![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি নি:সঙ্গ, রিক্ত ও নিঃস্ব এজন মানুষ। দেয়ার মত আমার কিছু নেই, আছে শুধু হৃদয় এবং হৃদয়ের অশ্রু। আমার হৃদয় শুধু ভালোবাসতে পারে এবং ভালোবাসা অনুভব করতে পারে। আমার চোখ শুধু অশ্রু ঝরাতে পারে এবং অশ্রুর ভাষা বুঝতে পারে। আমি চাই তুমি আমাকে ভালোবাসো এবং আমার ভালোবাসা গ্রহণ করো। আমি চাই, তুমি আমার চোখের একবিন্দু অশ্রু গ্রহণ করো এবং আমাকে তোমার চোখের একটি অশ্রুবিন্দু দান করো।কিন্তু যে পৃথিবীতে ফুল হয়েছে বাণিজ্যের পণ্য, সেখানে এক ফোঁটা ভালোবাসার কিংবা একবিন্দু অশ্রুর কী মূল্য! চাহিদা এখন হৃদয়ের নয়, হৃদপিণ্ডের। চাহিদা এখন মানুষের নয়, মানুষের অঙ্গ- প্রত্যঙ্গের।
বাইরে অবিরাম বৃষ্টি ঝরছে।
জানালার কপাটগুলো হঠাৎ হঠাৎ ভীতি সৃষ্টি করছে।
দক্ষিণ থেকে ভেসে আসা ঈষৎ ভেজা বাতাস দেয়ালের গায়ে প্রতিহত হয়ে অদ্ভুত একটা শব্দ সৃষ্টি করছে, সে শব্দ অনেকটা যেন হাহাকারের মতো শোনাচ্ছে কানে।
গুটিসুটি হয়ে অফিস রুমে বসে আছি।
পর্দা ঠেলে একটি ছেলে ঢুকলো।
কি চাই?
স্যার! আমার বোনের লাশটা নিতে এসেছি। পুরে মরার কেস।
এত দেরি হলো আপনার?
অনেক দূর থেকে এসেছি তো। খবরের কাগজে ফটো দেখে চিনতে পেরেই ছুটে এসেছি।
কথাগুলো বলার সময় ছেলেটার গলা খানিকটা কেঁপে উঠলো। কফোঁটা অশ্রু দু’গাল বেয়ে ঝরে পড়লো।
মৃদু কণ্ঠে বললো, দেশ থেকে যে কবে অশান্তি শেষে হবে!
আমি বলেই ফেললাম।
আপনার সঙ্গে আপনার বোনের চেহারা কিন্তু অদ্ভুত মিল!
ছেলেটা কিছুক্ষণ একদৃষ্টে আমার দিকে দেখল, তারপর বলল।
সত্যি কথা বলতে কি, আমরা যমজ। আমি আমার বোনের চেয়ে দশ মিনিটের বড়।
বডি ছেড়ে দেবার জন্য যা প্রয়োজন করে দিলাম। মনে একটু শান্তি পেলাম, যাক মেয়েটির দেহের একটা ব্যবস্থা হবে।
ঘটনা ঘটলো ঠিক পরের দিন।
হাসপাতালে ঢুকছি মাত্র। ডোমের সঙ্গে দেখা।
স্যার, আরো একজন বডি নিতে এসেছে।
কে? কোন্ বডি?
সেই পুরে মরার কেস। অল্প বয়সী মেয়েটা।
বলোনি, কাল তার ভাই বডি নিয়ে গেছে?
বলেছি স্যার। ভদ্রলোক আপনার সাথে দেখা করতে চান।
বিরক্তিকর। বললাম, আসতে বলো।
ভদ্রলোক ঢুকল। পৌঢ়, মাথায় কাঁচাপাকা চুল। চোখে বেশি পাওয়ারের চশমা। গম্ভীর চেহারা।
আমি বললাম, আপনি ডোমের কাছে শোনেননি?
হ্যাঁ, শুনেই তো আপনার কাছে এসেছি। সত্য কথাটি জানতে।
এ আর সত্য মিথ্যা কি? ভাই এসে লাশ নিয়ে গেছে। যমজ ভাই।
ভদ্রলোকের কপালে ভাঁজ পড়ে গেল। সামনে রাখা চেয়ারে বসে পড়ল। বলল,
যমজ ভাই! মানে, ওয়াহীদ এসে বডি নিয়ে গেছে?
নাম তো মনে নেই। খাতায় লেখা আছে, দেখতে পারেন।
আপনি কে?
আমি মেয়ের বাবা।
বাবা?
হ্যাঁ চাকরি থেকে অবসর নিয়ে ময়নামতি নিজ বাড়িতে থাকি। অজপাড়াগাঁ। আমার মেয়ে ঢাকায় কি করতো আমি জানি না। আমার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না। শুনেছি পতিতালয়ে থাকতো।
কাল পুরোনো খবরের কাগজ ঘাটতে গিয়ে দেখলাম। কি আশ্চর্য! সেই কাগজে আমার মেয়ের ছবি। অবাধ্য হোক, আর যাই হোক। মেয়ে তো। সকালেই ছুটে এলাম।
কিন্তু আপনাকে তো বললাম, আপনার ছেলে এসে নিয়ে গেছে।
তা কি করে হয়?
ভদ্রলোক অবাক দৃষ্টি নিয়ে আমাকে দেখলেন।
না হবার কি আছে। আপনার মতন তিনিও খবরের কাগজ দেখেই চলে এসেছেন।
কিন্তু ভদ্রলোক ধরা গলায় বললেন, ওয়াহীদ তো আজ পাঁচ বছর হয়েছে মারা গেছে। বাস দুর্ঘটনায়।
এবার আমি সোজা হয়ে বসলাম, সে কি?
সেই জন্যই তো আশ্চর্য লাগছিল। ওয়াহীদ আসবে কি করে?
শরীরের রক্ত মুখে এসে জমলো। চুপ করে বসে থাকলাম।
দুম করে পাখাটা বন্ধ হয়ে গেল। বাতির সুইচ টিপে দেখলাম, বাতি জ্বলছে।
#ফ্ল্যাশফিকশন
#হরর
২| ৩১ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৯
অচিকীর্ষু বালক বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:২৬
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভালই