নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলে ক্যামেরাপারসন হিসাবে চাকুরীরত। ত্রিকোন চলচ্চিত্র শিক্ষালয় নামে একটি ফিল্ম স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রশিক্ষক। গল্প, কবিতা লেখা ও অভিনয়ের অভ্যাস রয়েছে।

ইহতিশাম আহমদ

জানতে চাই, জানাতে চাই মানুষের অনুভুতির এপিঠ ওপিঠ

ইহতিশাম আহমদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চলচ্চিত্রিক মানসিকতা ১ - বিনোদন নাকি বক্তব্য (পর্ব-৩)

১৩ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:২৬


(রচনাটি তিন পর্বে বিভক্ত)

প্রথম পর্ব- Click This Link
দ্বিতীয় পর্ব- Click This Link

মানুষ যাতে বিনোদিত হয়, তাতেই আকৃষ্ট হয়। এটা মানুষের জন্মগত স্বভাব। এখন দেখা যাক, মানুষ কিসে কিসে বিনোদিত হয়। প্রথমেই খারাপ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলি। কারণ সেটা আপনাদেরকে সহজেই বোঝাতে পারব। ভাল ভাল বিষয় বা কথা বুঝবার ক্ষেত্রে আমরা বোধহয় জাতিগত ভাবেই কিছুটা ধীর গতি সম্পন্ন। জাতি বলতে আমি অবশ্য মানব জাতির কথা বলেছি, শুধু বাংগালী জাতির কথা বলিনি।

যাহোক, প্রথমেই আলোচনা করা যায় মেয়েদের উত্যেক্ত করা নিয়ে। প্রকাশ্যে স্বীকার করতে না চাইলেও উড়তি বয়সের তরুনদের কাছে এটা খুবই আকর্ষনীয় একটা বিনোদন। আর তাই বাংলা বা হিন্দি এমন কি কিছু কিছু ইংরাজি সিনেমাতে নায়িকাকে উত্যক্ত করাটাকে নায়কের পৌরুষ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। অনেক সিনেমায় তো পর্দায় নায়কের ফার্স্ট এন্ট্রিই হয় নায়িকাকে উত্যেক্ত করার দৃশ্য দিয়ে। এবং হল ভর্তি দর্শক বিষয়টাকে উপভোগ করে। মজার বিষয় হল, মহিলা দর্শকরাও বিষয়টাতে বেশ আমোদিত হয়। মুচকি হেসে বলে ‘ছেলেরা সব সময়ই এরকম হ্যাংলা।’ উদাহরণ হিসাবে বলা যায় বিখ্যাত হিন্দি সিনেমা দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েংগে-তে শাহরুখ খান কাজলকে যেভাবে ক্রমাগত উত্যেক্ত করতে থাকে অথবা দিওয়ানা মুঝসা নেহি সিনেমাতে আমির খান যে ভাবে মাধুরী পিছনে লেগে থাকে তাতে তো মহিলা দর্শকদের এই সিনেমাগুলোকে বয়কট করা উচিৎ ছিল। কিন্তু করেছে কি?

আরেক বিখ্যাত ছবি মাধবন আর দিয়া মির্জা-র ‘রেহেনা হ্যায় তেরে দিল মে।’ সেখানে তো মাধবনের ভিলেন হওয়ার কথা। সে মিথ্যা পরিচয়ে একটা মেয়ের সাথে প্রেম করছে। অথচ আজ পযর্ন্ত আমি কোন মেয়ে দর্শককে পেলাম না যে মাধবনকে খারাপ ভাবতে রাজি আছে। এই নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বরং আমি অনেকে মেয়ের চক্ষুশূল হয়েছি। মোদ্দা কথা হল, মেয়েদের উত্যেক্ত করাটাকে নারী পুরুষ উভয়েই র্নিদিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত বিনোদন হিসাবেই বিবেচনা করে। যদিও তা মাত্রা ছাড়ালে নারী নির্যাতনে পরিনত হয়। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মেয়েদের উত্যেক্ত করা বা পিছে পিছে ঘোরাটাকে পছন্দ করি না। কারণ বিষয়টা একজন পুরুষ হিসাবে আমার ইগোতে আঘাত করে। তবে বন্ধুদের সাথে ইয়ার্কি ফাজলামী বা প্রেমিকা অথবা বউয়ের সাথে খুনসুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়।

