![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি নি:সঙ্গ, রিক্ত ও নিঃস্ব এজন মানুষ। দেয়ার মত আমার কিছু নেই, আছে শুধু হৃদয় এবং হৃদয়ের অশ্রু। আমার হৃদয় শুধু ভালোবাসতে পারে এবং ভালোবাসা অনুভব করতে পারে। আমার চোখ শুধু অশ্রু ঝরাতে পারে এবং অশ্রুর ভাষা বুঝতে পারে। আমি চাই তুমি আমাকে ভালোবাসো এবং আমার ভালোবাসা গ্রহণ করো। আমি চাই, তুমি আমার চোখের একবিন্দু অশ্রু গ্রহণ করো এবং আমাকে তোমার চোখের একটি অশ্রুবিন্দু দান করো।কিন্তু যে পৃথিবীতে ফুল হয়েছে বাণিজ্যের পণ্য, সেখানে এক ফোঁটা ভালোবাসার কিংবা একবিন্দু অশ্রুর কী মূল্য! চাহিদা এখন হৃদয়ের নয়, হৃদপিণ্ডের। চাহিদা এখন মানুষের নয়, মানুষের অঙ্গ- প্রত্যঙ্গের।
মানুষ ভালোবাসে ফুলকে, ফুলের সৌন্দর্যকে। এটা সত্য, কিন্তু এরচেয়ে বেশী ভালোবাসে তার সন্তানকে। তার কলিজার টুকরোকে। সবসময়ই নিজের বুকে আগলে রাখে। পরম মমতায় “জীবনের কোলে” জড়িয়ে রাখে। কিন্তু এত মমতা, এত ভালোবাসাও যে হারিয়ে যায়। জীবনের জঞ্জালে বিলীন হয়ে যায় তা এক নতুনত্বের ছবি।
সাত বছরের ছোট্ট মেয়ে অরুণা। পিতা আছে, পিতৃহীন। মাতা আছে, মাতৃহীন। নিয়তির কাছে যে এভাবেই বিপর্যস্ত। বছর তিনেক পূর্বে বাবা মায়ের মাঝে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর তার বাবার ঘরে এলো নতুন মা। আর মা হলো আরেক বাড়ীর নতুন বউ। তার দিন কাটতো বড়ই নি:সঙ্গতায়, ঘোর অন্ধকারাচ্ছন্নতায়। কোন প্রিয় মুখ সে দেখতে পেতনা। আদর জড়ানো ডাক শুনতে পেতনা। দুধ মাখা ভাত খেতে পেতনা। সব সময়ই তাকে খাটতে হতো এ কাজে, সে কাজে। বড় কাজে, ছোট কাজে। নতুন মার সার্বক্ষণিক বকাঝকায়, কখনো কখনো তীব্র লাঠিপেটায় তার দিন কাটতো চরম অসহায়ত্বের মাঝে। জঘণ্য অনাদর আর অবহেলার মাঝে। তার মা মাঝে মাঝে তাকে এসে দেখে যেতো। তখন তার খুব ভালো লাগতো, নি:সঙ্গতা দূর হয়ে যেতো। নব অসহায়ত্ব কেটে যেতো। সে নতুন মার ঘরে নিরালায় বসে বসে চোখর পানি ফেলতো আর জানালা পথে তার মায়ের আসার পথে ব্যাকুল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতো। দিবসের আলো হাসে, আঁধারের রাত আসে, প্রকৃতিতে রোল পড়ে, অরুণার দু:খের কান্নার রোল। তার বাবার ঘরে এক ভাইয়া এলো। তার মায়ের ঘরেও এক ভাইয়া এলো আর তার সকল সুখেরও ইতি হলো। সব আনন্দের অবসান হলো। সে এখন পৃথিবীর বুকে একা, একলা। তার কেউ নেই। স্বজনহীন, সহায়হীন। অনেক দিন পর মায়ের সাথে তার দেখা হলো। সে কান্না ভুলে গেলো। নির্বাক হয়ে শুধু তাকিয়ে থাকলো। শুধু বলতে পারলো, মা! তুমিও কি আমাকে…।
আমি জানিনা। অবুঝ হৃদয়ের আকুতিতে মায়ের হৃদয়ে মাতৃমমতার ঢেউ খেলেছিলো কিনা!
©somewhere in net ltd.