নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ (!)। তাই মানবতার প্রাধান্য সবার আগে। তারপর না হয় জাতি-গোষ্ঠীর প্রাধান্য। -- [email protected]

হাবিব ইমরান

পড়তে, ভাবতে এবং স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ানোয় দারুণ পছন্দ। ধার্মিকতা আর বকধার্মিকতার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি বিলকুল অপছন্দ।

হাবিব ইমরান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাবরি মসজিদ ও লোভী ভারতের পর্যটন শিল্প

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৩


চিত্রঃ [বাবরি মসজিদ]

ভারতের বাবরি মসজিদ নিয়ে আজ ঐতিহাসিক রায় হয়েছে, যা ভারতে সুদীর্ঘ সময় নিয়ে আলোচিত-সমালোচিত ইস্যু। এ নিয়ে কয়েক দফা দাঙ্গায় প্রায় কয়েক হাজার মানুষ মারা যায়। দাঙ্গার বিষয়টা ভারতের জন্য সাধারণ একটা ইস্যু হলেও বাবরি মসজিদ নিয়ে দাঙ্গাটা সাধারণ কোন ইস্যু নয়।
এ রায়ে ভারত রাষ্ট্র হিসেবে বিচক্ষণতার প্রমাণ দিতে পারতো, কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে।
আগে যা ছিলো তা আলাদা ব্যাপার। মন্দিরের স্থানে মসজিদ নাকি মসজিদের স্থানে মন্দির সেটা অতীত হয়ে গেছে। বর্তমান নিয়ে ভাবতে পারতো ভারত। বিতর্কিত এ জমিতে কাউকেই মসজিদ বা মন্দির স্থাপনের নির্দেশ না দিয়ে বাজেয়াপ্ত করতে পারতো। সেটাই হতো সবচেয়ে মানবিক। কিন্তু তারা না করে একপাক্ষিক রায় দিয়ে নিজেদের কলুষিত করেছে।

মানছি, রাষ্ট্রের জমি রাষ্ট্রের যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে ব্যবহার করার নৈতিক অধিকার রয়েছে। কিন্তু বিচক্ষণতার প্রমাণ দিতে যৌক্তিকতার আশ্রয় নিতে পারতো। কারোপক্ষে রায় না দিয়ে জমিটি বাজেয়াপ্ত করলে কারোরই কিছু করার থাকতো না। এক্ষেত্রে উভয় গ্রুপই মানতে বাধ্য হতো। পাশাপাশি চিরস্থায়ী একটা সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধান দেয়া সম্ভব হতো।

দেখা যাক সামনে কি হয়!
দাঙ্গা-হাঙ্গামা ইন্ডিয়ানদের জন্য একেবারে পান্তাভাত।

* বাবরি মসজিদ ছিল ভারতের উত্তর প্রদেশের, ফৈজাবাদ জেলার অযোধ্যা শহরের রামকোট হিলের উপর অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। ১৯৯২ সালে একটি রাজনৈতিক সমাবেশের উদ্যোক্তারা ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় একটি রাজনৈতিক সমাবেশ শুরু করে যা ১৫০,০০০ জন সম্মিলিত একটি দাঙ্গার রূপ নেয় এবং মসজিদটি সম্পূর্ণরূপে ভূমিসাৎ করা হয়। ফলস্বরূপ ওই একই সালে ভারতের প্রধান শহরগুলোতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয় যা মুম্বাই ও দিল্লী শহরে ২০০০ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়।

* ঐতিহাসিক এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয় ১৫২৮ সালে। মোগল সম্রাট বাবরের সময়ে, তারই নির্দেশে। মোগল আমলে মূলত ভারতের আধুনিক স্থাপনা তৈরি শুরু হয়। বর্তমান সময়ের বিপুল অর্থাহরণকারী ঐতিহাসিক স্থাপনার বেশিরভাগই মোগল আমলে তৈরি হওয়া। যা নির্মানের কয়েকশত বছর পর উগ্রহিন্দুদের আক্রোশের স্বীকার হয়ে ধ্বংস হয়ে যায়।

