![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ইশতিয়াক। জন্মসূত্রে পেয়ে গেছি লেখালেখির অধিকার। তাই লিখি মনের আনন্দে। যখন যা মন চায়।
১/
এই যে, এই যে। শুনছেন? আপনাকে বলছি।
> জি আমাকে বলছেন?
> হুমম,আপনাকেই। কিছু মনে না করলে আপনার নামটা জানতে পারি?
> কেন? কি দরকার?
> নাহ, আপনাকে অনেকটা চেনা চেনা লাগছে তাই আরকি।
> হুম, বুঝেছি। আমি "ইসমিহ"
> ওহ, আচ্ছা। সরি।
২/
কি হোল কিছুই বুঝতে পারলাম না।ছেলেটা আমাকে ডাকতে ডাকতে এতটা পথ ছুটে এলো,তাও আবার শুধু নাম জানার জন্য।
কিন্তু ছেলেটা কে,আমারও তো অনেকটা চেনা পরিচিত মনে হচ্ছিল। চোখে চশমা,চুল গুলো অগোছালো।সব কিছুই যেন অনেকটা পরিচিত ছিল।তবুও চিনতে পারছি না কে সে!
ইসঃ কেন যে নামটা মিথ্যে বললাম।পরিচিত হলেও তো চিনে ফেলতো, তার নামও তো জানা হয়নি।
অনু এইসব কথা ভাবছে আর চাঁদ দেখছে।তার ধারনা যাদের ভালোবাসার কেও নেই,তারা চাঁদকে ভালোবেসে সে অভাবটা পূরণ করে।
৩/
অনুর সাথে প্রায় ৬ বছর পর আজ দেখা হোল।এর মাঝে কোন যোগাযোগও হয়নি।কিন্তু অনুকে প্রথম চিনতে অসুবিধে হলেও পরে ঠিকই চিনে ফেলেছি,যখন ও ওর নামটা গোপন রাখার জন্য নিজেকে " ইসমি" বলে পরিচয় দিয়েছিল।কিন্তু প্রত্যেক বারের মত সে এবারও ইসমি নামটা উচ্চারণ করতে গিয়ে ইসমিহ বলে ফেলেছিলো।
কিন্তু সে নিজের নামটা গোপন করে ছিলো কেন।নাকি আমাকে চিনতে পেরে নিজেকে গোপন করার চেষ্টা করছিল।
না আমাকে চিনতে পারলে তো এমন করার কোন প্রয়োজন ছিলোনা হয়তো।
৪/
ব্রেক টাইমে অনু ওর টিফিন বক্সটা খুলতেই ওর মুখে তিন গোল্লা ফুটে উঠে,বড় বড় দুইটা চোখ আর হা করা মুখ।
এমন সময় নাবিলের আগমন
"কিরে মুখ খুলে হা করে কি দেখছিস,সেন্ডুইজ নেই?"
সয়তান! তুই তাহলে এই কাজ করেছিস।
এই বলেই অনু নাবিলের উপর ঝাঁপিয়ে পরে।আর একসাথে ৪ -৫ টা কিল ঘুসি বসিয়ে দেয় নাবিলের পিঠে।
নাবিল দৌড়ে গিয়ে ওর নিজের টিফিনটা নিতে যায়,কিন্তু দেখলো এটাও খালি।
এবার নাবিলের মুখেও তিন গোল্লার সৃষ্টি হয়।
কিরে আমারটাও খালি!
ওফ নুডুলস টা খুব ভালো লেগেছেরে।অনু এ কথা বলেই দৌড়ে পালাতে চায়।আর নাবিলও অনুর পিছু পিছু ছুটতে শুরু করে।
নাবিল আর অনুর পাগলামি দেখে ইসমি এসে তাদের থামালো।কিরে তোরা কি সারা জীবন এভাবেই টম এন্ড জেরির মত লেগে থাকবি নাকি।
এই শুনে দুই জনই শান্ত হয়।
৫/
আজ স্কুলে সবাই যেন আকাশ থেকে পড়লো,নাবিলের কথা শুনে।সে নাকি আর এ স্কুলে পড়বেনা,ঢাকা চলে যাবে।স্যারেরাও তাকে ছাড়তে চাইছে না। এখন থেকে আর তিন দিন পর সে চলে যাবে।
অনু এই কথা শুনে একদম চুপসে যায়, আর নাবিলকে জিজ্ঞাস করলো "যাওয়াটা কি বেশি জরুরী?"
