| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জ্যাক স্মিথ
লিখতে না পড়তে ভালো লাগে, বলতে না শুনতে ভালোবাসি, সেমি-ইন্ট্রোভার্ট।
কেউ একজন জানতে চেয়েছেন ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে কিভাবে মাসে ১/২ লাখ টাকা ইনকাম করা যায়? বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করে দেখলাম বাংলাদেশে ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে অবশ্যই মাসে ২/৩ লাখ টাকা প্রফিট করা সম্ভব কিন্তু এ জন্য থাকতে হবে ভেজাল মিশ্রণ, চুরি, এবং ট্যাক্স-ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার অভিজ্ঞতা সাথে মিথ্যার ফুলঝুড়ি ফোঁটানোর দক্ষতা তো থাকতে হবেই। উক্ত অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা যদি আপনার থাকে তাহলে আপনাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হবে না, তরতর করে আপনার বিজনেস গ্রো করবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এখানেও ঝুঁকি রয়েছে, সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হচ্ছে প্রতিপক্ষ্যের ঝুঁকি, আপনার প্রতিদন্ধী যদি অনেক শক্তিশালী হয় তাহলে তারা না না কারিকুলাম করে আপনার ব্যবসা ধ্বসিয়ে দিতে পারে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে এখানেও ঝুঁকি রয়েছে, আসলে ব্যবসা মানেই ঝুঁকি তা আপনি যে পদ্ধতিতেই ব্যবসা করুন না কেন।
বিবিধ বিষয় গবেষণা করার পর আমি এমন একটি ব্যবসার সন্ধান পেয়েছি যেখানে মূলধণ হারোনোর ঝুঁকি নেই বললেই চলে, প্রকৃত পক্ষে এই ব্যবসাটি করার জন্য খুব বেশী মূলধনেরও প্রয়োজন পরে না তাই মূলধন হারোনোর চিন্তা নেই।
নাহ আর বেশী ভণিতা না করে ব্যবসাটির নাম বলেই দেই তাহলে, ব্যবসাটির নাম হচ্ছে 'রাজনীতি' আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে যা অত্যন্ত ফলপ্রসূ একটি ব্যবসা, আপনাকে জাস্ট শুরু করতে হবে ফলাফল নিয়ে আপনার ভাবতেও হবে না। ব্যবসাটি শুরু করার কয়েক বছরের মধ্যেই আপনি নিজেকে মিলিয়নারদের কাতারে দেখিতে পাইবেন এ ব্যাপারে আমি শতভাগ নিশ্চিত। বিষয়টির লাইভ উদাহারণ দেখতে আমাদের অকাল প্রয়াত হাদি ভাইয়ের এই বক্তব্যটি একবার শুনুন তাহলে রাজনীতি এবং আলাদিনের চেরাগের সম্পর্ক বুঝিতে পারিবেন। বিপুল সম্ভবনাময় অথচ অকাল প্রয়াত এই উসমান হাদি সম্পর্কে দুটি কথা না বললেই নয়- সদ্য প্রয়াত এই উসমান হাদি ছিলেন আমাদের দেশের প্রখর মেধাবী ও অগাধ বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন একজন উদিয়মান রাজনীতিবীদ, সত্য বলার অপরাধে তাকে আজ সিস্টেম করে সরিয়ে দেওয়া হলো, যা অত্যন্ত দুঃখজনক!
যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে এই বর্বর হত্যাকান্ডের মূল হোতাদের গ্রেফতার এবং বিচারের দাবি জানাচ্ছি। দেশে এখন চলছে হাদির লাশ নিয়ে রাজনীতি- যা সম্পুর্ণ ভিন্ন প্রসঙ্গ, এই পোস্টে এসব নিয়ে আলোচনা অবান্তর বই কিছু না।
সতর্কীকরণ- "রাজনীতির সাথে লাশের একটি সম্পর্ক রয়েছে" এই বিষয়টা একটু নোট রাখুন যা আমি পরে ক্লিয়ার করছি।
যা হোক এবার মূল প্রসঙ্গে ফিরে যাই- বাংলাদেশে মানুষ ব্যবসা শুরু করতে ভয় পায় কেন?
