নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রবাসী মন!
ঈদ মোবারক।
সবাইকে ঈদে মিলাদুন্নবীর শুভেচ্ছা।
অনেক হয়তো আশ্চর্য হয়েছেন এটা আবার কোন ঈদ! তাই না?
আবার কেউ কেউ বলবেন বা বলতে চাচ্ছেন, মুসলমানদের ঈদ তো দুইটা। তাহলে "ঈদে মিলাদুন্নবী" কোথা থেকে আসলো ?
হ্যাঁ, গতকাল থেকে সামু ব্লগে মিলাদুন্নবীর বিরোধিতা নিয়ে বেশ কয়েকটা পোস্ট দেখলাম, মন্তব্য করি নাই, কারণ আমি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি মোটেও পছন্দ করি না/করতেও রাজী না।
ঈদে মিলাদুন্নবী কি এবং কেন? আসুন বিষয়টা একটু পরিস্কার হয়...
ঈদ শব্দের আভিধানিক অর্থ হল খুশী হওয়া, ফিরে আসা, আনন্দ উৎযাপন করা ইত্যাদি। মিলাদুন্নবী’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতে প্রিয় নবীজীর আগমনকে বুঝায়। আর ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতে নবীজীর আগমনে খুশী উৎযাপন করাকে বুঝায়।
সুতরাং অশান্তি আর বর্বরতায় ভরপুর সংঘাতময় আরবের বুকে আধারের বুক চিড়ে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শান্তি নিয়ে এসে মানবজাতিকে সত্যের, সভ্যতা ও ন্যায়ের দিক নির্দেশনা দিয়ে গোটা বিশ্বকে শান্তিতে পরিপূর্ণ করে তুলেন। নবীজীর পবিত্র শুভাগমনে খুশী উৎযাপন করাটাই হচ্ছে ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
এখন হয়তো উপরের লেখাটি পড়ে সামুর মহাজ্ঞানী ব্লগার ব্যক্তিরা একটি সহজ শব্দ ব্যবহার করবেন। আর তা হলো- ঈদ ই মিলাদুন্নবী পালন করা বিদআত। তাই না?
আরো হয়তো বলবেন, নবীজী যেখানে ঈদ ই মিলাদুন্নবী পালন করেনি, সেখানে ভন্ড সুন্নীরা নতুন ঈদের সৃষ্টি করেছে। মুসলমানের ঈদের দিন দুইটি। ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা।
তাই আপনাদের একটু মনে করিয়ে দিতে চাই...
আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দিয়েছেন “আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত প্রাপ্তিতে খুশি পালন কর যা তোমাদের সমস্ত ধন দৌলত অপেক্ষা শ্রেয়। - (সূরা ইউনুস-৫৮)
এবং “স্মরণ কর আল্লাহর নিয়ামতকে যা তোমাদের উপর অবতীর্ণ হয়েছে” -(সূরা বাক্বারা-২৩১)
আবার আরেক আয়াতে বলা হয়েছে...
“হে হাবীব, নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি” -(সূরা আম্বিয়া-১০৯)
এই তিনটি আয়াত একত্রিত করে বিবেচনা করলে দেখা যাবে আল্লাহর নবী আমাদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ রহমত। তাই তিনি যেদিন দুনিয়াতে তাশরীফ এনেছেন সেদিনকে স্মরণ করে আমাদের খুশি পালন করা উচিত। আর এই কাজটিকেই বলা হয় ঈদ ই মিলাদুন্নবী। অর্থাৎ নবীজীর আগমনে খুশী উৎযাপন করা। খুশী বলতে গান বাজনাকে বলা হয় নাই, খুশী মানেই নবীর শানে দরুত পড়া, জিকির করা, নবীজির জীবনী নিয়ে আলোচনা করা ইত্যাদি।
এবার আসছি কঠিন এক প্রশ্নে,
আপনারা অনেকে হয়তো বলতে চাচ্ছেন বা বলবেন, আমাদের প্রিয় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম নিজেই মিলাদুন্নবী পালন করেছেন কিনা?
