নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

asadeng

বুঝতে চাই

জগলুলআসাদ

i want to share

জগলুলআসাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশে ইংরেজি বিভাগ গুলার কাজটা কি

১৪ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:০১

সিলেবাস তৈরির কাজটি খুব নির্দোষ ও অরাজনৈতিক কাজ নয়।আমরা কী শিক্ষা দিতে চাই তার সাথে সম্পর্ক আছে আমাদের ‘জাতি,রাষ্ট্র ও নাগরিক’ কল্পনা-বাসনার।শিক্ষা,সিলেবাস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ideological state apparatus বা মতাদর্শ তৈরির কারখানা।আমাদের মনজগত তৈরির পেছনে এদের ভুমিকা প্রবল।

ইংরেজির ছাত্র ও ‘মাস্টারি’র সুবাদে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের সিলেবাস নিয়া কিছু জানাশুনা আমার হইছে।এ বস্তু নিয়া আমার আক্ষেপের অন্ত নাই।জগতের সবকিছুকে প্রয়োজনীয় ঠাওরানোর প্রয়োজন নাই।অনার্স লেভেলের ইংরেজি সাহিত্যের সিলেবাসটুকুর বেশীরভাগই ‘আমাদের জন্য অপ্রয়োজনীয়।এই সিলেবাসে পইড়া ইংরেজিতে পড়ছি বইলা গরিমা করন ছাড়া আজকাল আর কিছু হয়না।নগুগি ওয়া থিয়োঙ্গো তো ইংরেজি বিভাগ উঠাইয়া দেয়ার প্রস্তাব করছিলেন (On the abolition of the English Department)আমি এতদুর কইতে পারবোনা,রুটি-রুজির প্রশ্ন তো।তবে অনার্স লেভেলের ‘ইংরেজি সাহিত্যে’র সিলেবাসের ব্যাপক সংস্কারের পক্ষে আমি। ৪ বছরের ইংরেজি অনার্স কোর্স নানা আজিনিস কুজিনিস দিয়া ভরা।(দেখুন থার্ড ইয়ারের ঢাউস গাজ্বলা সিলেবাস)।তার উপর মাষ্টারেরা কিছু বুইঝা উঠার আগেই দুইদিন পর পর সিলেবাস চেইঞ্জ করে মহান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।নম্বর বণ্টন,পরীক্ষা পদ্ধতি ও এই ব্যপারে শিক্ষকদের ক্ষমতায়নের নানামুখি বাহারি পরীক্ষা-নীরিক্ষার জাতীয়বিশ্ববিদ্যালয়ী প্রতিভায় চোখ অন্ধ হইয়া যাইবার যোগার।বর্তমান সিলেবাস না ইংরেজদের বা ইংরেজি সাহিত্যের উপকার করতে পারে,না আমাদের বা বাংলাসাহিত্যের।তবে ভুয়া আত্নমর্যাদাবোধ তৈরি করতে পারে। ইংরেজি বিভাগগুলো ‘ইংরেজি সাহিত্য’ না পড়াইয়া ‘ইংরেজিতে সাহিত্য’ পড়ানোর ব্যবস্থা করতে পারে।যেমন, ইংরেজি কবিতার সিলেবাস তৈরির সময় বাংলাকবিতাও পাশাপাশি রাখা উচিত,তুলনামুলক বিশ্লেষণের জন্য।মাঝে মাঝে মনে হয়, এমন ব্যবস্থা হইলে ভাল হইত যে, ইংরেজি সাহিত্য বা ইংরেজিতে অনুদিত সাহিত্য নিয়া শিক্ষার্থীরা বাংলায় উত্তর লিখবো আর বাংলা সাহিত্য নিয়া লিখব ইংরেজিতে। এতে ক্রিটিকাল ফ্যাকাল্টি ডেভেলপ করতে পারত দুই ভাষাতেই। একই সাথে বাংলা উপন্যাস ও ইংরেজি সহ অন্যান্য ভাষার কিছু উপন্যাসকে পাশাপাশি পড়ানোর ব্যবস্থাও তো করা যাইতে পারে/পারত।তাছাড়া অনুবাদ নিয়া একটা কোর্স থাকা উচিত। যেখানে বাংলাসাহিত্যের কিছু নির্বাচিত অংশরে ইংরেজিতে,আর ইংরেজির কিছু অংশকে বাংলায় রুপান্তর করতে হবে,সাথে অনুবাদের কিছু তত্ত্বও পড়ান দরকার।তাছাড়া বিভিন্ন লিটারেরি টেক্সটের ফিল্ম এডাপ্টেশান দেখানোর পাশাপাশি দেশি ও বিদেশি নানা মুভিকে টেক্সট হিসেবে ‘পাঠ’ করা ও করানো যেতে পারে,প্রাতিষ্ঠানিকভাবে।