পরর্চচা বা পরনিন্দা আমাদের আরেকটি প্রিয় বিনোদন। জানি অনেক পুরুষই সমোস্বরে বলে উঠবেন, এটা তো মেয়েদের ব্যাপার। সত্যিই কি? পরচর্চা কি শুধুই মেয়েদের ব্যপার? একটু ভাবেন তো ট্রাফিক জ্যামে যখন আটকা পড়েন, অফিসে যেতে বা অফিস থেকে ফিরতে যখন দেরী হয়ে যায় তখন গরমে ঘেমে নেয়ে বাসের ভিতরে বসে আপনারা, পুরুষ মানুষেরা কি করেন? উত্তর একটাই। সবাই মিলে দেশের রাজনীতিবীদদের গুষ্টি উদ্ধার করেন। রাস্তায় কেন গর্ত বা রাস্তার পাশে কেন ময়লা ভর্তি বড় বড় লোহার বাক্স পড়ে থাকবে, সেই আলাপগুলো অবশ্যই যুক্তি সংগত। কিন্তু অমুক মন্ত্রী কেন এই বয়সে বিয়ে করল অথবা তমুক মহিলা নেতার কেন এত সাজগোজের বাতিক? এই আলাপগুলো নিঃসন্দেহে পরর্চচা ছাড়া আর কিছুই নয়। এমন কি নেতাদের দূর্নীতির কি শাস্তি হওয়া উচিৎ সেই বিষয়ে যে মার মার কাট কাট আলোচনা হয় বাসে বা চায়ের টেবিলে, আমার তো মনে হয় সেটাও আমরা বিনোদিত হওয়া জন্যে করি। যদি দেশের পরিবর্তন আনার জন্যেই এই আলাপগুলো হত তবে সেগুলো অবশ্যই কেবল চায়ের কাপ আর বাসের সিটের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকত না।

পরকীয়া বা অবৈধ প্রেম, খুবই জনপ্রিয় আরেকটি বিনোদন। সিনেমার পর্দায় তো বটেই, অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তি জীবনেও কথাটা সত্য। সেদিন এক বিবাহিত চিত্র পরিচালককে বলতে শুনলাম, ‘আমার নায়িকাদের প্রতি তেমন কোন আগ্রহ নাই। আমার সিনেমার নায়িকাও বিয়ে শাদী হয়ে যাওয়া মেয়ে। কোন ঝুট ঝামেলা নাই। তবে শুটিং শেষে নায়িকা আমারে একটা চুমু দিছিল। এখন, নায়িকা চুমু দিলে তো সেটা ফেরত দেয়া যায় না।’ এখানে অবশ্যই ব্যাখ্যা বা মন্তব্য নিশ্প্রয়জন।

ভারতীয় একটা হিন্দি সিরিয়ালের নাম বলেন, যেখানে কোন না কোন ভাবে পরকীয়া বা অবৈধ প্রেম নেই। বিখ্যাত সিনেমাগুলোর মধ্যে রাজেশ খান্নার আরাধনা, যার পুরো ঘটনাটাই বিবাহ বহিভূত দৈহিক সর্ম্পকের উপরে দাঁড়ানো। কিছুদিন আগের প্রীতি জিনতার কেয়া কেহে না সিনেমাতে কিভাবে একটি মেয়ে বিবাহিত না হয়েও একটি বাচ্চাকে জন্ম দিল সেই কাহিনী দেখে অনেক মেয়েকে আমি বলতে শুনেছি “নায়িকার স্ট্রাগেলটা, সমাজের সাথে লড়াইটা ভাল লাগছে।” ছেলেদের আফসোস করে বলতে শুনেছি “ইন্ডিয়াতে ওরা কতটা এ্যাডভান্স। আমাদের দেশে এই জাতীয় সিনেমা বানানো সম্ভব না।” সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ায় পরকীয়া প্রেমকে আইনগত ভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। আমাদের দেশে বা ভারতে এখনও পরকীয়া আইনগত বা সামাজিক ভাবে স্বীকৃত বিষয় নয়। হলে আলোচনাটা ভিন্ন হত। যাহোক পরকীয়া বা অবৈধ প্রেম যে আমাদের বিনোদিত করে এতে কোন সন্দেহ নাই।