নাবিল কিছুই বললো না।
অনুও আর একটা কথাও জানতে চাইলো না।
আজ সারাটা ক্লাসই নীরব কেটেছে সবার, সবাই যেন প্রতি দিনের সব কর্মকান্ড ভুলে বসেছে।
নাবিল আর অনুও আজ চুপচাপ হয়ে আছে।আজ তারা কেও টিফিন নিয়ে ঝগড়া করেনা।
অনু ক্লাস রুমের বারান্দায় দাড়িয়ে রয়েছে।তার সরু কাজল দেওয়া চোখটাতে মুক্তর দানার মত জল জমে আছে,কিন্তু কেও তা লক্ষ করলো না।
আজ অনু স্কুলে আসেনি।কিন্তু অনু এমন মেয়েনা,সে কখনো স্কুল মিস দেয়না।কিন্তু আজ কি হোল ও কি অসুস্থ।
ক্লাস রুমে বসে বসে ভাবছে অনুর বেপারে।নাবিল ভেবেছিল আজ অনুর বাসার ফোন নাম্বার নিয়ে যাবে।যেন তাদের মধ্য যোগাযোগ টা বিচ্ছিন্ন না হয়ে যায়।
কিন্তু তা আর হয়ে উঠলো না। নাবিল চলে গেল।আর এতদিন অনু ইচ্ছে করেই স্কুলে আসেনি।
অনুর সাথে দেখা হবার ৪ দিন পর.......
৬/ আজ নাবিল একটা কাজে বেরিয়েছে। খুব বৃষ্টি হচ্ছে, আর নাবিল রিক্সার জন্য দাড়িয়ে আছে আর বৃষ্টিতে ভিজছে।
অন্য সময় নাবিল বৃষ্টিতে ভেজার জন্য বাসে যাওযার পথটাও হেটে যায়।কিন্তু আজ তার কাছে এটা খুব অস্বস্তি লাগছে।
হঠাৎ তার কানে এসে একটা পরিচিত শব্দ করা নাড়লো।
হ্যাঁ এটা তারই নাম,কেও নাবিল বলে ডাকছে।এদিক ওদিক তাকিয়ে খুঁজতে লাগলো, তার নামের উৎসটা।কিছুক্ষণের মধ্যেই সে আবিষ্কার করলো,রিক্সার হুড এর নিচে একটা মেয়ে তাকে ডাকছে।কিন্তু সে চেহারাটা ঠিক মত বুঝতে পারছেনা বৃষ্টির কারণে তার চশমার গ্লাসটা ঘোলাটে হয়ে গিয়েছে।
নাবিল দাড়িয়ে আছে, যেতে সাহস পাচ্ছেনা।
কিন্তু মেয়েটি রিক্সা থেকে নেমে পরেছে।ছাতা হাতে তার পাশে এসে দাঁড়ালো। নাবিলকেও ছাতার ছায়ায় নিয়ে নিলো।
অনু এবার একটা হাতে নাবিলের পিঠে সজোরে একটা ঘুসি মেরে বলে, "সয়তান ঐ দিন চিনতে পেরেও চলে আসলি কেন"
"এমনি,কিন্তু তুইও কি আমাকে চিনতে পারিসনি"
"সত্যি আমার তোকে চিনতে অনেকটা অসুবিধে হচ্ছিল"
"হুমম"
"হুমম,মানে বৃষ্টি হচ্ছে এখানেই দাড়িয়ে থাকবি নাকি "
তোর সমস্যা হলে যেতে পারিস।আমি বৃষ্টিতে ভিজে ভিজেই বারি যেতে পারবো।
তোর কি মনে হয়? আমি একবার যে ভুলটা করেছি সেটা আবার করবো।তোকে তো আর আমি ছাড়ছি না।
আমিও ভিজবো আজ তোর সাথে।তোর মনে নেই এক সময় বলেছিলি "কোন এক বৃষ্টির দিনে দুজনে হাতে হাত রেখে ভিজে ভিজে অনেকটা পথ হাঁটবো"
"হুমম বলেছিলাম"
"তাহলে চল,দাড়িয়ে আছিস কেন"
অনু ছাতাটা ছেড়ে দেয়ে,বাতাসের কারণে ছাতাটা অনেক দুরে চলে যায়।
অনু আর নাবিল পাশা পাশি হাঁটছে। হঠাৎ অনু নাবিলের হাতটা ধরে ফেলে।নাবিল একবার অনুর দিকে তাকায়।তার পর আবার মাথা ঘুরিয়ে নেয়।
অনু ভাবছে তার আগামী দিনের পথ চলার মাঝেও এই হাতটা যদি ধরে থাকা যায় তাহলে মন্দ হতো না।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮
ইশতিয়াক এম সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৭
Kawsar Siddiqui বলেছেন: প্লাস, ভালো লাগলো।