নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু।

আস সালাম - আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক

উম্মু আবদুল্লাহ

তোমরা মুসলিম হয়ে আমাকে ধন্য করেছ, তা মনে করো না। বরং আল্লাহ ঈমানের পথে পরিচালিত করে তোমাদের ধন্য করেছেন। (হুজুরাত:১৭)

উম্মু আবদুল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তুষারের আমেরিকা : আমার ভাললাগা

২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:০১

সময়টা ছিল ৯৫ সাল।স্মৃতি বিশ্বাসঘাতকতা না করলে সেটা ছিল সম্ভবত নভেম্বর মাস। অন্য দিনের মত সেদিনও সকালে ভেংগে যায় আমার ঘুম।স্বীকার করতেই হয় আমার এই সকালটা ছিল আর দশটা সকালের চেয়ে কিছুটা আলাদা। নূতনত্বকে স্পর্শ করার এক সকাল। যা এত বছর পরেও আমার অনুভূতিতে তা চির অম্লান।



টুকটাক কাজ শেষে রেডি হই ক্লাসে যাবার জন্য। ঘরের বার যখন হই তখন দেখি পুরো পৃথিবী সাদা হয়ে আছে তুষারে, এক শুভ্র পৃথিবী, মলিনতা যেন তাকে কখনই স্পর্শ করে নি। যেদিকে তাকাই সেদিকই বরফাবৃত। এক অদ্ভূত অনুভূতি আমাকে ছেয়ে গেল। বিষ্ময়ই শুধু নয়, বরং সে অনুভূতিতে মিশ্রিত ছিল খানিকটা ভাল লাগাও। দিনের পর দিন মেঘাবৃত আকাশ আমাকে যে বিষন্নতা দিয়েছিল, তা যেন অনেকটাই কেটে গিয়ে একটা স্মিত প্রফুল্লতা মনকে ভরে দিল। আমার অবাক করা সেদিনের অনুভূতি স্ন্যাপশট হয়ে ঠাই করে নিল স্মৃতির কোঠায়। সে স্মৃতির তীব্রতা এখনও অমলিন, এখনও জীবন্ত।



সেই আমার বরফ দেখার প্রথম অনুভূতি। এরপরে আরো শীত এসেছে। প্রতিবারই বরফ পড়েছে। স্কিডিং, বরফে গাড়ী আটকে যাবার ভয়াবহ অভিজ্ঞতাও হয়েছে। বরফের রাস্তায় স্কিডিং এ গাড়ী ঘুরে যায় নিজের মত করে। ড্রাইভারের নিয়ন্ত্রন থাকে না। ভয়ংকর সে অভিজ্ঞতা জীবনে একবারই যথেষ্ঠ। বরফের চাই এর মাঝখানে গাড়ী নিয়ে বসে অসহায় আমি, অপেক্ষা করছি সাহায্যের জন্য - এরকম কতই তো হল। পশ্চিমের শীতের রাস্তায় তো এসব অতি সাধারন কিছু ঘটনা। প্রতিবারই শীতের শুরু আমাকে আর আমার চেতনাকে নিয়ে যায় অতীতের এক দিনে, যেদিন আমি মহা বিষ্ময় নিয়ে থমকে দাড়িয়েছিলাম বরফাবৃত এক শ্বেত শুভ্র পৃথিবীর সামনে। আবিষ্কার করেছিলাম এক নূতন পৃথিবীকে। আমার সেদিনকার এক রাশ বিষ্ময় আমাকে চুপি চুপি বলে যায়, এই পৃথিবী আসলে কখনই পুরোনো হয় না। করুনময় তার অজস্রতা দিয়ে যে পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন তার বৈচিত্র এবং নূতনত্ব আসলে কখনই শেষ হবার নয়।



শীত নিয়ে আমার কত স্মৃতি। এরকম এক শীতের বিদায়কালে জন্ম হল আমার ছেলের। রাস্তা তখনও বরফ আর কাদায় মাখামাখি। হাসপাতাল থেকে বাসায় আসার পরে গাড়ী থেকে নামাটা আমার জন্য ছিল ভয়ংকর কঠিন। সেটা ভয়ংকর কষ্টকে মনে করলে আমি এখনও শিউরে উঠি। এদিকে সদ্য মাতৃত্বের বিষন্নতাকে বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছিল সেই শীত। শীত তখন শুধু আমার শরীরকে শীতল করেনি, সাথে সাথে শীতল করেছিল আমার অনূভূতিকেও।



