নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই মিথ্যে শহরে আমি থাকবনা তোমাদের মত

আহ অমরত্ব, তোমার উষ্ণ ঠোঁটে রাখি ঠোঁট, চোখ বন্ধ করে সবটুকু আনন্দ ভোগ করি। তোমার উষ্ণতায় বারেবারে বিলীন হয়ে যাই, দিতে পারিনি কিছুই, শুধু নষ্ট করে যাই।

ইমতিয়াজ ইমন

কবিতায় শুরু কবিতা শেষ

ইমতিয়াজ ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি রাত্রি নষ্ট হয়ে যাবে, নষ্ট করে যাবে

১০ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ২:৫৯

একটি রাত। অন্যান্য রাতের মত এ রাতেও আধার ছিল। রাতের গভীরতায় কাল্পনিক সম্ভোগে ক্লান্ত তরুণেরা ঘুমিয়ে পড়েছে। নারী পুরুষ সবাই ক্লান্তির কাছে হার মেনে ঘুমের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। সবাই ক্লান্ত হতে চায়। ক্লান্তির কাছে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চায়।

রাত্রির অন্ধকারকে আরও অন্ধকার করে দিতে রাস্তায় নেমে আসে রাত মেয়েরা। চলে দরদাম। এই রাত বলেছিল আজ জোছনা হবে। কিন্তু চাঁদ তার কক্ষপথে থেমে গেছে, তাই এখানে আসেনি।



পৃথিবীর নাকি একজন স্রষ্টা আছেন, এই মেয়েগুলোরও নাকি একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন। শুনে হেসে উঠে মেয়েগুলো।

আমি এগিয়ে চলি, রাস্তা এগিয়ে যাচ্ছে যেখানে। রাস্তার চীৎকারে কেঁপে উঠে চারপাশ। আমি এগিয়ে চলি। আমার এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, কথা ছিল আমি শেষ পর্যন্ত পৌছাবো। কিন্তু শেষ বড় দ্রুত হয়ে গেল। এখন এখানে শুরু নেই, তাই শেষের প্রশ্নও নেই।



আমার বন্ধু বলেছিল, "বন্ধুত্ব মানে কি জানিস?"

"না, আমার জানার ইচ্ছে নেই।"

আমি সেদিন তার কাছ থেকে বন্ধুত্বের মানে জেনে নেইনি। আসলে আমি কাউকে কোনদিন হয়তো বন্ধু ভাবিনি। অনেকেই হয়তো আমাকে বন্ধু ভেবেছিলো, কিন্তু আমি ভাবতে পারিনি।

এখন আমার জানতে ইচ্ছে করেছে , বন্ধুত্ব মানে কি। বন্ধুত্ব মানে কি?

বন্ধুত্ব মানে কি একজনের সাথে নিশ্চিন্তে চলা, নিজের চিন্তাগুলো একজনকে বলতে পারা। হয়তো বা, কিন্তু সবকিছুই শেষ হয়ে গেছে। আমি সেই বন্ধুর বাসায় যাই। বন্ধু তার স্ত্রীকে নিয়ে ঘুমিয়ে পরেছে। তার ঘর, তার দরজা সবই ঘুমিয়ে পড়েছে।

আমি ঘুমন্ত দরজায় কড়া নাড়ি, কিন্তু কোন শব্দ হয়না। আমি ভুলে গিয়েছিলাম আমার জাগতিক অস্তিত্বকে। এখানে আমার কোন অস্তিত্ব নেই, তাই আমি এখানে কোন শব্দ উৎপন্ন করতে পারবোনা।



আমি রাস্তায় নেমে আসি। রাস্তায় শুয়ে থাকা মানুষেরা কোন আনন্দময় সপ্ন দেখে কেঁপে উঠে। এইসব বিষণ্ণতা আমাকে এখন আর স্পর্শ করবেনা। একদিন নীরার সাথে হাঁটছিলাম, নীরা চোখে জল এনেছিল এইসব মানুষদের দেখে, আমি বিষণ্ণ হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম কিছু একটা করতে হবে। মন মাঝে মধ্যেই তাগাদা দিতো কিছু একটা করার জন্য। কিছুই করা হয়ে উঠেনি আর। আসলে কারোই কিছু করার ক্ষমতা নেই। আমরা ভেবে নেই আমরা অনেক কিছুই করতে পারবো। কিন্তু কিছুই হয়না আর।



আচ্ছা নীরা কেমন আছে। হয়তো ও ভালো নেই। একদিন আমাকে বলেছিল সে আমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবেনা। কিন্তু কেউ কারও জন্য এ পর্যন্ত বেঁচে থাকেনি এমন কখনো হয়নি। আমি জানতাম এটা, তারপরও আমি আবেগ আপ্লুত হয়েছিলাম। আমি তাকেও শুনিয়েছিলাম একটি দুটো ভালোবাসার কথা। কিন্তু আজ কেমন আছে নীরা। এই রাতে কেমন আছে নীরা?

আমি নীরার কাছে যাই। নীরা ভালই আছে , তার একটি সুখী সংসার হয়েছে। হ্যা, নীরা ভালই আছে, এই রত্রি তাকে নষ্ট করতে পারেনি। ভালোবাসা নামক আবেগ তাকে কষ্টে রাখতে পারেনি।



রাত বেড়ে চলে। রাত্রির নিজস্ব লোকজন রাস্তায় চলাফেরা করছে। রাত্রির পুরুষ, রাত্রির নারীরা দখল করে আছে রাত্রিকে। নিজেকে অনাহূত মনে হয়। মনে এই রাত্রিতে আমার কোন অধিকার ছিলনা।

এই রাস্তায় আমার অধিকার ছিলনা। আমি তারপরও হেঁটে যাই। আমার পিতা যেমন হাঁটতেন তেমন করে।

বাবা শুয়ে আছেন ইজিচেয়ারে। আগে তো তিনি রাত জাগতেন না এমন করে । বাবা তাকিয়ে আছেন অন্ধকারের দিকে। আমি বাবার পাশে গিয়ে দাড়াই, বাবা আমাকে দেখতে পান না। আমি দেখি বাবার চোখে অশ্রু। বাবা ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ান। আমার ছবির সামনে দাড়িয়ে থাকেন। হায় পিতা তুমি কষ্ট বাড়িয়ে চলছ এই রাত্রির, কষ্ট বাড়িয়ে চলেছ তোমার।

আমি আর সহ্য করতে পারিনা। আমি রাস্তায় নেমে আসি। অন্ধকার ঘন হচ্ছে। রাত্রি তার নষ্ট হয়ে যাওয়া স্মৃতিকে লালন করছে পরম মমতায়। আমি এগিয়ে যাই। এই সময় আমাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আমাকে এগিয়ে নিয়ে যায় এক নষ্ট সময় কিংবা নষ্ট জোছনার কাছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.