যাহোক, অনেক খারাপ খারাপ উদাহরণ দিলাম। যদিও বিনোদনের এমন আরো অনেক নেতিবাচক উদাহরন দেয়া যায়। তারপরও এবার ভাল কিছু উদাহরন দেই। প্রথমেই আসা যাক অন্যায়ের প্রতিবাদে। হাসছেন? ভাই, জীবনের ইতিবাচক দিকগুলোকে খুব ছোট করে দেখা আমাদের বদভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। কয়েকটা সংখ্যা বলি তাতেই বুঝবেন অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে আমরা কি পরিমান আনন্দ বোধ করি। ৫২, ৭১, ৯০- জীবন দিয়ে হলেও আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি। সাম্প্রতিক সময়ের গণজাগরণ মঞ্চ এবং হেফাজতে ইসলাম উভয়েই নিজ নিজ মতার্দশ অনুযায়ী অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্যেই মাঠে নেমে ছিল। আমরা অপরাধীদের পতন দেখতে এত পছন্দ করি যে শতকরা ৯৯ ভাগ সিনেমার পরিসমাপ্তিতেই অত্যাচারী ভিলেনের পতন হয় নায়ক বা জনতার হাতে। আর এই পতনের দৃশ্য চলাকালীন সময়ে সিনেমা হলে দর্শকদের যে কি উচ্ছাস, তা যারা দেখছেন তারাই জানেন।

সংগিত নিয়ে আলাদা করে তেমন কিছু বলার নেই। সুস্থ মস্তিকের এমন কোন মানুষ বোধ হয় নেই যে সংগিত পছন্দ করে না। বেশীর ভাগ তরুণকেই কানে হেডফোন লাগিয়ে ঘুরতে দেখা যায় এই সংগিতের কারণেই। এবং বিশ্বে অনেক সিনেমা আছে যা শুধু মাত্র সংগিতের কারণেই বিখ্যাত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্যে উদাহরণ বাংলাদেশের মনপুরা আর ভারতের আশিকি ২।

ভালবাসা- পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিনোদন। অনেকেই বিষয়টাকে এভাবে উপস্থাপন করাতে বিরক্ত বোধ করতে পারেন কিন্তু একথা তো সত্য জীবনে যখন ভালবাসা আসে আমাদের মনে আনন্দের মাত্রাও বেড়ে যায়। এখানে একটা কথা না বললেই নয়, পরকীয়া প্রেম খুব সহজেই সিনেমার পর্দায় দর্শককে আকৃষ্ট করতে পারে। কারণ তা দেখানো সহজ। অভিনয় বা টেকনিকাল ক্ষেত্রে সমস্যা থাকলেও শুধুমাত্র আপত্তিকর দৃশ্যগুলোর কারণেই মানুষ তা পছন্দ করে। কিন্তু বিশুদ্ধ ভালবাসা দর্শককে অনেক অনেক বেশী আবেশিত করতে পারে, যদি তা ভাল ভাবে চিত্রায়ন করা যায়। শুধু মাত্র এই সমস্যাটির কারণে অনেক অদক্ষ পরিচালক বিশুদ্ধ প্রেম বাদ দিয়ে পরকীয়াকে তাদের সিনেমার বিষয় বস্তু হিসাবে গ্রহণ করে।

লেখাটা লম্বা হয়ে যাচ্ছে তাই আর উদাহরণ দিতে চাই না। সংক্ষেপে বলি, বন্ধুর জন্যে আত্মত্যাগ, জীবনে সফলতার জন্যে সংগ্রাম। ব্যর্থ জীবন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা। সন্তানের জন্যে মা বাবার ত্যাগ, কোন প্রতিজ্ঞা রাখার জন্যে লড়াই ইত্যাদি অনেক অনেক বিষয়ই আছে যা দেখলে আমরা আনন্দিত হয়। আমাদের চোখ অশ্রু সজল হয়ে ওঠে। এই আনন্দে হেসে ওঠা বা কেঁদে ওঠাটাই চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে বিনোদন। হয়ত বাস্তব জীবনেও তাই।

