![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটু পড়ি, একটু লিখি
সুখ এমন এক অনুভব যা অধিকাংশ লোকের কাছে নেই ।
যদি বারাক ওবামা কে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনি কি সুখী?তিনি হয়তোবা বলবেন, দেশের মানুষের চাহিদা ঠিক মত পূরণ করতে পাচ্ছি না, সুখে নাই।
যদি ডেভিড ক্যামেরুনকে জিজ্ঞেস করা হয় ,আপনি কি সুখী? তিনি হয়তোবা বলবেন , উইলিয়াম ও কেট এর বাচ্চা নিয়ে এত মাতামাতি,আমার বাচচা নিয়ে তো তার ছিটে ফোটা হয়না, জন্মের পরই দেখি রাজা/রানী নির্ধারিত ,আমি সুখে নাই ।
আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে যদি জিজ্ঞেস করি,তিনি হয়তো বলবেন ,যুদ্ধাপরাধীদের বিচার,হেফাজত ও বি.এন.পি-জামাত নিয়ে সুখে থাকার সময় কই ।
বিরোধীদলীয় নেত্রীকে জানতে চাইলে বলতে পারেন, ওত্ত্বাবধায়ক চাইছি দিচ্ছে না,,ক্ষমতা ছাড়া কি সুখে থাকা যায় ?
সাবেক মাননীয় মন্ত্রী আবুল হোসেনকে জিজ্ঞেস করা হলে হয়তোবা বলতে পারেন, সেই পদ্মা সেতু নিয়ে মিডিয়া যা করেছে তাতে মন খুলে একটু হাসতেও পারি না,না হেসে কি সুখে থাকা যায় ?আমার বড় এক ভাই গার্লফ্রেন্ডকে বিয়ে করতে পারছে না ,এই কারণে ভীষণ কষ্টে আছে।
এত কিছু যাদের আছে তারা সুখে না থাকলেও সুখে আছেন আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু টোকাই ।
এমনি তিন বোন মিনা,হামিদা ও শিলা।মিনা সর্বোচ্চ ৯ বছর,হামিদা ৭ ও শিলা ২ বছর বয়সেই কাঁধে নিয়েছে লেখা-পড়ার বই নয়, নিয়েছে পরিবারের উপার্জন করার দুঃসাহসিক অভিযাত্রা ।
মিনা ,হামিদা ফুল কুঁড়ায়,মালা গাঁথে এবং বিক্রি করে ক্যাম্পাসের ছাত্র-ছাত্রী, বাইরে থেকে আসা নানা পেশার মানুষের কাছে।
ঝড়-বৃষ্টি, শীত যাই হোক না কেন তাদেরকে আসতে হয় ক্যাম্পাসে সেই নদীর উপারের কামরাঙীর চর থেকে,আসার সময় সর্বদা পায়ে হেঁটে,যাওয়ার সময় বিক্রি ভালো হলে রিকশায় নতুবা পায়ে হেঁটে।এমনিতে চলে তাদের নিত্যদিন।
প্রতিদিন রোজগারের টাকা দিয়ে প্যারালাইসড মায়ের অসুস্থতার ঔষধ কিনে,অবশিষ্ট টাকা দিয়ে পেটের জ্বালা মিটায় তাও কোনমতে।
বাবার কথা জিজ্ঞেস করতেই মিনার চোখ ছলছল করে পানি,আর হামিদা বলে ওই কুত্তার কথা আর কি বলব।
বাবার প্রতি এমন বিরূপ মন্ত্যব শুনে জানতে ইচ্ছে হল, হামিদা যা বলল তার সারর্মমএই,মা অসুস্থ,আর আমরা বড় দুই বোন এটা নিয়ে প্রায় ঝগড়া হত মার সাথে এটা-ওটা নিয়ে,শিলার জন্মের খবর শুনেই বাবা অন্যত্র চলে গেছে আরেকটা বিয়ে করে।
সেই থেকে আমাদের প্রতিদিন উপার্জিত ১০০/৮০টাকা দিয়েই চলে আমাদের সংসার।
আমরা গরিব তবুও সুখে আছি ভাইজান,কারণ আমাদেরতো মা আছেন সারাদিন কষ্ট করার পর যার মুখ দেখতে পাই,মাকে মা বলে ডাকতে পাই,এমন অনেকেই আছে যার মা নেই কষ্টে কেউ মাথায় হাত বুলাতে পারে না,পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর শব্দ ‘মা’ বলে ডাকতে পারে না ।
আমরাতো তিন বোন একসাথে ফুল বেচতে পারি , অনেকেইতো ভিক্ষা করে দিন চালায় । আমরা সুখি,আমাদের তো কিছু টাকা অন্তত মাসে উপার্জন হয়,অনেকেই আছেন যাদের দিন শেষে কোন টাকাই হাতে আসে না।
আমাদেরতো হাঁটার জন্য পা আছে ,পৃথীবীর অনেকই আছেন যার ভালো দুটি পা নেই ,আমরাতো সুখেই আছি ভাইজান।
আমরা ভাইজান সুখে আছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জায়গায় অবাধে হাটতে পারি,পৃথীবীর হাজারো মানুষ আছে যাদের জন্ম-মৃত্যু বস্তিতেই হয়।
ভাই আমরা সুখে আছি এইভেবে যে,আমাদেরতো তবু জন্মের পরে এক নজর জন্মদাতা পিতাকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে ,পৃথিবীর অনেকেই নিজের জন্ম পরিচয় জানে না ।
আমরা ভাইজান সুখে আছি এইভেবে যে, আমাদের কথা অন্তত আপনি অনেক্ষণ মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন,এমন হাজারও মানুষ আছেন যার কথা শোনার মত একটা মানুষ পৃথিবীতে নেই ।
সুখের সংজ্ঞা আমার শিক্ষা জীবনে যা পড়েছি সবই হার মানল ৯ বছরের মিনা,৭ বছরের হামিদার কাছে ।
সুখ আসলেই এমন এক উপলব্ধি যা যে কেউ চাইলেই পারে অনুভব করতে ,আর উপলব্ধি না করলে সারা জীবনেও এর সন্ধান পাওয়া কষ্টকর ।
"সুখ"
১৪/০৪/২০১৩
২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৪
চলো স্বপ্ন ছুঁই বলেছেন: ধন্যবাদ আপু।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:২০
টুনটুনি০৪ বলেছেন: ভালো পোস্ট করেছেন।