নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধর্মপুত্রযুধিষ্ঠিররা সাবধান

ইমরোজ

হমপগ্র

আমার আমি।

হমপগ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি তারকার খোসে পরা, আর একটি ভালবাসার গল্প

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:৩৭

তোমাদেরকে আজকে একটা গল্প বলি। বেশ ছোট মানুষদের নিয়ে একটা বড় গল্প। এই গল্পের শুরু কোথায় বা শেষ কোথায় কেউ বলতে পারে না। তবে এইটুকু জেনো এইটা একটা গল্প। ছোটবেলায় ছোট চাচার গায়ের উপর পড়তাম একটা গল্প শোনার জন্য, আর ঠিক তখনই চাচা জুড়ে দিত "এক দেশে ছিল এক রাজা আর আরেক দেশে ছিল এক রানী"-এর গল্প, আর আমি তখন স্বপ্নে হারাতাম। মনে হত ছোট রানী বড় রানী হয়তো আমাকে নিয়ে যেতেই দিগন্ত পাড়ি দিয়ে মহা কাব্যের পাতা ছেড়ে নামবে।



গল্পটা শুরু করতে হয়, যেখানে একটি ছেলে বসেছিল...একটি বারান্দার রেলিং ধরে, আর বারান্দার ওপাশে ছিল আরেকটি সুন্দর বারান্দা। আর ঐ বারান্দাটায় একটা ফুলের টব ছিল। ছোট ছোট কাটাযুক্ত পাতা। গোলাপ গাছ, সেখানে দুইটি গোলাপ ফুটে আছে। হ্যা, এই গোলাপ ফুলের হাত দিয়েই গল্পের শুরু। ছেলেটা ভোর বেলা উঠে ঐ বারান্দার ধারে যেত, গোলাপ গাছটাকে দেখবে বলে। টবের গাছটার কিছু ডালপালা বের হয়ে গেছে বারান্দার গ্রীলের ফাঁক ফোকড় দিয়ে। আর একটা প্রস্ফুটিত গোলাপ কী ভয়ংকর ভাবে ঝুকে আছে ছ'তলার বারান্দা থেকে সরাসরি নিচে মুখ দিয়ে, যেন এখনই ঝরে পরবে।



ভাবনায় অধীর হয়ে ছেলেটা বারান্দা দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে, গোলাপ ফুলটি ঠিক যে স্থানে তাকিয়ে আছে সেই দিকে। জীবন্ত কাঁটায় আকীর্ণ গোলাপটি এখনই আত্মহত্যা করে বসতে পারে। ঐ বারান্দায় কেউ নেই তেমন কিন্তু নয়। ঐ গোলাপ ফুল গাছটার যত্ন নিত এক বুড়ো কিছিমের লোক। খবরের কাগজ নিয়ে বারান্দার ইজি চেয়ারে বসত, আর একটার পর একটা সিগারেট পুরাত। দেখতে দেখতে বেলা গড়িয়ে ঠিক দশটার সময় লোকটা উঠে পরত। রাজ্যের কাজ করতে হয় কিনা!



আমাদের গল্পের শুরুটা এইখানেই থেমে থাকে। যখন ভোর রাতের কোন একসময় আকাশের ঐকান্তিক ইচ্ছার বশবর্তি হয়ে একটা তারকা খোসে পরে। আর কোন একটা জোড়া চোখ সেই তারার খোসে পরা দেখে ফেলে, আর কোন একটি মন একটা ইচ্ছার কথা ভেবে দেখে। ভেবে দেখ, গোলাপটার আত্মহত্যা করার খুব বেশি বাকি নেই। আজ বাদে কাল যেকোন দিন তার বোটা আলগা হয়ে মাটিতে পরে যাবে। হয়ত পথচারীর অলস হাটার মুহূর্তে সেটা পায়ের নিচে পরে থেতলে যাবে। বের হয়ে পরবে লাল রস, পীচ ঢালা রাস্তায় একটু দূর গিয়ে শেষ হয়ে যাবে লাল রঙ। অর্থাৎ গোলাপের গল্পের সমাপ্তি হবে হয়ত।



তারা পরার শব্দ কেউ পায় না। তবু ঘরে বন্দী ছেলেটার বুকের কোণে বেঁধে আছে ইচ্ছা প্রকাশ করাটা। সে ঠিকই জানে, তার ইচ্ছেটা পুরণ হবেই। কারণ আজকাল তারকা এভাবে পরে যায় অনেক স্থানে, তবু শহরের বালুকণায় এই পতন কারও চোখে পরেনি। শুধু একটা ইচ্ছা করার জন্যই তারকার পতন হলো গতরাতে।



পরের দিন সকালের কথা। গোলাপের গাছটাতে ফুল উধাও। একেবারেই নেই। কোথাও নেই, রাস্তার ধারে কোথাও পরে নেই, অথবা মধ্যবিত্তের দেয়ালের ওপারে এপারে কোথাও নেই। ফুলটা গেল কোথায়? ছেলেটা হন্যে হয়ে খুজে। যদিও কাল তার ইচ্ছেটা এমন ছিল না। সে জানত এমনটার ঠিক উল্টোটা হবে। ফুলটা ঠিক তারই হয়ে যাবে। যাবতীয় চোখের ভালবাসা যদি এই তল্লাটে কেউ ফুলটিকে দিয়ে, থাকে তাহলে তা একমাত্র সেই ছেলেটিই দিয়েছে। কিন্তু এ কী হলো? গোলাপের কোন চিহ্নই নেই? কোথাও একটা ভুল হয়েছে। বাড়ির বুড়ো ফুলখানা ছিড়ে নেয়নি তো? অথবা ঐ খাটো করে চাকরটা? তাদের বাড়ি, তাদের বাগান নিতেও পারে। তাতে তো দোষের কিছু কেউ দেখবে না। কিন্তু ছেলেটির ইচ্ছের কী হবে? কোথায় দাঁড়াবে সে? কাকে বলবে এমনই এক সৌভাগ্যের কথা?