কারণ ব্যবসায়—পুঁজি লাগে, হিসাব রাখতে হয়, লোকসান হলে ঘুম হারাম হয়, আর সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার—জবাবদিহি আছে। কিন্তু এক ধরনের ব্যবসা আছে, যেখানে এসবের কিছুই নেই। শূন্য পুঁজি, শূন্য ঝুঁকি আর লাভের সীমা অসীম। ব্যবসাটার নাম—রাজনীতি।
রাজনীতি- এটা কোনো আদর্শ নয়, কোনো সেবা নয়, নয় কোন আত্মত্যাগ। বাংলাদেশে রাজনীতি হলো একটি প্রমাণিত বিজনেস মডেল যেটা বহু মানুষ ট্রাই করেছে, এবং আশ্চর্যজনকভাবে বেশিরভাগই সফল। স্টার্টআপ ক্যাপিটাল: ০ টাকা। হ্যাঁ, এক টাকাও না। না ব্যাংক লোন, না ইনভেস্টর, না ভিসি ফান্ডিং।
শুধু লাগবে :
-লজ্জা কম থাকা।
-স্মৃতি দুর্বল হওয়া প্রয়োজনমতো মত পাল্টানোর ক্ষমতা।
-ননস্টপ বুলশিট বকে যাওয়ার ক্ষমতা।
-আর থাকতে হবে পাবলিক প্লেসে প্রচুর ভালো ভালো কথার ফুলঝুড়ি ফোঁটানোর ক্ষমতা, ব্যক্তিগত লাইফে আপনি যত বড় জঘণ্য এবং ইতর টাইপের ব্যক্তি'ই হোন না কেন দ্যাট ডাজন্ট ম্যাটার!
মাত্র এই পাঁচটি গুন থাকলে আপনি বাংলাদেশে রাজনীতি নামক ব্যবসা করার জন্য রেডি।
শুরুর দিকে আপনি থাকবেন “ভাইয়ের সাথে”। ভাই মানে—যিনি ক্ষমতার কাছাকাছি। আপনি চা ধরবেন, গেট পাহারা দেবেন, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেবেন। এইটাই আপনার Seed Round।
ফ্রি শ্রম = ফ্রি ট্রেনিং:
প্রথম কয়েক বছর আপনি কিছুই পাবেন না, কিন্তু শিখবেন অনেক কিছু— কখন কী বলতে হয়, কখন চুপ থাকলে বাঁচা যায়, কখন হাততালি দিলে ক্যামেরায় আসা যায় ইত্যাদি। এই ট্রেনিং কোনো বিজনেস স্কুলে নেই। এটা শেখায় কীভাবে মানুষ না হয়ে টিকে থাকতে হয়।
প্রমোশন: আদর্শ থেকে সুযোগ:
একসময় আপনি লক্ষ্য করবেন— আগে যেগুলোকে অন্যায় বলতেন, সেগুলো এখন “পরিস্থিতির কারণে” ঠিক হয়ে গেছে, এটাই গ্রোথ। এখন আপনি কমিটিতে ঢুকবেন, নামের আগে-পরে পদবি আসবে। পুলিশ ফোন ধরবে, অফিসের দরজা খুলবে, মানুষ ভয় পাবে, এই জায়গা থেকেই রাজনীতি ব্যবসা হয়ে ওঠে।
ইনকাম স্ট্রিম:
এখানে আয়ের অনেক পথ — ঠিকাদারি, দখল, চাঁদাবজি সুপারিশ, পারমিশন, “ভাইয়ের লোক”পরিচয় ইত্যাদি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে— এগুলোকে কেউ ঘুষ বলবে না, বলবে ম্যানেজমেন্ট। আর -ট্যাক্স, ভ্যাট, অডিট, আয়কর? ওগুলো তো সাধারণ মানুষের জন্য।
সবচেয়ে বড় সেফটি নেট:
এই ব্যবসায় ব্যর্থ হলেও বিপদ নেই, আপনি যদি কিছু করতে না পারেন—বলবেন, “দল ক্ষমতায় নেই” দল ক্ষমতায় থাকলে বলবেন “ত্যাগী নেতার মুল্যায়ন নেই” আর যদি সব পারেন তাহলে বলবেন- “জনগণ আমাকে ভালোবাসে, জনগণ আমার সাথেই আছে”। জনগণ তখন ফেসবুকে কমেন্ট লিখবে, বাস্তবে কিছুই বদলাবে না।
নৈতিকতা: লাক্সারি আইটেম:
-নৈতিকতা এই ব্যবসায় বাধ্যতামূলক নয়।
-এটা অনেকটা গাড়ির সানরুফের মতো, থাকলেও চলে, না থাকলেও সমস্যা নেই; বরং না থাকলে গাড়ি দ্রুত চলে।
কোটিপতি হওয়ার রহস্য:
