![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘মীলাদুন্নবী’
=====
[সংকলকঃ রাফিয়া বেগম]
‘জন্মের সময়কাল’কে আরবীতে ‘মীলাদ’
বা ‘মাওলিদ’ বলা হয়।
সে হিসাবে ‘মীলাদুন্নবী’-র অর্থ দাঁড়ায় ‘নবীর
জন্ম মুহূর্ত’। নবীর জন্মের বিবরণ, কিছু ওয়ায ও
নবীর রূহের আগমন কল্পনা করে তার
সম্মানে উঠে দাঁড়িয়ে ‘ইয়া নাবী সালামু আলায়কা’ বলা ও সবশেষে জিলাপী বিতরণ- এই
সব মিলিয়ে ‘মীলাদ মাহফিল’ ইসলাম প্রবর্তিত
‘ঈদুল ফিতর’ ও ‘ঈদুল আযহা’ নামক দু’টি বার্ষিক
ঈদ উৎসবের বাইরে ‘ঈদে মীলাদুন্নবী’
নামে তৃতীয় আরেকটি ধর্মীয়(?)
অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
উৎপত্তি
=== ক্রুসেড বিজেতা মিসরের সুলতান ছালাহুদ্দীন
আইয়ূবী (৫৩২-৫৮৯ হিঃ) কর্তৃক নিযুক্ত ইরাকের
‘এরবল’ এলাকার গভর্ণর আবু সাঈদ মুযাফফরুদ্দীন
কুকুবুরী (৫৮৬-৬৩০ হিঃ) সর্বপ্রথম
কারো মতে ৬০৪ হিঃ ও কারো মতে ৬২৫
হিজরীতে মীলাদের প্রচলন ঘটান রাসূলের মৃত্যুর ৫৯৩ বা ৬১৪ বছর পরে। এই দিন
তারা মীলাদুন্নবী উদযাপনের নামে চরম
স্বেচ্ছাচারিতায় লিপ্ত হ’তেন। গভর্ণর
নিজে তাতে অংশ নিতেন।[1] আর এই অনুষ্ঠানের
সমর্থনে তৎকালীন আলেম সমাজের
মধ্যে সর্বপ্রথম এগিয়ে আসেন আবুল খাত্ত্বাব ওমর বিন দেহিইয়াহ (৫৪৪-৬৩৩ হিঃ)।
তিনি মীলাদের সমর্থনে বহু জাল ও বানাওয়াট
হাদীছ জমা করেন।
হুকুম
== ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন একটি সুস্পষ্ট
বিদ‘আত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
‘যে ব্যক্তি আমাদের শরী‘আতে এমন কিছু নতুন
সৃষ্টি করল, যা তার মধ্যে নেই,
তা প্রত্যাখ্যাত’।[2] তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা দ্বীনের মধ্যে নতুন
সৃষ্টি করা হ’তে সাবধান থাক। নিশ্চয়ই
প্রত্যেক নতুন সৃষ্টিই বিদ‘আত ও প্রত্যেক
বিদ‘আতই গোমরাহী’। জাবের (রাঃ) হ’তে অন্য
বর্ণনায় এসেছে, ‘এবং প্রত্যেক গোমরাহীর পরিণাম
জাহান্নাম’।[3]
ইমাম মালেক (রহঃ) স্বীয় ছাত্র ইমাম
শাফেঈকে বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও তাঁর
ছাহাবীদের সময়ে যে সব বিষয় ‘দ্বীন’
হিসাবে গৃহীত ছিল না, বর্তমান কালেও
তা ‘দ্বীন’ হিসাবে গৃহীত হবে না।
যে ব্যক্তি ধর্মের নামে ইসলামে কোন নতুন প্রথা চালু করল, অতঃপর তাকে ভাল কাজ
বা ‘বিদ‘আতে হাসানাহ’ বলে রায় দিল,
সে ধারণা করে নিল যে, আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ)
স্বীয় রিসালাতের দায়িত্ব পালনে খেয়ানত
করেছেন’ (আল-ইনছাফ, পৃঃ ৩২)।
মীলাদ বিদ‘আত হওয়ার ব্যাপারে চার
মাযহাবের ঐক্যমত
================= ‘আল-ক্বাওলুল মু‘তামাদ’ গ্রন্থে বলা হয়েছে যে,
