নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কর্ম দিয়ে পৃথিবী জয় করা যায়।

ইসতিয়াক ইসতি

শেখ ইসতিয়াক আহমেদ

ইসতিয়াক ইসতি › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণপরিবহণে শ্লীলতাহানির শিকার হয়ে মৃত্যুর পথ বেছে নিচ্ছে নারীরা

০৯ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:২১

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং উপরে লেখাপড়া শেষ করে উত্তরা ১১ নাম্বার সেক্টরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন নাফিজা ইসলাম মৌ। শিক্ষার্থী হিসাবে ভালো হওয়াতে চাকরি প্রথম থেকেই বেশ ভালো বেতন পেতেন।

কিন্তু বর্তমানে এসব কিছুই তাঁর কাছে অতীত। কারণ ২০১৭ সালের আগস্টে অফিস শেষ উত্তরা থেকে ধানমন্ডি আসার সময় বাসে উঠার সময় সে শ্লীলতাহানির শিকার হয়। সামাজিক সম্নানের কথা চিন্তা করে তাঁর পরিবার আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করার জন্য বাধ্য করে। কিন্তু তাকে চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য করে। আর অনেকটা নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে চাকরি ছেড়ে দেয় মৌ। আর এই ধক্কা নিতে না পরে দু-দুইবার নিজের জীবন নেওয়ার চেষ্টাও করে সে।


বর্তমানে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। এর পিছনে যে জিনিস বেশি কাজ করছে সেটি হচ্ছে পুরুষের সাথে পাল্লা দিয়ে বাঙ্গালি নারীরা দেশে-বিদেশে সমান তালে এগিয়ে যাওয়া। ফলে তাঁরা অবদান রাখছে দেশের অর্থনীতিতে। প্রতিদিন কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রাজপথে নামতে হচ্ছে তাদের। কিন্তু যানবাহনের সংকটের শহরে ঢাকাতে প্রতিদিন গণপরিবহণ সুবিধা গ্রহণে রীতিমত যুদ্ধে নামতে হচ্ছে নারীদের। এই যুদ্ধের পরে গণপরিবহণে উঠতে পারলেও নানা ভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে তাদের।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাসগুলোতে সরকারি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনিটরিংয়ের অভাব এবং কোনো নির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় এই অপতৎপরতা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। আর দৃষ্টান্তমূলক সাজা না থাকায় বছরের পর বছর নারীদের উপরে বেড়ে চলেছে এই অত্যাচার। চলন্ত বাসে পোশাক শ্রমিক ধর্ষণ, চাকমা তরুণী যৌন নিপিড়নের শিকার হন। টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে ধর্ষণের পরে হত্যার মত ঘটনা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে।

গণপরিবহণ ব্যবহার করে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে কর্মরত একাধিক নারীর সাথে কথা বলে যে অভিযোগগুলো উঠে আসে সেগুলো হচ্ছে,

১. অনেকসময় ইচ্ছা করে হেল্পার গায়ের সাথে গায়ে হাত দেয়। ২. পুরুষ যাত্রীরা নারীদের গাঁ লাগিয়ে দাঁড়ায়। ৩. বাসে মহিলারা দাঁড়িয়ে থাকলেও অনেক পুরুষ যাত্রীরা মহিলা সিটে ছাড়ে না। ৪. নারীদের পাশে বসলে নানা ভেবে শরীর স্পর্স করার চেষ্টা করে। ৫. বাসে নারী সিট থাকলেও নারীদের নিতে চায় না। ৬. নির্দিষ্ট স্থানে নামায় না। ৭. নারীদের থেকে বেশি ভাড়া আদায়।

সায়েদাবাদ অবস্থিত আন্তজেলা বাস মালিক সমিতির, ঢাকা কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি বিজন বর্ধন সাথে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, আমাদের কাছে সব যাত্রী সমান। যাত্রী সেবা দেওয়াই আমাদের কাজ। আর আমরা যাত্রী সেবা নিশ্চিত করার জন্য সব কিছু করেই থাকি। কিন্তু এসব বন্ধে জন্য রাষ্ট্রকেই দায়িত্ব নিতে হবে। আর আমাদের কোনো কর্মী দ্বারা নারী কখন নির্যাতিত হলে আমরা ব্যবস্থা নিব।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ সাথে এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে তিনি বলেন, এ সমস্যাগুলো সৃষ্টির মূল কারণ হচ্ছে শেষ কয়েক বছর ধরে আমাদের নতুন বাস নামাতে গেলে অধিক চাঁদা দিতে হচ্ছে। ফলে সেভাবে নতুন বাস নামছে না। কিন্তু নতুন অনেক নারী যাত্রী বৃদ্ধি পেয়েছে। আর পরিবহণ অল্প হওয়াতে তাদের একটু সমসার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের।

হেল্পারদের গাঁয়ে হাত দেওয়ার ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নারীদের পর্দা করে বাড়ি থেকে বের হওয়া উচিৎ। কিন্তু তাঁরা এমন কাপড় পরে বের হয় যে যে কেউ তাদের দেখে উত্তেজিত হয়ে যাবে।

নারীদের থেকে বেশি ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে বলেন, আমাদের নির্দিষ্ট ভাড়া তালিকা আছে। বেশি ভাড়া নেওয়ার সুযোগ নেই।

