![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন মুসলিম এই সুন্দর পৃথিবীকে ভালবাসি ভালবাসি আমার মা বাবাকে আমি আমার জীবনকে ইসলামের বিধি বিধান মোতাবেক গড়তে চাই।চাই এই পৃথিবীতে মানুষের কল্যান করে বাচতে। আমার প্রোফাইল যে চেক করছেন আমি আপনাকে উদ্দেশ্য করে বলতেছি ভালো কাজ করুন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করুন। নির্ভুল জ্ঞানের উৎস কী?? ইসলামের মতে, একমাত্র আল্লাহর দেওয়া জ্ঞানই নির্ভুল ও শাশ্বত। বিশুদ্ধ জ্ঞান চিরন্তন সত্য। বিশুদ্ধ জ্ঞান একসময় আবার অশুদ্ধ হয়ে যায় না। তাই আল্লাহর দেওয়া নির্ভুল জ্ঞানের ভিত্তিতে মানব জীবন পরিচালিত হলে কোন সময়ই বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে না। মানুষের মেধা, বুদ্ধি ও প্রজ্ঞা যদি আল্লাহর দেওয়া জ্ঞানকে অবলম্বন করে, তাহলে তারা যত জ্ঞান আহরণ করবে সবই বিশুদ্ধ ও নির্ভুল হবে। আল্লাহর দেওয়া জ্ঞানকে বাদ দিয়ে মানুষ যতই জ্ঞান চর্চা করবে তাতে নির্ভুল জ্ঞানের নিশ্চয়তা নেই। পরিবার গঠন, সমাজ গঠন, রাষ্ট্র ব্যবস্থা, সরকার পরিচালনা, অর্থনৈতিক বিধান, শিক্ষা ব্যবস্থা, জনগণের পারস্পরিক সম্পর্ক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইত্যাদি অগণিত ব্যাপার রয়েছে, যেখানে নির্ভুল জ্ঞান না থাকার কারণে ভুল জ্ঞানের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। ভুল জ্ঞান প্রয়োগ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে বাস্তবে সমস্যা দেখা দেয়। তখন নতু করে জ্ঞান লাভ হয়। সে জ্ঞান প্রয়োগ করার পর আবার সমস্যা দেখা দিলে নতুন জ্ঞানের ভিত্তিতে আবার সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এভাবে মানবজাতি ভুল সংশোধন করে করেই জীবনের ঘানি টেনে চলেছে। এ বাস্তব পরিস্থিতির ভিত্তিতে জার্মান দার্শনিক ফ্রেডারিক হেগেল Dialectism (দ্বন্দ্ববাদ) নামক থিউরিটি পেশ করেন, যা পাশ্চাত্য সভ্যতার প্রধান ভিত্তি হিসেবে স্বীকৃত। সহজ ভাষায় তার থিউরিটি হল এ রকম--- মানুষ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চিন্তা-গবেষণা, সাধনা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কোন জ্ঞানকে সঠিক হিসাবে গ্রহণ করে। এই জ্ঞানটি তখন thesis হিসাবে গণ্য হয়। যখন এই thesis বাস্তবে প্রয়োগ করা হয় তখন অভিজ্ঞতায় কতগুলো ভুল ধরা পড়ে। এ ভুলগুলোকে তিনি Anti-thesis নাম দিয়েছেন। thesis and Anti-thesis এর দ্বন্দ্বে যা ভুল বলে প্রমাণিত তা বর্জন করে নতুন জ্ঞান সংযোজন করতে হয়। thesis এর মধ্যে যা নির্ভুল তা বহাল রেখে এবং যা ভুল তা পরিবর্তন করে নতুন জ্ঞানের সমন্বয়ে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় তার নাম তিনি দিয়েছেন Synthesis. এই Synthesis তখন নতুন thesis এর মর্যাদা পেল। যখন এ নতুন থিথিসটি বাস্তবে প্রয়োগ করা হয় তখন আবার কতগুলো ভুল ধরা পড়তে পারে। সে ভুলগুলো আবার নতুন এন্টি-থিথিস হিসেবে গণ্য হয়। thesis ও Anti-thesis এর এ দ্বন্দ্বের পরিনামে আবার সিনথিথিসের জন্ম নেয়। হেগেলের মেত, এ দ্বান্দ্বিক পদ্ধতিতেই ভুল সংশোধন করে করে মানব সভ্যতা উন্নতির পথে এগিয়ে চলছে। পাশ্চাত্য সভ্যতা এ মতবাদকেই সঠিক বলে বিশ্বাস করে। এ থিউরি পরিনামে এমন এক বিশ্বাস জন্ম নেয়, যা অত্যন্ত মারাত্মক ও বিভ্রান্তিকর। আর তা হলো, পুরাতনকে পরিত্যাজ্য বলে বিশ্বাস করা। যেহেতু এন্টি-থিথিস হিসেবে যা ভুল হিসেবে ধরা পড়লো তা ত্যাগ করে এগুতে হচ্ছে, সেহেতু যা পুরাতন হিসেবে পরিত্যাগ করা হয় তা চিরকালই পরিত্যাজ্য। এ থিউরি অনুযায়ী যা পুরানো তাকে কিছুতেই গ্রহণ করা চলে না। মানব সভ্যতা নতুনকে গ্রহণ করে করেই এগিয়ে চলছে, পুরানো চিন্তা, মত ও পথ কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ থিউরি যাদের মগজ দখল করে নিয়েছে তারা কুরআন সম্পর্কে এ মন্তব্য করতে বাধ্য যে, ১৪ শত বছরের পুরানো জ্ঞান আধুনিক যুগে অচল। যা অতীত কালের তা এযুগে চলতে পারে না। এ সিদ্ধান্ত কত মারাত্মক। প্রাচীন চিন্তাধারা, জ্ঞান, মত ও পথ সবই বর্জনীয় বলে বিশ্বাস জন্মিলে যা নতুন তা যত ভ্রান্তই হোক, তা গ্রহণীয় বলেই বিবেচিত হতে বাধ্য । অথচ এমন থিউরি যুক্তির কষ্টিপাথরে এক মুহূর্তেও টিকে না। ‘সত্য কথা বলা ভালো’ ‘মিথ্যা বলা মন্দ’- এ চিন্তাটি কত প্রাচীন! প্রাচীন বলেই কি এ মহাসত্য পরিত্যাজ্য বলে কেউ দাবি করতে সাহস করবে? সকল মানবীয় গুলাবলী জ্ঞানের ময়দানে প্রাচীন। মানুষের নৈতিক মূল্যবোধ সবই প্রাচীন। হয়তো এ কারণেই আধুনিকত্ব রোগে আক্রান্ত যারা তাদের নিকট নৈতিক মূল্যবোধের কোন মূল্যই নেই।
পড়া শুরু করার আগে এই নোটটি পড়ে নিন!
