নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইল্লু

ইল্লু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিলিতিসের গান Songs of Bilitis(ধারাবাহিক)

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৩:৩১


প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৯৪ সালে,গ্রীসের নামকরা কবি,সাপ্পোর সমসাময়িক,বিলিতিস নামের কোন এক কবির অনুবাদ হিসাবে,ফরাসী লেখক পিয়ের লুইসের অনুবাদ।বিরাট এক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে লেখাটা অনুরাগীদের মনে-খ্রীষ্টপূর্ব ৬০০ সালের এ ধরনের সর্ম্পূন লেখা খুঁজে পাওয়া ছিল অনেকটা অবিশ্বাস্য।আর প্রকাশ্য ভাবে সমকামিতা নিয়ে প্রকাশনা সেটা তো আরও অভাবনীয়।পরে অবশ্য জানা যায়-বিলিতিস বলে কোন কবির অস্তিত্বই ছিল না,ঐ সময়।ওটা আর কিছু না পিয়ের লুইসের তৈরী করা একটা অভাবনীয় ফেরেপবাজী।সাজানো হলেও, তবুওএক পুরুষের লেখা মেয়েদের নিয়ে বেশ সাহসী এক প্রকাশনা,লেখার মর্যাদাটা আজও কমে যায়নি।





(১০) মোমের পুতুল-একটা

মোমের খেলার পুতুল-ও তোমাকে ডাকতো ‘আমার ছোট্ট সোনা’, ভুলে গেছে এখন ও তোমাকে,ঠিক যে ভাবে ভুলে গেল আমাকে,ভুলে গেছে সব-কে ছিল তার সাথে মা,বাবা না কি অন্য কেউ।

তার ঠোঁটের মাতাল চুমুতে হারালো তোমার গালের রং,কান্নায় ভেসে গেল সে,বাম হাতে ভাঙ্গা আঙ্গুলটা দেখে।‘যে পোষাকটা তোমার গায়ে,ওটা তার নিজের হাতে সেলাই করা’।

পুতুল ও বলে,তুমি নাকি কথা বলতে পার,লেখাপড়াও জান।রাতে সে দুধের বোঁটা তোমার মুখে দিয়ে বলতো,‘কেদ না দেখ এই তো আমি আছি এখানে’।

পুতুল,আমার যদি দেখার ইচ্ছা হয় তাকে,দান করবো না হয় তোমাকে-আফ্রোদাইতির কাছে,দেবীর জন্যে আমার সবচেয়ে পচ্ছন্দের অর্ঘ হিসেবে।আমি ভাবতে চাই ও মৃত,হারানো অজানা ওপারের কোন দেশে।


শবযাত্রার গান

এটা শেষ যাত্রা তার,শোকের গান করো,সবাই!মাইটিলিয়ানের ওঝা,জোতিষীরা,
দোহাই তোমাদের,আজকে যোগ দাও তোমরাও।শোকের পোষাক সারা পৃথিবীর গায়ে,হলুদ গাছগুলোও কাঁপছে রক্তাক্ত হ্রদয়ের যন্ত্রনায়।

হেরাইওস!এটা শোক,দুঃখের মাস!দুঃখে গাছের পাতাগুলোও ঝরে যাচ্ছে একে একে,তুষারে ছেয়ে গেছে চারপাশ,সুর্যের আলোর প্রচন্ড তাপ শুধু ঐ বন দেশে…কোন শব্দ নেই কোথাও-শুধু নিস্তব্ধতা।

পিটাকোস চলে গেল,সময়ের চাকায় ছুটে গেল বুড়ো মানুষটা,ছুটে গেল তার শেষ আস্থানায়,কোন এক সমাধিতে,কোথাও কোন এক অজানায়।চলে গেছে আরও অনেক চেনা মুখ আমার,চলে গেছে সবাই ওপারের কোন এক দেশে।ও হয়তো বেঁচে আছে,তবে ঐ বেঁচে থাকা,না থাকাই আমার কাছে।

শরতের দশটা বছর কেটে গেল,শুধু দেখে গেলাম আসা যাওয়ার খেলা।হয়তো এবার যাওয়ার সময় হলো আমারও।একটু কাঁদলে না হয়,মাইটিলিয়ানের জোতিষীরা,ফেললে না হয় দু ফোঁটা চোখের জল,হেঁটে যেও আমার পায়ের ছাপ আছে যেখানে।



