![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখির অভ্যাসটা আমার সেই ছোট বেলা থেকেই। তবে লেখক বলতে যা বুঝায় আমি তা নই। লিখে লিখে এ পর্যন্ত কলমের কালিই ফুরিয়েছি কেবল, সৃষ্টিশীল কোন কিছু হয়নি আমাকে দিয়ে।
চলতি পথে হটাৎ থেমে গেলাম। একটা অস্ফুট কাতর ধ্বনি যেন শুনতে পেলাম! এমনই করুন আর মর্মস্পর্শ্বী সে কাতর ধ্বনি, আমার পা দুটো আপনা আপনি থেমে গেল। ডাইনে বাঁয়ে তাকালাম। না, কোথাও কেউ নেই।
আবারো কানে এলো অস্ফূট সে কাতর ধ্বনি। শব্দের উৎস লক্ষ্য করে এগুলাম। এবং পেয়ে গেলাম। বাতিল কিছু মেটাল ফ্রেম আর কাঠের স্তুপের মাঝে ছোট্ট একটু ফাঁকা মত যায়গায় ক্ষুদে একটা বেড়াল ছানা মাথা নাড়ানোর চেষ্টা করছে। ভেজা গা। চোখে আলো ছায়ার অন্ধকারাচ্ছন্ন ভাবটা সয়ে এলো দ্রুত। দেখতে পেলাম মা বেড়ালটা ঘাড় বাঁকিয়ে সরাসরি তাকিয়ে আছে আমার চোখে। চোখে তার অসহ্য যন্ত্রনার ছায়া। কাতরাচ্ছে! আমি দ্রুত চোখ সড়িয়ে নিলাম তার চোখ থেকে। মাত্র দু সেকেন্ডের ব্যাপার, কিন্তু আমার মনে হলো কত যুগ যেন চলে গেল আমার ঐ দু'চোখের সামনে। ঘর্মক্লান্ত, পাংশুমুখের এমন যন্ত্রনাকাতর কোন বেড়ালের মুখচ্ছবি হতে পারে আমার ধারনা ছিল না। ঘাড় বাঁকিয়ে আমার চোখে তাকিয়ে সে যেন বলছিল, 'তুমি এখানে কি করছো? সড়ো এখান থেকে'!
সড়ে এসেছিলাম আমি ওখান থেকে তৎখনাৎ।
পরদিন আবার গেলাম ওখানে। এবার দেখতে পেলাম চারটে ফুটফুটে বাচ্চা। চোখ বুঁজে মায়ের দুধ খাচ্ছে। আর ওদের মা গা এলিয়ে শুয়ে আছে। মুখমন্ডলে স্বাভাবিক রঙ। পরম আবেশে চোখ দুটো আধ বোঁজা। আমার দিকে ফিরেও তাকালো না। গর্বিত এক সুখী মা'কে দেখলাম। ভাব খানা এই, 'দেখে যাও, আমার এখন চারটে বাচ্চা'! গতকালের কষ্টটা ভুলে গেছে সে।
কিন্তু আমি ভুলিনি। ভুলতে পারছি না। কী নিদারুন যন্ত্রনা সয়ে এক একটি মা তাঁর এক একটি সন্তানকে ভুমিষ্ঠ করেন- বই, পত্র-পত্রিকায় পড়েছি, লোক মুখে শুনেছি, বাস্তবে উপলব্ধি করলাম এই প্রথম!
