয়না,
মহাপুরুষের প্রধান কাজ কথা কম বলা, যেহেতু
তার হাতে ঘড়ি নেই সময়
সম্পর্কে কোনো ধারনা প্রীতলের
নেই, প্রীতল চুপচাপ, দুরে আগুন
জ্বলছে, শশান
ঘাটে,কাউকে পোড়ানো হচ্ছে,
আগুনের লেলিহান শিখা মেঘ ভেদ
করে চাদের
কাছে যেতে চাইছে যেন, আজ
আগুনের মন খারাপ চাদ কেন
আসেনি হয়তো এ জন্য, কি সব ছাইপাশ
ভাবছে প্রীতল,
পকেটে থাকা সিগেরেট ঠোঁটে নেয়
প্রীতল, কিন্তু দেয়াশালাই নেই, ক্ষানিক
আগে প্রীতল কে বিস্মিত করা শকুন আবার
প্রীতল কে বিস্মিত করে, উড়ে যায় সে,
গাছের ডালে করে কয়লা আনে শকুন,
সিগেরেট এ সুখটান দেয় প্রীতল
চলবে
©somewhere in net ltd.