সাইপ্রাস দ্বীপের সমাধিস্তম্ভের কথা


আসতারতের(যৌনতার দেবী ভেনাস)বন্দনা

মায়েরা ক্লান্ত হয় না কখনও,তাদের ভালবাসায় খাঁদ নেই,দেবী আসতারতে
তুমি তো মা আমাদের সকলের।জন্ম নেয়া প্রথম শিশু তুমি,নতুন জন্মের নির্ধারণ করো লিঙ্গ তুমি,তোমার আদেশেই গর্ভধারণ,তোমার মাঝেই লুকানো ইহলোক পরলোক,তুমিই তো আনন্দের পৃথিবী।

তুমি কুমারী,তুমিই সন্তানের জন্মদাতা,মা,পবিত্রতার ছবি তুমি,আবার তুমিই কামুক চরিত্রটা,নিষ্পাপ তুমি-আনন্দে ভেসে যাওয়া শরীর,সেটাও তুমি।
আকাশ ভঁরা মধুর সুর তুমি,নিশাচর তুমি,নিঃশ্বাসে আগুন তোমার,সমুদ্রের ফেনা সেও তো তুমি-তুমিই আমাদের সান্তনার আশ্রয়।

কৃপা কর তুমি গোপনে,পরীক্ষা কর মানুষকে গোপনে,ভালবাসার চরম তুমি,তুমিই শেখাও আকাঙ্খা পৃথিবীর জীবজন্তদের,তুমিই নতুন প্রজন্মের আকাঙ্খার আকাশ।

ও দেবী আসটারটে দয়া করে শোন প্রার্থনাটা আমার,নিয়ে যাও আমাকে,না হয় ভঁর কর আমাকে,স্বর্গের চাঁদ!বছরে তের বার তুমিই নিয়ে যাও আমার জরায়ুর নির্যাস।

রাত্রির বন্দনা

রাতের গাছ বসে থাকে চুপচাপ,অনেকট যেন একটা নিস্তব্ধ পাহাড়।আকাশ ভেসে গেছে নক্ষত্রের জোয়ারে,বাতাস তুমি প্রেমিকের মত,চুমু দাও গালে,কপালে,
আমার।

রাত্রি-তোমার অন্ধকারেই জন্ম দেবতাদের,তোমার চুমুতে উন্মাদ ঠোঁট আমার।
তোমার কামনার আদরে ভঁরা আমার চুল,সন্ধ্যার ছোঁয়ায় আজকে খুঁজে পেলাম নতুন এক বসন্ত,আবার ।

নতুন ফুল আসবে-সে তো আমারই ছোঁয়ায়।বাতাসের মিষ্টি ছোঁয়া,সে তো আমার নিঃশ্বাস।সুবাস ছড়ানো যে আকাশে বাতাসে-আমারই কামনার নির্্যা স।
নক্ষত্র ছড়ানো যা আকাশে,সে তো আমারই চোখ।

তোমার সুর ওটা কি সমুদ্রের গর্জন,নাকি মরুভুমির নির্জন নিঃস্তব্ধতা।জানি না ভাষা তোমার,হারিয়ে যাই আমি সে আকাশে,আর চোখের জল ভেসে যায় মনটা,আমার।


ভালবাসার তান্ত্রিক

জঙ্গলের গাছপালা অবাক চোখে দেখে-সমুদ্রের নাচ,উন্মাদের মত আনন্দে ছুটে যায় তান্ত্রিকের দল।বিশাল স্তনের মাসকালে,লাল রং দিয়ে সাজালো দেবদারুর
বানানো কাঠের লিঙ্গ।

গান করতে করতে ছুটছিল সবাই,নানান ধরণের পোষাক গায়ে,আঙ্গুর লতার মুকুট মাথায়,হাতের রঙ্গীন পাথরের চুড়ির ঠুনঠুন শব্দে ভঁরা চারপাশ।লাইলাক ফুলের ডালের খোঁচায় ছিড়ে যাওয়া চামড়ার চীৎকার-হারিয়ে যাচ্ছিল বাঁশীর শব্দে।