চার মাযহাবের সেরা বিদ্বানগণ
সর্বসম্মতভাবে প্রচলিত মীলাদ অনুষ্ঠান
বিদ‘আত হওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছেন।
তাঁরা বলেন, এরবলের গভর্ণর কুকুবুরী এই
বিদ‘আতের হোতা। তিনি তার আমলের আলেমদেরকে মীলাদের পক্ষে মিথ্যা হাদীছ
তৈরী করার ও ভিত্তিহীন ক্বিয়াস করার হুকুম
জারি করেছিলেন।
উপমহাদেশের ওলামায়ে কেরামের মতামত
============= মুজাদ্দিদে আলফে ছানী শায়খ আহমাদ
সারহিন্দী, আল্লামা হায়াত সিন্ধী, রশীদ
আহমাদ গাংগোহী, আশরাফ আলী থানভী, মাহমূদুল
হাসান দেউবন্দী, আহমাদ
আলী সাহারানপুরী প্রমুখ ওলামায়ে কেরাম
ছাড়াও আহলেহাদীছ বিদ্বানগণ সকলে এক বাক্যে প্রচলিত মীলাদ অনুষ্ঠানকে বিদ‘আত ও
গুনাহের কাজ বলেছেন।
মৃত্যুদিবসে জন্মবার্ষিকী!
======= জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাব মতে, রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ)-এর সঠিক জন্মদিবস হয় ৯ই রবীউল
আউয়াল সোমবার। ১২ রবীউল আউয়াল সোমবার
ছিল তাঁর মৃত্যুদিবস। অথচ ১২ রবীউল আউয়াল
রাসূলের মৃত্যুদিবসেই তাঁর
জন্মবার্ষিকী বা ‘মীলাদুন্নবী’র অনুষ্ঠান করা হচ্ছে।
একটি সাফাই
==== মীলাদ উদযাপনকারীরা বলে থাকেন যে,
মীলাদ বিদ‘আত হ’লেও তা ‘বিদ‘আতে হাসানাহ’।
অতএব জায়েয তো বটেই বরং করলে ছওয়াব আছে।
কারণ এর মাধ্যমে মানুষকে কিছু বক্তব্য
শুনানো যায়। উত্তরে বলা চলে যে, ছালাত
আদায় করার সময় পবিত্র দেহ-পোষাক, স্বচ্ছ নিয়ত সবই থাকা সত্বেও ছালাতের
স্থানটি যদি কবরস্থান হয়, তাহ’লে সে ছালাত
কবুলযোগ্য হয় না। কারণ এরূপ স্থানে ছালাত
আদায় করতে আল্লাহ্র নবী (ছাঃ) নিষেধ
করেছেন। রাসূল (ছাঃ)-এর স্পষ্ট
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ছালাত আদায়ে কোন ফায়দা হবে না। তেমনি বিদ‘আতী অনুষ্ঠান করে নেকী অর্জনের
স্বপ্ন দেখা অসম্ভব। হাড়ি ভর্তি গো-চেনায় এক
কাপ দুধ ঢাললে যেমন পানযোগ্য থাকে না,
তেমনি সৎ আমলের মধ্যে সামান্য শিরক-
বিদ‘আত সমস্ত আমলকে বরবাদ করে দেয়।
সেখানে বিদ‘আতকে ভাল ও মন্দ দুই ভাগে ভাগ করা যে আরেকটি গোমরাহী তা বলার
অপেক্ষা রাখে না।
ক্বিয়াম (দাঁড়ানো) প্রথা
======= সপ্তম শতাব্দী হিজরীতে মীলাদ প্রথা চালু
হওয়ার প্রায় এক শতাব্দীকাল
পরে আল্লামা তাক্বিউদ্দীন সুবকী (৬৮৩-৭৫৬
হিঃ) কর্তৃক ক্বিয়াম প্রথার প্রচলন
ঘটে বলে কথিত আছে।[4] তবে এর সঠিক তারিখ
ও আবিষ্কর্তার নাম জানা যায় না। এদেশে দু’ধরনের মীলাদ চালু আছে।
একটি ক্বিয়ামযুক্ত, অন্যটি ক্বিয়াম বিহীন।
ক্বিয়ামকারীদের যুক্তি হ’ল, তারা রাসূলের
‘সম্মানে’ উঠে দাঁড়িয়ে থাকেন। এর
দ্বারা তাদের ধারণা যদি এই হয় যে,
