![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৯৭ সাল। আমি তখন ক্লাস থ্রী বা ফোরে পড়ি। আমাদের বাড়ি থেকে কয়েকে বাড়ি পরে চেরাগ আলির বাড়ি। আমাকে বলত নাতি। একদিন তার হাতে থাকা ঘড়ি দেখে জিজ্ঞাস করলাম কটা বাজে? আশ্চর্য সে ঘড়ির দিকে না তাকিয়ে সূর্যের দিকে তাকিয়ে বলল সাড়ে দশটা বাজে। আমিতো থ খাইলাম! তাকে আবার জিজ্ঞাসা করলাম ঘটনা কি? সে বলল ঘড়িটা নষ্ট আর আমি সূর্যের দিকে তাকালেই বলে দিতে পারি কটা বাজে। মানতে পারলাম না। কিছু দূর গিয়ে আরেকজন কে জিজ্ঞাস করলাম সে ঘড়ি দেখে যে টাইম বলল তাতে চেরাগ আলির বলা টাইমের সাথে মিলে গেল। আশ্চর্য চেরাগ আলি সূর্যের দিকে তাকিয়ে সময় বলল কীভাবে! এই গল্পতে আবার ফিরবো শেষের দিকে।
এবার চলুন একটু প্রাচীন মিশরের ইতিহাস কি বলে একটু জেনে আসি। খ্রিস্টপূর্ব সাড়ে তিন হাজার বছর পূর্বে প্রাচীন মিশরীয়রা সময় নির্ণয়ের জন্য অবেলিস্ক নামে এক ধরনের সূর্যঘড়ি ব্যাবহার করতো। সূর্যের ছায়াকে কাজে লাগিয়ে তারা সময় নির্ণয় করতো। তাদের এই সূর্য ঘড়িতে কোনও মিনিট বা সেকেন্ডের কাটা ছিল না শুধু ছিল ঘণ্টার কাটা।
আরেকটি ঘটনায় যাওয়া যায়, দক্ষিন আমেরিকার প্রাচীন শহর মাচুপিচুতে অনেক উচুতে একটা বিশাল পাথরখণ্ড ছিল যার নাম এউতিয়ানা। সেখানকার অধিবাসীরা এই পাথরকে আধ্যাত্মিক পাথর বলত।এই পাথরে দেবতার আত্মা আছে বলে পাথরটিকে তারা পুজা করতো। এই পাথরের ছায়ার মাধ্যমে তারা সময় নির্ণয় করতো। উপরের সবগুলো ঘটনাই উত্তর গোলার্ধে ঘটেছে(নক্ষত্র অনুসারে)। উত্তর গোলার্ধে সূর্যের ছায়া ডান দিক থেকে বামে যায়। এজন্য উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাটা ডান দিকে ঘুরছে যা প্রাচীনকাল থেকে কার্যকর হয়ে আসছে যা আধুনিক বিজ্ঞান ও মেনে নিয়েছে। তবে দক্ষিন গোলার্ধে ঘটে ঠিক তার উলটো অর্থাৎ বামে থেকে ডানে।
আরেকটি ঘটনা, কাহেকিয়াবাসী ঋতু, বছর আর বিশেষ দিন হিসাব রাখতো মঙ্কস মাউন্তসের সূর্যঘড়ি দ্বারা, বড় বড় সমান মাপের ৪৮ টা সিদার কাঠের পোস্ট সমান দুরত্তে বসিয়ে বৃত্তাকার সূর্যঘড়ি তৈরি করা হয়। যার ব্যাস ছিল ৪১০ ফুট আর পরিধি ছিল প্রায় ১২৮৮ ফুট। ১৯২০ সালে এই ঘড়ি আবিষ্কৃত হয়। ১৯৮২ সালে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটে এই ঘড়িকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এখানেও সেকেন্ড আর মিনিট ছিল না। চেরাগ আলির বলা সূর্যঘড়িতেও কিন্তু সেকেন্ড মিনিট ছিলনা স্মরণ আছেতো তার কথা?
তবে সমস্যা সমাধানে আধুনিক বিজ্ঞান, ১৬৫৭ সালে ডাচ জ্যোতির্বিদ ক্রিসশিয়ার হাইজেন সেকেন্ড, মিনিট আর ঘণ্টার নির্ভুল যান্ত্রিক ঘড়ির নকশা করেন যার কাটা সূর্যঘড়ির মতো ডান দিক থেকে বাম দিকেই ঘুরে। ৭০০ বছর আগের ল্যাটিন শব্দ ক্লক্কা থেকে আজকের ক্লক শব্দের উৎপত্তি।
আমরা আবার চেরাগ আলির কাছে ফিরে আসি। আমার কৌতূহল প্রাচীন সূর্যঘড়ির কথা সে জানলো কেমন করে। তা জানার জন্য ২০১৫ সালে তার বাড়ি গিয়ে জানতে পারলাম সে ২০১০ সালে যক্ষ্মা রোগে মারা যায়।
ইসমাইল হোসেন সবুজ
২| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৫৬
নিয়েল হিমু বলেছেন: প্রাচিন কাল থেকেই সূর্য দেখে সময় নির্ধারন হয়ে আসছে আমাদের এই বাংলা অংশ জুরেই এর প্রমান বিভিন্য পুরাতন গল্প কাহিনী বা আত্মজীবনীতে পাওয়া গিয়েছে ।
৩| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৮
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: পোস্ট লেখার শেষে নিচে আপনার নাম লেখার প্রয়োজন নেই। আপনার ব্লগেই আপনার উল্লেখ্য করা আছে।
৪| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২২
সাহসী সন্তান বলেছেন: গল্প এবং ইতিহাস দুইটাই ভাল হয়েছে। তবে শেষ টা ঠিক ভাবে মেলেনি বলে মনে হচ্ছে।
ধন্যবাদ জানবেন!
৫| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৭
রাতুল_শাহ বলেছেন: হুমমম
৬| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:২৫
ক্রিবিণ বলেছেন: ২০১০ সালেও যক্ষা হলে রক্ষা নাই ধারণার অদ্ভুত প্রমাণ দিলো চেরাগ আলী,,, তবে ভালোই লিখেছেন...
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৫২
নিয়েল হিমু বলেছেন: এই যুগে যক্ষা রোগে মারা গেল !!!