চুলটা ভেজা,ছন্দে ছন্দে নাচছিল সকলে,বাতাসের দোলায় লাল হয়ে গেছে তাদের স্তন,ঘাম ভেজা গাল,ঠোঁট দুটো ভেজা ক্লান্তির ফেনায়।দেবতা ডাইনোসাস অর্ঘ দিলাম তোমাকে-অর্ঘ দিলাম ভালবাসা আমাদের।

সমুদ্রের বাতাসের দাপটে সুর্য দেবতা হেলিওসের লাল চুলগুলো ছুটে গেল আকাশের দিকে,মোমের সাদা শরীরটা জ্বলে উঠলো দপদপ করে।



কাইপ্রিসের সমুদ্র

হাঁটু ভাঁজ করে বসে ছিলাম সমুদ্র ধারের পাহাড়টায়।কালো হয়ে গেছে ঢেউটা,
যেন ভেসে আসা বেগুনী ফুলের জোয়ার।সাদা দুধের ফোয়ারা বেরোচ্ছিল যেন বিশাল স্তন দিয়ে।

কয়েক হাজার সুন্দরী মায়েনাদ মেয়ে শুয়ে ছিল ছড়ানো ছিটানো ফুলে,তাদের চুলে আটকানো লম্বা লম্বা ভেসে যাওয়া ঘাস।সূর্য জন্ম নিল পূর্ব আকাশে।

সেই একই সমুদ্র,সেই একই ঢেউ যেন,একই সৈকত-এখানেই ইতিহাসটা ধবধবে আফ্রোদাইতির জেগে ওঠার পর্বের… হঠাৎ চোখ ঢেকে ফেললাম দু হাত দিয়ে।

দেখলাম সমুদ্র জল কেঁপে কেঁপে নাচছিল আলো সাজানো হাজারো ঠোঁটে।এটাই যৌনতার বিশুদ্ধতা,না হয় হয়তো বা কাইপ্রিসের ফিলোম্মেউডেস
(আফ্রোদাইতি)এর দুষ্টুমির মুচকি হাসি।


আসটারটের(আফ্রোদাইতি) পূজারীনি

চাঁদের আলোয় যৌনখেলায় ব্যাস্ত হয়ে গেল,দেবী আসটারটের(স্বর্গের রানী আফ্রোদাইতি)পুজারীনি-খেলা শেষে রুপার গামলায় প্রেমিকের সাথে আরম্ভ হলো স্নান পর্ব।

আঙ্গুলটা বাঁকা করে চিরুনী দিয়ে চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে জটা খুলছিল তারা,
বেগুনী রংএ রাঙ্গানো নখ আটকে ছিল কটা চুল,অনেকটা সমুদ্র স্রোতের অন্ধকারে সাজানো একে অন্যে জড়ানো কোরাল শাখা।

অবশ্য কোনসময় তোলে না তারা যোনীর চুল,নাভির নীচের ত্রিভুজ সেটা যে ভালবাসার মন্দির,রং দিয়ে সাজায় তারা নিজেদের,সুবাস মাখায় সারা শরীরে।

চাঁদের আলো দেখা দিলেই যৌন খেলায় মত্ত হয়ে যায় দেবী আসটারটের পুজারিনী,সোনার বাতি জ্বালানো তাবুতে শুয়ে ওরা শরীর খেলায় ব্যাস্ত হয়ে যায় কখনও এভাবে,কখনও ওভাবে।


রহস্য

ওটা গোপন রাজ্য,প্রবেশ ছিল না কোন পুরুষের,ওখানে আমরা আনন্দ করি তোমাকে নিয়ে-রাতের দেবী আসটারটে,তুমি পৃথিবীর মা,সব দেবতাদের জীবন বসন্ত-তুমিই।

বলার নিয়ম নেই-তাই পূজা আচারের কথা বলাটা ঠিক হবে না,তবু হয়তো বলতে পারি কিছুটা।একটা মুকুট পরা লিঙ্গের সামনে প্রায় একশ কুড়ি জন মেয়ে পুজো করছিল,নাচছিল সবাই দেবীর উদ্দেশ্যে,কারও কারও চোখ কান্নায় ভঁরা।কজন পুরুষের পোষাক পরে ছিল,বাকী সবাই চিরন্তন সাধারণ নারীর চেহারায়।


