নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুন্দর

জীবনে প্রাণ আসুক। প্রতিটা মুহূর্তকে আমরা সুন্দর করে তুলি।

জাহেদ মোতালেব

বই পড়া ও ভ্রমণ

জাহেদ মোতালেব › বিস্তারিত পোস্টঃ

উলঙ্গবাদ!

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৬

ফেসবুকে ‘নারী রাজাকার’ নামে একটা ছোট্ট লেখা পোস্ট করেছিলাম গত ১০ ডিসেম্বর। ওইদিন আমার মেইলে দেখলাম একটা কমেন্ট এসেছে। পরে ফেসবুকে সেই কমেন্টটা আর পাইনি। কমেন্টে করেছেন জয়নাল আবেদীন পাঠান। তিনি একজন কলেজ শিক্ষক।

তিনি লিখেছেন, ‘আমার ভাবতে অবাক লাগছে যে দলের (ভার্সিটি স্টুডেন্ট) ছাত্ররা ধর্ষণের সেঞ্চুরি উৎসব পালন করে, যে দলের ছাত্রীরা (কলেজ স্টুডেন্ট) ভবিষ্যতে নেত্রী হওয়ার জন্য নেতাদের বিছানায় যায় (নিউজ থ্রো দ্য ন্যাশনাল নিউজপেপার), ইভেন যে দলের নেত্রীরা তাদের কর্মীদের নিষিদ্ধ পল্লীতে পাঠিয়ে দেয় অপরজনের জন্য, যে দলের নারীদের মধ্যে নাস্তিক্যবাদিতার সমর্থন থাকে তারা কী করে প্রগতিবাদী হতে পারে? যেসব নারী যারা ধর্মের পক্ষে কথা বলে, উলঙ্গ না চলে পর্দা মেনে চলে তারা কী করে অন্ধকারের বাসিন্দা হতে পারে? মুসলিম হওয়া সত্ত্বে যারা নাস্তিক্যবাদ, উলঙ্গবাদ, মঙ্গল প্রদীপবাদ, আল্লাহ প্রদত্ত এবং মোহাম্মদ (স.) প্রদর্শিত ইসলামিক রাজনীতির চরম বিরোধিতা করে তারা কী করে আলোর জগতের মানুষ হতে পারে??’

জনাব পাঠান, সময় ব্যয় করে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। জ্ঞানের চক্ষে না দেখে আপনি মনে হয়, মতবাদের চক্ষে এসব দেখেন। আর একটি-দুটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে আপনি সামগ্রিক পর্যায়ে নিয়ে যান। সাধারণ ভাবে আমরা দেখি, জানি, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ। সে যে দলেরই হোক না কেন, ধর্ম জীবনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষের মনে আপনার ‘উলঙ্গবাদ’ সাপোর্ট পায় না। আপনি কোনো মতবাদের বশবর্তী হয়ে এসব কথা বলেছেন বলে আমার মনে হয়।

আমাদের মা, বোন আর আত্মীয়-স্বজনদের দিকে একবার তাকান। কী দেখবেন? তাদের বেশির ভাগেরই জীবন শালিন। ধর্ম মানার জন্য তাদের রাজনীতি করতে হয় না।

আপনি যদি খোলা চোখে দেখেন, আমাদের দেশে ইসলামী রাজনীতির স্বরূপ কী? এ কথা কি বলবেন? এখানে যারা ইসলামী রাজনীতির ধারক, একাত্তর সালেই তাদের ভালো করে চেনা হয়ে গেছে। এখন আবার নতুন করে চিনতে পারছি। ইসলামী রাজনীতির রূপটা তখন দেখেছি, এখনো দেখছি। দেখুন, ধর্মের নামে তারা অধর্ম করে, সত্যের নামে অসত্যের মধ্যে বসবাস করে। সমাজে তারা মিথ্যাই ছড়িয়ে দেয়। এসব দেখে বুঝি, তারা পাল্টাবার নয়। ক্ষমতাই তাদের লক্ষ্য, আর সব মিছে।

ধর্ম মেনে চলেও একজন অসৎ হতে পারে। ধর্ম না মেনেও একজন সৎ হতে পারে। তবে বাংলাদেশে বেশির ভাগ মানুষই ধর্ম পালন। সে আওয়ামী লীগ কি বিএনপি। বাম দলগুলোর নেতাকর্মীরাও পালন করে ধর্ম। যারা ধর্ম মানে না তা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। একজন যদি ধর্ম না মানে তাহলে সে কি নিকৃষ্ট হয়ে যাবে? তাকে কি ঘৃণা করব? কেন?