আপনি কখনো খেয়াল করেছেন— যারা রাজনীতিতে ঢোকার আগে “সংগ্রামী কর্মী” ছিল, তারা কয়েক বছর পর কীভাবে “সম্মানিত ব্যবসায়ী” হয়ে যায়? কারণ এই ব্যবসায় ইনপুট কম, আউটপুট বেশি, প্রশ্ন করার মানুষ কম, বিচার করার নেই সময়। একবার এই পেশায় ঢুকলে, আপনি আর সিস্টেমের বাইরে নাআপনিই সিস্টেম।
যারা রাজনীতিকে সেবা ভেবেছিল—তারা হয় ক্লান্ত, নয় হারিয়ে গেছে। আর যারা এটাকে ব্যবসা ভেবেছে—তারা আজ সফল উদ্যোক্তা। তাই আপনি যদি সত্যিই - অল্প পুঁজিতে,অল্প পরিশ্রমে, আর সর্বোচ্চ লাভে আগ্রহী হন তাহলে- স্টার্টআপ নয়, ই-কমার্স নয়, স্টক/ ক্রিপ্টো নয়, নয় বিদেশে থালা-বাসন ঘষাঘষি, রাজনীতিই হতে পারে আপনার জন্য একটি পারফেক্ট বিজনেস।
রাজনীতি ব্যবসার আরও কিছু সুবিধা সমূহ:
-বাংলাদেশে একমাত্র ব্যবসা যেখানে পুঁজি লাগে না, হিসাব রাখতে হয় না,লোকসান হলেও দায় নেই— নাম তার রাজনীতি।
-রাজনীতিতে ঢোকার আগে সবাই আদর্শবাদী, দুই বছর পর আদর্শের জায়গায় ঠিকানা বদলায় ব্যাংক ব্যালান্স।
-ব্যবসা করলে ব্যর্থ হলে "দেউলিয়া" আর রাজনীতিতে ব্যর্থ হলে— "দল ক্ষমতায় নেই" "সময়টা ভালো ছিল না", সামনে অবারিত সুযোগ।
-রাজনীতি মোটেও কোনো সেবা নয়, এটা সবচেয়ে প্রফিটেবল পার্ট-টাইম বিজনেস।
-রাজনীতিতে নৈতিকতা বাধ্যতামূলক নয়; থাকলে ভালো, না থাকলে লাভ বেশি।
-এখানে ভোট আসে জনগণ থেকে, কিন্তু লাভ যায় নির্বাচিতদের পকেটে।
-যে রাজনীতিকে সেবা ভাবে, সে হারায় আর যে ব্যবসা ভাবে সে গাড়ি বদলায়।
-রাজনীতি একমাত্র পেশা যেখানে মিথ্যা বললে প্রেস কনফারেন্স হয়।
বাই দ্যা ওয়ে- পোস্টের শুরুতে যে রাজনীতির সাথে লাশের সম্পর্কের কথা বলছিলাম তার কারণ হচ্ছে- আমাদের দক্ষিণ এশিয়ায় রাজনীতিবিদদের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি কেউ দিতে পারে না, তাছাড়া নিউটন সাহেব বলিয়াছেন- Every action has an equal and oposit reaction বিষয়টা ফিজিক্সের একটি নীতি হলেও জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। রাজনীতি নামক এই ব্যবসায় গাড়ি, বাড়ি, ধন দৌলত, জনপ্রীয়তা সবকিছু পাওয়ার হাতছানি থাকলেও- কবে, কখন, কোথায়, কোন ড্রেনে, রাস্তায় আপনার লাশ পড়ে থাকবে তার কোন হদিস নেই সেক্ষেত্রে আপনার অর্জিত সমস্ত ধন দৌলত অর্থহীন পরে থাকবে বা অন্যের ভোগের পণ্য হয়ে যাবে তাই বিষয়টি একটু খেয়াল কইরা।
নোট: লেখাটি নির্দিষ্ট কোন দল বা ব্যক্তির উদ্দেশ্যে নয়।
২|
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৪
সাইবার পথিকৃৎ বলেছেন: এইসব না করে কাজের কাজ করেন। নিজের উপকার করেন, দেশের উপকার করেন, মানব জাতিরউপকার করেন। হিউম্যানয়েড বানানোর চেষ্টা করে দেখুন, না পারলে আমদানির চেষ্টা করেন।সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে কিছু একটা করুন।
যা চর্চা করবেন তাই হবে। ময়লা নিয়ে ঘাটাঘাটি করলে দুর্গন্ধই ছড়ায়। তাই দুর্গন্ধ আর বাড়ায়েন না।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:০৪
কিরকুট বলেছেন: চলেন শুরু করি। কোটিপতির লিস্টে নাম তোলার আমার ছুডু বেলার খায়েশ।