মসজিদটি তাজমহল, লালকেল্লা কিংবা কুতুব মিনারের মত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হলে কি ভারত সরকার কিংবা উগ্রহিন্দুরা তা কি ভেঙ্গে ফেলতো?
নিঃসন্দেহে তখন ভারত সরকার কিংবা ভারতের উগ্রহিন্দুত্ববাদীদের মুখে থাকতো অন্যসুর। যেখানে লালকেল্লা, কুতুব মিনার, তাজমহল সহ বিভিন্ন স্থাপনা থেকে অর্থ আসছে সেখানে বাবরি মসজিদ ততোটা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ছিলো না সেখান থেকে কোন অর্থও আসতো না। তাই সেটা ভেঙ্গে ফেলেছে।
অথচ কুতুব মিনার প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের পাথর দিয়ে কুতুব কমপ্লেক্স এবং মিনারটি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু উগ্রহিন্দুরা তো সেটা ভাঙ্গছে না! কেন ভাঙ্গছেনা সেটা বুঝতে ভুল হওয়ার কথা নয়।

ভারতের পর্যটন শিল্পের কিছু লাভজনক মোগল স্থাপনাঃ
তাজমহলঃ

চিত্রঃ তাজমহল

তাজমহলে বর্তমানে ২ থেকে ৩ মিলিয়ন পর্যটক আসে যার মধ্যে ২,০০,০০০ পর্যটক বিদেশী, যা ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসে ঠান্ডা মৌসুমে অক্টোবর, নভেম্বর ও ফেব্রুয়ারি মাসে।
* বর্তমানে তাজ দর্শনের খরচ ভারতীয়দের জন্য মাত্র ৪০ টাকা।। সার্ক দেশের পর্যটকদের জন্য তাজের প্রবেশমূল্য ৫৩০ টাকা। আর বাকি বিশ্বের জন্য তা ১০০০ টাকা।

কুতুব মিনারঃ

চিত্রঃ কুতুব মিনার

ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত একটি স্তম্ভ বা মিনার, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ ইটনির্মিত মিনার। এটি কুতুব কমপ্লেক্সের মধ্যে অবস্থিত, প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের পাথর দিয়ে কুতুব কমপ্লেক্স এবং মিনারটি তৈরি করা হয়েছে। ভারতের প্রথম মুসলমান শাসক কুতুবুদ্দিন আইবেকের আদেশে কুতুব মিনারের নির্মাণকাজ শুরু হয় ১১৯৩ খ্রিষ্টাব্দে, তবে মিনারের উপরের তলাগুলোর কাজ সম্পূর্ণ করেন ফিরোজ শাহ তুঘলক ১৩৮৬ খ্রিষ্টাব্দে। ভারতীয়-মুসলিম স্থাপত্যকীর্তির গুরুত্বপূর্ণ এবং অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন হিসেবে কুতুব মিনার গুরত্বপূর্ণ।
* এই কমপ্লেক্সটি ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান হিসেবে তালিকাবদ্ধ হয়েছে এবং এটি দিল্লির অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন-গন্তব্য। এটি ২০০৬ সালে সর্বোচ্চ পরিদর্শিত সৌধ, পর্যটকের সংখ্যা ছিল ৩৮.৯৫ লাখ যা তাজমহলের চেয়েও বেশি, যেখানে তাজমহলের পর্যটন সংখ্যা ছিল ২৫.৪ লাখ।

লাল কেল্লাঃ

চিত্রঃ লালকেল্লা

খ্রিষ্টীয় সপ্তদশ শতাব্দীতে প্রাচীর-বেষ্টিত পুরনো দিল্লি (অধুনা দিল্লি, ভারত) শহরে মুঘল সম্রাট শাহজাহান কর্তৃক নির্মিত একটি দুর্গ। ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত এই দুর্গটি ছিল মুঘল সাম্রাজ্যের রাজধানী।
* বর্তমানে এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র এবং ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সার্বভৌমত্বের একটি শক্তিশালী প্রতীক। প্রতি বছর ভারতীয় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লার লাহোরি গেটসংলগ্ন একটি স্থানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে থাকেন। ২০০৭ সালে লালকেল্লা ইউনেস্কো বিশ্বঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে নির্বাচিত হয়।
* লালকেল্লা পুরনো দিল্লির সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান। প্রতিবছর সহস্রাধিক পর্যটক এই কেল্লাটি দেখতে আসেন। বর্তমানে সন্ধ্যায় লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো’র মাধ্যমে কেল্লায় মুঘল ইতিহাসের প্রদর্শনী করা হয়।
[ সূত্রঃ উইকিপিডিয়া]

