![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ইশতিয়াক। জন্মসূত্রে পেয়ে গেছি লেখালেখির অধিকার। তাই লিখি মনের আনন্দে। যখন যা মন চায়।
পলাশ এখন অনেকটা বড় হয়েছে,তার এখন একটা আত্মসম্মান বোধ রয়েছে।পড়া লেখাই অনেকটা মেধাবী না হলেও ভাল। তবুও তো তার খালাতো ভাইদের মতন তো আর তার বাবার অঢেল অর্থ সম্পদ নেই যে তাকে হাজার হাজার টাকা খরচ করে প্রতিটা বিষয় এ প্রাইভেট রেখে দিবে।তবুও তার রেজাল্ট সব সময় তাদের থেকে ভাল হয়।তার খালার ছেলেরা তাকে অনেক হেয় করে,তার সফলতাকে তারা অন্য চোখে দেখে।এমন কি সে ভাল কিছু খেলেও তার খালাদের মুখের কথা শুনতে হয়,তার খালার তার মায়ের কাছে এসে বলে "এই সব জানোয়ার গুলারে ভালা ভালা খাওয়াইয়া পালতাছোছ শেষ পর্যন্ত তো গুষ্টির মতনই হইব" কিন্তু পলাশের মা এর কোন প্রতিবাদ করলো না বরং তাদের সাথে আরও তাল মিলিয়ে গেল।পলাশ এগুলো একদমও পছন্দ করে না,আর যদি সে এগুলোর প্রতিবাদ করতে যায় তাহলে তার সেদিন মার খাবার আর অন্ত থাকে না।এমনকি খুব তুচ্ছ ব্যাপারেও মার খেতে হয় তার,এই যেমন বিছানা থেকে নামার সময় চাদর নেমে পড়লো কেন,কল থেকে ফোটা ফোটা পানি পরছে কেন,এই সব অবান্তর কারণ নিয়ে তাকে ঐ দিনটা মার খেয়ে কাটাতে হয়।তাই তার মাঝে মাঝে মনে হয় তার বাবার কথাটাই হয়তো সত্যি,তার বাবা বলেছিল "তুই জন্মানের বেলায় তোর মায় মইরা গেছুলগা,তার পর তোরে পালনের লাইগ্গা এইডারে বিয়া করছিলাম" তাই পলাশ প্রায় রাতেই নীরবে চোখের জল ফেলে।তার বাবা এই কেমন একজনের কাছে তাকে রেখে গেল। পলাশ চিন্তা করে কোন সমাধান খুঁজে পায়না।এটা কি আসলেই তার মা নাকি অন্য কেউ।
কয়েকদিনের মধ্যে তার মা আর বাবার মধ্যে তুমুল ঝগড়ার সৃষ্টি হয়।ফলে তার মা তার বাবাকে মা তুলে গালি দেয়,এবং চরিত্রহীন বলেও গালাগাল করে,ফলে পলাশের বাবা তার মাকে অপমানের পিরা সইতে না পেরে তার মাকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। আর তখনই পলাশের উপর নেমে আসে এক করুন পরিণতি।তার সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা তাই পলাশ পড়ছে কিন্তু তার খালারা তার পড়ার পরিবেশটা নষ্ট করার জন্য সন্ধ্যা রাতে তাদের বাড়ি গিয়ে পলাশের সাথে ঝগড়া শুরু করে,তার মাকে বলে "তোরে না তালাক দিছে তাইলে এইডা এনে কে, বাইর কইরাই না দিবি" কিন্তু তার মা কোন প্রতিবাদ করলো না।এমন করে প্রায় অনেকটা দিন কাটার পর পলাশের টেস্ট এর রেজাল্ট বের হয়,দেখল সে ফেল করেছে।এবং প্রতিদিন বাসায় খাবার দেওয়ার সময় প্লেট আছড়া-আছড়ি আর কথায় কথায় ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা তার আর ভালো লাগে না। তখন সে তার বাবার কাছে এই সব বলে এবং তার খালার ছেলেরা তাকে লোক দিয়ে হত্যা করার হুমকিও দিয়েছে,এসব শুনে তার বাবা তাকে গ্রামের বাড়ি চলে যেতে বলে।তখন আবার তার খালারা তাকে কুবুদ্ধি দেওয়া শুরু করলো, যে সেখানে গেলে তোর বাপে তোরে পালবোনা, অজুফারে বিয়া করবো। তোরে দিয়া তহন মাডি কাডাইবো, দেহিছ। এমন করে তারা কোন রকম পলাশকে তার মায়ের সাথে রাখার ফন্দি বের করে। তখন পলাশ কোন রকম থাকতে শুরু করে তখন তার জীবন টা শিয়াল কুকুরের জীবন থেকে আর আলাদা কিছু রইলো না।পলাশের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হলে সে তার পরিক্ষা দিয়ে আসার সময় তার হাত থেকে ফাইলটা নিয়ে তার চোখের সামনেই জ্বালিয়ে দেয় কয়েকজন অপরিচিত লোক।তার পর সে তার মাথায় একটা আঘাত অনুভব করলো সে তার চোখের সামনে সব ঝাপসা দেখতে লাগলো।কিছুক্ষণ পর সে নিস্তেজ হয়ে যায়।
