নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ সত্য বাকী সব মিথ্যা

মোঃ শওকত হোসেন বিপু

আমি মনের আনন্দে লিখি তাতে কেহ খুশি হতে পারে আবার নাও হতে পারেন তাতে এই অধমের কিছু আসে যায়না।

মোঃ শওকত হোসেন বিপু › বিস্তারিত পোস্টঃ

অভিজ্ঞতা বচন

২৫ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:০২

অভিজ্ঞতা বচন-১
হুজুর বা স্যার এই ধরনের শব্দের সাথে আমরা কম বেশী সবাই পরিচিত। দু'টি শব্দ একই অর্থ বহন করলেও দুই ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা থেকে শিক্ষা গ্রহন করার কারনে একই পেশায় নিয়োজিত থাকার পরও কেহ হয়ে যান স্যার আবার কেহ বা হুজুর। আমাদের এলাকায় আমাদের সময়ে যখন আমরা স্কুলে বা মাদ্রাসায় পড়তাম, তখন লজিং মাস্টারের খুব প্রচলন বলতে গেলে স্বর্ণযুগ। দেখা গেছে - কোন লজিং মাস্টারের সুনাম এমন ব্যাপক যে, অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও একরকম স্নায়ুযুদ্ধে নেমে পড়তেন সুনির্দিষ্ট কাউকে তাদের বাড়ীতে লজিং মাস্টার হিসেবে নেয়ার জন্য। লজিং মাস্টারের স্কুল বা মাদ্রাসায় পড়ার উপর নির্ভর করতো তাকে কি হিসেবে অভিহিত করা হবে, মাদ্রাসায় পড়লে তাকে ডাকতে হবে এমুক বা তমুক হুজুর আর স্কুলে পড়লে স্যার বা মাস্টার। আবার এমনও দেখা গেছে যে, কোন লজিং মাস্টার বা ব্যক্তি স্কুল লাইফে মাদ্রাসায় পড়ার কারনে তার নামের পরে হুজুর শব্দটা জুড়ে গেছে অথচ এখন সে কলেজ বা ইউনিভার্সিটি পড়ালেখা করে বড় কোন বিদেশী প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর সুবাদে সব সময় মুখে ইংরেজি আওড়ালেও হুজুর শব্দটি কেহ কেহ তার নাম থেকে মুছে ফেলতে পারেনা বা পারছেনা। সুতারাং আমরা কেহ যদি এখনও ঐ সব লোককে হুজুর হিসেবে সম্মোধন করি তাহলে আমরা কি বুঝব, কে আসল হুজুর আর কে নকল হুজুর (এই নকল সে নকল নয়)।

অভিজ্ঞতা বচন-২
আমি ছোটবেলা থেকে ডিবেটিং নামক শব্দের সাথে জড়িত যদিও স্কুল লাইফে এটা একান্তই আমার বাবা আর স্যারদের চাপে পড়ে অনেকটা বাধ্য হয়ে। এরপর কলেজ বা ইউনিভার্সিটি এসেও এই ধারা বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। ভার্সিটি লাইফে একবার একটা বিতর্ক প্রতিযোগীতায় আমার বিরোধী পক্ষের একজন বিতার্কিকের তর্ক শুনে আমি খুবই বিমোহিত হয়ে গেলাম যে, তার যুক্তির পক্ষে এত এত রেফারেন্স, এত এত কোটেশন। অবশেষে বিতর্ক শেষে তাকে জিজ্ঞাস করলাম এই বলে যে, আমি তো অবাক আপনার এত তথ্যবহুল বক্তব্যের জন্য এবং আপনি এত পড়াশুনার বা সময় পান কোথায়?? তার উত্তরে তিনি যা বললেন, তাতে আমি আরো অবাক হলাম কারন তিনি বললেন - এগুলো সবই তার বচন, তিনি কেবলমাত্র রেফারেন্স হিসেবে তার নামের জায়গায় বিখ্যাত মনীষীদের নামটা জুড়ে দিয়েছেন।

অভিজ্ঞতা বচন-৩
আমার চাকুরী জীবনের প্রথম দিককার কথা। তখন আমি ডঃ মাহাথীর মোহাম্মদের অফিসে আসা এবং যাওয়ার সময় (এটা সম্ভবত তার শাসনকালের শেষ সময়কার কথা) সম্পর্কে শুনে খুবই অনুপ্রানিত এবং চেষ্টা করছি যাতে সঠিক সময়ে অফিসে আসা যায়। তখন আমাদের অফিসে একজন কলিগ ছিল যিনি সাভার থেকে এসে অফিস করতেন। একদিন দেখা গেল দেরীতে আসার কারনে ম্যানেজার তার এ্যাটেনডেন্স খাতায় লাল কালির দাগ দিল (এটা যে কোন চাকুরীজীবীর জন্য খুব আত্মসম্মানের বিষয় যে, দেরীতে আসার কারনে লাল কালির দাগ খাওয়া)। সংশ্লিষ্ট কলিগ অফিসে আসার পর এটা দেখে রেগে গিয়ে একাকার অবস্থা এবং জোরে জোর চিৎকার করছে এই বলে যে, আমার এই ২০ বছর চাকুরী জীবনে কেহ কোনদিন আমাকে লাল কালির দাগ দিতে পারেনি আর এখন কোথাকার কোন নতুন ম্যানেজার একটু দেরী হওয়ার কারনে এটা করলো। আমি শুনে তো অবাক এবং মনে মনে বলছিলাম তাহলে ইনি তো আমাদের একজন ডঃ মাহাথীর যিনি ২০ বছরে কোন লাল কালির সম্মুখীন হননি। কিন্তু উনি আমার ধারনা ভুল প্রমানিত করার জন্য বেশী দিন সময় নেননি। দেখা গেল, উনি প্রায় দিনই দেরী করে আসেন শুধুমাত্র ম্যানেজার ঐ দিন একটু নীতিবান হওয়ার চেষ্টা করলো, এই যা।

এইগুলো এই জন্য বললাম যে, আমি বা আপনি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে বা চাকুরী জীবনে যা শুনি বা যা দেখি তা সবসময় সত্য নয়। এমন এমন কথা এমন এমন মানুষ এমন এমন ভাবে বলে, শুনে মনে হয়- এই তো মানুষ নয়, ফেরেশতা কিন্তু স্বার্থের বিষয়ে এদের কাছেই আবার যান তখন বুঝতে পারবেন কোনটা তার মনের কথা আর কোনটা তার মুখের কথা।

বিঃদ্রঃ এটা অভিজ্ঞতালব্দ কিছু কথা এবং কোন কারনে কিংবা কাউকে উদ্দ্যেশ করে লিখা নয় তথাপি যদি কারো চরিত্রের সাথে লেখাগুলো মিলে যায় তাহলে বুঝতে হবে এটা একান্তই তার দোষ। তাতে এই অধমের কোনই দায়ভার নাই।

শওকত হোসেন বিপু
২৫.০৮.২০১৬

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.