হ্যাঁ। নবীজী নিজেই নিজের মিলাদের দিনকে পালন করতেন। মুসলিম শরীফের একটি হাদিস দিয়েই তার প্রমাণ দেয়ার চেষ্টা করছি।
“হযরত আবু কাতাদা (রাঃ) হতে বর্নিত রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লামার দরবারে আরজ করা হলো তিনি প্রতি সোমবার রোজা রাখেন কেন?
উত্তরে নবীজি ইরশাদ করেন, এই দিনে আমি জম্ম গ্রহন করেছি, এই দিনেই আমি প্রেরিত হয়েছি এবং এই দিনেই আমার উপর পবিত্র কুরআন নাযিল হয়।
-(সহীহ মুসলিম শরীফ ২য় খন্ড, ৮১৯ পৃষ্ঠা, বায়হাকী: আহসানুল কুবরা, ৪র্থ খন্ড ২৮৬ পৃ: মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল ৫ম খন্ড ২৯৭ পৃ: মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ৪র্থ খন্ড ২৯৬পৃঃ হিলিয়াতুল আউলিয়া ৯ম খন্ড ৫২ পৃঃ)”
এবার, আরো একটি রেফারেন্স দিয়ে ব্যাখ্যা করছি...
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদিন তিনি কিছু লোক নিয়ে নিজ গৃহে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মকালীন ঘটনাবলী বর্ণনা করছিলেন এবং তাঁর প্রশংসাবলী আলোচনা করে দুরুদ ও সালাম পেশ করছিলেন। ইত্যবসরে প্রিয়নবী(সঃ) হাজির হয়ে এ আবস্থা দেখে বললেন, তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত আবশ্যক হয়ে গেল। -(ইবনে দাহইয়ার আত-তানবীর)
এ বর্ণণা থেকে বুঝা গেল নবীজী ঈদ ই মিলাদুন্নবী পালনকে সমর্থন করেছেন। আর ঈদ ই মিলাদুন্নবী পালনের ফযিলত কত বিশাল তা বুঝা যায় আবু লাহাবের ঘটনা থেকেই।
“আবুলাহাব একজন কাফের হওয়ার পরও নবীজীর আগমণের দিন খুশি হয়ে সে তার সংবাদ দাতা দাসী সুয়াইবাকে আযাদ করে দেওয়ার কারনে পরকালে কঠিন আযাবের ভিতরে ও প্রতি সোমবার তার আযাব হালকা করে দেওয়া হয়। -(উল্লেখ্য যে আবু লাহাবের ঘটনা সম্পর্ক হাদিসটি আল্লামা ইবনে জাওযী, আল্লামা কুস্তালানী, আল্লামা জালালুদ্দিন সূয়ূতী সহ আরো অনেকে বর্ণনা করেছেন)
এরপরও যদি রেফারেন্স প্রয়োজন হয় তবে আরো সংক্ষিপ্ত কয়েকটি প্রমাণ দিব। যারা একে জাল কিংবা বানোয়াট প্রমাণ বলবেন এটা সম্পূর্ণ তাদের নিজস্ব ব্যাপার। কেননা জগদ্বিখ্যাত গ্রন্থ “আন নে’মাতুন কোবরা আলাল ফি মাওলিদি সাইয়্যেদ ওলদে আদম” এর ৭-৮পৃঃ থেকে এগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। এর উপর যার সন্দেহ রয়েছে তাকে আর কিছুই বলার নেই। রেফারেন্স গুলো দেখতে পারেন!