ধুপধুনোর ধোঁয়া,সাথে মশালের ধোঁয়া-চারপাশটা যেন কুয়াশায় ঢাকা,
আর মাঝখানে বসে ছিলাম আমরা সবাই।ধোঁয়ার অত্যাচারে,আমিও কাঁদছিলাম। অর্চনা করে,দেবীর পায়ে মাথা রেখে সটান হয়ে প্রনাম করছিল সবাই।

ধর্মীয় আচার পর্ব শেষ হওয়ার পর,দেবীর পবিত্র যোনী রংএ সাজাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো সবাই,তারপর আরম্ভ হলো লিঙ্গের খেলা,ওখানেই রহস্যের শুরু,এর পর আর কিছু বলা সম্ভব না,নিয়ম নেই যে।


মিশরীয় বারবনিতারা

প্লানজোর সাথে গেলাম শহরের পুরোনো এলাকায়,মিশরীয় বারবনিতারা থাকে যেখানে।ওখানে ছিল সুন্দর সুন্দর মাটির জগ গায়ে নানান ধরণের ছবি,
কাজকরা তামার থালা,হলুদ মাদুর-যেখানে সহজেই শুয়ে যৌনখেলায় মত্ত হতে অসুবিধা হবে না কোন।

বেশ ছিমছাম ঘরগুলো,নীল রং এর দেয়াল,চমৎকার একটা স্নিগ্ধ সুরে সাজানো যেন।

হাঁটুতে হাত রেখে সবাই বসে থাকে নতুন খদ্দের প্রেমিকের আশায়।চালের পুডিং খেতে খেতে অনেকে আবার সুর করে বলে, ‘সুখ আসুক তোমার জীবনে’,যদি কেউ বলে,‘ধন্যবাদ’ ওরা উত্তরে বলে, ‘ধন্যবাদ তোমাকে’।

হেলেনিক কৌতুকের সুরে কথা বলে ওরা,তবে কৌতুকের মাত্রাটা এতই দূর্বল যে অনেক সময় হাসতে হয় তাদের নিজেদেরকে,আমরাও শোধ নেয়ার জন্যে লিডিয়ান ভাষায় কথা বলা আরম্ভ করলাম,না বুঝে বেশ অস্থির হয়ে গেল সবাই।
(১০) মোমের পুতুল-একটা

মোমের খেলার পুতুল-ও তোমাকে ডাকতো ‘আমার ছোট্ট সোনা’, ভুলে গেছে এখন ও তোমাকে,ঠিক যে ভাবে ভুলে গেল আমাকে,ভুলে গেছে সব-কে ছিল তার সাথে মা,বাবা না কি অন্য কেউ।

তার ঠোঁটের মাতাল চুমুতে হারালো তোমার গালের রং,কান্নায় ভেসে গেল সে,বাম হাতে ভাঙ্গা আঙ্গুলটা দেখে।‘যে পোষাকটা তোমার গায়ে,ওটা তার নিজের হাতে সেলাই করা’।

পুতুল ও বলে,তুমি নাকি কথা বলতে পার,লেখাপড়াও জান।রাতে সে দুধের বোঁটা তোমার মুখে দিয়ে বলতো,‘কেদ না দেখ এই তো আমি আছি এখানে’।

পুতুল,আমার যদি দেখার ইচ্ছা হয় তাকে,দান করবো না হয় তোমাকে-আফ্রোদাইতির কাছে,দেবীর জন্যে আমার সবচেয়ে পচ্ছন্দের অর্ঘ হিসেবে।আমি ভাবতে চাই ও মৃত,হারানো অজানা ওপারের কোন দেশে।


শবযাত্রার গান

এটা শেষ যাত্রা তার,শোকের গান করো,সবাই!মাইটিলিয়ানের ওঝা,জোতিষীরা,
দোহাই তোমাদের,আজকে যোগ দাও তোমরাও।শোকের পোষাক সারা পৃথিবীর গায়ে,হলুদ গাছগুলোও কাঁপছে রক্তাক্ত হ্রদয়ের যন্ত্রনায়।