আমি গণতন্ত্রকে হালাল করার জন্য নোট গুলো লিখছি না... বরং এটা বুঝাতে চাচ্ছি যে, গণতন্ত্র কোন ব্যক্তির উদ্ভাবিত বিশেষ নীতি নয়। এর ১০০ ভাগ সঠিক কোন সংজ্ঞা নেই, একেক ব্যক্তি একেক ভাবে গণতন্ত্রের সংজ্ঞাদিয়েছেন। আর বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, দেশ বিভিন্ন ধরণের গণতন্ত্র অনুসরণ করে। এথেন্সের প্রাচীন গণতন্ত্র যেভাবে দাস আর মহিলাদের ভোট দেয়ার ক্ষমতা দেয় নি তেমনি ইসলাম ও সকলকে-সব বিষয়ে ভোট দেয়ার অধিকার দেয় নি। আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা গণতন্ত্রের আনেক রূপের মধ্যে ইসলামী রূপটা যোগ করতে পারিনি। তাহলে বিশ্ববাসী জানতে পারত ইসলামে গণতন্ত্রের শিক্ষা রয়েছে আর তা অন্য সকল রূপ থেকে শ্রেষ্ট! ইসলামে নেতা নির্বাচন পদ্ধতিঃ
প্রথম চার খলিফা নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা থেকে আমরা ইসলামের নেতা নির্বাচন পদ্ধতি জানতে পারি।
হযরত আবু বকর রা. মহানবী স. এর ওফাতের পর দাফন সম্পন্ন হওয়ার আগে প্রথম খলিফা হিসেবে নির্বাচিত হন। রাসুল স. এর মৃত্যুর পর মদিনার জনগণ, বিশেষ করে আনসারগন সাকীফা বনী সায়েদা নামক স্থানে সমবেত হয়। তারা প্রথমে আনসারদের মধ্য থেকে খলীফা নির্বাচিত করতে চেয়েছিল, কিন্তু হযরত উমার রা. আবু বকর রা. এর নাম ঘোষণা করলে প্রায় সকলে সম্মতি প্রদান করে তার হাতে বাইয়াত নেন।
প্রথম খলীফা হযরত আবু বকর রা. যখন বুজতে পারেন তার আন্তিম সময় ঘনিয়ে আসছে তখন মৃত্যুর পূর্বেই পরবর্তী খলীফা নির্বাচন করে যাওয়াই কল্যাণকর মনে করেন। জনগণের কাছে হযরত উমর রা. এর মর্যাদা সম্পর্কে ধারণা খুব উঁচু হওয়া সত্ত্বেও হযরত আবু বকর রা. মদিনার উচ্চপর্যায়ের সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করে হযরত উমর রা. কে খলীফা ঘোষণা করেন।
হযরত উমর রা. যখন ছুরিকাহত হয়ে মৃত্যু শয্যায় তখন তার কাছে পরবর্তী খলীফা নির্বাচনের দাবী জানানো হয়। তিনি সরাসরি খলিফা নির্বাচন না করে ছয় জন বিশিষ্ট সাহাবীদের একটি বোর্ড গঠন করে তাদের মধ্য থেকে একজনকে নির্বাচিত করার আদেশ দেন। বোর্ডের সকলেই আশারায়ে মুবাশশারার অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। বোর্ড হযরত উসমান রা. কে খলীফা নির্বাচিত করে। পরে জনগণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খলীফার কাছে বাইয়াত নেন।
তৃতীয় খলীফা হযরত উসমান রা. শহীদ হওয়ার পর মদিনার মুসলমানগন হযরত তালহা, যুবায়ের ও আলী রা. কে খিলাফতের দায়িত্ব নেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। তারা প্রত্যেকেই অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে অস্বীকৃতি জানান। পরে মুসলমানগণ সম্মিলিতভাবে হযরত আলী রা. কে খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করতে বাধ্য করেন। হযরত আলী রা. শর্ত দেন যে তার বাইয়াত গোপনে হতে পারবে না। ফলে মদিনার সকল মুসলমানদের উপস্থিতিতে মসজিদে নববীতে সাধারণ সভা হয়, সেখানে ষোল অথবা সতের জন ছাড়া বাকি সকলে হযরত আলী রা. এর হাতে বাইয়াত নেন।
আরও বিস্তারিত জানতে পড়ুন আসহাবে রাসুলের জীবনকথা বইটি। ইসলামের গণতান্ত্রিক শিক্ষাঃ