এরকম হাজারো মোগল-মুসলিম স্থাপনা রয়েছে ভারতের ৩২,৮৭,৫৯০ কিমি. এর মধ্যে। যা চারিদিকে শুধু আলো উজ্জ্বলতার দ্যুতি ছড়াচ্ছে। যেটা ছড়াচ্ছে না সেটার পরিণতি বাবরি মসজিদের মত হচ্ছে।

বাবরি মসজিদ নিয়ে উগ্রহিন্দুদের রাজনীতির কিছু নমুনাঃ
১৮৫৩ : এ মসজিদ নিয়ে প্রথম সহিংসতা ঘটনা ঘটে। তখন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক প্রশাসন দুই ধর্মের উপাসনার জায়গা আলাদা করার উদ্দেশ্যে বেষ্টনী তৈরি করে। বেষ্টনীর ভেতরের চত্বর মুসলিমদের জন্য এবং বাইরের চত্বর হিন্দুদের ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত হয়।
১৯৪৯: মসজিদের ভেতর ইশ্বর রামের মূর্তি দেখা যায়। হিন্দুদের বিরুদ্ধে মূর্তিগুলো রাখার অভিযোগ ওঠে। মুসলিমরা প্রতিবাদ জানায় এবং দুই পক্ষই দেওয়ানি মামলা করে। সরকার ঐ চত্বরকে বিতর্কিত জায়গা বলে ঘোষণা দেয় এবং দরজা বন্ধ করে দেয়।
১৯৮৪: বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) নেতৃত্বে ইশ্বর রামের জন্মস্থান উদ্ধার এবং তার সম্মানের একটি মন্দির প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করে হিন্দুরা। তৎকালীন বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি (পরবর্তীতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) ঐ প্রচারণরা নেতৃত্ব নেন।
১৯৮৬: জেলার বিচারক আদেশ দেন যেন বিতর্কিত মসজিদের দরজা উন্মুক্ত করে দিয়ে হিন্দুদের সেখানে উপাসনার সুযোগ দেয়া হয়। মুসলিমরা এর প্রতিবাদে বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটি গঠন করে।
১৯৮৯: বিতর্কিত মসজিদ সংলগ্ন জায়গায় রাম মন্দিরের ভিত্তি স্থাপান করে নতুন প্রচারণা শুরু করে ভিএইচপি।
১৯৯০: ভিএইচপি'র কর্মীরা মসজিদের আংশিক ক্ষতিসাধন করে। প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখর আলোচনার মাধমে বিতর্ক সমাধানের চেষ্টা করলেও তা পরের বছর বিফল হয়।
১৯৯১: অযোধ্যা যে রাজ্যে অবস্থিত, সেই উত্তর প্রদেশে ক্ষমতায় আসে বিজেপি।
১৯৯২: ভিএইচপি, বিজেপি এবং শিব সেনা পার্টির সমর্থকরা মসজিদটি ধ্বংস করে। এর ফলে পুরো ভারতে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে হওয়া দাঙ্গায় ২ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়।
১৯৯৮: প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির অধীনে জোট সরকার গঠন করে বিজেপি।
২০০১: মসজিদ ধ্বংসের বার্ষিকীতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঐ স্থানে আবারো মন্দির তৈরির দাবি তোলে ভিএইচপি।
জানুয়ারি ২০০২: নিজের কার্যালয়ে অযোধ্যা সেল তৈরি করেন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ি। সিনিয়র কর্মকর্তা শত্রুঘ্ন সিংকে নিয়োগ দেয়া হয় হিন্দু ও মুসলিম নেতাদের সাথে আলোচনার জন্য।
ফেব্রুয়ারি ২০০২: উত্তর প্রদেশের নির্বাচনের তফসিলে মন্দির তৈরির বিষয়টি বাদ দেয় বিজেপি। ভিএইচপি ১৫ই মার্চের মধ্যে মন্দির নির্মানকাজ শুরু করার ঘোষণা দেয়। শত শত স্বেস্বচ্ছাসেবক বিতর্কিত স্থানে জড়ো হয়। অযোধ্যা থেকে ফিরতে থাকে হিন্দু অ্যাক্টিভিস্টদের বহনকারী একটি ট্রেনে হামলার ঘটনায় অন্তত ৫৮ জন মারা যায়।
মার্চ ২০০২: ট্রেন হামলার জের ধরে গুজরাটে হওয়া দাঙ্গায় ১ হাজার থেকে ২ হাজার মানুষ মারা যায়।