বাংলাদেশের ইংরেজি বিভাগগুলানে কেউ পিএইচডি করতে গেলে তাকে থিসিস ইংরেজিতে লিখতে হবে এটাতো খুবই স্বাভাবিক,কিন্তু মজাটা হইল,বাংলাসাহিত্যের সাথে বা এতদ অঞ্চলের কোন আর্ট ফর্মের বা ইতিহাসের সাথে কোন তুলনামুলক আলোচনা করতে চাইলে একেক জন মুখ ভারী কইরা ফেলেন,বা রাজভাষা বা সাহিত্যের সাথে কি একটা অন্যায় হইবার অনাগত সম্ভাবনায় তারা আঁতকে উঠেন।(যদিও কিছু ব্যতিক্রম তো আছেই)।আমাদের এই কলনিয়াল মাইন্ডসেট কবে চেঞ্জ হবে?

বাংলাদেশের ইংরেজিবিভাগ গুলোকে বাংলাদেশেরই ইংরেজিবিভাগ হইতে হবে।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ইংরেজি বিভাগ গুলোকে কি তাদের জাতীয় ইতিহাস,সংস্কৃতি ও সাহিত্যের পর্যালোচনা,নির্মাণ ও পুননিরমানের এর চাহিদাকে মাথায় রেখে সিলেবাস প্রণয়ন করতে হবেনা? ‘দিব আর নিব ,মিলাব মিলিব’ এই নীতির বহিঃপ্রকাশ ইংরেজি বিভাগের সিলেবাসে কেন দেখবনা?বাংলাদেশের ইংরেজি বিভাগের সিলেবাস নিয়া(পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কেই খাটে কথাটা)পাবলিকলি অনেক আলোচনা দরকার।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৫০

এএইচ ছোটন বলেছেন: ভাই, আপনি বলেছেন অতি বাস্তব কথা। কিন্তু ইংরেজি সাহিত্য পড়াতে গিয়ে কি আপনার মধ্যে বাংলা ভাষাগত দক্ষতা উবে গেল?

২| ১৪ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:১০

রাজিব বলেছেন: ইংরেজি বিভাগের কাজ ইংরেজি সাহিত্য ও ইংরেজি ভাষা শিক্ষায় (ELT) দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করা। সিলেবাসে খুব বেশি সমস্যা নেই। অনুবাদ সাহিত্য আছে (গ্রীক নাটক ও মহাকাব্য)। আর বাংলা সাহিত্যের অনুবাদও দেয়া যেতে পারে। তবে সমস্যা সিলেবাসে নয়, সমস্যা আমরা মন দিয়ে পড়তে চাই না। আর ইংরেজি সাহিত্য পড়ে বাংলা সাহিত্যে অবদান রেখেছেন এমন বেশ কয়েকজন আছেন- বুদ্ধদেব বসু, শামসুর রাহমান, কবির চৌধুরী, মুনির চৌধুরী, খোন্দকার আশরাফ হোসেন, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। ইংরেজিতে পড়ে কারো কারো মধ্যে উন্নাসিকতা থাকতে পারে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।
ইংরেজি থেকে পাশ করে লেখালেখিতে দক্ষ হবার কথা। তবে পত্রিকা জগতে ব্রিটিশ আমল থেকেই বোধহয় ইংরেজি বিভাগের অনেকেই কাজ করছেন। তাছাড়া অনেকেই ইংরেজি শিক্ষক হন।
বাংলা সাহিত্য পাশাপাশি পড়ালে মন্দ হতো না। তবে এটাকে চাপিয়ে দেয়ার পক্ষে নই আমি। আমাদের সময়ে সাবসিডিয়ারি পড়তে হত ৩০০+৩০০= ৬০০ নম্বরের। আমি ইতিহাস ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়েছিলাম, কেউ বাংলাও নিয়েছিল। হয়তো সেই নিয়ম আবার আসলে ভাল হত।
আমার মনে হয় সবচেয়ে ভাল হত যদি ৩ বছর ইংরেজি নিয়ে পড়ে শেষ একবছর বাংলা, দর্শন ও ইতিহাসের উপর কয়েকটা কোর্স পড়ার ব্যবস্থা রাখা যায়।
আপনার সঙ্গে হয়তো অনেক কিছুতেই আমি একমত নই তবে এ ব্যপারে অবশ্যই একমত যে এ নিয়ে পাবলিকলি অনেক আলোচনা দরকার।

