![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সব প্রশংসা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম মুবারক।
দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য তথা গোটা অর্থনীতি এখন সরকারি দলের সিন্ডিকেটের হাতে। গত চার বছরে দেশের সব খাতের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের সরিয়ে সরকারি দলের মন্ত্রী-এমপি ও নেতারা একচেটিয়াভাবে নিয়ন্ত্রণ ও অনুমোদন নিয়েছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ, টেলিকম, ব্যাংক-বীমা, শিপিং, বিশ্ববিদ্যালয়, রেডিও-টিভির লাইসেন্স ব্যবসাসহ এ ধরনের প্রায় প্রতিটি খাতের বড় ব্যবসায়ী এখন নেতারাই। শুধু তারাই নয়, বড় বড় ব্যবসায় নিজেদের দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করে নিয়েছে তাদের আত্মীয়-স্বজন কিংবা পরিবারের সদস্যরা। আর সারা দেশের সড়ক ও জনপথ, স্বাস্থ্য প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাসহ সব প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করছে সরকারি দলের মাঠ পর্যায়ের নেতারা। কোটি কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ তারাই নিচ্ছে। বিভিন্ন বড় বড় কাজ পাইয়ে দিতে তদবির বাণিজ্যও করছে তারা। ভর্তিবাণিজ্য, নিয়োগবাণিজ্য ও দখলবাণিজ্যেও রয়েছে এরাই।
জানা গেছে, সরকারি দলের নেতারা এসব সুযোগ-সুবিধা আদায়ে আইনকানুনের কোন তোয়াক্কা করে না। ক্ষেত্র বিশেষে ব্যবসা-বাণিজ্য বাগিয়ে নিতে জোর জবরদস্তি করার অসংখ্য ঘটনারও জন্ম দিয়েছে। সরকারি দলের মন্ত্রী-এমপি-নেতাদের ব্যবসায়ী হয়ে যাওয়ার শুরুটা হয়েছিল জোট সরকার আমলে। বর্তমান মহাজোট সরকার আমলে নজিরবিহীনভাবে এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। সরকার এ পর্যন্ত ৫৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি করেছে। বেসরকারি খাতের ভাড়াভিত্তিক এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ দেয়া হয় সম্পূর্ণ বিনা টেন্ডারে। প্রায় সবক’টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের দায়িত্ব পান সরকারদলীয় লোকজন কিংবা সরকার সমর্থিত ব্যবসায়ীরা। বিদ্যুৎ সেক্টরের দুর্নীতির বিচার যাতে না হয় সে জন্য সরকারের তরফ থেকে ইনডেমনিটি বিলও পাস করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি (এনআরবি) মালিকানাধীন ৩টি ব্যাংকসহ ৯টি বেসরকারি ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছে। সবকটির উদ্যোক্তা সরকারি দলের লোকজন। রাজনৈতিক বিবেচনায় এত ব্যাংক দেয়ার নজিরবিহীন। এটা গোটা ব্যাংকিং খাতকেই চাপের মুখে ফেলে দিতে পারে বলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দলীয় বিবেচনায় দেয়া হয়েছে বেসরকারি টেলিভিশনের অনুমোদন। যার বেশির ভাগই পেয়েছে সরকারদলীয় এমপি-মন্ত্রী কিংবা তাদের স্বজনরা। এ সরকারের সময় দেয়া ১৬টি টিভির লাইসেন্সের মধ্যে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপি, সাবেক মেয়র, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর উপদেষ্টা রয়েছে। তবে ইতিপূর্বে প্রভাবশালী মন্ত্রীর নামে নেয়া টিভি লাইসেন্স ইতোমধ্যে বিক্রি করে দিয়েছে ব্যবসায়ীদের কাছে।
বর্তমান সরকার তিন দফায় মোট ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছে। সম্পূর্ণ দলীয় বিবেচনায় প্রথম দফায় এ বছরের ১৩ মার্চ ৮টি, ১৬ অক্টোবর একটি এবং সর্বশেষ ১৮ নভেম্বর দিয়েছে ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়। এক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা। আছে সরকার দলের এমপি, সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও ঘনিষ্ঠজন।
