![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্কুল জীবন সবারই খুব ভালো কাটে। শুধু ভালো বলাটা ঠিক না। বেশীরভাগ মানুষেরই শ্রেষ্ঠ সময় হয় তার স্কুল জীবন। জীবনের যে কোন পর্যায়ে মানুষ এই স্কুল জীবনের কথা ভাবে আর হা হুতাশ করে। আহা!!! আবার যদি পাওয়া যেত সেই স্কুল জীবন। কিন্তু উপলের বেলায় তা উল্টা। জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময় সে পাড় করেছে স্কুলে। কিছু দায়ভার তারও। ক্লাস ফোরে থাকতে সে ভেবেছিল ক্লাসে প্রথম হবে। কারণ তার মা সারাক্ষণ কানের কাছে বকাঝকা করত। “ সবাই ফার্স্ট হয়। তুই কেন ফার্স্ট হতে পারিস না। ওরা কি সোনার চাল খায়?” এই ধরনের কথা শুনতে শুনতে উপল বিরক্ত হয়ে গিয়েছিল। ভেবেছিল এবার যেভাবেই হোক প্রথম হবে। সোজা পথে না হলে বাঁকা পথে। খুব স্বাভাবিকভাবেই কেন জানি সোজা পথে হল না। দেখা গেল সবগুলাতেই হতাশাব্যাঞ্জক ফলাফল। খালি অংকে ৯৯। পরে উপলের মাথায় বুদ্ধি চাপলো যে খাতাগুলায় সে নিজেই যদি সব ৯০ এর ঘরে মার্কস বসায়ে দেয়। তাহলেই তো ফার্স্ট হওয়া হয়ে যায়। এত সোজা সমাধান!! আর সে কিনা চিন্তায় মরে যাচ্ছে। যেই চিন্তা সেই কাজ। একটা লাল পাইলট কলম আছে। ওইটা দিয়ে সে সব মার্ক বাড়িয়ে দিয়েছিল। সব ৯০ এর ঘরে। পরে মাকে খাতা দেখিয়েছে। মা খুব খুশি হয়েছিল। কিন্তু বুঝতে পারছিল না যে শুধু অংক খাতা ছাড়া সব খাতাতে এত কাটাকাটি কেন!!! শুধু এটুকু হলেও হত। কিন্তু বোকা উপল ক্লাসে গিয়েও ঘোষণা দিল যে সেই এবার প্রথম হয়েছে। ক্লাস ফোর এর ছেলে তো আর জানে না যে টিচারদের কাছেও মার্কসের একটা রেকর্ড থাকে। যারা ক্লাসে প্রথম হত বা প্রথম দিকে থাকত তারা উপলের এই ঘোষণা কিছুতেই মানতে পারল না। তাদের চেয়ে তাদের মায়েদের রাতের ঘুম নষ্ট হয়ে গেল। তাদের কাছ থেকেই কথা টিচারদের কাছে গেল। টিচাররা রীতিমত তদন্ত কমিটি খুলে বসলো। তখন উপলের হুশ হলো যে সে মারাত্বক এক অপরাধ করে ফেলেছে। তাকে বহুবার জিজ্ঞেস করা হল। সে ভয়ের চোটে কিছু স্বীকার করলো না। তার মাকেও অনেকে দোষারোপ করল। বলা হল যে তার মা এটা করেছে। অবশেষে দুই সপ্তাহ পর উপল স্বীকার করল যে সেই এই কাজ করেছে। অবশেষে বিশাল মিটিং বসল। মিটিং এ প্রায় সবাই এই ছেলেকে টিসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছিল। শুধু একজন টিচার বলেছিল যে একটা ক্লাস ফোরের বাচ্চার উপর এত কঠোর হওয়াটা ঠিক হবে না। যাইহোক অবশেষে উপলকে টিসি দেওয়া হল না। দিলেই মনে হয় ভালো হত। কারণ এরপর স্কুলে উপলকে ঠিক আসামীর মত ৭টা বছর কাটাতে হয়েছিল। স্কুলে তার বেস্ট ফ্রেন্ডরা তাকে ত্যাগ করল। ভাল স্টুডেন্টদের মায়েরা তাকে প্রতিদিন একবার করে শোনাত, “উপল!!! ভালো হয়ে যাও।“ উপল শুধু শুনে যেত কিছু বলতো না। তার মনে হতো এগুলো তার অপরাধের শাস্তি। টিচাররা ক্লাসে টাকা চুরি করে গেলে উপলকে ডাকত। সরাসরি অভিযুক্ত করতো না। কিন্তু তাদের চোখের ভাষা উপল বুঝতে পারত। তারা সবসময় তার দিকে এমনভাবে তাকাতো যেমন করে পুলিশ আসামীর দিকে তাকায়। এইভাবে সে বাকি স্কুল জীবন পাড় করেছে। তার বন্ধুর সাথে যেন সে বসতে না পারে এই সুপারিশ বন্ধুর মা করে গেছে টিচারের কাছে। উপল নাকি ওই বন্ধুর খাতা দেখে লিখে বেশি মার্ক পায়। এরকম কতশত অপমান উপলকে সইতে হয়েছে স্কুলে তার ইয়ত্তা নেই। তো স্বাভাবিকভাবেই স্কুল জীবন অবশ্যই মনে রাখার মত ছিল। কিন্তু মনে করার মত ছিল না। তারপরো অনেক বছর পরেও উপল মনে করে যে স্কুল জীবন খুব অল্প বয়সেই তাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষতিও তার করে দিয়েছে। স্কুল জীবনেই মানুষের অনেক বড় ফ্রেন্ড সার্কেল হয়। তার সেটি হয়নি। সে বাইরে থেকে তিক্ত হয়ে গেছে। সে কাউকে ক্ষমা করে না। কারণ তাকে তো কেউ ক্ষমা করেনি। তাহলে সে কেন করবে!!! তাই সে কাউকে ক্ষমা করে না। তার কাউকে ভালো না লাগলে সে তার সাথে কথা বলে না। এরকমভাবে দেখা যায় যে তার আসলে কোন বন্ধু হয়না। সে একাই থাকে।
০৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৩৪
সুহান সুহান বলেছেন: ঘটনা বাস্তবের। ধন্যবাদ।
২| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০৬
সকাল রয় বলেছেন:
সুন্দরম!
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৩১
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: হুমম। মন খারাপ করে দেয়ার মত ঘটনা। জানি না কারো বাস্তবের কিনা, কিন্তু আমার কাছে একদম বাস্তবের ঘটনা বলেই মনে হল।
লেখা সাবলীল, তাই ভালো লাগল।