ওহে জনতা! শুনে নাও, তোমাদের প্রতিপালক একজন। কোন অনারবের ওপর আরবের এবং কোন আরবের ওপর অনারবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই। কোন কালো মানুষের উপর সাদা মানুষের এবং সাদা মানুষের উপর কালো মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব নেই। শ্রেষ্ঠত্ব কেবল খোদাভীরুতা তথা সততার ভিত্তিতে নির্ণীত হবে। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সবচেয়ে খোদাভীরু, সেই আল্লাহ্র কাছে সবচেয়ে সম্মানের পাত্র। [বিদায় হজ্বের ভাষণে মুহাম্মাদ (স.), তাফসীরে রুহুল মায়ানী, ২৬তম খন্ড, পৃঃ১৪৮]
১. মুসলিম সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তি আল্লাহ্র খলীফা এবং খিলাফতের সমান অংশীদার। সমাজের সকল ব্যক্তি সমান মর্যাদা সম্পন্ন হবে, শ্রেষ্ঠত্ব যে টুকুই হবে সেটা তার ব্যক্তিগত যোগ্যতা ও সততার ভিত্তিতে হবে।
২. সমাজে কোন ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের জন্ম, সামাজিক মর্যাদা অথবা পেশার দিক দিয়ে এমন কোন বাধা বিপত্তি থাকবে না যা তাদের ব্যক্তিগত যোগ্যতা ও প্রতিভার বিকাশে এবং তার ব্যক্তিত্বের উৎকর্ষ সাধনে কোন প্রতিবন্ধক হয়ে দেখা দিতে পারে। মানুষ নিজের ক্ষমতা ও যোগ্যতার বলে যতদূর সম্মুখে অগ্রসর হতে সক্ষম ততদূর যেন অগ্রসর হতে পারে, সেজন্য একদিকে যেমন তার নিজের পথ খোলা থাকা চাই তেমনি অন্য কারো অগ্রসরতা যেন তার দ্বারা বাধাগ্রস্থ না হয় তার নিশ্চয়তা থাকা প্রয়োজন। ইসলামের ইতিহাসে বহু ক্রীতদাস ও তাদের সন্তানেরা সেনাপতি ও প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিযুক্ত হয়েছিলেন, বহু চামার জুতো সেলাই করতে করতে সহসা ইমামের মসনদে আসীন হয়েছিলেন, বহু জোলা মুফতি, কাজী ও ফকীহ হয়েছিলেন।
৩. ইসলামী সমাজে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী একনায়ক সুলভ শাসক হয়ে জেঁকে বসার কোন অবকাশ নেই। কেননা এখানে প্রত্যেকেই খলিফা। ইসলামী রাষ্ট্রে যাকে খলীফা করা হয় তার প্রকৃত অবস্থা হচ্ছে, সকল মুসলমান অথবা পারিভাষিক অর্থে বলতে গেলে সকল খলীফা স্বেচ্ছায় নিজ নিজ খিলাফতকে প্রশাসনিক উদ্দেশ্যে তার হাতে কেন্দ্রীভূত করে দেয়। সে একদিকে আল্লাহ্র সামনে অপরদিকে যারা তার কাছে নিজ নিজ খিলাফতকে অর্পণ করেছে সেই সমস্ত খলীফার সামনে জবাবদিহী করতে বাধ্য।
৪. সমাজের প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম নরনারীর ভোটাধিকার থাকবে, কারণ সকলেই খিলাফতের অধিকারী। আল্লাহ্ খেলাফতকে কোন বিশেষ পর্যায়ের যোগ্যতা বা ধনসম্পদের শর্তযুক্ত করেননি, শুধুমাত্র ঈমান ও সৎকর্মশীলতার শর্ত আরোপ করেছেন। একদিকে ইসলাম এরূপ সর্বোচ্চ ও পূর্ণাঙ্গ পর্যায়ের গণতন্ত্র কয়েম করেছে, অপরদিকে সামষ্টিক জীবনের সাথে সংঘর্ষশীল হয় এমন ব্যক্তি স্বাধীনতার বিকাশ রোধ করেছে। এখানে ব্যক্তি ও সমাজের সম্পর্ক এমনভাবে প্রতিষ্টা করা হয়েছে যাতে কম্যুনিজম ও ফ্যাসিবাদের সামষ্টিক সমাজ কাঠামোর ন্যায় সমাজের মধ্যে ব্যক্তি স্বাধীনতা হারিয়ে না যায়, আবার পাশ্চাত্য গণতন্ত্রের ন্যায় ব্যক্তি স্বাধীনতা এতো সীমাহীন না হয় যে, সমাজের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়।
আরও দেখুনঃ
ইসলামী রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তা
ইসলামী রাষ্ট্র
ইসলাম ও গণতন্ত্র।
©somewhere in net ltd.