৩| ১৫ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৩২

জগলুলআসাদ বলেছেন: ধন্যবাদ রাজিব কে।সিলেবাস কে আমি খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করি;কী পড়ানো হবে এটা তো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ । আর সিলেবাস তো চাপিয়ে দেয়ার ব্যাপারই।শিক্ষার্থীরা তো নিজেদের সিলেবাস নিজেরা তৈরী করেনা। সে যাই হোক,সিলেবাস প্রনয়নের পেছনে কিন্তু একটা ‘ভিশন’ থাকে,থাকতে হয়।বাংলাদেশে বিশেষত একাডেমিক পর্যায়ে ইংরেজি সাহিত্য পাঠের ‘ভিশান’টা কেমন হওয়া উচিত,সেটাকে প্রশ্ন করতে চেয়েছি সিলেবাসের কথা তুলে।‘ দক্ষ মানবসম্পদ’ শব্দবন্ধটির মধ্যে জীবিকা উপযোগী হওয়ার যে ব্যঞ্জনা আছে সেটি ছাড়াও সিলেবাস প্রনয়নে জাতিগঠন ও সুনাগরিক তৈরী করা অর্থাৎ আমরা রাষ্ট্রের জন্য কীধরনের ‘মানুষ’ চাই,সে বাসনাও প্রচ্ছন্ন বা অপ্রচ্ছন্নভাবে ক্রিয়াশীল থাকে। সিলেবাস প্রনয়নে কলনিয়াল মাইন্ডসেট পরিবর্তনের কথা বলছি।আর কিছুকাল পরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগ হয়তো আলাদা করে থাকবেইনা;গুরুত্ব দেয়া হবে ইংরেজিতে রচিত বা অনূদিত পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার সাহিত্যপাঠে।ইংরেজি বিভাগের নাম বদলে হয়ত হবে department of comparative literature, critical studies , or Department of Language and Linguistics ।
আরেকটি কথা, একাডেমিক প্রাঙ্গণে প্রশ্নপদ্ধতিও জরুরী আলোচনার বিষয়।একাডেমিক পড়াশুনার ধরনটা অনেকসময়ই প্রশ্নপদ্ধতির উপর নির্ভর করে।পড়াশুনাকে শুধুই ব্যক্তিগত ইচ্ছা –অনিচ্ছার ব্যপার না রেখে এটাকে চর্চা আর মগ্নতার জায়গায় নিয়ে যেতে প্রশ্নপদ্ধতি,সিলেবাস,শিক্ষকের প্রশ্নও ত সামনে চলে আসে। ।বুদ্ধদেব বসু, অমিয় চক্রবর্তী, বিষ্ণু দে,জীবনানন্দ ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন,বাংলা সাহিত্যকে তারা সমৃদ্ধ করেছেন।আধুনিক বাংলা সাহিত্যের নির্মাণে ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রদের ভুমিকার যে কথাটি বললেন সেটি তো ঠিকই।যদিও এটা বিস্তৃত আলচনার বিষয়। যাই হোক, ইংরেজি বিভাগের সিলেবাস পরিবর্তনের কথা বলছি যাতে আমরা উন্মুল না হয়ে যাই, আর thinking globally and acting locally বিষয়টিও মাথায় রাখি।আপনার প্রস্তাবটিও ভাল লাগলো।চিন্তা উদ্রেককারী মন্তব্যের জন্য আবারো রাজীব ভাইকে ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.