অনেকেই বক্তব্য আর বিনোদনকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে চান। আমার সেখানে ঘোর আপত্তি আছে। কদিন আগে এক বন্ধু প্রতিম পরিচালকের সাথে কথা হচ্ছিল। সে প্রশ্ন আমাকে করেছিল, ‘সার্গেই আইজেনস্টাইনের ‘ব্যটেলশীপ পটেমকীন’ নিঃসন্দেহে বিখ্যাত এবং জনপ্রিয় একটি সিনেমা। সেখানে তো পুরোটাই বক্তব্য। এখানে বিনোদন কোথায়?’ উত্তরে বলেছিলাম, ‘বর্জুয়াদের দ্বারা নিপিড়িত কিছু মানুষ জোটবদ্ধ হয়ে অত্যাচারী শাসকের পতন ঘটাচ্ছে। সেই সময়কার রাশিয়ার মানুষদের কাছে এর চেয়ে বড় বিনোদন আর কি হতে পারে?’ আগেই তো বলেছি সিনেমায় ভিলেনের পতন দেখতে র্দশক ভীষণ পছন্দ করে। ব্যাটেলশীপ পটেমকিন-এও তো তা-ই ঘটেছে। কি এক অজ্ঞাত কারণে এই সিনেমাটাকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমরা আমাদের বিবেচনা শক্তিকে ভিন্ন মার্গে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। হ্যাঁ, এ কথা অনস্বীকার্য যে এর শিল্প মান অতি উন্নত হওয়ায় সিনেমাটি ডিরেকটরস বাইবেলে পরিনত হয়েছে। কিন্তু বিনোদন বিষয়টি যে ব্যাটেলশীপ পটেমকিনেও রয়েছে এটা অস্বীকার করবার কোন অবকাশ নেই।

সম্প্রতিক সময়কার ভারতীয় একটি সুপারহিট সিনেমায় বলা হয়েছিল, সিনেমা মানে হল এন্টারটেইনমেন্ট, এন্টারটেইনমেন্ট, এন্টারটেইনমেন্ট। কথা সত্য। সিনেমায় যদি বিনোদন না থাকে তবে সেই সিনেমা কেউ দেখবে না। আর যদি মানুষ সিনেমাটা নাই দেখল তবে আপনার বলা মহাদামী বক্তব্যটির কি বা দাম থাকল? মানুষ তো আপনার কথা জানতেই পারল না। রাজকুমার হিরানী যদি ‘পুথিগত বিদ্যা নয়, বরং মানষিক বিকাশ ঘটাও’ বলে রসকষহীন একটা সিনেমা বানাতো, তবে সেই অমৃত বচনের প্রচার কতটুকু হত? থ্রী ইডিয়েটে বিনোদন আছে তাই মানুষ তা দেখেছে এবং সিনেমার ভিতর দিয়ে তার বক্তব্যটাও উপলব্ধি করেছে।

আরেকটি বিষয় অনস্বীকার্য। আর তা হল, ব্যবসা। একটা সিনেমায় লাখ-লাখ বা কোটি-কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়। যারা করে তারা আলু পটলের ব্যবসা করতে পারত। তাতে তাদের মুনাফাও হত। তা না করে সিনেমায় পয়সা বিনিয়োগ করে তারা কি পাপ করেছে যে তাদের আর্থিক লোকসানকে মাথা পেতে নিতে হবে? যে পুরুষ রোজগার করতে পারে না, সংসারে তার কোন দাম নেই। যে ঘোড়া দৌড়াতে পারে না, তাকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়। যে গাভী দুধ দেয় না তাকে হয় বিক্রি করা হয় নয়ত জবেহ করে রান্না করা করা হয়। ঠিক একই ভাবে যে সিনেমা রোজগার করতে পারে না তার স্থান হয় প্রযোজকের তালাবদ্ধ আলমারীর এক কোন। এবং সেটাকে প্রযোজক সংগত কারণেই তার জীবনের কুফা হিসাবেই বিবেচনা করেন।

আমি অশ্লীলতা বা উদ্ভট সিনেমার পক্ষে নই। বক্তব্যধর্মী সিনেমা যে ব্যবসা সফল হয় তার ভুরি ভুরি উদাহরন আছে। তবে সেটা কখনওই বিনোদন ছাড়া হতে পারে না। বিনোদন নাই তো সিনেমার সফলতা নাই। আর সিনেমার সফলতা না থাকলে আপনার মহামূল্যবান বক্তব্যরও কোন ভাত নেই।

সিনেমা হল সেলুলোজ বা ডিজিটাল ফরমেটে মানুষকে একটি গল্প বলা। অর্থাৎ সিনেমায় অবশ্যই একটি কাহিনী থাকবে। আর সেই কাহিনীটিকে অবশ্যই বিনোদনময় হতে হবে। এবং সিনেমাকে বিনোদনময় করে তুলতে গেলে যার প্রয়োজন তা হল শিল্প। আশা করি নুতন করে বলার দরকার নেই যে কোন কিছুকে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করার অপর নামই হল শিল্প। অর্থাৎ কাহিনীতে বিনোদন থাকবে। বিনোদনকে ফুটিতে তুলতে শিল্প থাকবে। আর এ দুটো থাকলেই দর্শক প্রিয়তা থাকবে। দর্শক প্রিয়তা থাকলেই ব্যবসা থাকবে। এখন, এর মাঝ দিয়ে আপনি যদি আপনার শিক্ষামূলক বা সমাজ সচেতনতামূলক বক্তব্যটুকু ঢুকিয়ে দিতে পারেন তো সোনায় সোহাগা।

প্রসংগত একটা কথা বলি। অনেকেই মনে করেন মোনাজাত নামাজের অংশ। কথাটা সত্য নয়। মোনাজাত বা আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা আপনি যে কোন সময়ই করতে পারেন। কিন্তু অন্য সময়ের চেয়ে নামাজ পড়ার সময় আল্লাহতায়ালা আপনার প্রতি বেশী সদয় থাকেন। সুতরাং সে সময় আল্লাহতায়ালা আপনার প্রার্থনা বা মোনাজাত বেশী করে শুনবেন এটাই স্বাভাবিক। তাই নিয়মিত নামাজ শেষেই মোনাজাত করা হয়। ঠিক একই ভাবে র্দশক যখন আমোদিত, উত্তেজিত, উদ্বেলিত, তখন যদি আপনার সচেতনতামূলক বক্তব্যটুকু তাদের সামনে তুলে ধরা যায় নিঃসন্দেহে তারা তা উপদেশ বা পরামর্শ বিবেচনায় ফিরিয়ে দেবে না। অর্থাৎ যারা সদুপদেশ শুনতে রাজি তারা তো বটেই, যারা শুনতে রাজি না তারাও নিজের অজান্তে আপনার বক্তব্যটুকু র্নিদ্বিধায় গিলে ফেলবে।

তো, একটি সিনেমায় অবশ্যই শিল্প, বিনোদন ও ব্যবসা থাকবে। অথবা শিল্প, বিনোদন, ব্যবসা এবং সচেতনতা মূলক বক্তব্য থাকবে। এখন আপনি বক্তব্যসহ সিনেমা বানাতে চান, নাকি বক্তব্য ছাড়া সেটা আপনার অভিরুচি। কিন্তু কোন ভাবেই আপনি শিল্প ও বিনোদনকে বাদ দিতে পারেন না। অবশ্য আপনি যদি ‘র্দশক দেখেলে দেখেবে, না দেখলে না দেখবে, আমার যা ইচ্ছা আমি তাই বানাবো।’ গোছের উন্নাসিক পরিচালক হন তো ভিন্ন কথা।

সমাপ্ত

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: চমৎকার লাগলো+++

২| ২২ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫

শায়মা বলেছেন: অনেক সুন্দর লেখা ভাইয়া!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.