বর্তমান সরকারের মন্ত্রী, এমপি, তাদের স্বজন কিংবা সরকারদলীয় নেতারা নতুন জাহাজ তৈরির ৩২ লাইসেন্স ভাগাভাগি করে নিয়েছে। অনেক মন্ত্রী-এমপি জাহাজ তৈরির লাইসেন্স নিয়েছে স্বনামে-বেনামে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও উদীয়মান আইটি ও টেলিযোগাযোগ খাতের ব্যবসা এখন আওয়ামী লীগের দখলে। বর্তমান সরকারের আমলে আইটি তথা টেলিযোগাযোগ খাতে যত লাইসেন্স দেয়া হয়েছে, তার বেশির ভাগই পেয়েছে সরকার দলের লোকজন।
২০১২ সালের শুরুতে টেলিযোগাযোগের আন্তর্জাতিক লং ডিস্টেন্স গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ), আন্তঃসংযোগ এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স) এবং আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ের (আইআইজি) ৮২টি গেটওয়ে লাইসেন্স দেয়ার পেছনে কোন না কোন ক্ষমতাধর ব্যক্তি রয়েছে। বিধান উপেক্ষা করে অনেক এমপি-মন্ত্রী নিজের নামে লাইসেন্স নিয়েছে। অনেকে নিয়েছে আত্মীয়ের নামে।
২০০৩ সালে বিএনপি-জামাত জোট আমলে বিধিবহির্ভূতভাবে সরকারি প্লট নেন ১২৩ সংসদ সদস্য। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট ক্ষমতায় এসে একই পন্থায় তাদের ১৫৭ জন এমপিকে প্লট বরাদ্দ দিয়েছে।
মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রভাব খাটিয়ে সরকার দলের লোকজন বড় বড় ব্যবসা ও সংগঠনে নিজেদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। সরকার ক্ষমতায় আসার পর অনেকটা দখলি কায়দায় জনশক্তি রফতানিকারকদের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস অব বাংলাদেশের (বায়রা) সভাপতির পদে অধিষ্ঠিত হয় যুবলীগ নেতা আবুল বাসার। একই কায়দায় সরকারদলীয় সংসদ সদস্য নসরুল হামিদ বিপু দখল করে আবাসন শিল্প মালিকদের প্রতিষ্ঠান রিহ্যাবের সভাপতির পদ। সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি হয়েছে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন। এ সংগঠনটির নির্বাচনে দুই গ্রুপের মারামারিসহ প্রভাব খাটানোর অভিযোগ পাওয়া যায়। চিকিৎসকদের সংগঠন মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএমএ) নির্বাচনেও কারচুপি ও ক্ষমতার জোরে সরকার সমর্থিত চিকিতৎসকরা নিরঙ্কুশভাবে জয়ী হয়েছে। নির্বাচনের প্রভাব খাটিয়ে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সভাপতি হয়েছে নারায়ণগঞ্জের বিতর্কিত আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানের ভাই এ কে এম সেলিম ওসমান।
মূলত বর্তমানে যে ধরনের সরকার আছে, একে বলা যায় পিতৃতান্ত্রিক সরকার। তারা নামে আধা গণতান্ত্রিক, কাজে স্বৈরতান্ত্রিক। সরকারের বৈশিষ্ট্য স্বজনপ্রীতি ও দলপ্রীতি। তাই প্রকৃত ব্যবসায়ীরা আর ব্যবসা করতে পারছেনা। এখন সরকার দলীয়ভাবেই ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ হয় বা সবাই ব্যবসা পায়। কিন্তু অনেক ব্যবসায়ী আছে, যারা পেশাদারিত্ব দিয়ে ব্যবসা করে। রাজনৈতিক প্রশ্রয় নয়, পেশাদারিত্বই মূল চাবিকাঠি। রাজনৈতিক প্রভাবে কাউকে ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুযোগ দেয়া হলে দেশের মূল উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। তাই ব্যবসাকে রাজনীতিকরণের তথা সরকার দলীয়করণের বলয় থেকে অবশ্যই বের করে আনতে হবে। এজন্য জনগণকেই সচেতন ও প্রতিবাদী হতে হবে।
মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা মুবারক থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত মুবারক তথা ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)
©somewhere in net ltd.