![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আগ্রহ মোর অধীর অতি—কোথা সে রমণী বীর্যবতী । কোষবিমুক্ত কৃপাণলতা — দারুণ সে , সুন্দর সে উদ্যত বজ্রের রুদ্ররসে , নহে সে ভোগীর লোচনলোভা , ক্ষত্রিয়বাহুর ভীষণ শোভা ।
তাদের দুজনের ভালোবাসাটা আরও অনেক বেশিই বোধয় জমে উঠত, যদিনা দূরত্ব নামক জিনিসটা তাদের মাঝে না থাকতো। অবশ্য গ্রামীণফোনের পাঁচ টাকায় একশ এসএমএস আছে বলেই উদ্ধার। এই, এখন কি করো?? ভাত খাইছ?? মাছের কাঁটা কি বেশিই ছিল?? আরও কত কিছু । আমি বুঝিনা, এতো মোবাইল টিপাটিপির লাভ টা কি?? শুধু ২-১ মাস পরে কি-প্যাড পালটানো?? বুঝিনা বাপু।
তাদের দুজনের দেখা হয় বছরে মাত্র একবার। এই আধুনিক খোলামেলার যুগেও এই একবার দেখা করাই তাদের জন্য অনেক কঠিন একটা ব্যাপার। দেখতে দেখতে সেই দিনটি এসেই পড়ল। দুজনের মনেই ভয়, দেখা হবে তো?? যদি না হয়?? তারা আর ভাবতে চায়না। মন খারাপ হয়ে যায় দুজনের-ই। এলোমেলো পায়ে একজন চলে যায় ফজলুল হক মুসলিম হলের সামনের পুকুর ঘাঁটে। আরেক জন চলে যায়, দিনাজপুর মহিলা হোস্টেল এর ছাদে। দুশ্চিন্তা করতে করতে এক সময় মেয়েটার গাল পানিতে চক চক করে ওঠে,গলার কাছে কি যেন একটা আটকে যায়। আর ছেলেটা?? সে কি করবে?? কান্না তো করা যাবে না। তাই সে বার বার পুকুরের পানিতে মুখ ধুয়ে নিচ্ছে।
রাত গভীর হয়। এসএমএস এ ওদের প্রেমেলাম চলতে থাকে। কিন্তু অন্তরের ভয়টা! সেটা আর কেউ কাউকে বলতে পারেনা। কি লাভ, কিছু আনন্দ ঘন মুহূর্তকে নষ্ট করে??
ছেলেটা সেই সকাল থেকে গোছগাছ শুরু করেছে। হাতে তো সময় আর বেশি নাই। মাত্র দুই ঘণ্টা। এই দুই ঘণ্টার মাঝে তাঁকে গাবতলি বাস স্ট্যান্ডে পৌছাতেই হবে। মেয়েটা মায়ের সাথে ঢাকা এসেছে ভাইয়ের বাসায়। ঈদ এর কেনাকাটা করার জন্য। মেয়েটা রংপুরে ফেরার টিকেট করার জন্য সকাল আট টায় বাস স্ট্যান্ডে আসবে আর ছেলেটা, সেই কাউন্টার থেকে রংপুরের বাসে উঠবে। তার বাস ৯:৩০ মিনিটে। এই ১:৩০ ঘণ্টাই তাদের সাধনার ফসল। তারা কতইনা বিস্ময় নিয়ে কথা বলবে। আর খেয়াল রাখবে, চোখের পাতা যেন বেশি না পড়ে। তাহলে ওই সময়টুকু প্রিয়তমেসুর মুখ খানা দেখা হবে না। কি জানি, হয়তো তারা একবারের জন্যে হলেও এক জন, আরেক জনের হাতে আলতো করে ছোঁয়া লাগাবে। আর সাথে সাথে আনন্দের একটা দোলা বয়ে যাবে তাঁদের প্রতিটি নিউরনে। হয়তোবা...
