নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি হৃদয়ে বাংলাদেশ, প্রবাসেও বাংলাদেশ!

বহু বছর ধরে প্রবাসে দিন কাটাচ্ছি

চাটগাইয়া জাবেদ

প্রবাসী মন!

চাটগাইয়া জাবেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চট্টগ্রামের ছেলে রাসেল দাশের বিরাট বিজয়...

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৩

বিশুদ্ধ পানির জন্য চারদিকে হাহাকার। সঙ্গে পানিবাহিত রোগের উৎপাত। কিন্তু এর থেকে মুক্তির কি কোনো পথ নেই? এক কিশোরকে সব সময় ভাবাত ব্যাপারটি। এই ভাবনা একসময় খুলে দিল স্বপ্নের বন্ধ দুয়ার। সেই থেকে শুরু। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে লেগে পড়লেন পানি নিয়ে গবেষণায়। অবশেষে সেই স্বপ্নের কাছাকাছি আসতে পেরেছেন। বিশ্বের বাঘা বাঘা গবেষককে টপকে অন্যতম সেরা রাসেলের গবেষণাপত্র।

এই গল্প চট্টগ্রামের ছেলে রাসেল দাশের। কার্বন ন্যানোটিউব মেমব্রেন (সূক্ষ্ম পর্দা) ব্যবহার করে বিদ্যুৎ ছাড়াই সমুদ্রের পানি বিশুদ্ধ করার পথ বাতলে দিয়ে তিনি তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

সম্প্রতি এই তরুণের গবেষণা পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বিশ্বের অন্যতম সেরা বৈজ্ঞানিক জার্নাল এলসেভিয়ার-এটলাস বিজ্ঞানের সব শাখার প্রায় পাঁচ লাখ গবেষণাপত্র থেকে বাছাই করে এলসেভিয়ার-এটলাস অ্যাওয়ার্ড ২০১৫ দিয়েছে ১২টি গবেষণাপত্রকে। এর মধ্যে রয়েছে রাসেল দাশের গবেষণাপত্রটিও। গত ১ জুলাই মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মালয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁর হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়।

রাসেল দাশের পানি বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৪ সালের মার্চে ডিসেলিনেশন জার্নালে। এই জার্নালটি পানি বিশুদ্ধকরণ বিষয়ে পৃথিবীর অন্যতম জার্নাল। আর তাঁর প্রকাশনাটি ডাউনলোড করেছেন পৃথিবীর নানা প্রান্তের হাজারো মানুষ।
পানি বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণার বিষয়টি কেন মাথায় এল—এমন প্রশ্নে রাসেল দাশ বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীতে এসেও ৭০০ মিলিয়ন মানুষ নিরাপদ পানির সুবিধা পায় না। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (এফএও) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, ২০২৫ সালের মধ্যেও ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন লোক পানির সুবিধা পাবে না। এটি মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। এ চিন্তা থেকেই আমার এই গবেষণা।’

রাসেলের বিরাট বিজয়ের একাংশরাসেল বলেন, ‘উন্নত দেশগুলো এখন পানি ব্যাপক পর্যায়ে পরিশোধনের জন্য রিভার্স অসমসিস ফিল্টার ব্যবহার করে, যা অনেক ব্যয়বহুল এবং প্রচুর বিদ্যুৎসহ নানা শক্তির প্রয়োজন পড়ে এতে। কিন্তু আমার প্রস্তাবিত ন্যানোটিউব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একদম কম খরচে কোনো রকম শক্তির ব্যবহার ছাড়াই সমুদ্রের পানি পরিশোধন করা যাবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পানি বিশুদ্ধ করে দরিদ্র দেশগুলো খুবই উপকৃত হবে। কেননা এতে তেমন কোনো খরচই পড়বে না। ইচ্ছেমতো বিশুদ্ধ করা যাবে পানি।’

উদ্ভাবনটা দেশের মাঠ পর্যায়ে নিয়ে আসার ইচ্ছে রাসেলের। তিনি বলেন, তথ্য ঘেঁটে জানতে পারলাম মানবসৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে বাংলাদেশে গত এক বছরে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৪৪ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঢাকায় পানিদূষণের কারণে ক্ষতি হয়েছে ৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা। অন্যদিকে দেশের ৭০০ নদী ও শাখানদী, ৯৮ হেক্টর জলাধার এবং ২৪ হাজার কিলোমিটারের অধিক নদীনালার একটি বিশাল অংশ শুকিয়ে ও ভরাট হয়ে গেছে। এই অবস্থায় আমাদের বিকল্প পানির উৎস খুঁজতে হবে। এ ক্ষেত্রে সমুদ্রের পানিই একমাত্র সমাধান। এটি পরিশোধন করা গেলে আমাদের পানির সমস্যা দূর হবে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তা খুব সহজেই সম্ভব। খরচও তেমন পড়বে না।’

রাসেল ২০০৯ ও ২০১১ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম (ইউএসটিসি) থেকে বায়োটেকনোলজিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন। পরে ২০১২ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি শিক্ষক হিসেবেও কর্মরত ছিলেন বেশ কিছুদিন। ২০১২ সালের নভেম্বরে ব্রাইট-স্পার্কস বৃত্তি নিয়ে মালয়েশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব মালয়ে পিএইচডি করতে যান। বর্তমানে পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে কর্মরত আছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে। পানি নিয়ে এই গবেষণায় রাসেল তত্ত্বাবধানে ছিলেন অধ্যাপক শরীফা বি আবদুল হামিদ ও মো. ইয়াকুব আলীর। ইতিমধ্যে ৩০টি প্রকাশনা, দুটি বই প্রকাশ ও তিনটি জার্নালের সম্পাদনা পরিষদে কাজ করেছেন রাসেল।


