![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রঙের দুনিয়ায় আমি এখনও ছাত্র,তবে শখের বশে লেখক, সাংবাদিক, অনুবাদক আবার কখনো আরও অনেক কিছু।
ইসরাইল এবং ফিলিস্তিন দ্বন্দ সম্ভবত বর্তমান এবং গত শতাব্দীর সবচেয়ে বেশি নির্মম ও সুদীর্ঘ বেদনাদায়ক অধ্যায়। ক্রমে ক্রমে আজ তা শুধু আঞ্চলিক ভূখণ্ডের যুদ্ধ নয়, বরং তা ইসলাম ও ইহুদিবাদের মধ্যকার দ্বন্দ ও সঙ্কটে রূপ নিয়েছে। সা¤প্রতিকসময়ে আরও বেশি স্পষ্ট হয়েছে, এটা মুসলমান ও ইহুদিদের লড়াই নয়, বরং মুসলিমবিশ্ব-ইসরাইল-পশ্চিমাশক্তির সমন্বয়ে এটি এখন সুদূরপ্রসারী ও গভীর এক ষড়যন্ত্র, যার শেষ পরিণতি কী ঘটবে, তা কেবল মহান স্রষ্টাই অবগত।
ফিলিস্তিন ও মসজিদে আকসার অবৈধ দখলদার এই ইসরাইল যুগ-যুগান্তরের ইতিহাসে সবচেয়ে ধিকৃত ও নিন্দিত জাতি হিসেবে পরিচিত। গত কয়েক শ বছরের ইতিহাসে বিশ্বমানচিত্রে সব অন্যায় ও ধ্বংসযজ্ঞের পেছনে সুকৌশলে ইহুদিদের ভূমিকা আজ আর সন্দেহের বিষয় নয়, বরং দিবালোকের মতোই তা স্পষ্ট ও প্রমাণিত।
বর্তমান ইহুদিরাষ্ট্র ইসরাইলের চরিত্র জানতে হলে ইহুদিদের মানসিকতা ও ধর্মীয় নির্দেশনা জানার বিকল্প নেই। এই অবৈধ রাষ্ট্রটির উৎপত্তি থেকে নিয়ে আজ অবধি মধ্যপ্রাচ্যে যা কিছু ঘটছে, এর সবকিছুর মূলে ইহুদিদের নিঁখুত পরিকল্পনা ও আপোষহীন বাস্তবায়ন কাজ করছে। কাজেই এ লড়াইয়ের শক্তি এবং পরিণতি জানতে হলে ইসরাইলের পূর্ণাঙ্গ চরিত্র সম্পর্কে সচেতনতা প্রয়োজন। কারণ, ইসরাইল প্রতিনিয়ত নির্বিচারে যেভাবে ফিলিস্তিনিদেরকে হত্যা করছে, এটা মোটেও কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং পরস্পরায় প্রতিটি ঘটনা তাদের মূল পরিকল্পনা বাস্তবায়নেরই অংশ। শুধু ফিলিস্তিন কেন, গোটা মধ্যপ্রাচ্য তথা আরববিশ্ব এবং বিশ্বমানচিত্র নিয়েও তাদের পরিকল্পনা এবং ঘৃণ্য চক্রান্ত অব্যাহত রয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষাস্তর থেকেই একটি ইহুদি শিশুকে শেখানো হয়, ইসরাইল এবং আশপাশের অঞ্চলগুলোতে যে আরবরা বসবাস করছে, তা ইহুদিদের একচ্ছত্র মালিকানা। আরব সম্পদ্রায় এখানে অবৈধভাবে বাস করছে এবং তাদের সবাইকে এক এক করে উচ্ছেদ করতে হবে।
ইহুদিদের ধর্মীয় নির্দেশনা এবং তাদের শরীয়ত ও আচার ব্যবহারের নীতিমালাগুলোকে তালমুদ বলা হয়। হাখামাতুল ইহুদিয়াহ নামেও এর নামকরণ করা হয়ে থাকে। এতে ইহুদিবাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিশদ বিবরণের পাশাপাশি তাদের ভবিষ্যত কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও দিকনির্দেশনা দেয়া থাকে।
শুধু এটাই নয়, অন্য ধর্ম ও স¤প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ ও সম্পর্কের ব্যাপারে ইসরাইল ও ইহুদি সম্পদ্রায় যেসব নীতিমালা অনুসরণ করে থাকে, তা এর চেয়েও কড়া সা¤প্রদায়িক এবং বিদ্বেষপূর্ণ। এর সামান্য আঁচ পাওয়া যায় ১৯৫৬ সালে গুরিয়ুনের উক্তিতে। তিনি বলেছিলেন, যে করেই হোক তাওরাতে বর্ণিত সীমারেখা অনুযায়ী নবী দাউদ এবং নবী সুলায়মানের রাজ্যসীমানা নিয়ে নতুন করে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
