নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলমান জীবনদৌড়ের গল্পে লেখার মত স্থির কিছুর অপেক্ষায়

জাহিদ শাওন

আরেকটু ভাল থাকার চিন্তায় আমাদের আর ভাল থাকাটাই হয়ে উঠে না

জাহিদ শাওন › বিস্তারিত পোস্টঃ

লঘু পাপে গুরুদণ্ড হয়ে যাচ্ছে না তো?

১২ ই জুন, ২০১৮ রাত ৩:১৯



কোন বিচার বিবেচনা ছাড়াই অপরাধীর ছবি জনসম্মুখে পেশ করা ব্যাপারটা আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। কি সাংবাদিক কি স্মার্টফোন হাতে থাকা সাধারণ মানুষ যে যার মত এক্সপোজ করে যাচ্ছে।

"মাদকবিরোধী অভিযানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২ শিক্ষার্থীর কারাদণ্ড" এইরকম শিরোনামে নিউজ হচ্ছে ,সাথে সাথে চকচকে ছবিও দেয়া। প্রথম আলো থেকে শুরু করে অনেক গুলো পত্রিকাই এমন নিউজ করছে ছবি সহ। সিরিয়াসলি? নিউজের হেডিং পড়ে মনে হচ্ছে 'মাদকের' চেয়ে 'বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট' এই ব্যাপারটা বেশি হাইলাইট করা হয়েছে। গতানুগতিক ঘটনার মত কি প্রমান করার চেষ্টা করা হয়েছে? বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বখে যাওয়া? শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবহার করলে কি নিউজ পূর্ণতা পেতো না নাকি শুধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাই মাদকসেবী? ধরা পড়া ছাত্ররা যদি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েরও হতো সেখানেওতো প্রয়োজন নেই সরকারি শব্দটা হাইলাইট করা। মাদক সংস্কৃতি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একই রকম। সাংবাদিকতার এথিক্সে এসবের কি ব্যাখ্যা জানা নেই।তবে স্বাভাবিক দৃষ্টিতে ব্যাপারটা খুবই বিশ্রী। একটা ছেলের মা-বাবা পত্রিকায় যখন হুট করে ছেলের ছবি দেখবে তখন কি রকম অনুভূত হবে তাদের? কিংবা একজন সাধারণ মানুষ যখন দেখবে বেসরকারি বা সরকারি কিংবা নাম উল্লেখ করা অমুক ভার্সিটির ছাত্ররা মাদক নিয়ে আটক দখন কি ভাববে? তরুণ সমাজ মাদকাসক্ত হচ্ছে এটা ভাবার আগে খুব স্বাভাবিক ভাবেই ভাববে বেসরকারি বা সরকারি কিংবা নাম উল্লেখ করা অমুক ভার্সিটি ছাত্ররা মাদকাসক্ত।

আরেকটা ব্যাপার ছবি পত্রিকায় দেয়া। এই ছবি দিয়ে তাদের শুধরানোর সু্যগ না দিয়ে ভবিষ্যৎ জীবনে মাদক সেবনের চেয়েও বড় ধাক্কার সৃষ্টি করা হলো না? যে ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তার ভবিষ্যতের জন্য এরকম বিস্তারিত পরিচয় বা ছবিসহ নিউজ কি রকম বাজে প্রভাব ফেলবে সেটা কি একবারো ভেবে দেখেছে সংশ্লিষ্টরা? সাপ্লাই চেইন বন্ধ করতে পারছেন না অথচ সামাজিক অবস্থানের বিচারে লঘুপাপে গুরুদন্ড দেয়া হচ্ছে। মাদক সেবন খারাপ,কিন্তু এই কম বয়সীদের শুধরানোর সুযোগ না দিয়ে এক্সপোজ করে লাভ কিসে বা কাদের?

কিছুদিন আগে ধানমন্ডির ক্যাফে রিওতে একটা ছেলে লেডিস ওয়াশরুমের ভিডিও ধারণ করতে যেয়ে ধরা পড়ে। ব্যাস হয়ে গেলো ছেলেটাকে স্বীকার করানো ভিডিও ভাইরাল।অথচ ছেলেটার বয়স অনেক কম ছিল। তাকে তাৎক্ষণিক শাস্তি এবং প্রচলিত আইনে শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থা আছে।কিন্তু এই অল্প বয়সের ছেলেটাকে এক্সপোজ কেন করতে হবে? ওই ভিডিও পুলিশের কাছে এভিডেন্স হিসেবে দিলেইতো হতো। সাথেসাথে ভাইরাল করার কি খুব বেশি প্রয়োজন ছিলো?