শুধু কি এলসেভিয়ার-এটলাস অ্যাওয়ার্ড? এর আগে রাসেলের অর্জনের ঝুলিতে আছে ব্রাইট স্পার্ক মালয়েশিয়া রিসার্চ গ্রান্ট, যুক্তরাষ্ট্রের এনআইএইচ-এর গ্রান্ট এবং সিভিলিয়ান রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন বৃত্তি। জাপান, সিঙ্গাপুর, ভারত ও থাইল্যান্ডে উপস্থাপন করেছেন গবেষণাপত্র।

হ্যাঁ! রাসেল আমাদের চট্টগ্রামেরই ছেলে। মিলন কান্তি দাশ ও ফুলু রানি দাশের কনিষ্ঠ সন্তানটির বেড়ে ওঠাও চট্টগ্রাম শহরে। গবেষণা কাজ শেষ করে আবারও ফিরতে চান ঘরে। রাসেল ২০৩০ সালের মধ্যে স্বপ্নের চট্টগ্রাম নগর বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখেন—যেখানে থাকবে না বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার; কমে আসবে দূষণ। তরুণদের সারথি করে এই কাজে নেমে পড়তে চান তিনি।

অভিনন্দন রাসেল দাদা,
আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা রইল...

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৩

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: পুরা দেশ নিয়ে অভিনন্দন দিলে ভাল হয়। চিটাগাং কি বাংলাদেশের বাইরে না উপরে ভাই

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৩

চাটগাইয়া জাবেদ বলেছেন: দুঃখিত! পোস্ট এডিট করে দিলাম। আপনাকে ধন্যবাদ

২| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৯

ছাসা ডোনার বলেছেন: সাবাস রাসেল , আপনি সত্যিই আমাদের দেশের গর্ব! আপনার এই সাফল্যে আপনাকে সহ আপনার মা বাবা ভাইবোন সবাইকে আমার আন্তরিক শ্রধ্যা সৃষ্টিকর্তা যেন আপনার সব আশা পুরন করেন এই দোয়া রইল।

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২১

চাটগাইয়া জাবেদ বলেছেন: সাবাস রাসেল, আল্লাহ্‌রতালা আপনার স্বপ্ন পূরণ করুক। আর আপনার স্বপ্ন পূরণের মধ্য দিয়ে আমাদের পানির সমস্যা সমাধান হোক।

আপনার আশা পুরন করেন এই দোয়া রইল।

৩| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৪

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: মন ভাল করা সুন্দর এক সুখবর দিলেন !
অভিনন্দন রাসেল দাশ , অভিনন্দন !

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৩

চাটগাইয়া জাবেদ বলেছেন: খবরটা শুনার পরো আমারও বেশ ভালো লেগেছে, তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করি। ধন্যবাদ লিটন ভাই

৪| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৪

মিথুন আহমেদ বলেছেন: বদ্দা অনরে হাজারো অভিনন্দন ... অনর খাছে এগ্গান দাবি, আরাঁর স্বর্গ চিটাগাং ও রে ভুলি ন যাইয়ুন। চিটাগাং শহরর উন্নতির লাই আরো গবেষণা গইজ্জুন।

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৫

চাটগাইয়া জাবেদ বলেছেন: বদ্দা হইয়্যি দে, গবেষণা হতম(শেষ) গরি এনে দেশত মিদ্দি আয়, দেশত পানির সমস্যে হই এনে হাম গরি।

মিথুন বদ্দা, দোয়া গইরজ্ঞু রাসেল দাদার লাই :)

৫| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২০

গোধুলী রঙ বলেছেন: না ভাই হবে না, এই রাসেল ভাইয়ের জন্য রাস্তায় ফুল নিয়ে কেউ দাঁড়াবে না। তাঁর এই প্রজেক্ট দেশে বাস্তবায়ন করতে পদে পদে বাধা পাবেন। তাও আশা রাখতে দোষ নেই তাই রাখি।

আমাদের সাতক্ষীরার একটু রিমোট এলাকায় পানির অতীব কষ্ট। তাই তিনি যেদিন দেশে ফিরবেন সেদিন যদি এয়ারপোর্টে একতোড়া ফুল নিয়ে তাঁর জন্য দাড়াতে পারতাম!!! কোন ভাবে কি সম্ভব?

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩০

চাটগাইয়া জাবেদ বলেছেন: ফুল নিয়ে দাঁড়ানোর কথা দূরে থাক, একটু এদিক-ওদিক হলে কিন্তু দেশেও আসতে দেবে না হয়তো!
দেশে যদি আসার আগে খবর পাই আপনাকে জানাব, তখন আপনি বিমান বন্দরে ফুল হাতে নিয়ে দাড়িয়ে থাকবেন, উনি বের হলেই গলায় পরিয়ে দিতে পারবেন। তাউ যদি না হয় তাহলে উনি দেশে আসলে আমি আপনাকে ওনার নাম্বার সংগ্রহ করে দিতে চেষ্টা করবো। তখন ওনার সাথে কথা বলিয়েন।

৬| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৭

গোধুলী রঙ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আমার ইমেইল
[email protected]

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:০৩

চাটগাইয়া জাবেদ বলেছেন: ইমেইল এড্রেস সংগ্রহে রাখলাম, তিনি যদি দেশে আসে, আর আমি যদি খবর পাই তাহলে অবশ্যই আপ্রান চেষ্টা করবো আপনাকে ওনার নাম্বার সংগ্রহ করে দিতে। আমি দেশে হলে আপনাকে সিওর বলতে পারতাম, কিন্তু আমিও একজন প্রবাসী বলে সিওর বলতে পাচ্ছি না। তবে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে :)

আপনাকেও ধন্যবাদ...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.