নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বন্য হুঁকার কিংবা উত্তাল উচ্ছ্বাস

বহুদিন হয়ে গেলো দেখিনা তোমার বন্য হুঁকার কিংবা উত্তাল উচ্ছ্বাস

বন্য হুঁকার কিংবা উত্তাল উচ্ছ্বাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রায় ৪০-৫০ লক্ষ লোক বেকার হতে যাচ্ছে কিন্তু সরকার নির্বিকার কেন ?

২৪ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:০১

২০০৫ সালে সাভারের স্পেকট্রাম সুয়েটার ফ্যাক্টরী ধ্বসে শতাধিক শ্রমিককে জ্যান্ত কবর দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গামর্ন্টেস শিল্পের অসনি সংকেত শুরু হয়েছিলো। এরপর ২০১২ সালে শেষেরে দিকে তাজরিন গামর্ন্টেসে আগুনে পুড়ে কয়েক শত গার্মেন্ট শ্রমিক পুড়ি মারা যায়। এরপর মোহাম্মাদপুর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকায় মালিক পক্ষদের দ্বন্দে আরো একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির আগুনে আরো কয়েক শ্রমিক আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যায়। সাভার বাজার বাস স্ট্যান্ডের কাছে রানা প্লাজা নামের নয় তলা এক ভবন ধসে সহস্রধিক মানুষ হতাহত হওয়ায় গোটা বিশ্বের মানুষ অবাক বিষ্ময়ে হতবিহবল হয়ে পড়ে। ইতিপূর্বে অনুরুপ ঘটনার পর তদন্দ কমিটি গঠন করা হলেও কখনো কোন মালিককে শাস্তীর আওতায় আনা যায়নি। বরং গার্মেন্টস শিল্পের মালিক সংগঠনের চাপে তারা সব অপরাধ করেও নিস্কৃৃতি পেয়েছে।

সর্বশেষ গাজীপুরের কোনাবাড়িতে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের পোশাক কারখানায় আগুন দেয়ার পর টানা ৩০ ঘন্টা আগুনে পুড়ে কারখানা ভবনটি কংকালে পরিণত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে এর থেকেও বড় বিষয় হল দেশের অন্যতম বড় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী ধ্বংস হয়ে গেলো । আমার জানামতে এখানে বেতন ভাতা নিয়ে শ্রমিকদের কখনোই কোন সমস্যা হয়নি। এক শ্রমিকের মুখের কথা “স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের কোন শ্রমিক কারখানায় আগুন লাগাতে পারে না। এটি বহিরাগত উচ্ছৃৃংখল শ্রমিকদের কাজ। এখন আমরা কি করব? কোথায় কাজ নেব? “ মাত্র একটা গার্মেন্টস থেকে ১৮ হাজার শ্রমিক বেকার হইলো। আর কি পরিমাণ বৈদেশিক অডার হারাইসে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আরও আজস্র এই রকম ঘটনা হচ্ছে প্রতিনিয়ত । যেগুলার কোন তদন্দও হয়না,কেন সরকারই ভালো জানে।

যদিও বাংলাদেশের প্রতিটি সরকার গার্মেন্টস নিয়ে অনেক গর্ব করে কিন্তু সত্যিকথা ভলতে কি কোন সরকারই এই গার্মেন্ট সেক্টরের উন্নয়নে বা এই গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য কোন কিছু করেনি। তাজরীনের গার্মেন্টস ‘হত্যাকান্ড’র পর অতি সম্প্রতি ঘটমান সাভারের মর্মন্তিক ট্রাজেডী ঠিক সেটাই প্রমাণ করে। উদ্ধার কাজের ধীর গতি, সমন্বহীনতা, উদ্ধার সরাঞ্জমাদির অপ্রতুলতা ও সর্বপোরি ঘটনার পরপরই সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের অপচেষ্টা শ্রমিকদের জন্য সরকারের মায়াকান্না অরণ্যে রোদন হয়ে দেখা দিয়েছে। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীগুলিতে সংঘটিত বিভিন্ন হিংসাত্মক ঘটনার সমাধান না করে সরকার তা বছরের পর বছর ধরে পুষে রেখে নীল চাষীদের ন্যায় শ্রমিকদের সাথে বিমাতা সুলভ আচারন করে আসছে। শ্রমিকের রক্ত পানি করা পয়সায় মালিকেরা লেক্সাস-প্রাডো গাড়ি হাকিয়ে চলছে, আর ফ্যাক্টরী গুলিতে চলছে নারী শ্রমিককে ভোগ করা, ধর্ষণ করা, খুন করা, পুড়িয়ে মারা, পায়ে পিষে মারা , অমানুষিক কম বেতন একটু বাড়ানোর কথা বলার ‘অপরাধে’র‘ জন্য তাদের চাকরী থেকে ছাঁটাই করাসহ সবই চলছে। আর এসবের সবই জায়েজ হয়ে যাচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা আর তথাকথিত অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা’ রাখার অজুহাতে। এখনো পর্যন্ত প্রায় ছয় হাজার শ্রমিককে এই গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীগুলোয় কাজ করতে গিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে।

একটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সব সময়ই অর্থনীতির রক্ষাকবচ হিসেবে বিবেচিত হয়। রাজনৈতিকভাবে শান্তি না থাকলে সমাজও এগুতে পারে না। বিশেষ করে গেল দুই দশকের এই রাজনৈতিক অস্থিরতাই বাংলাদেশে উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় হয়েছে। সেই সুযোগে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দুষ্ট দুর্নীতিবাজ চক্র। তারা সরকার এবং বিরোধীদল উভয়ের ছত্রছায়ায় কায়েম করেছে নিজ নিজ রাজত্ব। এই রাজত্বের দীর্ঘসূত্রিতা এবং সঞ্চিত অপশক্তিই আজ দেশে সব উন্নয়নকে চ্যালেঞ্জ করছে। যা একটি দেশের জন্য চরম বিপজ্জনক সংকেত। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রয়োজনে শ্রমশক্তির দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি গার্মেন্টস শিল্প ও শ্রমিকদের মধ্যে একটি যৌথ সমন্বয় সেল গঠন করে খুব সহজেই একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্লাটফরম গড়ে তোলা সম্ভব। যেখানে মালিক শ্রমিক সকলেরই লাভের সমান অংশিদারিত্ব থাকবে।

সবশেষে বলতে চাই বাংলাদেশের তৈরী পোশাক শিল্পের বাজার হারালে কোনদেশ সবচেয়ে বেশী লাভ হবে? এক কথায় বলা যায় সেই দেশটির নাম ভারত। ভারত বহুদিন যাবৎ এই পোষাক শিল্পকে নিজের দেশে নেওয়ার চেষ্টা করে আসছে। তার আগে একটু পেছনের দিকে তাকিয়ে নেই। বাংলাদেশে গার্মেন্টস ‘শিল্পে’র যাত্রা শুরু হয় এখন থেকে ৩৪ বছর আগে। তখন শ্রীলংকা ছিল গার্মেন্ট শিল্পের লীডিং কান্ট্রি। ভারত শ্রীলংকার সেই মার্কেট নিজ দেশে নেওয়ার জন্য সেখানে তামিলদের দিয়ে গৃহযুদ্ধের সূচনা করে। তখন শ্রীলংকার রপ্তানীকারকরা তাদের বায়ারদের রপ্তানী কোটা পূর্ণ করার জন্য ভারতে না গিয়ে বাংলাদেশে গার্মেন্টসের ব্যবসা নিয়ে হাজির হন এবং এখানকার মালিকদের গার্মেন্ট শিল্প গড়েতোলার জন্য অনুপ্রেরণা ও অর্ডার দিতে শুরু করে। এরপরের ইতিহাস সবার জানা। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা অধিক মুনাফার আশায় বাংলাদেশে ঝুকতে শুরু করে। শুরু হয় বাংলাদেশের পোষাক শিল্পের বাজার। বর্তমানে প্রায় পাঁচ হাজার গার্মেন্ট শিল্পে প্রায় ৪০-৫০ লক্ষ গার্মেন্ট শ্রমিক কাজ করে।

আর কত দিন সরকার নির্বিকার থাকবে? আমরাই বা কতদিন নির্বিকার থাকব? হয়ত সেইদিন পর্যন্ত যেদিন আমাদের গার্মেন্টস শিল্প সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে এবং আমাদের আর কিছুই করার থাকবে না। সরকার কি পারবে তখন এই ৩০ থেকে ৫০ লক্ষ মানুষকে কাজ দিতে??

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০১৪ রাত ১:০৩

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
গার্মেন্টস শ্রমিক নামের এই সব লাঠি হাতে যুবক, এরা কারা? পড়ুন -
Click This Link
Click This Link

২| ২৫ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:১২

ঢাকাবাসী বলেছেন: সরকার তার ঘুষ পাচ্ছে মালিকদের কাছ থেকে সুতরাং শ্রমিকদের কথা না ভাবলেও চলে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.