ছেলেটা ঠিক আট টায়, কাউন্টারে পউছাল। কিন্তু মেয়েটা কোথায়?? ছেলেটা তাড়াতাড়ি একটা টেক্সট করল- “তুমি কোথায়”?? মেয়েটা রিপ্লাই দিলো-“রাস্তায় কিসের যেন মিছিল হচ্ছে। আমার রিক্সা আটকে আছে”। রিপ্লাই টা পড়েই, ছেলেটার মাথাটা যেন ঘুরে উঠল। বুকের ভিতরটা কেমন যেন ফাঁকা হয়ে গেলো। মুখটা এমন টক টক লাগছে কেন ছেলেটার?? তার কি বমি পাচ্ছে?? ছেলেটা ঘড়ি দেখল। সময় ৮:২০। সময় এতো তাড়াতাড়ি যাচ্ছে কেন আজকে?? সে আর ধরজ ধরতে না পেরে ফোন দিলো। মেয়েটা কাঁদ কাঁদ গলায় বলল-“তুমি আস, আমাকে নিয়ে যাও প্লিজ। আমার আরও এক ঘণ্টা লাগবে”। ছেলেটা কিছু না বলেই ফোন কেটে দিলো। রাগে, নাকি অভিমানে, ঠিক বোঝা গেলো না। সে চুপ চাপ বসে আছে। মেয়েটা ফোনের পর ফোন দিয়েই যাচ্ছে। কিন্তু ছেলেটা ধরছে না। আচ্ছা, মেয়েটার কি দোষ?? মিছিল কি সে দিয়েছে?? নিজের যুক্তির কাছে হার মেনেও সে ফোন ধরছেনা। শুধু বিধাতাকে বার বার দোষারোপ করেই যাচ্ছে ছেলেটা। পাগল।
ইস, মেয়েটা যদি সময় মত আসতে পারত! তাঁদের এই ১:৩০ ঘণ্টা দেড়শ বছরকেও হার মানাত। ছেলেটা সাদা রঙের যে গেঞ্জিটা পড়ে আছে, কি জানি, মেয়েটা হয়তো কারও নজর লাগার ভয়ে চোখ থেকে একটু কাজল নিয়ে আলতো করে একটু খানি লাগিয়ে দিতো। আথবা তারা একসাথে নাস্তা করার পরে, ছেলেটা লোক চক্ষুর ভয় না করে মেয়েটার আঁচলে হাত মুছত। মেয়েটাও বড্ড বেহায়া। সেই ওড়নার হাত মোছা জায়গাটা সে এক হাত দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে আছে। ছিঃ ছিঃ কি বেহায়া মেয়েরে বাবা।।
হয়তবা...হয়তবা... সত্যি কথা বলতে কি, আমি না ঠিক জানি না আর ঠিক কি ঘটত। মানে বলতে পারবো না। কিভাবে বলব?? বলা কি সম্ভব?? ২০-২২ বছরের যুবক বয়সের প্রেমে আহ্লাদ আনুভুতির কি সীমা থাকে???
ঘড়িতে সময় ৯টা বেজে ৩০ মিনিট। ছেলেটার গাড়ি রংপুরের দিকে সাই সাই করে ছুটে চলছে। আর মেয়েটা?? সেই জ্যামেই পড়ে আছে। এখন সে সবাইকে দেখিয়ে ভ্যা ভ্যা করে কাঁদছে। আর ছেলেটা?? সে এক দৃষ্টিতে জানালার দিকে তাকিয়ে আছে, আর মাঝে মাঝে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে উঠছে।
পাঁশের সিটের বৃদ্ধা মতন মহিলাটি ছেলেটির পিঠে হাত দিয়ে বলল- অনেক দিন পরে মায়ের সাথে দেখা হবে বুঝি?? কেদনা বাবা কেদনা।। ছেলেটি এ বার কান্না বন্ধ করে ফেল ফেল করে অবাক নয়নে মহিলাটির দিকে তাকিয়ে আছে।
হা হা হা.।.।.।
হায়রে ভালোবাসা!! দূরত্ব বাড়ার সাথে সাথে সে ও আচমকা বাড়তেই থাকে। আহারে, আহারে।।
৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৫৩
অন্তহীন পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৩২
বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন:
৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৫৩
অন্তহীন পথিক বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০৭
প্রিন্স অফ পার্সিয়া বলেছেন: বেশ ভালো হয়েছে!