এপ্রিল ২০০২: ধর্মীয়ভাবে পবিত্র হিসেবে বিবেচিত জায়গাটির মালিকানার দাবিদার কারা, তা নির্ধারণ করতে তিনজন হাইকোর্ট বিচারক শুনানি শুরু করেন।
জানুয়ারি ২০০৩: ঐ স্থানে ইশ্বর রামের মন্দিরের নিদর্শন আছে কিনা, তা যাচাই করতে আদালতের নির্দেশে নৃতত্ববিদরা জরিপ শুরু করেন।
অগাস্ট ২০০৩: জরিপে প্রকাশিত হয় যে মসজিদের নিচে মন্দিরের চিহ্ন রয়েছে, কিন্তু মুসলিমরা এই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। হিন্দু অ্যাক্টিভিস্ট রামচন্দ্র পরমহংসের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ি বলেন তিনি মৃত ব্যক্তির আশা পূরণ করবেন এবং অযোধ্যায় মন্দির তৈরি করবেন। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে আদালতের সিদ্ধান্তে এবং আলোচনার মাধ্যমে এই দ্বন্দ্বের সমাধান হবে।
সেপ্টেম্বর ২০০৩: বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পেছনে উস্কানি দেয়ায় সাত জন হিন্দু নেতাকে বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে রুল জারি করে একটি আদালত। তবে সেসময়কার উপ-প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদভানির - যিনি ১৯৯২ সালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন - বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।
অক্টোবর ২০০৪: বিজেপি নেতা আদভানি জানান তার দল এখনও অযোধ্যায় মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তা 'অবশ্যম্ভাবী।
নভেম্বর ২০০৪: উত্তর প্রদেশের একটি আদালত রায় দেয় যে মসজিদ ধ্বংস করার সাথে সম্পৃক্ত না থাকায় মি. আদভানিকে রেহাই দিয়ে আদালতের জারি করা পূর্ববর্তী আদেশ পুনর্যাচাই করা উচিত।
জুলাই ২০০৫: সন্দেহভাজন ইসলামি জঙ্গীরা বিস্ফোরক ভর্তি একটি জিপ দিয়ে বিতর্কিত স্থানটিতে হামলা চালিয়ে সেখানকার চত্বরের দেয়ালে গর্ত তৈরি করে। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী'র হাতে নিহত হয় ছয়জন, যাদের মধ্যে পাঁচজনই জঙ্গি বলে দাবি করে নিরাপত্তা রক্ষীরা।
জুন ২০০৯: মসজিদ ধ্বংস হওয়া সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে থাকা লিবারহান কমিশন তদন্ত শুরু করার ১৭ বছর পর তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়।
নভেম্বর ২০০৯: প্রকাশিত লিবারহান কমিশনের প্রতিবেদনে মসজিদ ধ্বংসের পেছনে বিজেপি'র শীর্ষ রাজনীতিবিদদের ভূমিকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয় এবং এনিয়ে সংসদে হট্টগোল হয়।
সেপ্টেম্বর ২০১০: এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দেয় যে স্থানটির নিয়ন্ত্রণ ভাগাভাগি করে দেয়া উচিত। কোর্টের রায় অনুযায়ী এক-তৃতীয়াংশের নিয়ন্ত্রণ মুসলিমদের, এক-তৃতীয়াংশ হিন্দুদের এবং বাকি অংশ 'নির্মোহী আখারা' গোষ্ঠীর কাছে দেয়া উচিত। যেই অংশটি বিতর্কের কেন্দ্র, যেখানে মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল, তার নিয়ন্ত্রণ দেয়া হয় হিন্দুদের কাছে। একজন মুসলিম আইনজীবী বলেন যে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
মে ২০১১: ২০১০ সালের রায়ের বিরুদ্ধে হিন্দু ও মুসলিম দুই পক্ষই আপিল করায় হাইকোর্টের পূর্ববর্তী রায় বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট ।
নভেম্বর ২০১৯: সে জায়গাটিতে মন্দির তৈরির পক্ষেই চূড়ান্ত রায় দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
[সূত্রঃ বিবিসি]