আল্লামা ইবনে হাজর হায়তামী(রহঃ) বলেছেন, খোলাফায়ে রাশেদীনগণের যুগেও মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম পালন করার নীতি প্রচলন ছিল।
হযরত আবু বকর সিদ্দীক(রাঃ) বলেছেন “যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর জন্য এক দিরহাম খরচ করবে সে জান্নাতে আমার সাথী হবে”
হযরত ওমর(রাঃ) বলেছেন “যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর সম্মান দিবে, সে দ্বীন ইসলামকেই জীবিত রাখবে”
হযরত ওসমান(রাঃ) বলেছেন “যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর জন্য এক দিরহাম খরচ করবে সে যেন নবীজীর সাথে জঙ্গে বদর এবং জঙ্গে হোনাইনে শরীক হলো”
হযরত আলী(রাঃ) বলেছেন “যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামকে তা’যিম করবে এবং মিলাদ পাঠ করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে সে ঈমানের সাথেই দুনিয়া হতে বিদায় গ্রহণ করবে এবং বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে”
উপরোক্ত কুরআন এবং হাদিস এর রেফারেন্স থেকে বুঝা যায় ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন হচ্ছে জান্নাত পাওয়ার মাধ্যম এবং সাহাবায়ে কেরামের আমল। তাই সাহাবায়ে কেরামের সাথে একমত পোষন করে ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাহফিল করা ঈমানদারদের জন্য একান্ত প্রয়োজন। আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন যেন মোনাফিকদের খপ্পর থেকে আমাদের ঈমানকে হেফাজত করেন এবং আমাদের সকলকে তাদের দলভুক্ত করেন যারা ঈদে মীলাদুন্নবীর মর্যাদা দান করেন এবং এর মর্যাদা উপলব্ধি করেন। তিনি আমাদেরকে তাঁর হাবীব, নবী গনের নবী, রসূল গনের রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আখাস্সুল খাস মুহিব্বীন ও অনুসারী বানিয়ে দিন। আমীন
সকল নবীর নবী মোদের মোহাম্মাদ রাসুল(সঃ)
তাহার আগমনে সৃষ্টি মানব জাতি কুল!
তাকে সৃষ্টি না করিলে আমার রাব্বানা
কিছু সৃষ্টি করতো না, পৃথিবী সৃষ্টি করতো না!
বিঃদ্রঃ বিভিন্ন মাধ্যমে সংগ্রহীত ও পূনর্মাজীত! সকলে ভালো থাকবেন।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:৪২
চাটগাইয়া জাবেদ বলেছেন: রাসুল সাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম এর আগমন শুধু মুসলিমই নয়, গোটা মানবজাতির জন্যেই যে স্রষ্টার অশেষ রহমতের বিষয়। তাই এই খুশীতেই দিনটিকে ঈদ হিসাবে পালন করা হয়। এই সোজা বিষয়টা নিয়ে এত জঘন্য মতবিরোথেধর করণ আমি বুঝতে পারিনা।
হ্যাঁ, আপু আমিও এই সোজা বিষয়টা নিয়ে এত জঘন্য মতবিরোথেধর করণ আমি বুঝতে পারিনা
আরো অনেক দলিল আছে। ইনশাল্লাহ্ সময় সুযোগ হলে পোস্ট করব।
আফসানা আপু, ভালো থাকবেন, দোয়া করবেন। ধন্যবাদ
২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:০৯
জীবনের খাতা বলেছেন: ভাইজান, আপনার পোষ্টটি পড়ে জানতে পারলাম আপনি জন্মবার্ষিকী পালনের বিষয় উল্লেখ করেছেন। যা অন্য ধর্মের সাথে মিল রয়েছে। জন্মবার্ষিকী এবং জন্মদিনে মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি সোমবার রোজা রেখে তাঁর জন্মদিন পালন করেছেন, এই সুন্নত অনুসরণ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিন পালন করা যায় না?
