![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মনের আনন্দে লিখি তাতে কেহ খুশি হতে পারে আবার নাও হতে পারেন তাতে এই অধমের কিছু আসে যায়না।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দশ বছর পার হয়ে যাওয়ার পরও ছাত্রদেরকে আন্দোলন করতে হচ্ছে তাদের থাকার ব্যবস্থার নিশ্চয়তার দাবীতে বা হল নির্মাণের দাবীতে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের হল নির্মাণের এই দাবী আমার কাছে যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত মনে হওয়ার দরুন আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের আন্দোলনের সফলতা বা সাফল্য কামনা করছি।
যদিও আমার প্রতিদিনকার অফিসে যাওয়া-আসার পথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল নির্মাণের দাবীতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের একটা প্রভাব আছে, যেটা আমার মত পুরান ঢাকায় চাকুরী করা চাকুরীজীবীদের জন্য সুখকর নয় । ছাত্রদের আন্দোলনের শুরু থেকে দেখা গেছে, প্রায়দিনই আমাকে গুলিস্তান থেকে পায়ে হেটে অফিসে যেতে হয়েছে। চিন্তা করলাম -২০ হাজার ছাত্র বা ছাত্রীদের বাসা বা মেসে থেকে ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস করতে আসা বা ক্লাস থেকে আবার সেই মেসে যাওয়া, যেখানে পানির কষ্ট, থাকার কষ্ট, বাজার করার কষ্ট, বুয়ার হাতের রান্না খাওয়ার কষ্ট সর্বোপরি পড়ার কষ্টের চেয়ে আমার এইটুকু হাঁটা আর এমন কি কষ্ট? মনীষীরা বলে, কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়। সুতারাং বড় কিছুর আশায় এই ত্যাগ স্বীকার, কারন - হল কি মজার জিনিস, তা হলে না থাকলে কেহ বুঝতে পারেনা।
আর হ্যাঁ, যে ব্যক্তি বা যারা কোনদিন মেসে থাকেননি, সে ব্যক্তি কোনদিনই ব্যাচেলর লাইফের কষ্ট বুঝতে পারবেননা। মেস লাইফে সবচেয়ে কষ্টের বিষয় - আমার মনে হয় বাজার করা, তাও যদি সফল হওয়া যেত। দেখা যা, কষ্ট করে বাজার করলাম আর রান্নার সময় বুয়া বলে - মামা, কি মাছ আনলেন, সবই তো পঁচা। তারপর তো আছে বুয়ার হাতের রান্না খাওয়া। যে ব্যক্তি জীবনে কোনদিন বুয়ার হাতের রান্না খাইনি, সে বুঝবেনা - রান্না কাহাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি?
এখনকার ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের একটা বড় সৌন্দর্য্য হচ্ছে - ছাত্র- ছাত্রী সমেত গান গাওয়া, শ্লোগান দেয়া, সুন্দর সুন্দর কথা সম্বলিত পোস্টার (হাতের লেখা) সর্বোপরি একটা অহিংস আন্দোলন যেটা সবার সমর্থনযোগ্য এবং পাচ্ছেও তাই। যেটার প্রমান পেলাম আজকে শহীদ মিনারে ছাত্র-ছাত্রীদের বিপুল সমাগম। কিন্তু যেটা আমার খটকা লাগলো, তাহলো - আজকের সমাবেশ থেকে তিন দিনের একটা আল্টিমেটাম দেয়া এবং দাবী না মানলে হরতালের হুমকি দেয়া।
আমি জানিনা, আমার ফ্রেন্ড লিস্টে কয়জন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বা ছাত্রী বা শিক্ষক আছেন কিংবা যারা আছেন তারা সবাই আমার লেখাটা পড়বেন কিনা, তাও জানিনা। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত অনুরোধ হলো- এখনকার পরিস্থিতিতে হঠকারী বা ধ্বংসাত্মক কোন আন্দোলন করে, কেহ দাবী আদায় করতে পারবেনা এবং এটা যুক্তিসংগতও নয়। আপনারা এখন যেভাবে আছেন - সব দল, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে মিশে ঐক্যবদ্ধভাবে অহিংস এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছেন, অনুগ্রহ পূর্বক এই ধারাটা বজায় রাখুন। মনে রাখবেন- একটুখানি ভুল সিদ্ধান্ত, অনেক বড় ক্ষতির কারন হতে পারে আর এত বছর যেহতু অপেক্ষা করতে পারছেন, আর না হয় কয়েকটা দিন অপেক্ষা করলেন।
শওকত হোসেন বিপু
২৬.০৮.২০১৬
©somewhere in net ltd.