ঘটনাটা আমার মনে এতটাই আলোড়ন সৃষ্টি করে- আমি আমার মাকে ফোন করি। আমার স্ত্রীকেও জানাই ঘটনাটা। মা বললেন, এরই নাম 'মা হওয়া'।
স্ত্রীতো শুনে হেসে কুটি কুটি। "এতদিনে তুমি বুঝতে পারলে মা হওয়া কষ্টের? তাও এক বেড়ালের কষ্ট..?... আমি তার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলি, "না, আমি ঐ বেড়ালের কষ্ট দিয়ে আমি আমার মায়ের কষ্টটা অনুভবের চেষ্টা করছি। তোমার, তথা তোমাদের পুরো নারী জাতির কষ্টটা অনুভবের চেষ্টা করছি"।
আমরা পুরুষ সমাজ সৃংখলার কথা বলে, ভালোবাসার কথা বলে, শাসনের কথা বলে প্রতিনিয়ত নারী নির্যাতন করে চলেছি বিভিন্ন পন্থায়।
আমাদের এই উপমহাদেশে নারী নির্যাতনের হারটা মাত্রাতিরিক্ত বেশী। মা বোন ভাবী হিসেবে নারী জাতিকে সম্মান প্রদর্শনের ব্যার্থতাই মূলতঃ এর জন্য দায়ী।
আসুন আমরা যার যার অবস্থানে থেকে আপনার মা, আমার বোন, বা তার ভাবীকে সম্মান প্রদর্শন করি। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি।
নারী নির্যাতন বন্ধ হোক দেশে দেশে, চিরতরে।
২৩ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:৩৪
জামাল হোসেন (সেলিম) বলেছেন: "আমরা ছেলেরা হয়তো কখনোই মা হবার সেই কষ্ট এবং সাথে আনন্দ, চাইলেও বুঝতে পারবো না।"
এর জন্যে যে আমাদের মা হতে হবে নিলয় ভাইয়া। যা সম্ভব নয়।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর অনুভবের জন্য।
২| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:৪৭
বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: যে মানুষ তার জন্মের সময় মায়ের প্রসব ব্যথার কথা একবার ভাববে, সে কখনো তার মাকে অবহেলা করতে পারবে না। পৃথিবীর সমস্ত ব্যথাকে একসাথে জড়ো করলেও মনে হয় না, তা প্রসব ব্যথার সমান হবে।
সামান্য একটা বিড়ালের প্রসব ব্যথাই যার, মনে এতো কষ্টের উদ্রেক করে, সে নিশ্চয়ই মায়ের প্রসব ব্যথার যন্ত্রণাও অনুভব করতে পারে। আপনার এই অনুভুতিকে স্যালুট সেলিম ভাই।
২৪ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:৪৪
জামাল হোসেন (সেলিম) বলেছেন: "যে মানুষ তার জন্মের সময় মায়ের প্রসব ব্যথার কথা একবার ভাববে, সে কখনো তার মাকে অবহেলা করতে পারবে না।"
১% ও খাদ নেই কথাটায়। ১০০% সত্য। তবে আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যাঁদের এই ভাবার সময় বা মানসিকতাটাই নেই। সকলের মাঝে বিবেক আর মানবতা বোধ জাগ্রত হোক এই কামনা।
আপনাকে ধন্যবাদ ঘাসফুল ভাই।
বিদ্রোহী বাঙালী যে আমার প্রিয় ঘাসফুল ভাই, এটা বুঝতে আমার বেশ কিছুটা সময় লেগেছে। শুভকামনা আপনার জন্য।
৩| ২৪ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:২২
আমিনুর রহমান বলেছেন:
আপনার ভাবনা ভালো লাগলো। আমরা পুরুষরা হয়ত কোনদিনই যে কষ্ট পরিপূর্ণ ভাবে বুঝবো না তবে অনুভব করার চেষ্টা করলেই নারীর প্রতি অসম্মানটা হয়ত করবো না।
পোষ্টে +++
২৪ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:৫৬
জামাল হোসেন (সেলিম) বলেছেন: খুব ভালো লাগলো আমিনুর রহমান ভাই আপনার কথাগুলো। আসলে আমাদেরকে মানুষ হতে হবে সবার আগে। আমরা তো পশুকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছি কিছু কিছু ক্ষেত্রে। সকলের মাঝে বিবেক আর মনবতা বোধ জাগ্রত হোক এই কামনা।
৪| ২৫ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ৭:৫১
ব্যাঙ্গা বলেছেন: আমাদের এই উপমহাদেশে নারী নির্যাতনের হারটা মাত্রাতিরিক্ত বেশী। মা বোন ভাবী হিসেবে নারী জাতিকে সম্মান প্রদর্শনের ব্যার্থতাই মূলতঃ এর জন্য দায়ী।
+++++
২৫ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:০৯
জামাল হোসেন (সেলিম) বলেছেন: পোষ্টে প্লাস দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ব্যাঙ্গা ভাই। শুভকামনা।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:০১
এম এস নিলয় বলেছেন: সবাই তো সেটা বুঝেও না বোঝার ভান করে।

আমরা ছেলেরা হয়তো কখনোই মা হবার সেই কষ্ট এবং সাথে আনন্দ চাইলেও বুঝতে পারবো না।
আপনার লেখনি ভালো লেগেছে
চালিয়ে যাই