গণপরিবহণে যৌন নিপীড়ন বন্ধে নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের (বিলিয়া) পরিচালক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহেহদীন মালিকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, জনসমাগমস্থল বা পাবলিক প্লেসে নারীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা ও ভয়াবহতা বাড়ছে। তাঁরা রাস্তায়, বাসে, কর্মক্ষেত্রেও এ ধরনের ঘটনার শিকার হন। প্রতিরোধে দরকার দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা ও সুনির্দিষ্ট আইন। পাশাপাশি, যৌন শিক্ষাও জরুরি। কিন্তু দিকে লক্ষ দেওয়ার মত কাউকে দেখা যাচ্ছে না। যা আমাদের সমাজের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খন্দকার কোহিনূর আক্তার বলেন, যে গণপরিবহনগুলো আছে সেগুলো নারী বান্ধব না। নারীরা এসব জায়গায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সর্বোপরি একটি যৌন নিপীড়নের একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করা উচিত। আশেপাশের মানুষকে সচেতন করতে হবে।

যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নীলিমা আক্তার বলেন, শুধু রাস্তায় নয়, ঘরেও মেয়েরা এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। নাফিজা ইসলাম মৌ’র মত অনেক মেয়েই প্রতিদিন নিজের স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে হত্যার পথের দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, নানা কাজে মেয়েদের বাইরে আসতে হয়। কিন্তু প্রতিনিয়ত তারা হয়রানির শিকার হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে আইনের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা জরুরি।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:২৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাসে উঠার সময় শ্লীলতাহানীর শিকার হয়, এর মানে কি?

২| ০৯ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:৩৮

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: অনুন্নত দেশ। শিক্ষাদীক্ষার অভাব। এসব টুকটাক হতেই পারে!

০৯ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১:০৩

ইসতিয়াক ইসতি বলেছেন: বুঝলাম না

৩| ০৯ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:৩৮

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: যতদিন আমাদের মন-মানসিকতা চেঞ্জ না হচ্ছে ততদিন হাজার আইন করলেও কোন লাভ হবে বলে মনে হয় না।

৪| ০৯ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ২:৫১

সোহানী বলেছেন: কারন এ পর্যন্ত কোন বিচার হয়নি তাই অপরাধীরা জানে কোন সমস্যঅ হবে না তাদের। আইনের কোন হাতই নেই তাদের ধরার।

ধিক্কার জানাই এমন বিচারের। ধিক্কার জানাই এমন দেশে জন্মেছি যেখানে অপরাধীরা বুক ফুলিয়ে হাটে।.....

৫| ০৯ ই মার্চ, ২০১৮ ভোর ৫:৪৯

শাহ আজিজ বলেছেন: সড়ক পরিবনের সাধারন সম্পাদক বাসে চড়া মহিলাদের পোশাক যে তাদের স্টাফদের যৌন উত্তেজনার সৃষ্টি করে তা স্বীকার করে নিলেন ।

শাহেদিন মালিক যৌন শিক্ষার উপর জোর দিয়েছেন ।

উপরের দুজনই উস্কে দেওয়া কথাবার্তা বলে দিলেন। পরদা না করলে স্টাফের অধিকার জন্মায় একজন মা, বোনের শরীরে হাত দেয়ার আর খালি বাসে ধর্ষণের শিকার হলে স্টাফ ধর্ষকরা শাহেদিনের মালিকের রেফারেন্স দিয়ে বলবে আমাদের যৌন শিক্ষার ট্রেনিং শুরুই হয়নি ।

বেতের মাইরের উপর ওষুধ নাই ।

৬| ০৯ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:০২

সৈয়দ ইসলাম বলেছেন:
সোহানী বলেছেন: কারন এ পর্যন্ত কোন বিচার হয়নি তাই অপরাধীরা জানে কোন সমস্যঅ হবে না তাদের। আইনের কোন হাতই নেই তাদের ধরার।

তবে এক্ষেত্রে পুরুষদের ভূমিকাই পারে এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে, যতদিন না প্রশাসন কিছু করছে। এইরক অস্বস্তিকর পরিস্থিতির আশপাশে একাধিক শিক্ষিত ভাইয়েরা বিভিন্ন কাজে উপস্থিত থাকেন, তারা যদি একটু চোখকান খোলা রেখে এই বিষয়ে সতর্ক অবস্থান নেন, তাহলে এ অপকর্মকারীরা মাঠেই মারা পড়বে।


কিন্তু আপুর সাথে একথা বলতেই হয়, ধিক্কার জানাই এমন বিচারের। ধিক্কার জানাই এমন দেশে জন্মেছি যেখানে অপরাধীরা বুক ফুলিয়ে হাটে।.....

৭| ০৯ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: সরকারের ভুলের কারনে গনপরিবহনে এত কষ্ট।

৮| ০৯ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৩

সুমন কর বলেছেন: চরম রাগ উঠে যখন, ওঠা-নামা'র সময় গায়ে হাত দেবার চেষ্টা করে !! আমার চোখে পড়লে ঝারি মারি........এ কারণে সবাইকে বলি, তখন জোড়ে বলবে, "আপনি সরুন, আমি নামছি" তাহলে তারা বুঝতে পারে এবং সাবধান হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.