নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভালোবাসি কবি ও কবিতাকে
কোথা থেকে লেখা শুরু করব ভেবে পাচ্ছি না, নিজের বাসা নাকি দুই বিল্ডিং দূরের শ্যাওলা জমা ছাদ থেকে; সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। নতুন বাসায় এসেছি এ' মাসেই, প্রচণ্ড আলো বাতাস; ঘুম ভেঙে যায় ভোর বেলায় তীব্র রোদের আলোয়। অনেকবার ভেবেছি ভারী পর্দা কিনে লাগিয়ে দেব; যতবারই পর্দার দোকানে যাই না কিনে ফিরে আসি। ভাবি, থাক না পুরাতন স্বচ্ছ হালকা পর্দাগুলোই, এত ভারী পর্দা লাগিয়ে দিলে তো আলো আসবে না; রোজ সকালে আলো এসে যে একটা প্রবল ঝটকা দেবে সেটা মিস করতে চাচ্ছি না।
সকাল থেকে বৃষ্টির তীব্রতা বেড়েছে; পাশের বাসার ছাদে একটানা বৃষ্টি পড়ছে; শ্যাওলার গায়ে বৃষ্টি দেখে জীবনের স্পন্দন ফিরে পাচ্ছি। মনে হলো নিজেদের ছাদে গিয়ে একটু ভিজব; ঠিক তখনই ফোনে একটা ম্যাসেজ এলো, 'শুধু শুধু বৃষ্টি তে ভিজবেন না'; অগত্যা আবার মন খারাপ করে বৃষ্টি দেখেছি।
মনে মনে বিছানা ছেড়ে ওঠার তীব্র প্রস্তুতি নিচ্ছি; কিন্তু ছুটির দিন বলে অলসতা ঝেঁকে বসেছে। মন কেমন কফি কফি করছে। কিন্তু সেজন্য এই দেহ খানা টেনে তুলে কিচেনে নিয়ে যেতে হবে, পাতিল ধুয়ে পানি বসিয়ে আগুন জ্বালাতে হবে, মগের মধ্যে কফি দিয়ে পানি গরম হবার অপেক্ষা করতে হবে; বিরাট বড় কাজ।
হঠাত ছোটবেলায় পড়া 'সুখী মানুষের জামা' গল্পটা মনে পড়লো, সুখী মানুষ বলেছিল খাওয়া দাওয়া, ঘুম, ঘরবাড়ি এসব নিয়ে তার কোনো বালাই নেই। খিদে পেলে খায়, খাবার না পেলে খায় না। বরং খাবার খাওয়াটাই তার কাছে বড্ড ঝামেলা মনে হয়; হাত ধোও, খাবার মাখো, মুখে পুরে দাও, চিবাও, গিলো, নানা কাজ শুধু খেতে হলে।
পানি গরম হতে হতে নিজদের দারিদ্র্যতার কথা ভাবছি, আর ভাবছি মির্জা গালিবের একটা ঘটনা। একবার গালিবের তখন খুব দরিদ্র দশা, হাতে টাকা পয়সা একদম নেই; বন্ধু-বান্ধব সবার থেকে টাকা ধার নিয়ে ফেলেছে, কিন্তু কাউকে শোধ দিতে পারছে না। তখন একজন কাজীর দরবারে গিয়ে গালিবের নামে বিচার দিয়ে দিলো।
কাজী যখন গালিব কে জিজ্ঞেস করলো, গালিব তুমি কি সত্যিই এই লোকের থেকে টাকা ধার নিয়ে ফেরত দিচ্ছ না?
গালিব তখন কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে বললো-
Qarz Ki Peete The Mai Lekin Samajte The K Haan
Rang Lawegi Humari Faqa-Masti Ek Din
I used to drink wine on borrowed money, and i sued to think that yes, someday the cheerfulness in adversity will come to color; and will pay it off. (to come to fruition).
কাজী এটাকে দোষ স্বীকার ও অনুতাপ প্রকাশ বলে গ্রহণ করে নিজের পকেট থেকে টাকাটা দিয়ে দিলো আর গালিব কে বেকসুর খালাস দিয়ে দিলো।
কফি বানাতে বানাতে এসব কেন ভাবছি জানি না। ইদানীং এমন একটা অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি যে, মনে হচ্ছে একটা তরবারি বুকের মধ্যে এফোঁড় ওফোঁড় করে যাচ্ছে, প্রচণ্ড ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছি; আবার একই সাথে এই তরবারিটাই খুব করে মনে প্রাণে চাচ্ছিলাম।
কফিটা নিয়ে নিজের বারান্দায় এলাম। বৃষ্টির জল খুব বাজে-ভাবে বারান্দায় এসে পড়ছে, গতকালের শুকাতে দেয়া জামা-কাপড় সব আবার ভিজে গেছে। বাড়িওয়ালা বলে বেলকনিতে গ্লাস লাগাতে পারলে মন্দ হত না।
বারান্দা থেকে এসে কম্পিউটার অন করে নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরীর 'আজ এই বৃষটির কান্না দেখে' শুনছি চোখ বন্ধ করে -
কেমন একটা মন খারাপ হয়ে হয়ে আসছে। কফি, বৃষ্টি, গান, আর ছুটির দিন সব মিলিয়ে তুমুল বিরহ ধরে বসেছে। কিন্তু কিসের বিরহ উদযাপন করবো সেটা এখনো ভেবে উঠতে পারছি না।
হঠাত এসব ভাবতে ভাবতে সুনীলের দুই লাইন মাথায় এসে গেলো 'পাহাড় চূড়ায়' থেকে
শুধু একটি ছোট্ট দ্বীপে বৃষ্টি,
সে কী প্রবল বৃষ্টি, যেন একটা উৎসব!