অতীতনির্ভর সেই ইহুদি রাজ্যের সীমানা কতদূর? এ নিয়ে ইহুদি পণ্ডিতদের মধ্যে সামান্য দ্বিমত থাকলেও মোটামুটি সীমারেখার যে চিত্র পাওয়া যায় তাতে দেখা যাচ্ছে, সিনাই উপত্যকার পুরোটা এবং মিসরের কিছু অংশ- যা নিম্নভূমি পেরিয়ে কায়রোর দক্ষিণ উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তৃত, ওদিকে পুরো জর্ডান এবং সৌদিআরবের কিছু অংশও, আরেকপাশে কুয়েত এবং তা পার হয়ে ইরাকের ফোরাত নদীর দক্ষিণ তীর পর্যন্ত, অন্যদিকে সিরিয়া, লেবানন এবং তুরস্কের বিরাট অংশও এ স্বপ্নসীমানার অন্তর্গত।
এ প্রসঙ্গে সামান্য একটি উদাহরণ হলো, মিসরের রাজধানী কায়রোতে নীলনদের যে পারে ইসরাইলি দূতাবাস, এর বিপরীত দিকে নীলনদের ওপার পর্যন্ত অংশটুকু তাদের ধারণামতে ইসরাইলের ভূমি। নিজেদের ভূমিতে দূতাবাস সম্ভব নয় বলেই তারা নীলনদের এপারকে বেছে নিয়েছে। কারণ, এপার থেকেই অন্যদের ভূমি শুরু এবং সেটাই দূতাবাসের জন্য উপযুক্ত।
ইহুদিদের নীতিনির্ধারকমহল, যেমন গুস ইমুনিম সংস্থা এবং এর মতো আরও অনেকের দৃঢ় বিশ্বাস, এ সুদূর বিস্তৃত অঞ্চল পুনরায় নিজেদের দখলে আনা তাদের রবের পক্ষ থেকে প্রদত্ত অবশ্য পালনীয় পবিত্র নির্দেশ। কাজেই এ যুদ্ধে তাদের সাফল্য অনিবার্য। এজন্যই আজও অধিকাংশ ইহুদি বিশ্বাস করে, ১৯৮২-১৯৮৫ সালে লেবানন-ইসরাইল যুদ্ধে ইহুদিদের পরাজয় ও বিপর্যয়ের একমাত্র কারণ তাদের রবের ক্রোধ ও অভিশাপ। মিসরকে সিনাই উপত্যকা ফিরিয়ে দিয়ে সমগ্র ইহুদি স¤প্রদায় যে পাপ করেছে, তার পরিণতিতেই তাদের রবের পক্ষ থেকে এমন করুণ পরাজয় ও ক্ষতি চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।
জীবহত্যা, শিরক এবং ব্যভিচারসহ অন্যান্য অনৈতিক কর্মকাণ্ড অন্যান্য ধর্মের মতো ইহুদিদের ধর্মেও পাপ হিসেবে গণ্য। এসবে লিপ্ত যে কোনো ইহুদিও তাদের ধর্ম ও আইনমতে শাস্তির যোগ্য অপরাধী। কিন্তু এ পুরো দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যায় অন্যদের বেলায়। ইহুদি ধর্মের অর্থোডিক্স হাখামাতে স্পষ্ট বলা আছে, নিহত ব্যক্তি যদি অন্য ধর্মের হয়, তবে এ ক্ষেত্রে হত্যাকারী ইহুদি ব্যক্তিটি অপরাধী হিসেবে গণ্য হবে না।
একইভাবে ইহুদিদের মধ্যে পরস্পরে ব্যভিচার হলে তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। কিন্তু যার সঙ্গে ব্যভিচার করা হয়েছে, সেই ধর্ষিতা নারী যদি অন্য ধর্মের হয়- তবে তা মোটেও ব্যভিচার হিসেবে বিবেচ্য নয়। তালমুদে এমনও বলা হয়েছে, এসব বিষয়ে ইহুদি এবং অন্য ধর্মের মানুষের মধ্যে পার্থক্য ও ব্যবধান করতেই হবে। যদি অন্য কোনো ধর্মের নারীর সঙ্গে কোনো ইহুদি ব্যাভিচার করে, তবে সেটা ওই নারীরই দোষ। তাকে শাস্তি পেতেই হবে যদিও সে তিন বছরের কন্যাশিশু হয়, কারণ সে-ই এই ইহুদি পুরুষকে প্ররোচিত করেছে।
ইহুদি ছাড়া অন্য কাউকে উপহার কিংবা উপটৌকন দেয়া ইহুদিদের জন্য বৈধ নয়। তবে কোনো বাণিজ্যিক স্বার্থ থাকলে সেক্ষেত্রে এ হুকুম শিথিলযোগ্য। তবে এক্ষেত্রে এটিকে হাদিয়া নয়, বরং এমন বিনিয়োগ যা সুদে আসলে ফেরত আসবে- ভেবে তা দিতে হবে। ইহুদি ধর্মের বাইরে অন্য কাউকে চড়াসুদে ঋণ দেয়া অতিপূণ্যময় এবং আবশ্যক কর্তব্য হিসেবে বিবেচ্য।
