নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ সত্য বাকী সব মিথ্যা

মোঃ শওকত হোসেন বিপু

আমি মনের আনন্দে লিখি তাতে কেহ খুশি হতে পারে আবার নাও হতে পারেন তাতে এই অধমের কিছু আসে যায়না।

মোঃ শওকত হোসেন বিপু › বিস্তারিত পোস্টঃ

নতুন পর্যটন কেন্দ্র মুছাপুর (কোম্পানীগঞ্জ, নোয়াখালী)

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:২৯

আমাদের দেশের মানুষের বিনোদনের খুব একটা ব্যবস্থা নাই বলে মানুষ একটু আধটু বিনোদনের খোঁজে এদিক ওদিক ছুটে বেড়ায়। পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে আনন্দ উদযাপন করার চেষ্টা করে বা আনন্দ খুজেঁ বেড়ায়। সেই রকম একটা স্থান আমাদের উপজেলার (নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা) ৭নং মুছাপুর ইউনিয়নের দক্ষিন মুছাপুর এবং চর বালুয়া মৌজার মধ্যে ছোট ফেনী নদীর সংযোগস্থলে অবস্থিত ক্লোজার এবং তৎসংলগ্ন বেড়িবাধ যা মুছাপুর ক্লোজার হিসেবে বর্তমানে পরিচিত। নোয়াখালী এবং ফেনীর বিভিন্ন উপজেলা থেকে চিত্তবিনোদনের জন্য হাজার হাজার মানুষ এখানে আসে। কখনও ঢাকডোল, কখনও সাউন্ড বক্স নিয়ে লোকজন এসে হইহুল্লুড় করে আবার দিনের আলোয় চলে যায়।

কিন্তু হাজার হাজার মানুষের এই আনন্দ উদযাপনের মাঝে কিছু কিছু ঘটনা দুর্ঘটনা হয়ে আমাদের মাঝে ধরা দেয়, যা কেবল দুঃস্বপ্নই হয়ে মনে কষ্ট আর ক্ষোভই বাড়ায়। সেই রকম দু'টি ঘটনা ইতোমধ্যে মুছাপুর ক্লোজারে ঘটেছে, তাহলো গতকাল (১৭.০৯.২০১৬) এক নারী ধর্ষনের শিকার হওয়া আর একটি কিছুদিন আগে শিক্ষকদের সাথে শিক্ষা সফরে এসে তিনজন ছাত্রীর অকাল মৃত্যু। কোনটিই মেনে নেয়ার মত ঘটনা নয়। একটির কারন শিক্ষকদের নির্বুদ্ধিতা বা নৌকার মাঝিদের দক্ষতার অভাব আর একটি ফরেস্ট এর ভিতর নিরাপত্তার অভাব। সুতারাং এই বিষয়গুলোর প্রতি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের গভীর দৃষ্টি দেয়া উচিত।

আমরা যদি কিছু বিষয় নজর দিই তাহলে এইসব অঘটন থেকে যেমন আমরা মুক্তি পাব, ঠিক তেমনি সরকারের আয়ের একটা খাত তৈরী হবে। মানুষ নিশ্চিন্তে পরিবার নিয়ে আনন্দ উপভোগ করবে সাথে সাথে আশে পাশের কিছু মানুষের কর্মসংস্থান তৈরী হবে। এখন বিষয়টা হচ্ছে, যারা এর সাথে সংশ্লিষ্ট প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাদের এই বিষয়গুলোর প্রতি নজর দিতে হবে, বিশেষ করে - মাননীয় সংসদ সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের, উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব মিজানুর রহমান বাদল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় চেয়ারম্যান জনাব শাহীন চৌধূরী (Shahin Chowdhury) এবং পানিসম্পদ কর্তৃপক্ষ বা তদসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তাহলে মুছাপুর ক্লোজারটি একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে।