আজকের ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে ভারতের নৈতিক পরাজয় ঘটেছে বলে ধারণা করতে দোষ নেই।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: বাবরি মসজিদের জায়গাটায় একটি দাতব্য চিকিৎসালয় গড়বার আদেশ আসলে খুশি হতাম।

যেখানে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই চিকিৎসা পেত।

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৪

হাবিব ইমরান বলেছেন: ঠিক বলেছেন।
কিন্তু ভারতের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না। রাজনীতি দিয়েই তাদের পেট ভরে। ভালো কাজে রাজনীতি হয় না, দাঙ্গা-হাঙ্গামা হয় না।

যেহেতু দু গ্রুপের সমস্যা জমিটি নিয়ে, সেহেতু জমিটি রাষ্ট্র চাইলে দখল করে রাষ্ট্রীয় স্থাপনা নির্মাণ করতে পারতো। কিন্তু তা না করে দাঙ্গার আরেকটি সম্ভাবনা উন্মুক্ত করে দিয়েছে। সামনে যদি কখনো দাঙ্গা হয়ও এর দায়ভার নিবে কে?

২| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৮

দেবদাস বাবু বলেছেন: সাম্প্রদায়িক একটি বিষধর সাপের চেয়েও ভয়ঙ্কর

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৩

হাবিব ইমরান বলেছেন: সাম্প্রদায়িকতা সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদদের প্রধান হাতিয়ার।
আর এর প্রধান বাহন হলো গাধামার্কা অশিক্ষিত লোভী ধার্মিকশ্রেণী।

যাদের জন্য একটা দেশ কখনোই শান্তির নাগাল পায় না।

৩| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩০

হাবিব বলেছেন: একটা মসজিদের উপর আক্রোশ নাকি মুসলমান জাতির উপর?

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩০

হাবিব ইমরান বলেছেন: মসজিদ ভাঙ্গন তো ইস্যু, মুসলমানরাই মূল শত্রু।
মুসলমানদের ভারতদখলেরই প্রতিশোধ। ১১৭৫ খ্রি. এর মুসলমানদের ভারত শাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই মূলত হিন্দুদের পতন শুরু হয়।
আর বর্তমান হিন্দুরা সেসময়েরই প্রতিশোধ নিচ্ছে।

কিছু করার নেই, সহ্য করতে হবে।

৪| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫০

সাইন বোর্ড বলেছেন: এটা একমাত্র ভারতের মত সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের পক্ষেই করা সম্ভব । এখন প্রমাণ হচ্ছে যে, ভারতের বিচার ব্যাবস্থাও ধর্মীয় উন্মাদনার বাইরে নয় ।

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৭

হাবিব ইমরান বলেছেন: বিশ্বের বড় বড় সহিংসতাগুলো ধর্মীয় উন্মাদনার জন্যেই সফল হয়েছে। ধর্মীয় উন্মাদনার ইতিহাসে আরেকটা ঘটনার সফল অন্তর্ভুক্তি। সে হিসেবে আজ একটি ঐতিহাসিক দিন।

৫| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৬

ঢাবিয়ান বলেছেন: বর্তমানের প্রেক্ষাপটে ভিন্ন কোন রায় হলে সেটা হত আশ্চর্যের বিষয়।

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪৭

হাবিব ইমরান বলেছেন: ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ চরিত্র, নীতি, নৈতিকতা, আদর্শ, মূল্যবোধ, ধর্ম, রাজনীতি, চাটুকারিতা, পা চাটা, পাছা চাটা, তেল মালিশ, চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র, রাজনৈতিক নোংরামি, বিশৃঙ্খলা সহ অপরাধ বিজ্ঞানের ভাষায় আরো হাজারো অপরাধের জন্য কেউ কারো থেকে আলাদা নয়। বরং একে অপরের পরিপূরক। বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান - নোংরামিতে বিশ্বসেরা। ধোকা আর বাটপারিতে সিদ্ধহস্ত।
নির্লজ্জতা এই উপমহাদেশের ভূষণ।