এই সব সত্ত্বেও আমি বরফকে ভালবাসি। ভালবাসি এই পাতাশূন্য গাছের শীতকে। এবার জানুয়ারী মাস চলে গেল প্রায়। এই সময়টা শীতের চরম অবস্থা। কত উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটছে চারিদিকে। মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে ওবামা শপথ নিলেন। সে কি ভালবাসা! উপচে পড়া মানুষের ভিড়! এই মানুষগুলো এই প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে ভালবাসা জাণাতে এসেছে তাদের প্রিয় মানুষকে। শীতের এই বিরূপতা তাদের দমিয়ে দিতে পারেনি এক বিন্দুও।



এবার তো বরফ এখনও পড়ে নি। এটা খুব ব্যতিক্রম। খুব লেট হলে হয় ডিসেম্বর। কখনও তার পরে বরফ পড়া শুরু হতে দেখি নি। কিন্তু এবার তো এখনও দেখিনি বরফের রেখে যাওয়া চিহ্ন। গাড়ীর সামনের কাচে হালকা বরফের আস্তর থাকে ঠিকই, কিন্তু তাকে বরফ পড়ার অবস্থার সাথে তুলনা করা যায় না। রাস্তা ঘাট একদম ফকফকা। এবার বোধকরি কখনই লবন ছিটানো হয় নি। আর এবারের শীতেও তাই গাড়ীর এক্সিডেন্ট কিছু কম দেখেছি।



আচ্ছা, এমন যদি হয় যে এবার একেবারে বরফ পড়ল না! এমন কি তুষারপাতও নয়! এবারের শীত হল বরফবিহীন শীত!! তুষার বিহীন শীত!!



সেক্ষেত্রে সেটাও হবে আমার আরেক স্মরনীয় অনুভূতি। কারন আমেরিকাতে এখনও বরফবিহীন কোন শীত পার করিনি।

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৭/-৬

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:০৮

বিডি আইডল বলেছেন: ছবি দিতে পারতেন...বরফের শুভ্রতার আলাদা একটা সৌন্দর্য আছে....রোদেলা দিনে গাড়ী চালাতে গেলে টের পাওয়া যায় এর ধার

২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:১০

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ঠিক। ছবির সৌন্দর্য আলাদা। এরপরে দেবার চেষ্টা করব। আসলে ছবি খুব একটা তোলা হয় না ব্যস্ততায়। এটাই আসল সমস্যা।

২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:১৩

বাংলা খবরাখবর বলেছেন: বেশ লিখেছেন +৫

২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:১৫

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:১৬

রাগিব বলেছেন: বরফ (তুষার) যখন পড়ে এবং শুরুর দিকে বালুর মতো থাকে, তখন আমার সেটা খুব ভালো লাগে। কিন্তু সবচেয়ে ভয়াবহ লাগে যখন বরফ গলা শুরু করে।

ভুট্টা ক্ষেত বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকায় শীত কালে বরফ ভালো করে পড়ে বেশ কয়েক দিন। এখনো গত সপ্তাহেরটা জমে আছে, তবে গলে বিশ্রী হয়ে গেছে।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:২১

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ঠিক। গলা বরফ খুব হার্ড টাইম দেয়।

এখন আর কান্ট্রি সাইডে নেই। তাই ক্ষেত খুব মিস করি। শহরের ব্যস্ততা নিয়ে চলছে।

৪| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:২৫

প্রলয় হাসান বলেছেন: টেস্ট।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:২৭

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: সাকসেসফুল।

৫| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:২৫

প্রলয় হাসান বলেছেন: এখনও এত ভয়!!! আগে তো ছিলো মুরগীর কলিজা। এখন তো মনে হচ্ছে চড়ুই পাখির কলিজা।:D

৬| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:২৭

প্রলয় হাসান বলেছেন: কমেন্ট মডু আর কয়দিন রাখবেন। এইভাবে ব্লগিং কইরা মজা পান নাকি আব্দূল্লার মা? বিম্পি করা বাদ দেন। দেখবেন বুকে সিংহের শক্তি পাইতাছেন।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:৩১

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: মডারেশন আমাকে নির্জনতার আনন্দ দেয়। সেটা আপনার পক্ষে হয়ত বোঝা সম্ভব নয়। তাই সেটা আপাতত থাকছে।

বি এন পি যেহেতু পরাজিত, তাই রাজনীতি আপাতত কয়েকদিন বন্ধ রাখছি। জয়ী হলে না হয় মহা উৎসাহে লিখতাম এটা করতে ওটা করতে। সুতরাং নিশ্চিত থাকতে পারেন।

৭| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:৩৭

প্রলয় হাসান বলেছেন: হ। সেইটা তো বুঝতেই পারছি। নির্বাচনের পর আপনার ছায়াও ব্লগে দেখি নাই। এখন আসছেন বরফ দেখার অনুভূতি ব্যক্ত করতে। আপনাদের জন্য করুনা করা ছাড়া আর কিছুই করার নাই। আপসুস! তবু আর শিক্ষা হইল না। কম অপমান হইছেন এই ব্লগে। আমারব্লগেও তো দেখি না আপনারে। সেইখান থেকেও গলা ধাক্কা খাইছেন্নাকি?

