নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি হৃদয়ে বাংলাদেশ, প্রবাসেও বাংলাদেশ!

বহু বছর ধরে প্রবাসে দিন কাটাচ্ছি

চাটগাইয়া জাবেদ

প্রবাসী মন!

চাটগাইয়া জাবেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার জন্মদিন ভাবনা ও আরেকটি নতুন বছরে পদার্পণ...

২০ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:৪৫

আজ ২০শে জুলাই, আমার জন্মদিন। এই দিনে হয়তো দুনিয়ার আলো দেখেছিলাম B-) ছোটবেলায় জন্মদিন কথাটা শুনলে মনে হত, এটা বড়লোকের জিনিস, যাদের টাকা পয়সা বেশি শুধুমাত্র তারাই পালন করে। আমার জন্ম গ্রামে, বেড়ে উঠাও গ্রামে। আমার পরিবারে আমি কখনও কাঊকে জন্মদিন পালন করতে দেখিনি, এমনকি আমি জানিওনা আমার বাবা-মা অথবা আমার বড়বোনের জন্মদিন কবে! তবে আমার ছোট বোন ও ছোটভাইয়ের'টা জানি, কারণ ওদের যখন জন্ম হয় তখন আমি একটু বড়। যাই হোক এসব কারণে আমার নিজের কখনও জানারও আগ্রহ ছিলনা আমার জন্মদিন আসলে কবে। তবে কলেজে উঠে একবার খুবি আগ্রহ হলো জানার আসল ডেটটা কবে। শেষে বাবাকে জিঙ্গাসা করে অনেক খুঁজে বাংলা দিনটা বের করলাম, সেই অনুযায়ী পুরাতন ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ইংরেজী দিনটাও খুঁজে বের করলাম। এটা বলা যাবেনা যে আমার বাবা, মার কোন দোষ আছে ডেটটা না মনে রাখার জন্য, কারণ তারা নিজেরাও কখনও জন্মদিন পালন করেনি। জানার পরেও যেহেতু জন্মদিন পালনের ট্রেন্ড ছিলনা তাই কখনো পালন করা হয়নি। আর বেশিরভাগ সময়ে আমার মনেই থাকতোনা আজ আমার জন্মদিন। স্কুল পার করে কলেজে গিয়ে অনেকের ধুমধাম সহকারে জন্মদিন পালন করা দেখলাম, এ প্রবাসেও এখনও দেখে যাচ্ছি। আমি যেহেতু নিজে পালন করিনা, তাই আমি খুব কমি এসব এটেন্ড করার চেষ্টা করি। স্কুলে থাকতে এক বান্ধবীর জন্মদিনে দাওয়াত গ্রহণ না করায় ও আমার সাথে কথা বলা ছেড়ে দিয়েছিলো, এটা অবশ্য মনে আছে। তাই কয়েকবার বন্ধুদের চাপাচাপিতে যেতে হয়েছে অনেক কয়বার, আমিও একবার কয়েকজন খুব কাছের বন্ধুকে খাইয়ে দিয়েছিলাম। কারণ একটাই খালি অন্যের খেয়ে বেড়ালে তো আর হবেনা, এই ধারণা থেকে। যাই হোক, পরে ২০০৯ সাল থেকে ফেসবুকের কল্যাণে আমার জন্মদিন সম্পর্কে ধারণা পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখন আমার মনে হয়না যে শুধু বড়লোকেরা জন্মদিন পালন করে বা করা উচিত। জন্মদিন আমার সম্পর্কে আমার বর্তমান ধারণা মোটামুটি এরকম...

যান্ত্রিক জীবনে আসলে আমাদের আসলে নিজেদের কখনও যাচাই করার সময় হয়না, আমরা কখনই নিজের অস্তিত্ব বা উপলব্ধি নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ পাইনা। জন্মদিন আসলে এ সুযোগটা করে দেয়। জন্মদিন মনে করিয়ে দেয় দুনিয়াতে আমার সময় আরও এক বছর কমে গেল, এখন যা করার তা খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে। সবারই কিছু না কিছু নিজস্ব লক্ষ্য থাকে জীবনের কাছে, সেগুলি পুরণ করার সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে।