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:১৭
চাটগাইয়া জাবেদ বলেছেন: হ্যাঁ, কিছুটা হলেও জন্মবার্ষিকী পালনের কথা উল্লেখ আসে, কিন্তু জন্মদিন পালনটা যদি কেক নাচ গান ছাড়া হয় তাহলে কি কোন ক্ষতি আছে?
যেমন, নবীজির জীবনী নিয়ে আলোচনা করা, মিলাদ মাহফিল করা, কোরআন পড়া, যেমন আজকে চট্টগ্রামের ঈদে মিলাদুন্নবী হচ্ছে সেখানে এই সব কিছু হবে, তা নবীজির জীবনী নিয়ে আলোচনা , মিলাদ মাহফিল করা কি বেদআত!
তাছাড়া, যার জন্য এই পৃথিবী সৃষ্টি, যার জন্য এই কুল কিয়ানাত সৃষ্টি তাকে যদি একটা দিন বিশেষভাবে স্মরণ করা হয় তা কি বেদআত হবে?
ভুলক্রুটি ক্ষমানুসারে, ভালো থাকবেন।
৩| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৮
আহলান বলেছেন: আফসানা যাহিন যেটা বলেছেন, সেটা আসলেই যুক্তি সংগত। ঈদ বা খুশি মানানোর পদ্ধতিটাতেই রয়েছে গরমিল।
পোষ্টদাতাকে অসংখ্য ধন্যবাদ .....
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:১৭
চাটগাইয়া জাবেদ বলেছেন: হ্যাঁ, আমিও আফসানা যাহিন আপুর সাথে একমত...
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন
৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:০৩
লোকমান হাকিম বলেছেন: . সহীহ হাদীস নির্ভর বিশুদ্ধতম সীরাতগ্রন্থ হল ‘আর-রাহীক আল-মাখতূম’। নবী করীম সা. এর জন্ম দিবস সম্পর্কে এ গ্রন্থে বলা হয়েছে ‘রাসূল্ল্লুাহ সা. ৫৭১ খৃস্টাব্দে ৯ই রবিউল আউয়াল মোতাবেক ২০ এপ্রিল সোমবার প্রত্যুষে জন্ম গ্রহণ করেন। এটা গবেষণার মাধ্যমে প্রমান করেছেন যুগের প্রখ্যাত আলেম মুহাম্মাদ সুলাইমান আল-মানসূর ও মিশরের প্রখ্যাত জোতির্বিজ্ঞানী মাহমূদ পাশা।
2. আল্লামা শিবলী নোমানী ও সাইয়েদ সুলাইমান নদভী রহঃ প্রণীত সাড়া-জাগানো সীরাত-গ্রন্থ হল ‘সীরাতুন্নবী’। এ গ্রন্থে বলা হয়েছে ‘নবী কারীম সা. এর জন্ম দিবস সম্পর্কে মিশরের প্রখ্যাত জোতির্বিজ্ঞানী মাহমূদ পাশা এক পুস্তিকা রচনা করেছেন। এতে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সা. এর পবিত্র বেলাদত (জন্ম) ৯ই রবিউল আউয়াল রোজ সোমবার, মোতাবেক ২০ এপ্রিল ৫৭১ খৃস্টাব্দ। মাহমূদ পাশা যে প্রমাণ-পত্র দিয়েছেন তা কয়েক পৃষ্ঠাব্যাপী বি¯তৃত।”
3. তাদের গবেষণা বিষয়ের একটি দিক হল যে আল্লাহর রাসূল সা. সহীহ হাদীসে নিজেই বলেছেন তার জন্ম সোমবার দিন হয়েছে। মাহমূদ পাশা গবেষণা ও হিসাব করে দেখিয়েছেন যে, সে বছর ১২ রবিউল আউয়াল তারিখের দিনটা সোমবার ছিল না ছিল বৃহস্পতিবার। আর সোমবার ছিল ৯ই রবিউল আউয়াল।