নিজের বারান্দায় ফিরে এসে, ঐ পারের বারান্দায় চোখ মেলে চেয়ে থাকে। মাঝে মাঝে রাস্তায় ঠায় তাকিয়ে থাকে ছেলেটা। যদি গোলাপের রংটুকুও দেখা যায়। যদি চোখের ভুল হয়...যদি যদি যদি...কিন্তু নাহ! গোলাপটি কে কোথাও দেখা গেল না। বারান্দায় ঠিক সময়মত বুড়োটি এসে বসে। সিগারেট শেষ করে, টবে অলস পরে থাকে গোলাপ গাছটি, আর একটি দু'টি ফুলের কলি পাপড়ি মেলবার পথে, আর নতুন কতগুলো কুড়ি পাপড়ি মেলার পথে!



গল্পের শেষ তো জানা যায় না। সব গল্প সব সময় শেষও হয়না। একটি গোলাপের সাথে মানুষের সম্পর্ক হতে পারে এত নিবিড়, শুধু এইটুকুর জন্য গল্পের সৃষ্টি হতে পারে না। কারণ যাবতীয় কাজের ভীড়ে, পৃথিবীর আকাশ যখন ব্যাস্ত, এরকম একটা ঘটনার তো মূল্য নেই। একটি গাছের সমস্ত প্রাণ ঐ গোলাপের চিহ্নটা থাকা প্রয়োজন ছিল। ছেলেটার বুকের ভেতর একটা তারার খোসে পরা আর গোলাপের খসে যাওয়া এক সমান্তরালে মনে হয়। ছেলেটার গল্প আরেকদিন বলি...আজকে এইটুকুই!

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:৪৬

নাঈম বলেছেন: জীবনের সব গল্পের কি শেষ আছে? এমন অনেক গল্প আছে আমাদের জীবনের, যা শুরু হওয়ার পর অনন্তকাল ধরে চলতে থাকে.......


কেমন আছেন হমপগ্র ভাই? ঈদের শুভেচ্ছা নেবেন।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:৪৮

হমপগ্র বলেছেন: এইতো জেডা...ভাল খারাপ মিলে আছি একরম। আপনি ভাল আছেন?

আপনাকেও ঈদের শুভেচ্ছা। ভাল থাকবেন নাঈম ভাই!

২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:৫১

নাঈম বলেছেন: আমি আবার জেডা হৈলাম কবে, জেডা তো চিক্না :)

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:৫৫

হমপগ্র বলেছেন: :D

জেডা তো সবাইরে কওন যায়!

৩| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:৫৩

অ্যামাটার বলেছেন: তবুও জীবন যাচ্ছে চলে/জীবনের নিয়মে...

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:৫৫

হমপগ্র বলেছেন: :(

৪| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ৩:৫৪

কঁাকন বলেছেন: ভালো লাগলো
জীবনের গল্পগুলো এমনি অসমাপ্ত

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ সকাল ১০:১৪

হমপগ্র বলেছেন: ধন্যবাদ কাকন। ঈদ মোবারক!

৫| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ সকাল ৭:৩০

রাশেদ বলেছেন: ঈদ মোবারক! /:)

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ সকাল ১০:১৩

হমপগ্র বলেছেন: ঈদ মোবারক রাশু ভাই :(

৬| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:০১

ভাঙ্গা পেন্সিল বলেছেন: গোলাপটা কি আর পেলেনই না?

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:৪০

হমপগ্র বলেছেন: নাহ! গোলাপটা একেবারেই চিহ্ন রেখে যায়নি!

৭| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:০৩

নিবিড় বলেছেন: জীবনটাযে কোথায় নিয়ে যায় ...কেউ জানে না

ভাল লেগেছে

++্

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:৪২

হমপগ্র বলেছেন: ধন্যবাদ নিবিড়। ভাল থাকবেন!

৮| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:৪১

আকাশচুরি বলেছেন: অসাধারন!!

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:৪৪

হমপগ্র বলেছেন: ধন্যবাদ আকাশচুরি। আপনার গল্পের অপূর্ব হাতের তুলনায় এ কিন্তু একেবারেই কিছু নয়!

খুব খুশি হলাম আপনার মন্তব্য পেয়ে। ভাল থাকবেন! অনেক শুভকামনা ও ঈদ মুবারাক!

৯| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১০:১৮

সুলতানা শিরীন সাজি বলেছেন: খুবই সুন্দর .......।
লিখতে থাকো ইমরোজ।
শুভকামনা।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১০:৫২

হমপগ্র বলেছেন: ধন্যবাদ আপু।

আপনার জন্যও অনেক শুভকামনা!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.