হেরাইওস!এটা শোক,দুঃখের মাস!দুঃখে গাছের পাতাগুলোও ঝরে যাচ্ছে একে একে,তুষারে ছেয়ে গেছে চারপাশ,সুর্যের আলোর প্রচন্ড তাপ শুধু ঐ বন দেশে…কোন শব্দ নেই কোথাও-শুধু নিস্তব্ধতা।

পিটাকোস চলে গেল,সময়ের চাকায় ছুটে গেল বুড়ো মানুষটা,ছুটে গেল তার শেষ আস্থানায়,কোন এক সমাধিতে,কোথাও কোন এক অজানায়।চলে গেছে আরও অনেক চেনা মুখ আমার,চলে গেছে সবাই ওপারের কোন এক দেশে।ও হয়তো বেঁচে আছে,তবে ঐ বেঁচে থাকা,না থাকাই আমার কাছে।

শরতের দশটা বছর কেটে গেল,শুধু দেখে গেলাম আসা যাওয়ার খেলা।হয়তো এবার যাওয়ার সময় হলো আমারও।একটু কাঁদলে না হয়,মাইটিলিয়ানের জোতিষীরা,ফেললে না হয় দু ফোঁটা চোখের জল,হেঁটে যেও আমার পায়ের ছাপ আছে যেখানে।



সাইপ্রাস দ্বীপের সমাধিস্তম্ভের কথা


আসতারতের(যৌনতার দেবী ভেনাস)বন্দনা

মায়েরা ক্লান্ত হয় না কখনও,তাদের ভালবাসায় খাঁদ নেই,দেবী আসতারতে
তুমি তো মা আমাদের সকলের।জন্ম নেয়া প্রথম শিশু তুমি,নতুন জন্মের নির্ধারণ করো লিঙ্গ তুমি,তোমার আদেশেই গর্ভধারণ,তোমার মাঝেই লুকানো ইহলোক পরলোক,তুমিই তো আনন্দের পৃথিবী।

তুমি কুমারী,তুমিই সন্তানের জন্মদাতা,মা,পবিত্রতার ছবি তুমি,আবার তুমিই কামুক চরিত্রটা,নিষ্পাপ তুমি-আনন্দে ভেসে যাওয়া শরীর,সেটাও তুমি।
আকাশ ভঁরা মধুর সুর তুমি,নিশাচর তুমি,নিঃশ্বাসে আগুন তোমার,সমুদ্রের ফেনা সেও তো তুমি-তুমিই আমাদের সান্তনার আশ্রয়।

কৃপা কর তুমি গোপনে,পরীক্ষা কর মানুষকে গোপনে,ভালবাসার চরম তুমি,তুমিই শেখাও আকাঙ্খা পৃথিবীর জীবজন্তদের,তুমিই নতুন প্রজন্মের আকাঙ্খার আকাশ।

ও দেবী আসটারটে দয়া করে শোন প্রার্থনাটা আমার,নিয়ে যাও আমাকে,না হয় ভঁর কর আমাকে,স্বর্গের চাঁদ!বছরে তের বার তুমিই নিয়ে যাও আমার জরায়ুর নির্যাস।

রাত্রির বন্দনা

রাতের গাছ বসে থাকে চুপচাপ,অনেকট যেন একটা নিস্তব্ধ পাহাড়।আকাশ ভেসে গেছে নক্ষত্রের জোয়ারে,বাতাস তুমি প্রেমিকের মত,চুমু দাও গালে,কপালে,
আমার।

রাত্রি-তোমার অন্ধকারেই জন্ম দেবতাদের,তোমার চুমুতে উন্মাদ ঠোঁট আমার।
তোমার কামনার আদরে ভঁরা আমার চুল,সন্ধ্যার ছোঁয়ায় আজকে খুঁজে পেলাম নতুন এক বসন্ত,আবার ।

নতুন ফুল আসবে-সে তো আমারই ছোঁয়ায়।বাতাসের মিষ্টি ছোঁয়া,সে তো আমার নিঃশ্বাস।সুবাস ছড়ানো যে আকাশে বাতাসে-আমারই কামনার নির্্যা স।
নক্ষত্র ছড়ানো যা আকাশে,সে তো আমারই চোখ।