যে বিষয়গুলোর প্রতি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নজর দেয়া উচিত বা উচিত বলে আমি মনে করি, তাহলো-
০১। প্রথমতঃ যানজট সমস্যার সমাধান করতে হবে কারন এতটুকু পথ (৪/৫ কিলোমিটার) পাড়ি দিতে যদি ২/৩ ঘন্টা লেগে যায় তাহলে মানুষ আসার জন্য উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। এইজন্য বামনী কলেজ রোড এবং মুছাপুর-চৌধুরী বাজার রোডের সংস্কার করে রোড দু'টিকে আরও চওড়া করতে হবে। প্রয়োজনে যানজট নিয়ন্ত্রনের জন্য রোডে পুলিশ বা আইন প্রয়োগকারী কোন সংস্থার সদস্যকে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত করতে হবে।
০২। সুইচ বা ক্লোজার গেইট এর আগের মোড় থেকে বেড়িবাধের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত কোন ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে বলে মনে হয়নি। এই জায়গায় মানুষের চলাচল সবচেয়ে বেশী। মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসে, সুতারাং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কেহ যাতে অযথা হয়রানির স্বীকার না হয় কিংবা কোন মেয়ে যাতে ইভটিজিং বা অন্য কোন পীড়নের স্বীকার না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
০৩। যত্রতত্র গাড়ী পার্কিং বা গাড়ী নিয়ে বাধেঁর উপর চলে যাওয়া বা ব্লকের উপর মোটর সাইকেল বা গাড়ী চালানো বন্ধ করতে হবে। গাড়ী পার্কিং এর জন্য নির্ধারিত স্থান থাকবে এবং গাড়ী প্রবেশেরও সীমাবদ্ধতা থাকতে হবে। ব্লকের উপর বা নিচে বাচ্চা বা মহিলারা হাটাহাটি বা দৌড়াদৌড়ি করে, সুতারাং এই জায়গায় মোটরসাইকেল বা গাড়ী চালানো হলে যে কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
০৪। যে কেহ যে কোন সময়ে ইচ্ছা করলেই পার্শ্ববর্তী ফরেস্টে গমন করতে পারবে, এটা নিয়ন্ত্রন করতে হবে। কতদূর যেতে পারবে তার একটা সীমারেখা টেনে দিতে হবে এবং এর বেশী যাতে কেহই না যেতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
০৫। যত্রতত্র দোকান স্থাপন করা বা যে কোন পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য চাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। খাবারের দোকানে যেসব পণ্য বিক্রি হবে তার গুনগত মানের বিশুদ্ধতা বা শুদ্ধতা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে। অনেক বাচ্চা বা মহিলারা দূর-দূরান্ত থেকে এসে এইসব খাবার খেতে বাধ্য হয়, যা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।
০৬। মানুষের বিনোদনের জন্য নৌকা বা ট্রলারে ভ্রমনের ব্যবস্থা করতে হবে। নৌকা বা ট্রলারে একসাথে কতজন উঠতে পারবে এবং এগুলোর ফিটনেস আছে কিনা, সার্বক্ষণিক মনিটরিং নিশ্চিত করতে হবে।
০৭। একটা জিনিস খুবই দৃষ্টিকটু লেগেছে, তাহলো ময়লা আবর্জনা ফেলার কোথাও কোন ব্যবস্থা নাই। যার ফলে মানুষ যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলছে। ময়লা আবর্জনা ফেলার একটা স্বাস্থ্যকর এবং সুন্দর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
০৮। প্রত্যেকদিন প্রায় কয়েক হাজার মানুষ যায় এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য দেখতে কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় হলো- এত হাজার হাজার মানুষের জন্য কোন পাকা বা স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নেই (সম্ভবত কাজ চলতেছে)। পর্যাপ্ত টয়লেট বিশেষভাবে পুরুষ এবং মহিলার জন্য আলাদা টয়লেট এর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
০৯। রাতের বেলায়ও মানুষ যাতে ঐখানে অবস্থান করতে পারে বা জোৎস্না উপভোগ করতে পারে তার জন্য পর্যাপ্ত আলো এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