এখানেই শেষ না প্রায়ই দেখা যায় খুব বেশি বড় সমস্যা না হলেও অপরাধীর ছবি বা ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়াতে যে যার মত ব্যবহার করছে।অথচ লঘুপাপে এমন গুরুদন্ড ছাড়াও বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া যেতো। রাইড শেয়ারিং সার্ভিস উবার বা পাঠাওর গ্রুপে দেখা যায় ছোট ছোট সমস্যাতেও ড্রাইভার বা রাইডারের প্রোফাইল শেয়ার করে যা তা বলে অন্যদের সচেতন করা হয়। অথচ রাইড শেয়ারিং সার্ভিস গুলোতে ইনিশিয়ালি অভিযোগ করার ব্যবস্থা আছে এবং তারা বলা যায় দ্রুতই সেগুলো আমলে নেয়। সেইক্ষেত্রে ওই রাইডারের নিজীকে শুধরালেও শুধরাতে পারে।অথচ তা সেই সুযোগ না দিয়েই তার ব্যাক্তিগত জীবন জনসম্মুখে বাজে ভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুন, ২০১৮ রাত ৩:৫১

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: দেশের প্রিন্ট-মিডিয়ার অবস্থা যাচ্ছে তাই!
লেখা সুন্দর। বোল্ড করা অংশে দারুন বলেছেন।

@" কোন বিচার বিবেচনা ছাড়াই অপরাধীর ছবি জনসম্মুখে পেশ করা!"
-- এটাও এক ধরণের অপরাধ!
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার মতে, কোন ব্যক্তির অপরাধ যতক্ষণ পর্যন্ত প্রমানিত না হবে(আদালতে) ততক্ষন পর্যন্ত সে নিরাপরাধ!!

১২ ই জুন, ২০১৮ ভোর ৪:২৯

জাহিদ শাওন বলেছেন: সেটাই। তাছাড়া অপরাধী হলেও তুলনামুলক ছোট খাটো অপরাধ এর জন্য ছবি বা ঠিকনা এক্সপোজটা সামাজিক সাম্যাবস্থায় ভাঙন ধরায়।

ধন্যবাদ।

২| ১২ ই জুন, ২০১৮ ভোর ৪:০৬

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: আইনের চর্চা আস্তে আস্তে শিথিল হয়ে যাচ্ছে সর্বক্ষেত্রে। তাই মনে হয় এই অবস্থা।

১২ ই জুন, ২০১৮ ভোর ৪:৩১

জাহিদ শাওন বলেছেন: আইনের চর্চা ,বিবেক বুদ্ধির চর্চায় অলসতার অসভ্যতা বেড়েই চলেছে।

৩| ১২ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: আর এদিকে যে---

২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের অফিসে খুন হন দীপন, যিনি মুক্তমনা লেখক অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশ করেছিলেন। ওই বছরেরই ফেব্রুয়ারিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন অভিজিৎ।

অভিজিতের পর ব্লগার নীলাদ্রী নিলয়, অনন্ত বিজয় দাশ ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ওয়াশিকুর বাবুকে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
সাজাহান বাচ্চুর ওপর কারা হামলা চালিয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে তা কেউ বলতে পারছে না।

১৩ ই জুন, ২০১৮ ভোর ৪:৪১

জাহিদ শাওন বলেছেন: অথচ পত্রিকায় দরকার এসব খুনীদের পেটানো ছবি!

৪| ১২ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:৪২

চোরাবালি- বলেছেন: আমার মতে আমাদের দেশের অপরাধগুলি এত বেশী ছড়িয়ে পরেছে অন্যদিকে বিচারিক ব্যবস্থার এতই ধীরগতি যে এভাবে সামাজিক প্রতিরোধ ছাড়া সম্ভব না।

১৩ ই জুন, ২০১৮ ভোর ৪:৪৩

জাহিদ শাওন বলেছেন: বিচার ব্যবস্থা ছাড়াও সাংবাদিকদের আরো এথিকাল এবং বাস্তবধর্মী হওয়া প্রয়োজন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.