কোথাও কোনো হারানো বস্তু পাওয়া গেলে যদি তা দেখে বোঝা যায় যে এটা অবশ্যই কোনো অন্য ইহুদির, তবে সেক্ষেত্রে যে কোনোভাবেই হোক, তা যথাযথ মালিকের কাছে পৌছে দিতে হবে। আর যদি তা ইহুদি ছাড়া অন্য কারো বলে মনে হয়, তবে সেক্ষেত্রে সেটি নিয়ে নিতে কোনো দোষ নেই। এখানেই শেষ নয়, চুরি, ধোঁকা এবং মিথ্যা বলাসহ ছোট-বড় সব অনৈতিকতায় ইহুদি এবং অইহুদিদের মধ্যে এমন জঘন্য পার্থক্য ইহুদিবাদি ইসরাইলের অন্যতম আদর্শ।
বিকৃত তাওরাত এবং তালমুদের এমন অনেক নীতিমালাই রয়েছে, যেগুলো ক্রমাগত ইসরাইলকে উস্কানি দিচ্ছে সমগ্র ফিলিস্তিন, আরব এবং অন্য ধর্মের সবাইকে নিঃশেষ করে দিতে। বিশেষ করে ইসরাইলি সৈন্যদের প্রশিক্ষণে এগুলোর প্রতি আলাদাভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়। তাদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষায় শেখানো হয়, সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই রবের প্রশংসা করা দরকার, কারণ তিনি তাকে ইহুদির সন্তান হিসেবে সৃষ্টি করেছেন।
ইহুদি জনসাধারণ এবং সৈন্যদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়, তারা যখন অন্য ধর্মাবলম্বীদের কবরস্তানের সামনে দিয়ে যায়, তখন যেন সেখানে মৃতদের প্রতি অভিশাপ করে। তারা যখন কোনো অন্য স¤প্রদায়ের বসতি কিংবা এলাকার পাশ দিয়ে পথ অতিক্রম করে, তখন যেন ওই এলাকার প্রতি তারা অভিশাপ দেয় এবং এটি ধ্বংস করে দেয়ার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা জানায়। সম্ভব হলে অন্য ধর্মীয় উপাসনালয়ের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় তিনবার সেখানে থুথু ফেলা তাদের জন্য অবশ্য কর্তব্য। এ সংক্রান্ত বই কিতাবুত তারবিয়া, যা চৌদ্দশ শতাব্দীতে ইহুদি ধর্ম শেখানোর জন্য লেখা হয়েছিল, তাতে বলা হয়েছে, ইহুদিরাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি। স্রষ্টার সেবার জন্য তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে। অন্য সবাই তাদের সেবাদাস হিসেবে গণ্য।
এ হচ্ছে তালমুদ থেকে তুলে ধরা সামান্য কিছু নমুনামাত্র। যারা এসব চর্চা করে বড় হচ্ছে, এসবের ভিত্তিতে যারা নিজেদের রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক নীতি তৈরি করছে, তাদের কাছ থেকে সভ্য ও শালীন এবং যৌক্তিক আচরণের আশা করা নিতান্তই বোকামি। অস্ত্র এবং জিহাদ ছাড়া ফিলিস্তিন উদ্ধারের আর অন্য কোনো সমাধান নেই, এসব সংলাপ ও চুক্তিসই করে সময় ও সুযোগ নষ্ট করা ছাড়া আর কিছুই জুটবেনা ফিলিস্তিনিদের ভাগ্যে, এ সত্য যারা অনুধাবন করতে পারছেন না, তারাই বসে আছেন শান্তিপূর্ণ সমাধানের রঙিন স্বপ্ন নিয়ে।
তামীম রায়হান
http://tamimraihan.com/
২| ১২ ই জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৪৯
যাযাবরমন বলেছেন: সবাই-ই টিকে থাকতে ও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। আর এই চাওয়াটা দোষেরও নয়।
আসলে সমস্বা মুসলমানদের, তারা ইসলাম কি তাই জানে না। মুসলমানদের বড় ১টি সমস্বা নিয়ে এখানে লেখা হয়েছে: Click This Link মুসলিম জীবনে সংগঠন ও নেতা নির্বাচনের গুরুত্ব।
৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৯
ইমরান আশফাক বলেছেন: ওদের তালমুদ ও অন্যান্য গ্রন্থে এইসব নীতিমালা ও চর্চা ঢুকিয়েছে কে? মুসা নবী নিশ্চয়ই এগুলি বলেননি।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:৪৯
একজন ঘূণপোকা বলেছেন:
তথ্যবহুল