চমেকের মেধাবী ছাত্র আবিদ হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন মহলের নিন্দা ক্ষোভ প্রতিবাদ অব্যাহত

২৬ শে অক্টোবর, ২০১১ সকাল ৯:৫২

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মেধাবী ছাত্র আবিদ হত্যাকান্ডের ঘটনায় বিভিন্ন মহলের নিন্দা ক্ষোভ ও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে।



ড্যাব এর প্রতিবাদ :



চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল বিভাগের ছাত্র আবেদুর রহমান আবিদকে ছাত্রদল কর্মী উল্লেখ করে এ হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। ড্যাব চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি ডা. গোলাম মর্তুজা হারুন, ড্যাব মেকিকেল কলেজ শাখার সভাপতি ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, ড্যাব চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি ডা. আশরাফুল কবির ভূঁইয়া, ড্যাব চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, ড্যাব চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, ড্যাব চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. জসিম উদ্দিনসহ ড্যাব নেতৃবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ছাত্রদল কর্মী আবেদুর রহমান আবিদকে প্রথমে ছাত্রসংসদে ও পরে প্রধান পুরুষ ছাত্রাবাসে নিয়ে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা পৈশাচিক নির্যাতন করে হত্যা করে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, আবিদকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করতে চাইলে তাকে চিকিৎসা না দেয়ার জন্য ছাত্রলীগ ক্যাডাররা চিকিৎসকদের হুমকি প্রদান করে। কলেজ প্রশাসন জানা সত্ত্বেও জরুরি কোন চিকিৎসার ব্যবস্থা না করার ফলে মেধাবী ছাত্র আবিদের এই মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। ড্যাব নেতৃবৃন্দ কলেজ প্রশাসন ও পুলিশের নির্লিপ্ততার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, কলেজ প্রশাসনের সময়োচিত পদক্ষেপ ও পুলিশের যথাযথ ভূমিকা থাকলে এই পৈশাচিক হত্যাকান্ড রোধ করা যেত। তারা অবিলম্বে চিহ্নিত ছাত্র নামধারী খুনীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।



আবিদ হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে ছাত্রদলের সমাবেশ ও মিছিল



চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রদল কর্মী আবেদুর রহমান আবিদের হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদল। গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেলের নেতৃত্বে সিএমপি কমিশনার আবুল কাশেমের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে এ দাবি জানানো হয়।

স্মারকলিপি প্রদান শেষে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে আবিদ হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদল বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মেধাবী ছাত্র আবেদুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে ছাত্রলীগ প্রমাণ করেছে তারা হত্যার রাজনীতিই করে। হত্যা, হামলা, মামলা ও গ্রেফতার করে ছাত্রদলকে দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে আবিদের রক্তের মধ্য দিয়ে শহীদ জিয়ার আদর্শের পতাকা আরও উজ্জীবিত হবে। আবিদের

হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচারের সম্মুখীন করা না হলে ছাত্রদল সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সাথে নিয়ে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নূর আহমেদ গুড্ডুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ইসহাক সালেহ, যুগ্ম সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম সম্পাদক কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি নেসারুল ইসলাম নাজমুল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন কায়সার লাভু, দফতর সম্পাদক হাবিবুর রহমান চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক আজগর হোসেন প্রমুখ। সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বর থেকে বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে এসে সমাপ্ত হয়।



ছাত্রলীগের হাতে চমেক ছাত্র নিহত হওয়ার শিবিরের নিন্দা





ছাত্রলীগ ক্যাডারদের নির্মম নির্যাতনে গুরুতর আহত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের বিডিএস চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবিদুর রহমান নিহত হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ।

গতকাল শনিবার এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় শিবির সভাপতি ডা. মো. ফখরুদ্দিন মানিক, সেক্রেটারি জেনারেল মো. দেলোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর সভাপতি মুহাম্মদ ইসমাইল, সেক্রেটারি আব্দুল মোনায়েম, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ সভাপতি মুহসিনুল ইসলাম ও সেক্রেটারি মো. মাসুম বলেন, চট্রগ্রাম মেডিকেলের ঘটনায় ছাত্রলীগের চলমান বর্বরতা আরেকবার প্রমাণিত হলো। পরীক্ষা শেষে হলে যাওয়ার সময় ছাত্র সংসদের সামনে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা আবিদের গতিরোধ করে ছাত্রসংসদ অফিসে আটক করে দীর্ঘ সময় নির্মম নির্যাতন চালায়। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা রাতভর নির্যাতন চালানোর পরও পুলিশ বা চমেক প্রশাসন তাকে উদ্ধারের কোন পদক্ষেপ নেয়নি। চমেকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডাক্তাররা সন্ত্রাসীদের ভয়ে যথাযথ চিকিৎসা দিতেও রাজি হননি যা অধ্যয়নরত সকল ছাত্রকে বিস্মিত করেছে। তারা বলেন, বর্তমান আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে সাধারণ ছাত্রদের জিম্মি করে এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করছে। আওয়ামী সোনার ছেলেদের হাতে একে একে খুন হয়েছে আবু বকরের মত মেধাবী ছাত্ররা। তাদের খুনের সর্বশেষ নজির হলেন আবিদ।

নেতৃদ্বয় বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের অন্তঃকোন্দলে নিহত ফারুক হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে সারাদেশে চিরুণী অভিযান চালানোর নামে সাধারণ ছাত্রদের গণগ্রেফতার ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হলেও প্রশাসন চমেকের ঘটনায় খুনীদের গ্রেফতার না করে তাদেরকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। খুনীদের আড়াল করতে মেডিকেল কলেজ এবং হোস্টেল বন্ধ করে দিয়ে প্রশাসন ছাত্রদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত করে তুলছে। একের পর এক ছাত্রলীগের খুনীদের শাস্তি বিধান না করে প্রশ্রয় দিয়ে আওয়ামী সরকার আজ সন্ত্রাসের গডফাদারে পরিণত হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে আবিদুর রহমানসহ বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত ছাত্রদের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে এবং কলেজ ও হোস্টেল খুলে দিয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার, পুলিশ প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান।

সূত্র : দৈনিক পত্রিকা

৩ টি +১/-০