মীলাদের মাহফিলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর রূহ মুবারক হাযির হয়ে থাকে, তবে এই
ধারণা সর্বসম্মতভাবে কুফরী।
হানাফী মাযহাবের কিতাব
‘ফাতাওয়া বাযযারিয়া’তে বলা হয়েছে,‘যে ব্যক্তি ধারণা করে যে, মৃত ব্যক্তিদের রূহ
হাযির হয়ে থাকে, সে ব্যক্তি কাফের’।[5]
অনুরূপভাবে ‘তুহফাতুল কুযাত’
কেতাবে বলা হয়েছে, ‘যারা ধারণা করে যে,
মীলাদের মজলিসগুলিতে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর
রূহ মুবারক হাযির হয়ে থাকে, তাদের এই ধারণা স্পষ্ট শিরক’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) স্বীয়
জীবদ্দশায় তাঁর সম্মানার্থে উঠে দাঁড়ানোর
বিরুদ্ধে কঠোর ধম্কি প্রদান করেছেন।[6] অথচ
মৃত্যুর পর তাঁরই কাল্পনিক রূহের
সম্মানে দাঁড়ানোর উদ্ভট
যুক্তি ধোপে টেকে কি?
মীলাদ অনুষ্ঠানে প্রচারিত বানাওয়াট হাদীছ
ও গল্পসমূহ : (১) ‘(হে মুহাম্মাদ) আপনি না হ’লে আসমান-
যমীন কিছু্ সৃষ্টি করতাম না’।[7] (২) ‘আমি আল্লাহ্র নূর হ’তে সৃষ্ট এবং মুমিনগণ
আমার নূর হ’তে’। (৩) ‘নূরে মুহাম্মাদী’ হ’তেই আরশ-কুরসী,
বেহেশত-দোযখ, আসমান-যমীন সব কিছু
সৃষ্টি হয়েছে’। (৪) ‘আদম সৃষ্টির সত্তুর হাযার বছর
পূর্বে আল্লাহ পাক তাঁর নূর হ’তে মুহাম্মাদের
নূরকে সৃষ্টি করে আরশে মু‘আল্লায়
লটকিয়ে রাখেন’। (৫) ‘আদম সৃষ্টি হয়ে উপরের
দিকে তাকিয়ে জ্যোতির্ময়
নক্ষত্ররূপে মুহাম্মাদের নূর অবলোকন করে মুগ্ধ
হন’। (৬) ‘মে‘রাজের সময় আল্লাহ পাক তাঁর
নবীকে জুতা সহ আরশে আরোহন করতে বলেন,
যাতে আরশের গৌরব
বৃদ্ধি পায়’ (নাঊযুবিল্লাহ)। (৭) রাসূলের জন্মের খবরে খুশী হয়ে আঙ্গুল উঁচু
করার কারণে ও সংবাদ দান
কারিনী দাসী ছুওয়াইবাকে মুক্ত করার
কারণে জাহান্নামে আবু লাহাবের হাতের
মধ্যের দু’টি পা আঙ্গুল পুড়বে না। এছাড়াও
প্রতি সোমবার রাসূলের (ছাঃ) জন্ম দিবসে জাহান্নামে আবু লাহাবের শাস্তি মওকুফ
করা হবে বলে হযরত আববাস (রাঃ)-এর
নামে প্রচলিত তাঁর কাফের অবস্থার
একটি স্বপ্নের বর্ণনা। (৮) মা আমেনার প্রসবকালে জান্নাত
হ’তে বিবি মরিয়ম, বিবি আছিয়া,
মা হাজেরা সকলে দুনিয়ায় নেমে এসে সবার
অলক্ষ্যে ধাত্রীর কাজ করেন। (৯) নবীর জন্ম মুহূর্তে কা‘বার
প্রতিমাগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ে, রোমের
অগ্নি উপাসকদের ‘শিখা অনির্বাণ’গুলো দপ
করে নিভে যায়। বাতাসের গতি, নদীর প্রবাহ,
সূর্যের আলো সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়
ইত্যাদি...। উপরের বিষয়গুলি সবই বানাওয়াট। দেখুন :
মওযূ‘আতে কাবীর প্রভৃতি। মীলাদ
উদযাপনকারী ভাইদের এই সব মিথ্যা ও জাল
হাদীছ বর্ণনার দুঃসাহস দেখলে শরীর