সর্বোপরি জন্মদিন শত দুঃখ কষ্টের মাঝে জন্মদিন মানুষকে একটু খুশি হওয়ার সুযোগ করে দেয়। যাই হোক এটা ছিল জন্মদিন নিয়ে আমার অনুভুতি। আমার পরিবারে এখন পালন না হলেও আমার পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে অবশ্যই পালন করা হবে আশা করছি।
এই লেখাটা এই মূহুর্তে লেখার কারণ বছর ঘুরে আবারও সেই দিনটি ফিরে এসেছে আমার জীবনে, ভাবতেই অবাক লাগে, আজ থেকে আমি ছাব্বিশে পদার্পণ করছি। ছাব্বিশে পদার্পণ আমাকে আরও জানান দিচ্ছে যে আমি আজ পরিণত হয়েছি, বিশাল এক অতিকায় হাতির মানরুপে।

প্রতিটি মানুষের নিজের একান্তই কিছু চাওয়া থাকে জীবনের কাছে, আজও সেগুলো পুরণ করা হয়নি, এমনকি সেগুলোর ধারে কাছে যেতেও পারিনি। আরও মনে পড়ছে আসলে বিশালাকায় হাতিরা যতি ভালো কাজ করুক তাদের বিশালাকায় গড়নটাই সবার আগে চোখে পড়ে। তাই আমি যে কাজি করিনা, যেখানেই থাকিনা কেন আমি একটা বিশালাকায় হাতি। তাই আমাকে কেঊ কখনও ভালবাসবেওনা, আর সত্যি কথা বলতে আমি কখনওনা আমি কখনও ভালবাসা নিয়ে চিন্তাও করিনি। যদিও মাঝে মাঝে মনের ভেন্টিলেটর দিয়ে ঊকি দিয়েছিল, কিন্তু এত বড় শরীর কি তাতে টের পায়?
জ়ীবন নিয়ে চিন্তা মনে হয় আমার বয়সের অন্য কারো চেয়ে আমিই সবচেয়ে বেশি করি, আর তাই আমার কাছে আমার একাকীত্বকে মাঝে মাঝে সম্পদ মনে হয়। যদিও গত কয়েকমাসে নানাবিধ ব্যস্ততায় তা হারিয়ে ফেলতে বসেছিলাম, কিন্ত তা আবার ঠিক সময়ে ফিরে পেয়েছি।

ধন্যবাদ সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ তাআলাকে পঁচিশটা বছর বাঁচিয়ে রাখার জন্য, যদিও একসময় মনে হত আমি তা ডিসার্ভ করিনা, কিন্তু এখন মনে হয় আসলে আমার জন্যে না হলেও আমার পারিপার্শ্ব অর্থাৎ আমার বাবা মার জন্য আমাকে বাঁচার দরকার। তারা আমার উপর অনেক আশা নিয়ে বসে আছে। একদিন জীবনে অনেক বড় কিছু করবে। যাই হোক এই ছিল আমার জন্মদিনের কিছু আজে বাজে লেখা। কাঊকে বলতে না পেরে লিখেই ফেললাম, পড়ে থাক ওয়ার্ল্ড ফেসবুকের এক কোনায়। পঁচিশের দিনগুলি কাটাতে নিজের মত করে জীবনকে সাজ়িয়ে, জানিনা কতটুকু পারব, তবে একটু না একটূ চেষ্টাতো করব।

আমার একেকটা জন্মদিনে একেকটা পালক খসে পড়ছে। আমার যাওয়ার সময় হয়ে আসছে। কিন্তু আমার যে স্বপ্ন আছে-আর তা কি বসে থাকবে? নাকি তারাও জন্মদিনের সাথে সাথে চলে যাবে?

আমার জন্মদিনে আল্লাহর কাছে আমার চাওয়া আমার স্বপ্নগুলি যেনো পূরণ করতে পারি। আর আমার শুভানুধ্যায়ী যারা আছেন-তাদের বলছি, সত্যিই জন্ম তারিখটা এলে ইদানিং খুব ভয় পাই। মনে হয় এই বুঝি চলে যাওয়ার সময় হলো। এ কথা ভাবতেই জলে চোখ ভিজে যায়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:১৭

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: শুভ জন্মদিন। অনেক শুভেচ্ছা রইল।

১২ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:১৯

চাটগাইয়া জাবেদ বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ
দুঃখিত- খুবই দেরি করে ফেললাম!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.