4. তাই বলা যায়, জন্ম তারিখ নিয়ে অতীতে যে অস্পষ্টতা ছিল বর্তমানে তা নেই। মাহমূদ পাশার গবেষণার এ ফল প্রকাশিত হওয়ার পর সকল জ্ঞানী ব্যক্তিরাই তা গ্রহণ করেছেন এবং কেউ তার প্রমাণ খণ্ডন করতে পারেননি। অতএব নবী কারীম সা. এর জন্ম দিবস হল ৯ই রবিউল আউয়াল। ১২ই রবিউল আউয়াল নয়। আর সর্বসম্মতভাবে তার ইন্তেকাল দিবস হল ১২ই রবিউল আউয়াল। যে দিনটিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মোৎসব পালন করা হয় সে দিনটি মূলত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইটি ওয়াসাল্লামের মিলাদ (জন্ম) দিবস বরং তা ছিল তাঁর ওফাত (মৃত্যু) দিবস। তাই দিনটি ঈদ হিসেবে পালন করার আদৌ কোন যৌক্তিকতা নেই।
5. (ক) রাসূলে কারীম সা. বলেছেন –
من تشبه بقوم فهو منهم
“যে ব্যক্তি কোন জাতির সাদৃশ্যতা গ্রহণ করবে সে তাদের অন্তর্ভূক্ত বলে গণ্য হবে।”
(খ) আজানের প্রচলনের সময় কেউ কেউ রাসূলুল্লাহ সা. এর কাছে প্রস্তাব করলেন যে সালাতের সময় হলে আগুন জ্বালানো যেতে পারে। কেউ প্রস্তাব করলেন ঘন্টাধনি করা যেতে পারে। কেউ বললেন বাঁশী বাজানো যেতে পারে। কিন্তু রাসূলে কারীম সা. সকল প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন। বললেন আগুন জ্বালানো হল অগ্নিপুজারী পারসিকদের রীতি। ঘন্টা বাজানো খৃষ্টানদের ও বাঁশী বাজানো ইহুদীদের রীতি।
(গ) মদীনার ইহুদীরা আশুরার দিনে একটি রোযা পালন করত। রাসূলে কারীম সা. দুটি রোযা রাখতে নির্দেশ দিলেন, যাতে তাদের সাথে সাদৃশ্যতা না হয়।
(ঘ) হিজরী সনের প্রবর্তনের সময় অনেকে রাসূলে কারীম সা. এর জন্মদিন থেকে সন গণনার প্রস্তাব করেন। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যাত হয়, খৃষ্টানদের অনুকরণ হওয়ার কারণে।
6. সাহাবী আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলে কারীম সা. যখন মদীনায় আসলেন তখন দেখলেন বছরের দুটি দিনে মদীনাবাসীরা আনন্দ-ফুর্তি করছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন এ দিন দুটো কি ? তারা বলল যে আমরা ইসলামপূর্ব মুর্খতার যুগে এ দুুদিন আনন্দ-ফুর্তি করতাম। রাসূলুল্লাহ সা. বললেনঃ “আল্লাহ তাআলা এ দু’দিনের পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটো দিন তোমাদের দিয়েছেন। তা হল ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। ( আবু দাউদ) ইসলামে ঈদ শুধু দু’ টি এ বিষয়টি শুধু সহীহ হাদীস দ্বারাই প্রমাণিত নয়, তা রবং ইজমায়ে উম্মত দ্বারাও প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহ ও তার রাসূল সা. কর্তৃক নির্ধারিত ইসলামের দু’ঈদের সাথে তৃতীয় আরেকটি ঈদ সংযোজন করা ইসলাম-ধর্ম বিকৃত করার একটা অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।
সাহাবী আবু কাতাদাহ রা. থেকে বর্ণিত যে রাসূলুল্লাহ সা. কে সোমবারে রোযা রাখার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেন, “এ দিনে আমার জন্ম হয়েছে এবং এ দিনে আমাকে নবুওয়াত দেয়া হয়েছে বা আমার উপর কুরআন নাযিল শুরু হয়েছে।” (বর্ণনায় : মুসলিম)