তোমার সুর ওটা কি সমুদ্রের গর্জন,নাকি মরুভুমির নির্জন নিঃস্তব্ধতা।জানি না ভাষা তোমার,হারিয়ে যাই আমি সে আকাশে,আর চোখের জল ভেসে যায় মনটা,আমার।


ভালবাসার তান্ত্রিক

জঙ্গলের গাছপালা অবাক চোখে দেখে-সমুদ্রের নাচ,উন্মাদের মত আনন্দে ছুটে যায় তান্ত্রিকের দল।বিশাল স্তনের মাসকালে,লাল রং দিয়ে সাজালো দেবদারুর
বানানো কাঠের লিঙ্গ।

গান করতে করতে ছুটছিল সবাই,নানান ধরণের পোষাক গায়ে,আঙ্গুর লতার মুকুট মাথায়,হাতের রঙ্গীন পাথরের চুড়ির ঠুনঠুন শব্দে ভঁরা চারপাশ।লাইলাক ফুলের ডালের খোঁচায় ছিড়ে যাওয়া চামড়ার চীৎকার-হারিয়ে যাচ্ছিল বাঁশীর শব্দে।

চুলটা ভেজা,ছন্দে ছন্দে নাচছিল সকলে,বাতাসের দোলায় লাল হয়ে গেছে তাদের স্তন,ঘাম ভেজা গাল,ঠোঁট দুটো ভেজা ক্লান্তির ফেনায়।দেবতা ডাইনোসাস অর্ঘ দিলাম তোমাকে-অর্ঘ দিলাম ভালবাসা আমাদের।

সমুদ্রের বাতাসের দাপটে সুর্য দেবতা হেলিওসের লাল চুলগুলো ছুটে গেল আকাশের দিকে,মোমের সাদা শরীরটা জ্বলে উঠলো দপদপ করে।



কাইপ্রিসের সমুদ্র

হাঁটু ভাঁজ করে বসে ছিলাম সমুদ্র ধারের পাহাড়টায়।কালো হয়ে গেছে ঢেউটা,
যেন ভেসে আসা বেগুনী ফুলের জোয়ার।সাদা দুধের ফোয়ারা বেরোচ্ছিল যেন বিশাল স্তন দিয়ে।

কয়েক হাজার সুন্দরী মায়েনাদ মেয়ে শুয়ে ছিল ছড়ানো ছিটানো ফুলে,তাদের চুলে আটকানো লম্বা লম্বা ভেসে যাওয়া ঘাস।সূর্য জন্ম নিল পূর্ব আকাশে।

সেই একই সমুদ্র,সেই একই ঢেউ যেন,একই সৈকত-এখানেই ইতিহাসটা ধবধবে আফ্রোদাইতির জেগে ওঠার পর্বের… হঠাৎ চোখ ঢেকে ফেললাম দু হাত দিয়ে।

দেখলাম সমুদ্র জল কেঁপে কেঁপে নাচছিল আলো সাজানো হাজারো ঠোঁটে।এটাই যৌনতার বিশুদ্ধতা,না হয় হয়তো বা কাইপ্রিসের ফিলোম্মেউডেস
(আফ্রোদাইতি)এর দুষ্টুমির মুচকি হাসি।


আসটারটের(আফ্রোদাইতি) পূজারীনি

চাঁদের আলোয় যৌনখেলায় ব্যাস্ত হয়ে গেল,দেবী আসটারটের(স্বর্গের রানী আফ্রোদাইতি)পুজারীনি-খেলা শেষে রুপার গামলায় প্রেমিকের সাথে আরম্ভ হলো স্নান পর্ব।

আঙ্গুলটা বাঁকা করে চিরুনী দিয়ে চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে জটা খুলছিল তারা,
বেগুনী রংএ রাঙ্গানো নখ আটকে ছিল কটা চুল,অনেকটা সমুদ্র স্রোতের অন্ধকারে সাজানো একে অন্যে জড়ানো কোরাল শাখা।

অবশ্য কোনসময় তোলে না তারা যোনীর চুল,নাভির নীচের ত্রিভুজ সেটা যে ভালবাসার মন্দির,রং দিয়ে সাজায় তারা নিজেদের,সুবাস মাখায় সারা শরীরে।