সবশেষে, প্রশাসন বা কর্তৃপক্ষ যদি ভ্রমন পিয়াসুদের জন্য এগুলোর ব্যবস্থা করে তাহলে মানুষ নিরাপদে বা নির্ভয়ে আনন্দ করতে আসবে এবং দিন শেষে মনের আনন্দে বাসায় ফিরে যাবে আর যদি আমরা এই নূন্যতম চাহিদাগুলো পূরণ করতে না পারি তাহলেও মানুষ আসবে তবে জীবনে একবারই আসবে আর যদি কোন অঘটন ঘটে তাহলে দায়ভার কিন্তু সবারই। আবার যদি কেহ ভেবে থাকেন এত কিছু করার জন্য টাকার সংস্থান হবে কিভাবে, তাহলে বলবো ভাল কিছুর জন্য তো সরকার টাকা দিতে না করেনি, প্রয়োজন কেবলমাত্র উদ্যোগ আর একটু শুভ চিন্তা।

শওকত হোসেন বিপু
১৮.০৯.২০১৬

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:০৫

ওসেল মাহমুদ বলেছেন: উত্তম প্রষ্তাবনা !

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৫৩

মোঃ শওকত হোসেন বিপু বলেছেন: যাদের মানার কথা, তারা মানলেই হয়... আপনাকে ধন্যবাদ....

২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:২৬

মাদিহা মৌ বলেছেন: আরো কিছু ছবি দিলে দেখে জায়গাটা সম্পর্কে ভালো ধারণা পেতাম।

নোয়াখালীতেও যানজট হয়? ইসসস! এই সমস্যা দেখি এখন সারা দেশ জুড়ে!

আইডিয়া তো ভালো, কিন্তু কতটুকু বাস্তবায়ন হবে, সেটাই হল দেখার বিষয় …

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০০

মোঃ শওকত হোসেন বিপু বলেছেন: চেষ্টা করেছিলাম আরো কিছু ছবি দেয়ার জন্য কিন্তু নতুন ব্লগার বলে কথা। এখনও ঠিক বুঝতে পারিনা সবকিছু।
যানজট যে দিনের সবসময় হয়, তা নয় তবে দুপুরের পর সাধারনত হয়। এটার কারনও রোড বা ব্যবস্থাপনার অভাব।

সেটাই কতটুকু বাস্তবায়ন হবে... তা কেবল কর্তাব্যক্তিরাই বলতে পারে...

৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৮

প্রথমকথা বলেছেন:


খুব ভাল লেগেছে আপনার পোষ্ট আমার এলাকা থেকে প্রায় ২০ কিঃমিঃ । তবে আমার এলাকা ফেণী । এক সময় সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র হবে নিঃসন্দেহে। সরকারের প্রতি এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আমাদের আবেদন একটু নজর দিলে সমস্যা সমাধান হবে। ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০৪

মোঃ শওকত হোসেন বিপু বলেছেন: প্রতিবেশী হিসেবে আপনার অগ্রাধিকার বেশী, সুতারাং সুস্বাগতম।
আপনার সাথে আমিও বলি- প্রশাসন বা সরকার যদি একটু নজর দেয়, তবে এই অঞ্চলের মানুষের অনেক উপকার হবে।

৪| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:১৬

ওয়াহিদ সাইম বলেছেন: নদী আর সাগরের সংগমস্থল আর ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের সৌন্দর্য্য সমৃদ্ধ মুছাপুর-ক্লোজার হতে পারে হতে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। নোয়াখালী নামটা অনেকেরই তেমন পছন্দসই না হলেও সমূদ্রবর্তী জেলা নোয়াখালীর উপকূলীয় সৌন্দর্য্য unbeatable.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.