![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কবিতায় শুরু কবিতা শেষ
বিয়েটা তাহলে ভেঙ্গেই যাবে।টাকা নামক জিনিসটা আসলেই যে জীবনে গুরুত্বপূর্ণ আজ সে তা ভালভাবেই বুঝতে পারছে।অনেকের কাছে হয়তো এই টাকাটা কিছুই না,কিন্তু তার বাবার কাছে অনেক।
হোস্টেলে থাকার সময় থাকে যখন টাকা পাঠাতে হত তখন তার বাবাকে অনেক কষ্ট করতে হত।আজ যৌতুকের কারণে যখন তার বিয়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে,তখন তার বাবার অসহায় ভাবে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।না কাজটা থাকে করতেই হবে।ন্যায় অন্যায় আসলে একটা কাল্পনিক ব্যাপার।যেখানে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হয়,সেখানে আবার ন্যায় অন্যায় কি?শাহানা মোবাইলটা হাতে নিল।রিং হচ্ছে।দুই বার রিং হওয়ার পর তৃতীয় বারের সময় ফোনটা রিসিভ করল।
'স্যার আমি যাচ্ছি" শাহানা বলল।
সুমনের সাথে তার প্রায় পাঁচ বছরের সম্পর্ক।দুই পরিবারই জানতো তাদের ব্যাপারটা।শাহানার ব্যাপারে তার বাবা-মা ও নিশ্চিন্ত ছিলেন।
সুমন ছেলে হিসেবে ভাল,ভদ্র,বিনয়ী।এই পাঁচ বছরে শাহানার সাথে তার ব্যাবহার খুবই ভাল ছিল।অন্যান্য প্রেমিকদের মত সেও তার প্রেমিকাকে সুন্দর একটি ভবিষ্যতের সপ্ন দেখাত।সেখানে হয়তো দুই তিনটি সন্তান ও থাকতো।
শাহানা ও সুমন একই শহরে পড়াশুনা করতো।তাই তাদের মধ্যে অন্যান্য সম্পর্কের পাশাপাশি শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল পরম বিশ্বাসে।এভাবে তাদের দিনগুলো ভালই কাটছিল।
তাদের দুইজনই তাদের পড়াশুনা শেষ করে চাকুরি তে যোগদান করল।সুমনের বিসিএস হয়ে যাওয়ায় সে সরকারি চাকুরী পেয়ে গেল।এদিকে শাহানা একটি এন জি ও তে সাধারন একটা চাকুরী করছে।
ছেলে সরকারি চাকুরি পাওয়ায় সুমনের বাবার চিন্তা বদলে গেল।তিনি বর্তমান বাজারদরে ছেলের মুল্য চিন্তা করতে লাগলেন।সুমনের চিন্তাও ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে লাগলো।সে তার বিয়েটাকে তার বিশাল অংকের অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে দেখল।
শাহানার বাবা যখন বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে সুমনের বাবার কাছে গেলেন,তখন সুমনের বাবা অনেক ধানাই পানাই করে পনেরো লক্ষ টাকা যৌতুক চাইলেন।এই কথা শুনে শাহানার বাবার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার মতো অবস্থা।অবশেষে অনেক কথা বলে দশ লক্ষ টাকা স্থির হল।
শাহানার বাবা শাহানাকে কিছু না জানিয়ে জমি বিক্রি করা শুরু করলেন।সবকিছু মিলিয়ে তিনি চার লক্ষ টাকা যোগাড় করতে পারলেন।অবশেষে কোন উপায় না পেয়ে তিনি শাহানাকে জানান।
শাহানা এই কথা জানতে পেরে সাথে সাথে সুমন কে জানায়।কিন্তু সুমন তাকে সাফ সাফ জানিয়ে দেয় যে,সে তার বাবার কথার বাইরে যেতে পারবেনা।
শাহানার মাথায় জেদ চেপে যায়,টাকার জন্য এতকিছু যখন তখন যেভাবেই হোক সে টাকাটা যোগাড় করবেই।সে সব চেষ্টাই করলো কিন্তু পারলনা।
শাহানা যেখানে চাকরি করে সেখানকার পরিচালক আনিস চৌধুরী।বিবাহিত,দুই সন্তানের জনক।
শাহানা একদিন আনিস চৌধুরীর কাছে গেল।সে তার সমস্যা গুলো আনিস চৌধুরীকে বলল।
'দেখ শাহানা টাকা পয়সা নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই।আমি আগামিকাল কক্সবাজার যাচ্ছি,তুমি চল মনটা ভাল হয়ে যাব।'
'স্যার আমি পরে জানাচ্ছি।'
শাহানা সারা রাত চিন্তা করল।সকাল বেলা সে আনিস চৌধুরীকে ফোন করে জানালো সে যাবে।
আনিস চৌধুরী শাহানাকে আরও বড় কর্মকর্তাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন।তাদের সাথেও সে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করল।
ছয় মাস পর তার ব্যাংক একাউন্টে টাকার পরিমান বিশ লক্ষ টাকা।
শাহানা সুমনের হাতে দশ লক্ষ টাকা দিয়ে বিয়ের ব্যাবস্থা করতে বলল।
বিয়েটা হয়ে গেল।শাহানার বাবার চোখে আনন্দ অশ্রু।শাহানার সব পাপ এই অশ্রুতে ধুয়ে পবিত্র হয়ে গেল।
২| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৩২
রিওমারে বলেছেন: চরম সিধান্ত। যে ছেলেরা বিয়েতে যৌতূক দাবী করে সেই কনের এই সুত্র ফলো করা উচিত।।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৫৪
মিশুক৩১ বলেছেন: কঠিন মামা !!!