শিউরে ওঠে। যেখানে আল্লাহ্র নবী (ছাঃ)
হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাপূর্বক আমার
নামে মিথ্যা হাদীছ রটনা করে,
সে জাহান্নামে তার ঘর তৈরী করুক’।[8]
তিনি আরও বলেন,‘তোমরা আমাকে নিয়ে বাড়াবাড়ি কর
না, যেভাবে নাছারাগণ ঈসা (আঃ)
সম্পর্কে বাড়াবাড়ি করেছে।... বরং তোমরা বল
যে, আমি আল্লাহ্র বান্দা ও তাঁর রাসূল’।[9] যেখানে আল্লাহপাক এরশাদ করছেন,
‘যে বিষয়ে তোমার নিশ্চিত জ্ঞান নেই, তার
পিছনে ছুটো না। নিশ্চয়ই তোমার কান, চোখ ও
বিবেক সবকিছুকে (ক্বিয়ামতের দিন)
জিজ্ঞাসিত হতে হবে’ (বনী ইস্রাঈল ৩৬)।,
সেখানে এই সব লোকেরা কেউবা জেনে শুনে কেউবা অন্যের
কাছে শুনে ভিত্তিহীন সব কল্পকথা ওয়াযের
নামে মীলাদের মজলিসে চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভাবতেও অবাক লাগে।
রেফারেন্স
=== [1]. আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ (দারুল
ফিকর, ১৯৮৬) পৃঃ ১৩/১৩৭। [2]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৪০। [3]. আহমাদ, আবুদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত
হা/১৬৫; নাসাঈ হা/১৫৭৯ ‘ঈদায়েন-এর খুৎবা’
অধ্যায়। [4]. আবু ছাঈদ মোহাম্মাদ, মিলাদ মাহফিল
(ঢাকা ১৯৬৬), পৃঃ ১৭। [5]. মীলাদে মুহাম্মাদী পৃঃ ২৫, ২৯। [6]. তিরমিযী, আবূদাঊদ; মিশকাত হা/৪৬৯৯
‘আদাব’ অধ্যায়, । [7]. দায়লামী, সিলসিলা যঈফাহ হা/২৮২। [8]. বুখারী হা/১০৭।আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করুন- আমীন।....
২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৩৯
েফরারী এই মনটা আমার বলেছেন: ধর্ম যার যার উৎসব সবার!!!এই মতবাদের প্রবক্তারা আজ কোথায়?আসুন সবাই পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করি।
Click This Link
৩| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:০৮
হেজাজের কাফেলা বলেছেন: ধর্ম যার যার উৎসব সবার" এটার প্রবক্তা তো বাম পন্থীরা।কোরান এবং সহীহ হাদীছ বাস্তব ইতিহাস দিয়ে দলিল দিন..…
৪| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:২০
পাঠক১৯৭১ বলেছেন: ধর্মীয় ব্যাপারে আমি কোন কমেন্ট করতে চাই না। তবে, সব ধর্মে এসেছে রাজতন্ত্রের সময়!
১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৫২
হেজাজের কাফেলা বলেছেন: ঐতিহাসিক তথ্য দিন...
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৩৭
েফরারী এই মনটা আমার বলেছেন: ধর্ম যার যার উৎসব সবার!!!এই মতবাদের প্রবক্তারা আজ কোথায়?আসুন সবাই পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করি।
Click This Link