ভারতীয় চরিত্র এই উপমহাদেশের মধ্যে নোবেল পাওয়ার দাবীদার। তারা নোবেল পাচ্ছেও। উপরোক্ত বিষয়েও যদি নোবেল দেয়ার বিধান থাকতো, তাহলে ভারতীয়রাই সেগুলো অর্জন করতো। প্রধানমন্ত্রী মোদী পেত সবার আগে।

বাবরি মসজিদের বিরুদ্ধে রায় দিয়ে তারা তাদের নিম্নস্তরের নৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেছে।

৬| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:২৬

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: আমাদের ুউপমহাদেশের লোকেরা ধর্মীয় দিক থেকে বরাবরই উগ্র।
-92 তে ওভাবে মসজিদ ভাঙাটা অন্যায় ছিল। তখনকার দাঙ্গায় কোন পক্ষেরই লাভ হয় নি
-২০০২তে ট্রেনে হামলার কোন দরকারী কারণ ছিল না। [যেখানে অন্তত ৫৮ জন মারা যায়। আর এর কারণেই গুজরাটে দাঙ্গা হয়, যেখানে কয়েক হাজার মানুষ মারা যায়।]

আজকের রায়টা একপেশে মনে হয়েছে।

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:১৩

হাবিব ইমরান বলেছেন: রায়টা একপেশে হয়েছে সন্দেহ নেই।
এর নায়ক হলেন তৎকালীন গুজরাট দাঙ্গার মূল হোতা নরেন্দ্র মোদী। যে কিনা ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। এরকম একটা কসাই কিভাবে একটা রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী হয়, তা ভারতের আবাল মার্কা উগ্রগাধাদের না জানলে বুঝতাম না।

আজকের একপেশে রায়ের বিপরীতে ইতিহাসও তার প্রতিশোধ নিবে, জঘন্যভাবে। আশাবাদী।

৭| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১৮

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: এই রায়টির জন্য বিজেপি নেপথ্যে দীর্ঘদিন কাজ করে
এখন প্রকাশ্যে বিজেপি সমর্থিত বিচারক এর মাধ্যমে
প্রতিহিংসা হাসিল করল ।

.................................................................................
ভারতীয় বিচার ব্যবস্হা নিয়ে আমার একটু সমর্থন ছিলো
আজ সেটাও বিচুর্ণ হলো ।

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:১৮

হাবিব ইমরান বলেছেন: নির্লজ্জতার আরেক নাম ভারতীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা। একপাল গাধা নিয়ে যার পরিচালনা পর্ষদ গঠিত।
এদের থেকে আপনি ভালো কিছু কিভাবে আশা করতে পারেন?

৮| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:২৭

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
বিবিসি বাংলা পরিকল্পিত ভাবে গত ৯ দিন জাবত বাবরি মসজিদ দিয়ে দিনের পর দিন বাংলাদেশ কে টার্গেট করে উষ্কানিমুলক সংবাদ প্রচার করে যাচ্ছে।

আর্টিকেলগুলো দেখলে বোঝা যায় বিবিসি বাংলা তত্তকালিন 'ইনকেলাবের' মত মরিয়া হয়ে চাইছে বাংলাদেশে ৯২ এর মত দাংগা লাগুক।

১১ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:০৯

হাবিব ইমরান বলেছেন: বিবিসির এটা প্রথম নয়। বিবিসি শয়তানের কাজ সবসময় অর্ধেক কমিয়ে দেয়। যে জায়গায় শয়তান ঝামেলা পাকাবে সেখানে বিবিসিই শয়তানের আগে ঝামেলা পাকিয়ে দেয়।
শয়তান প্রভুর কাছে একবার এ নিয়ে অভিযোগও করেছিলো সম্ভবত।
শয়তান বলেছিলো,
প্রভু, পৃথিবীতে নষ্টামি আর ঝামেলার জন্য যদি বিবিসিকেই পাঠালে, তাহলে আমাকে পাঠালে কেন?
তখন প্রভু বলেছিলো,
হতাশ হয়োনা, সে তোমার হেল্পার। :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.