চাঁদের আলো দেখা দিলেই যৌন খেলায় মত্ত হয়ে যায় দেবী আসটারটের পুজারিনী,সোনার বাতি জ্বালানো তাবুতে শুয়ে ওরা শরীর খেলায় ব্যাস্ত হয়ে যায় কখনও এভাবে,কখনও ওভাবে।


রহস্য

ওটা গোপন রাজ্য,প্রবেশ ছিল না কোন পুরুষের,ওখানে আমরা আনন্দ করি তোমাকে নিয়ে-রাতের দেবী আসটারটে,তুমি পৃথিবীর মা,সব দেবতাদের জীবন বসন্ত-তুমিই।

বলার নিয়ম নেই-তাই পূজা আচারের কথা বলাটা ঠিক হবে না,তবু হয়তো বলতে পারি কিছুটা।একটা মুকুট পরা লিঙ্গের সামনে প্রায় একশ কুড়ি জন মেয়ে পুজো করছিল,নাচছিল সবাই দেবীর উদ্দেশ্যে,কারও কারও চোখ কান্নায় ভঁরা।কজন পুরুষের পোষাক পরে ছিল,বাকী সবাই চিরন্তন সাধারণ নারীর চেহারায়।


ধুপধুনোর ধোঁয়া,সাথে মশালের ধোঁয়া-চারপাশটা যেন কুয়াশায় ঢাকা,
আর মাঝখানে বসে ছিলাম আমরা সবাই।ধোঁয়ার অত্যাচারে,আমিও কাঁদছিলাম। অর্চনা করে,দেবীর পায়ে মাথা রেখে সটান হয়ে প্রনাম করছিল সবাই।

ধর্মীয় আচার পর্ব শেষ হওয়ার পর,দেবীর পবিত্র যোনী রংএ সাজাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো সবাই,তারপর আরম্ভ হলো লিঙ্গের খেলা,ওখানেই রহস্যের শুরু,এর পর আর কিছু বলা সম্ভব না,নিয়ম নেই যে।


মিশরীয় বারবনিতারা

প্লানজোর সাথে গেলাম শহরের পুরোনো এলাকায়,মিশরীয় বারবনিতারা থাকে যেখানে।ওখানে ছিল সুন্দর সুন্দর মাটির জগ গায়ে নানান ধরণের ছবি,
কাজকরা তামার থালা,হলুদ মাদুর-যেখানে সহজেই শুয়ে যৌনখেলায় মত্ত হতে অসুবিধা হবে না কোন।

বেশ ছিমছাম ঘরগুলো,নীল রং এর দেয়াল,চমৎকার একটা স্নিগ্ধ সুরে সাজানো যেন।

হাঁটুতে হাত রেখে সবাই বসে থাকে নতুন খদ্দের প্রেমিকের আশায়।চালের পুডিং খেতে খেতে অনেকে আবার সুর করে বলে, ‘সুখ আসুক তোমার জীবনে’,যদি কেউ বলে,‘ধন্যবাদ’ ওরা উত্তরে বলে, ‘ধন্যবাদ তোমাকে’।

হেলেনিক কৌতুকের সুরে কথা বলে ওরা,তবে কৌতুকের মাত্রাটা এতই দূর্বল যে অনেক সময় হাসতে হয় তাদের নিজেদেরকে,আমরাও শোধ নেয়ার জন্যে লিডিয়ান ভাষায় কথা বলা আরম্ভ করলাম,না বুঝে বেশ অস্থির হয়ে গেল সবাই।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:০১

শায়মা বলেছেন: বিলিতিসের গান বলে কিছু জানতাম না।

জেনে ভালো লাগলো।
এই গান কি ইউটিউবে আছে?

কেউ গেয়েছে নাকি শুধু লিখেছিলো?

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:০১

ইল্লু বলেছেন: গ্রীক কবি সাপ্পোর সমসাময়িক কবি বিলিতিসের লেখা হিসেবে প্রথমে জানানো ফরাসী গবেষক,লেখক পিয়ের লুইসের মাধ্যমে।অবশ্য পরে এটা ফেরেববাজী হিসাবেই।

২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:২৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুন্দর কথামালা।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:৫৫

ইল্লু বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.