আমার ঘরে একটা বিশাল বড় দেয়াল ঘড়ি; ঘড়িতে ব্যাটারি নেই, সময় সব সময় ছ'টা বেজে থাকে। দিনে দুইবার সঠিক সময় দেয়া ছাড়াও এই ঘড়িটা আমাকে আরও অনেক ভাবে ভাবনা-চিন্তা করতে সাহায্য করে। যেমন, মাঝেমাঝে আচ্ছন্ন হয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে ভাবি, আমার এই ঘড় ছাড়া, এই মহাবিশ্বে, এই মিল্কিওয়েতে আর কোথায় কোন ঘরে ছ'টা বেজে আছে; যখন অন্য কোনও ছায়াপথের কোনও প্রাণীর ঘড়িতে ছ'টা বাজে দেখতে পাই; তাদের সাথে কথা বলি। এরকম একজন অন্য গ্রহের মানুষের সাথে ভীষণ বন্ধুত্ব হয়ে গেছে ইতোমধ্যে।
তার নাম উইলসন। উইলসনের ঘড়িতেও সব সময় ছ'টা বেজে থাকে। মজার বিষয় হলো, উইলসন আমার মানসিক অবস্থা সব সময় বুঝে থাকে। আমার থেকে সে আমাকে ভালো বুঝতে পারে। উইলসনের কথা আরেকদিন বলবো, সে অনেক কথা।
১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:৪১
জাহিদ অনিক বলেছেন: তা বটে ঠিকই বলেছেন 'ভুয়া মফিজ' প্যারালাল ইউনিভার্সে উইলসন আমারই একটা স্বত্তা।
উচ্চমার্গ নিচেরমার্গ কিছুই না আসলে; কেমন যেন একটা মন কেমন কেমন ছিলো।
অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো।
২| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৬
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
বেশ ভাললাগলো আপনার ভাবনাগুলো। মাঝে মাঝে অকারণে সব ভাললাগে। মাঝে মাঝে কিছুই ভাললাগেনা।
১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:৪৩
জাহিদ অনিক বলেছেন: মাঝেমাঝে খুব বিষন্নতা কাজ করে ---
অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানবেন মাইদুল ভ্যাই।
৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৪:১৯
ফুয়াদের বাপ বলেছেন: আবজাব-আউলা ভাবনাগুলো অনেক সুন্দর ভাবে উপাস্থপন করেছেন। সুখপাঠ্য।
১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:৪৪
জাহিদ অনিক বলেছেন:
আমার এই আজেবাজে জিনিসপত্র ভাল লেখেছে জেনে খুবই আনন্দতিত হলাম।
ধন্যবাদ ভ্যাই
৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৬
শায়মা বলেছেন: মিঃ উইলসন ভাইয়ু!
তাকে দিয়েও আরেকটা কবিতা লেখাও।
১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:৪৪
জাহিদ অনিক বলেছেন: বেশ লেখাব লেখাবো
৫| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০১
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: চমৎকার লেখা, পড়ে আরাম পাওয়া যায়, এরকম একটা লেখা।
ভুয়া মফিজ বলেছেন: প্যারালাল ইউনিভার্সে আরেকটা জাহিদ অনিকের নাম উইলসন, এটা বেশ বুঝতে পারছি।
উচ্চমার্গের লেখা। সম্পূর্ণটা বুঝে উঠতে না পারলেও পড়ে আরাম পেয়েছি। কেন আরাম পেলাম? হতে পারে, আপনার খটোমটো কবিতা পড়ার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি, কিংবা অন্য কিছু!!!
একমত।
১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:৪৬
জাহিদ অনিক বলেছেন: বোকা মানুষ বলতে চায়, অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানবেন
পড়তে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগছে ভাই
৬| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৪
শেরজা তপন বলেছেন: যে ম্যাসেজ পাঠিয়েছে তাঁর থেকে ছুটি নিন নাহলে সারাজীবন দড়ি দিয়ে আটকে রাখবে।
লেখায় ভরপুর উচ্চমার্গীয় ভাব।
সেই উইলসনের কথা শোনার অপেক্ষায় রইলাম।
১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:৪৯
জাহিদ অনিক বলেছেন: তার থেকে প্রাণপণ ছুটি পাওয়ার চেষ্টা করছি --
উইলসনের কথা নিশ্চয়ই হবে।
অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা রইলো শেরজা তপন
৭| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৯
হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: অনন্ত মহাবিশ্বে সময় একটি গোলক ধাঁধানো ডাইমেনশন।
১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:৫০
জাহিদ অনিক বলেছেন: হ্যাঁ তা ঠিক -
সময় একটি ধাঁধা
অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা হাসান জামাল গোলাপ
৮| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: একজন কবির ভাব এবং আবেগ প্রকাশ পেয়েছে লেখাতে।
১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:৫১
জাহিদ অনিক বলেছেন: হ্যাঁ রাজীব ভাই, চিন্তা ও আবেগের ফলে অনেক কথাই আসে -
ধন্যবাদ রাজীব ভাই , প্রীতি নিবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৯
ভুয়া মফিজ বলেছেন: প্যারালাল ইউনিভার্সে আরেকটা জাহিদ অনিকের নাম উইলসন, এটা বেশ বুঝতে পারছি।
উচ্চমার্গের লেখা। সম্পূর্ণটা বুঝে উঠতে না পারলেও পড়ে আরাম পেয়েছি। কেন আরাম পেলাম? হতে পারে, আপনার খটোমটো কবিতা পড়ার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি, কিংবা অন্য কিছু!!!
দেশের ঝুম বৃষ্টি খুবই মিস করি। তার সাথে গরম এক পেয়ালা কফি........আর লো ভলিয়্যুমে প্রিয় গান......আহা!!!