নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ সত্য বাকী সব মিথ্যা

মোঃ শওকত হোসেন বিপু

আমি মনের আনন্দে লিখি তাতে কেহ খুশি হতে পারে আবার নাও হতে পারেন তাতে এই অধমের কিছু আসে যায়না।

মোঃ শওকত হোসেন বিপু › বিস্তারিত পোস্টঃ

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই, শান্তি।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১১

আমরা সবসময় যা বলি তা করিনা। মুখে আমরা অনেক সুন্দর সুন্দর কথা বলি কিন্তু কাজ কর্মে আমরা পুরাই উল্টা না হলেও অনেকটা উল্টা। আমরা যখন কথা বলি তখন সবাই শান্তি বা সমাধানের কথা বলি, গনতন্ত্রের কথা বলি কিন্তু এই আমরাই যখন আবার কোন দায়িত্ব পাই বা ক্ষমতা পাই তখন আমাদের আসল চরিত্র ফুটে ওঠে, আমরা হয়ে যাই স্বেচ্ছাচারী বা স্বৈরাচারী।

ছোটকাল থেকে দেখে আসছি কেহ আমরা ভারতের প্রতি অনুগত আবার কেহ পাকিস্তানের প্রেমে মশগুল। আবার দেখি কেহ কেহ, যে দেশের প্রতি তার চরিত্রের গভীর ভালবাসা প্রকাশ পায় অন্য দেশের প্রতি একই মানুষের প্রচন্ড ঘৃণা প্রকাশ পায়। নিজের দেশ ছাড়া দুটি ভিন্ন ভিন্ন দেশের প্রতি কোন কোন মানুষের চরিত্রের এমন চরম বৈপরীত্য আমাকে অবাক করে। যারা ধর্মের কারনে কোন নির্দিষ্ট দেশের প্রতি অনুরাগ দেখায়, সে তারাই আবার ধর্মের দোহায় দিয়ে মানুষ হত্যার বিষয়ে নিশ্চুপ থেকে যুুক্তি দেখায় - অতীতকে বাদ দিয়ে বর্তমান বাস্তবতা বুঝার জন্য। যারা আবার তখনকার বাস্তবতায় যে দেশ একসময় আমাদের বিপদে সাহায্য করেছে, সে দেশের প্রতি অতিরিক্ত অনুরাগ দেখান বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, তারাই আবার এখনকার বাস্তবতায় বাণিজ্যিক বৈষম্য বা সীমান্ত হত্যার ব্যাপারে কোন কথাই বলতে চাননা বা নিশ্চুপ থাকেন যাতে কেহ রুষ্ট না হন।

গত ১৮ই সেপ্টেম্বর রবিবার ভোর সকালে পাকিস্তান সীমান্ত সংলগ্ন কাশ্মীরের উরির সামরিক ঘাটিতে জঙ্গী হামলা চালিয়ে ১৮ জন ভারতীয় সেনাকে হত্যা করার পর দুই বৈরী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ নতুন করে চরম আকার ধারন করে। যেখানে ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে সরাসরি অভিযুক্ত করে আবার পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করছে বা নাকচ করছে। এই নিয়ে শুরু হয়েছে চরম কূটনৈতিক প্রতিযোগীতা যেখানে দুই দেশই চাচ্ছে নিজ নিজ পক্ষে বিশ্বের প্রভাবশালীদেশ সমূহকে কাছে রাখার।

আমাদের দেশের সরকার ইতোমধ্যে মনে হয় একটি দেশের প্রতি তাদের সমর্থন জ্ঞাপন করেছেন। এটা হচ্ছে সরকার টু সরকার সম্পর্ক। সুতারাং আমাদের সরকারের যার সাথে সম্পর্ক ভাল, সে দেশের প্রতি তার সমর্থন জ্ঞাপন নতুন কিছু নই। কিন্তু আমি জানিনা পাকিস্তান বা ভারত কোন দেশই আমাদের দেশের জনগনের সমর্থন চেয়েছেন কিনা কিংবা সমর্থন চেয়ে কোন ধরনের আহবান করছেন কিনা। তা না হলে আমাদের দেশের জনগন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটা নিয়ে এত আলাপ-চারিতাই বা কেন কিংবা সবার মধ্যে এত যুদ্ধ যুদ্ধ সাজ সাজ রব কেন। সবাই দেখি ভারত পাকিস্তানের সামরিক সরঞ্জামের তুলনামূলক বিশ্লেষন শুরু করে দিয়েছেন বা হিসাব নিকাশ শুরু করে দিয়েছেন - কোন দেশ জিতবে, কোন দেশের সৈন্য কত, কোন দেশের যুদ্ধ বিমান কয়টা, কোন দেশের সাব মেরিন কয়টা ইত্যাদি ইত্যাদি। আর আমরা বিশ্বের কোন কোন দেশ আমার পছন্দের দেশের পক্ষে বা সে দেশ আমার অপছন্দের দেশ সম্পর্কে কি বলছে বা কি হুংকার দিচ্ছে তা মনের আনন্দে ফেসবুকে শেয়ার করছি।

শুধু বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়া একটিভিস্টরা নই বরং বিশ্বের তাবৎ মিডিয়া মোগলরাও একই কাজ শুরু করে দিয়েছে। ভারত কি পাকিস্তানে হামলা চালাতে পারে কিংবা কতক্ষন স্থায়ী হতে পারে এই যুদ্ধ ইত্যাদি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে হেড লাইন হিসেবে শোভা পাচ্ছে বা মতামত হিসেবে স্থান পাচ্ছে। অথচ বাংলাদেশের সমগ্র জনগনসহ সকল রাজনীতিবিদের উচিত হবে এই ধ্বংসাত্মক চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসা। প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশসহ সমগ্র বিশ্বের প্রতি আহবান করা যাতে পরামানবিক শক্তিধর দেশগুলো এই ভয়ংকর চিন্তা থেকে বের হয়ে আসে বরং আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে। আর আমাদের দেশের জনগনেরও ভাবার কোন কারন নাই যে, পাশের বাড়ীতে আগুন লাগবে আর আপনি চেয়ে দেখবেন বা মজা নিবেন বা নিজ পছন্দের দেশের জয়-পরাজয় হিসাব করবেন। মনে রাখবেন, পাশের বাড়ীতে আগুন লাগলে আপনার ঘর পুড়ে না গেলেও উত্তাপ আসবেই আর তাতে কম বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন আপনি বা আপনার ঘর। সুতারাং সবাই সবার অবস্থান থেকে সমোচ্চরে আওয়াজ তুলুন - যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই, শান্তি।

মোঃ শওকত হোসেন বিপু
২২.০৯.২০১৬

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.