রাত ১১:৪৩ পলাশ নিজেকে একটা নর্দমার বাক্সে আবিষ্কার করলো, সে উঠে বসতে নিলে দেখলো তার মাথাটা এখনও ব্যাথা করছে,কিন্তু কিছুক্ষণ পর সে ঝাকনি অনুভব করলো তার সাথে হুইছেল।সে সব কিছু বুঝে উঠবার আগেই দেখলো একটা ট্রেন এগিয়ে আসছে। সে হন্তদন্ত করে লাইন থেকে ছুটে পরে গেল।আর ট্রেনটা তার গন্তব্যের দিকে ছুটে চললো।সে তার এই পরিণতির কথা সব চিন্তা করেও বিশ্বাস করতে পারছিলনা।সে উঠে দাঁড়ালো এবং তার সমীকরণ মেলাতে চাইলো।সে ট্রেনটির পিছন পিছন হাটা শুরু করলো,এতক্ষণে ট্রেনটি অনেক দূর চলে গেছে।সে জানে এগুতে থাকলে সামনে হয়ত একটা স্টেশন পেয়ে যাবে।তাই সে তার সমাধান খুঁজতে খুঁজতে এগুতে থাকে।
পলাশ কিছু দূর আলো দেখতে পেলো।সে নিশ্চিত সেটা কি।তাই আরও দ্রুত পা চালাল।সে প্ল্যাটফরমের ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখল ৩:৩৬ বাজে। আর যে ট্রেনটার নিচে কাটা পড়লে তাকে পরপারে যেতে হত, সেটি হল মধ্য রাতের ট্রেন।আর এটিই হলো তার গন্তব্যে পৌছানোর একমাত্র উপায় কারণ সবাই জানে সে মরে গেছে।তাই সে আর সেই পশু স্বভাবের নারীটার কাছে এবং সেই পশু গুলর কাছে।আকাশ টা বেগুনি রং ধারণ করেছে মনে হচ্ছে। সে এক অজানায় হারিয়ে গেছে,তার নিজেকেই নিজের কাছে বোঝা মনে হচ্ছে। তাই পলাশ এই মধ্য রাতের ট্রেনেই তার অজানার পথে পাড়ি জমালো।
২| ০৯ ই জুন, ২০১৪ রাত ৯:৫২
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ভালো লেগেছে !
৩| ০৯ ই জুন, ২০১৪ রাত ১১:১৮
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ১ খালারা সাধারণত (বোনের সন্তান্দের ক্ষেত্রে )মায়ের স্নেহ-মমতার আংশিক পরিপূরক হয়। অতটা নীচ মানসিকতার খালা চরিত্র অংকন ঠিক হবে না। (ইন জেনারেল খালারা এমন হন না।) তারা সম্পর্কের দিক দিয়ে সম্মানিত সবার কাছে।
২ পরীক্ষা দিয়ে আসবার সময় কয়েকজন লোক ফাইল নিয়ে পুড়িয়ে ফেলল, কেউ দেখলো না বা প্রতিবাদ করলো না। এমন কি মাথায় আঘাত করে অজ্ঞান করে কোথাও বা ট্রেন লাইনে ফেলে রাখলো কেউ দেখবে না প্রতিবাদ করবে না, নিদেনপক্ষে জটলার সৃষ্টি করবে না- এমন নির্বিকার সমাজ হইতেই পারে না।
৩ তাই সে আর সেই পশু স্বভাবের নারীটার কাছে এবং সেই পশু গুলর কাছে।
-এখানে দেখা যায় ছেলেটা বা কিশোর/যুবক লালিত-পালিত সেই নারীটির কাছে যাকে সে মা হিসাবে জানে। কখনো তাকে মা ডাকলে বা তার স্নেহ-মমতা কি বিন্দুমাত্র পায় নাই ছেলেটি? কিন্তু গল্পে দেখা যায় মা মহিলাটি ছেলেটির ভবিষ্যতের দুর্গতি অনুমান করে শংকিত। তার মানে স্নেহ-মমতা তার মাঝে আছে ছেলেটির জন্য। কৃতজ্ঞতা মানুষের বড় একটি গুণ। কাজেই কৃতজ্ঞতা হেতু পালনকারিনী মহিলাকে পশুর সঙ্গে তুলনা সু-সাহিত্যের জন্য ক্ষতিকর।
সাহিত্য হইল সৌন্দর্য্যের ধারক, সৃজনী মাধ্যম। সাহিত্যে শুধুই অমানবিকতা বা মানবিকতা অথবা সদগুন বা কেবলই দোষ দেখাইলে একপেশে হইয়া গেল। মানুষের দোষ আর গুণ দুইটাই থাকে। একটা মানুষের কথা বলতে গেলে তার দুইটা দোষ-গুণেরই উল্লেখ জরুরি। নইলে পাঠক মানুষটার একটা দিক নিয়া ভাবতে আগ্রহী হবে না। এমন কি মানুষ হিসেবে তারে বিচার করতে পারবে না।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫১
এনামুল রেজা বলেছেন: লিখতে থাকুন.. শুভকামনা...