তারা এ হাদীস পেশ করে বলতে চান যে আল্লাহর রাসূল সা. সোমবার দিনে জন্মগ্র্রহণ করেছেন বলে ঐ দিনে রোযা পালন করে তা উদযাপন করাকে সুন্নাত করেছেন। তাই জন্মদিন পালন এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
জওয়াব
এক. আল্লাহর রাসূল সা. শুধু জন্ম দিনের কারণে সোমবার রোযা রাখতে বলেননি। বরং বৃহস্পতিবারও রোযা রাখাকে সুন্নাত করেছেন। সেটা তাঁর জন্মদিন নয়।
عن أبي هريرة رضي الله عنه عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: تعرض الأعمال يوم الاثنين والخميس، فأحب أن يعرض عملي وأنا صائم. رواه الترمذي رواه مسلم بغير ذكر الصوم
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত যে রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, “সোমবার ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি পছন্দ করি যখন আমার আমল পেশ করা হবে তখন আমি রোযাদার থাকব।” (বর্ণনায়: মুসলিম ও তিরমীজি)
রাসুলে কারীম সা. তার জন্মদিন সোমবারে ঈদ পালন করতে বলেননি বরং ঈদের বিরোধীতা করে রোযা রাখতে বলেছেন।
রোযা হল ঈদের বিপরীত। রোযা রাখলে সে দিন ঈদ করা যায় না, ঈদ ও রোযা কোন দিন এক তারিখে হয় না।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:২২
আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: প্রথমেই আপানকে পোস্টটির জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।।।
রাসুল সাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম এর আগমন শুধু মুসলিমই নয়, গোটা মানবজাতির জন্যেই যে স্রষ্টার অশেষ রহমতের বিষয়। তাই এই খুশীতেই দিনটিকে ঈদ হিসাবে পালন করা হয়। এই সোজা বিষয়টা নিয়ে এত জঘন্য মতবিরোথেধর করণ আমি বুঝতে পারিনা। আমি এফবিতেও দেখলাম আমার কলেজের এক ক্লাস মেট রীতিমত স্ট্যাটাস দিয়েছে মেীলাদুন্নবী বিদাত, এটা পালন করোনা!!!
মুশকিল হল, আমাদের মাথায় যেটা গেঁথে গেছে- ঈদ মানে খুশী আর খুশী মানে নাচন-কুদন!
নামায,দরূদ,জিকির,কোরআন তিলওয়াত এইসব দিয়েও যে ঈদ পালন করা যায়, সেটা কারো মাথায় নাই।
আবার মিলাদুন্নবী পালনের নামে আরেক পক্ষ যেমন হুজ্জত করে, সেটা কি আদৌ ঠিক??? উচ্চস্বরে মাইক বাজানো, ওরশের ধুমধাম, এরকম আরো কিছু শোরগোল হয়, অথচ বছরের আর দিনগুলিতে ঠিকমত সুন্নত পালনের কোন ঠিক ঠিকানা নাই...
নবীজী নিজেই নিজের মিলাদের দিনকে পালন করতেন। মুসলিম শরীফের একটি হাদিস দিয়েই তার প্রমাণ দেয়ার চেষ্টা করছি।
“হযরত আবু কাতাদা (রা হতে বর্নিত রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লামার দরবারে আরজ করা হলো তিনি প্রতি সোমবার রোজা রাখেন কেন?
উত্তরে নবীজি ইরশাদ করেন, এই দিনে আমি জম্ম গ্রহন করেছি, এই দিনেই আমি প্রেরিত হয়েছি এবং এই দিনেই আমার উপর পবিত্র কুরআন নাযিল হয়।
এই তথ্যটা জানতাম না। আবারও ধন্যবাদ তথ্যবহুল পোস্ট টির জন্য