২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৮:১৭

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আমি তো ইদানিং সামহোয়ার ব্লগে খুব একটিভ। অনেক বেশী পোস্ট দিচ্ছি।

আমার ব্লগে একাউন্ট নেই। সেখানে যাবার আগ্রহ নেই। তারাও খুব আগ্রহ নিয়ে যে বসে আছে সেটাও মনে হয় না।

মান অপমান আপেক্ষিক। আল্লাহর রাসুল (সা) কেই সবচেয়ে বেশী অপমান করা হয়েছে।

ব্যস। আর নয়। আপনার আর কোন কমেন্ট আমি এপ্রুভ করছি না এই পোস্টে।

৮| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:৪৪

ইসানুর বলেছেন: Hmmm bhalo lekha! Mon chue gelo!

২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৮:১২

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ভাল লাগল জেনে।

৯| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৮:০২

মিঠাই বলেছেন: --

২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৮:১২

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ।

১০| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৮:০৩

সুদীপ্ত বলেছেন: আপনি বিএনপির পরাজয়ে হতাশ? আমি তো জানতাম আপনি জামাতের সাপোর্টার। হয়তো ভুল শুনেছি।;)

২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৮:১১

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আমার ৩৫ টি লেখা এই ব্লগে আছে। শুনে ধারনা নেয়ার চেয়ে পড়ে সিদ্ধান্তে পৌছুনো ভাল।

১১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৮:০৪

সুদীপ্ত বলেছেন: আর বলতে ভুলে গেছি - পোস্ট ভালো হয়েছে। তাই মাইনাস দিলাম না।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৮:১১

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ।

১২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১০:৪৮

কসওয়ে বলেছেন: ২০০১ এর অক্টোবের শেষের দিকে, তখন মেইনে থাকতাম। দেশ থেকে আসছি ২ মাস আগে আমেরিকায় প্রথম সেমি্ষ্টার, হাড় কাপানো ঠান্ডা, কিন্তু বরফ পড়া শুরু করে নাই, থাকি ডরমে। সকাল ১০টার দিকে ঘুম থেকে তখনো উঠি নাই, হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো, বন্ধু ইভান ফোন করছে, চিল্লাইতেছে মামা বাইরে বরফ পড়ে দেখছ? আমি ডরম রুমের চার তলার জানালা দিয়ে তাকাইলাম মনে হইল ডরমের ছাদ থেকে ধুলা ময়লা পরতেছে....।
সেই যে বরফ পড়া শুরু হইল... শেষ হইল গি্য়া পরের বছর এপ্রিলে..।প্রথম দিকে বরজ মজা লাগলও মেইনে থাকার সাধ মিটে গেছে, মনে হয়না শীতকালে আর কোন দিন মেইনে জামু..।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১১

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: একটানা বরফ আসলেই চরম বিরক্তিকর।

১৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১:৩২

মুসান্না গালিব বলেছেন: ছবিময় বর্ননা !

চমৎকার।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫০

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

১৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৮:১৪

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আজ এই শীতের প্রথম তুষারপাত।

১৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১১:৫৬

পারভেজ বলেছেন: তাপমাত্রা শূন্যের নীচে থাকলে পানি জমে বরফ হয়ে যায় না? তার সাথে বরফের সম্পর্কটা আসলে কি?! একটু কনফিউশন আছে।
তুষারপাত না দেখলেও, নদীর পানি জমে নিশ্চই বরফ দেখেন?!

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ৯:০৫

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: স্যরি, পারভেজ ভাই। ভুলে গিয়েছিলাম এই পোস্টের কথা।

তুষারপাত হল হালকা বরফ। হাতে ধরলে গলে পানি হয়ে যায়। বরফ শক্ত। তার চেয়ে বড় কথা, বরফে পা পিছলে যায়, গাড়ী স্কিড করে। আমি অবশ্য এখন বেশী গাড়ী চালাই না। দরকার পড়ে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.