![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ঃ রাত ২টা
ঘরটা ছোট।
আসবাব পত্র বলতে যা আছে সেগুলো লোহা লক্কর। স্ক্রু-ড্রাইভার, স্পেনার, নাট-বল্টু সহ আরও অসংখ্য পার্টস। রুমটা একটা গ্যারেজ।
রুমে আরেকটা আসবাব আছে যেটাকে আসবাব বলা যায়। একটা সিঙ্গেল খাট। গ্যারেজ মালিক মানিক সরদার এখানেই রাতে ঘুমান। ওহ না! ভুল হলো। তিনি তো রাতে ঘুমান না। শেষ রাতে ঘুমান। খুব ব্যাস্ত থাকেন তিনি।
খুব ব্যাস্ত।
এখনো তিনি ব্যাস্ত। প্রতি রাতে তিনি আমাকে নিয়েই ব্যাস্ত থাকেন। আজকে তার বিছানায় আমার জাগায় আমার বোন শুয়ে আছে। আমার বোনকে তিনি কোথা থেকে আনলেন জানি না।
আমি ছোট্ট রুমটার মধ্যে ঘুরঘুর করছি। আজকে আমার কাজ নাই। ঘুমও আসবে না। বড় সাহেবের সাথে থেকে থেকে রাতের ঘুম আর হয় না। তাছাড়া ওদিক থেকে বুবুর গোঙানির আওয়াজ পাচ্ছি। এই শব্দে তো ঘুম হবেই না।
আমি একটা 100 মডেলের নষ্ট ইঞ্জিনের নাট-বল্টু খুলে সময় পার করছি। বড় সাহেব এখন বুবু শরীরের ওপরের অর্ধেক নিয়ে ব্যাস্ত। আমার দিকে তার খবরই নেই। অনেকদিন পরে হয়ত মেয়ে মানুষ পেলেন তিনি। আমার তো আর মেয়েদের মত বুক নেই। সুন্দর চামড়াও নেই। প্রথম যখন এই গ্যারেজে আসি তখন মোটামুটি স্বাস্থ্য ভাল ছিলো। প্রতি রাতে বড়বাবুর অত্যাচারে এখন কঙ্কালসার হয়ে গেছি।
-ইউসুফ!
-জি, বড়বাবু।
-শব্দ করিস কেন ****পোলা??
আমি চুপ হয়ে গেলাম।
বুবুর ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্নার আওয়াজ পাচ্ছি। এক সময় আমিও খুব কাঁদতাম। ক্লাস টু তে পড়তাম যখন বড়বাবু আমাকে প্রথম বিছানায় নেন। খুব ব্যাথা করত। পিছনটা যখন পিচ্ছিল হয়ে যেত, ঘিন্নায় গা রি রি করত। মনে হত বমি হলে ভাল লাগবে। কিন্তু বমি হত না। এখন সহ্য হয়ে গেছে। এখন বড়বাবুর কাজ হয়ে গেলে টিউবওয়েলে গিয়ে পিছনটা ধুয়ে শুয়ে পড়ি।
বুবু আবারো কানছে। বড়বাবুকে অনেক করে বলল,
-আমার ভাইডার সামনে কিছু কইরেন না। ছাইরা দেন। আপনার দোহাই লাগে।
বড়বাবু শোনেন নাই। কুৎসিত একটা গালি দিয়ে আমার সামনেই বুবুর জামা ছিড়তে লাগলেন।
সময়ঃ রাত ৩ টা।
বড়বাবু এখন খুব ব্যাস্ত। বুবু কতক্ষণ চিৎকার করছিল। বড়বাবু ঠাস ঠাস দুইটা চড় দিলেন।
-ইউসুফ, *গীর মুখ চাইপে ধর তো!
বুবু সাথে চুপ হয়ে গেল। আমি আর কাছে গেলাম না। কিছুক্ষন কান্নার পর তাও বন্ধ হয়ে গেল। বুবুর উপর থেকে ঝড় যাচ্ছে। বুবু নিষ্প্রাণ চোখে উপরে তাকিয়ে আছে।
সময়ঃ রাত ৪টা।
আমি আর বুবু পাশাপাশি শুয়ে আছি। একবার বুবু বলে ডাক দিতেই বুবু মুখ ঢেকে অন্যদিকে ফিরে কাঁদতে লাগল।
-বুবু, একটু এদিকে তাকা না! তোরে কতদিন পরে দেখলাম।
-এতক্ষণ দেখে মন ভরে নাই?? কুত্তা!!
-বুবু এমন করিস কেন?
বুবু চুপ
-খুব ব্যাথা করছে বুবু?? আমারো প্রথম প্রথম খুব ব্যাথা করত। টয়লেটে যাইতে পারতাম না। হাটতে কষ্ট হইত।
বুবু আমার দিকে ফিরে তাকলো। চোখে বিস্ময়।
- তোরও কষ্ট হইত মানে??
- প্রথম প্রথম হইত।
- তোর সাথেও এমন করে??
বুবুর চোখে আতঙ্ক।
- হ, প্রতিদিন করে। আইজ তুই ছিলি তাই আমারে কিছু কয় নাই।
উপর থেকে বড়বাবুর আওয়াজ আসলো। কুৎসিত একটা গালি দিয়ে ঘুমাইতে বললেন।
বুবু ফিসফিস করে আমার কানে বলল,
- কতদিন ধরে করে তোর সাথে?
- বাড়ি থেকে আসার পর থেকে।
বুবু আৎকে উঠলো।
- সে তো প্রায় তিনবছর!
আমাকে জড়ায় ধরে কাঁদতে লাগলো বুবু। আমি সান্তনা দিতে লাগলাম "চিন্তা করিস না বুবু, ব্যাথা কমে যাবে।"
- এরচেয়ে মরে যাওয়া ভাল রে
- না বুবু, তুই মরে গেলে তো আমার কেউ থাকবে না রে।
বুবুর কান্না থেমে গেছে। আছে শুধু একটা চাহনি। সেই চাহনিতে না আছে হাসি, না আছে কান্না। বুবু যেন পাথর হয়ে গেছে।
১১ বছর পর।
এবার ইউসুফে কাহিনী বলছি আমি।
সারাদিন কাজ শেষে খারাপ পাড়ায় যাওয়া ইউসুফের প্রতিদিনকার রুটিন। লোহালক্করের কঠিন দুনিয়া থেকে বের হয়ে নরম মেয়ে মানুষের ছোঁয়া পেতে ভাল লাগে। আজকে একটু কাজে ঢাকা আসছে ইউসুফ। কাজ শেষে রাতে অস্থির হয়ে উঠলো সে।
মেয়ে মানুষ চাই, মেয়ে মানুষ!!
খবর নিয়ে জানলো কারওয়ান বাজারে ৩০০ টাকায় মেয়ে পাওয়া যায়।
একটা মেয়ে ভাড়া নিয়ে কাজ শেষ করে বের হলো ইউসুফ। ঠিক সে সময় পাশের ঘর থেকেও একজন বের হলো। লোকটার সাথের মেয়েটি ওর দিকে তাকিয়ে থাকলো।
মেয়েটি তার বুবু।
০৩ রা আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৫
ইমাম আবু হানিফা বলেছেন: হবে ইনশাআল্লাহ
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:০৭
ভাবুক বাঁধন বলেছেন: মোটামোটি
আরো ভালো হতে পারত