তাহলে কি আপনি সর্বনাশা কোনো মতাদর্শে বিশ্বাসী? যে মতাদর্শ বাঙালিকে, তার সংস্কৃতিকে উলঙ্গবাদ বা নিকৃষ্ট মনে করে! এ রকম বিক্রিত বা বিকৃত মতবাদ সমাজে ছড়াচ্ছে তাহলে! যারা ছড়াচ্ছে, তাদের বিশেষ উদ্দেশ্য আছে নিশ্চয়ই। আপনার কি তা জানা আছে? আপনার কি মনে হয় না, আমাদের অনেকের মন-মানস অন্ধ হয়ে গেছে! নিজের জায়গায় তারা নব্বই বা একশ ভাগ ভুল-তা জানেই না। ভুলের মানুষ হয়ে জীবন-যাপন করছে।

এ রকম ধারণা অনেকে লালন করে। বাংলা আগুনে পুড়লেও তাদের কিছু যায় আসে না। দেখা যায়, তারা রাজাকারের পক্ষ নিয়ে নিচ্ছে। হত্যা, সন্ত্রাস, ধর্ষণ ও সমস্ত রকম অমানবিকতার পক্ষ নিয়ে নিচ্ছে। জান্তে বা অজান্তে তারা তা-ই করছে। অথচ মনে করছে, আমরা ঠিক পথেই আছি। ভয়াবহ এ মানসিকতা থেকে কীভাবে তাদের রক্ষা করা যায়-আমাদের বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা কি চিন্তা করেছেন? বাঙালির চিন্তার দৈন্য, মতে অন্ধ মানুষকে কীভাবে রক্ষা করা যায়-তা ভাববার সময় পেরিয়ে যাচ্ছে বোধ হয়। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আলো জ্বালাবার, সত্যের কথা আরো বেশি করে বলবার সময় পেরিয়ে তো যাচ্ছেই।

নিজের গ-ির বাইরে যাওয়ার, সমাজের জন্য, দেশ ও দশের জন্য কিছু করার জন্য আমাদের আরো বেশি কাতর হতে হবে। না হয় নিজেকে রক্ষা করব কীভাবে? নিজেকে রক্ষার জন্যই কিছু করা দরকার।



ইসলাম মানে শান্তি। শান্তির ধর্মে মানুষ, মানবতার স্থান অনেক ঊর্ধ্বে। কিন্তু সেখানে শান্তির নামে মানবতার অপমান দেখলে কেমন লাগে? তাই ইসলামী রাজনীতিকে ভয় পাই, তবে ইসলামকে নয়। কারণ ইসলামের রূপ আমি আমার আম্মার মধ্যে দেখি, বোনের মধ্যে দেখি।

আমার মনে হয়, আপনি একটার সাথে আরেকটা গুলিয়ে ফেলেছেন। আপনার আরো চিন্তা, আরো বিবেচনা করা উচিত বলে আমি মনে করি। নতুন করে সব দেখা দরকার। বিচ্ছিন্ন একটা-দুটা ঘটনাকে সর্বজনীনতায় নিয়ে গেলে সেখানে আমার বলার কিছু নাই। আমি শুধু বলব, বাংলার আবহাওয়া, পরিবেশ ও প্রকৃতি দেখুন। তাহলে জবাব পেয়ে যাবেন।

ভাদ্র মাসের বিস্তৃত গভীর সবুজ ধানখেতের কথা মনে পড়ে। আমি শুধু ভাবি, এ দেশের মানুষের পক্ষে চরম হওয়া, নিষ্ঠুর হওয়া মানায় না। মিথ্যাবাদী হওয়া তো আরো মানায় না। তার প্রকৃতির সাথে তা মিলে না। কেউ আমাদের নষ্ট করে দিচ্ছে, হিং¯্র করে দিতে চাইছে।

আমার মাকে যেমন দেখি, আমার দেশের মানুষকেও তেমন দেখতে চাই। আপনার মতো দেখি না বলেই এত কথা বললাম। আশা করি, কিছু মনে করবেন না। একটা সূত্রে জেনেছি, আপনার মনে অনেক রং। আপনি ঋতুভিত্তিক পোশাক পরেন, লেখালেখি করেন। আশা করি, আপনার চিন্তায়ও সেই রং ছড়িয়ে পড়বে। একদিন কোথাও আমাদের হবে। সেদিন বাংলার রঙের মতো বলব, ভালোবাসি, বাংলাকে ভালোবাসি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৮

mrof বলেছেন: আপনি বাঙালি না মুসলমান?
দি বাঙালি হন তাহলে খুব সুন্দর পোস্ট দিয়েছেন।
আর যদি মুসলমান হন তাহলে ইসলাম সম্পর্কে আপনার জ্ঞান খুব সামান্য। আপনার কাছে কি ইসলামের ধারক মানে রাজাকার জামাতী ইসলাম?
তাহলে বিষয়টা মারাত্মক ভুল। বাংলার আলেম সমাজের কাছেও তারা ধিক্কৃত। আর আপনার মা বোনেরা ইসলাম শিখবে আপনার থেকে আর আপনি আলেমদের থেকে এমনটাই আল্লাহ কোরআনে বলেছেন। আর একটা জিনিস মনে রাখবেন ইসলাম শুধু নামায রোযায় সীমাবদ্ধ নয়। সেটা আরো অনেক ব্যপক।  

২| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫৫

জাহেদ মোতালেব বলেছেন: জামায়াত ইসলামের ধারক হতে পারেই না। এ বিষয়ে আমার অবস্থান স্পষ্ট। আর ইসলামের শান্তিময় রূপটা বোঝানোর জন্যই মা-বোনের কথা বলেছি। জনাব এমআরওএফ, আমার মনে হয়, লেখাটা আপনার আরেকবার পড়া দরকার। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.